Dola Bhattacharyya

Tragedy Inspirational

3.8  

Dola Bhattacharyya

Tragedy Inspirational

আমাকে ক্ষমা কর

আমাকে ক্ষমা কর

7 mins
353



অনেকদিন আগে একটা ভরা সংসার ছিল আমার। এখন একাই থাকি । প্রথম দিকে নিদারুণ হতাশায় ভুগেছি। তারপর! মেনে নিয়েছি এই একাকীত্ব।  

           পড়াশোনা শেষ করে ভাল একটা চাকরি পেয়েছিলাম। তারপর বিয়ে । আমি আর শুভায়ন। ভালবাসার বিয়ে আমাদের । একটামাত্র মেয়ে নীলা।                                       

 কোথা থেকে কি যে হয়ে গেল! মুখ থুবড়ে পড়ে গেলাম। কেউ এগিয়ে এসে হাতটা ধরল না । একে একে সবাই ছেড়ে গেল আমায় । একসময়ে নিজেই উঠে দাঁড়ালাম। অতীত ভুলে বর্তমানের হাত ধরে আবার শুরু করলাম চলা। চাকরি বজায় রেখে নতুন করে শুরু হল লেখক জীবন। 

  আজ সকালে ফোনে একটা মেসেজ পেলাম। অদ্ভুত মেসেজ!মেসেজটা এরকম - "যে পাপ আমি করেছি, তার ক্ষমা হয়না জানি। তবু ক্ষমা চাইছি। যদি পারো একবার দেখা করো আমার সাথে। একবার এসো এখানে"। কে পাঠাল এই মেসেজ! ঠিকানা দেওয়া রয়েছে —

"গ্যালাক্সি" হাসপাতাল, এমার্জেন্সি,মেল ওয়ার্ড, কেবিন নাম্বার ১৩। পরিচয় দেয়নি নিজের । কেন! কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। 

   চাকরিটা ছেড়ে দিলাম । প্রায় সত্তর হাজার টাকা মাইনে পেতাম মাস গেলে। কি হবে এতো টাকা! কার জন্য খরচ করব! তার থেকে এটাই ভালো। ঘরে বসে টুকটাক লেখালেখি করি। লেখক হিসেবে একটা পরিচিতিও রয়েছে। ভালোই ছিলাম। কিন্তু এই মেসেজটা বেশ ভাবিয়ে তুলেছে আমায়। 

কিছুদিন বাদে এক আষাঢ়ের বিকেলে বেরিয়ে পড়লাম "গ্যালাক্সি" র উদ্দেশ্যে। শহরের ধুলিময় রাজপথের ওপরে শেষ বিকেলের আলো মাখা বিষণ্ণ এক আকাশ। ঘর ফিরতি পাখির দল মাথার ওপর দিয়ে যাবার সময় কি যেন বলে গেল, বুঝলাম না। 

ভিজিটিং আওয়ার শেষ হয়নি তখনও ।দেখা করলাম রিসেপশনে। একরাশ ফাইল আর কম্পিউটারের আড়ালে চাপা পড়ে থাকা সুন্দরী মেয়েটি বললে, "ওনার তো ডিসচার্জ হয়ে গেছে কদিন আগে । তবে উনি একটা ঠিকানা রেখে গেছেন আপনার জন্যে। ঠিকানাটা নিয়ে আবার বেরিয়ে পড়লাম । সন্ধ্যা নামছে শহরের বুকে। আজই দেখা করব । আর দেরি করা ঠিক নয়। 

   একটা ঝাঁ চকচকে বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের সামনে নামলাম ট্যাক্সি থেকে।" সূর্য আবাসন" । তিনতলায়, ছয় নম্বর ফ্ল্যাট। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ডোরবেলটা টিপলাম। অজস্র চিন্তার কাটাকাটি চলছে মাথার মধ্যে। কে জানে কার কাছে এলাম! দরজা খুলে দিল বছর তিরিশের এক যুবতী । দুচোখে তার প্রশ্ন। অবাক হয়ে দেখছিলাম, বিষাদে আচ্ছন্ন তার অবয়ব। বললাম," আমি নূপুর চৌধুরী"। 

"ছোটকাকীমা"! 

চমকে উঠলাম। "কে"! 

মেয়েটি প্রণাম করল আমায়। "আমি আপনার ভাসুরপো চয়নের স্ত্রী লাবণী" ।

কঠিন স্বরে প্রশ্ন করলাম, কে ডেকেছে আমাকে এখানে? তুমি!" 

উত্তরটা পেলাম পুরুষ কন্ঠে," আমি ডেকেছি কাকীমা। ভেতরে এসো। "

একি! কি দেখছি আমি ! হুইলচেয়ারে বসে আদ্যপান্ত ভেঙে পড়া এক তরুণ। ডান হাতে প্লাস্টার । হাঁটুর নিচ থেকে দুটো পা কাটা। বাকরুদ্ধ আমি। লাবণীর সাথে ওদের ঘরে ঢুকলাম। হুইলচেয়ারে বসা চয়নকে একজন নার্স ঘরে পৌঁছে দিয়ে গেল। চাপা নৈঃশব্দ বিরাজ করছে ঘরের মধ্যে। একসময়ে আমিই সে নীরবতা ভাঙলাম, "এরকম হল কি করে"! 

   লাবণী বলতে শুরু করল, "দীঘায় গিয়েছিলাম কাকীমা ।ফেরার পথে, হাওড়া ছাড়িয়ে শিয়ালদহের কাছাকাছি চলে এসেছি । আমাদের দু বছরের বাচ্চাটা গাড়ির ব্যাকসিটে ঘুমিয়ে কাদা। আমি ছিলাম সামনে, চয়নের পাশে। হঠাৎ একটা মার্সিডিজ ট্রাক পেছন থেকে ধাক্কা মারে আমাদের গাড়িকে। গাড়িটা রাস্তার পাশে ডিভাইডারে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায়। আমাদের বাচ্চা সঙ্গে সঙ্গেই মারা যায় কাকীমা"। ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল লাবণী। আমি নির্বাক। একটু পরে চয়ন বলতে শুরু করল," দূর্ঘটনায় আমার পা দুটো চলে গেল। লাবণীর মাথায় সামান্য চোট লেগেছিলো। সামলে উঠেছে ও। আমি একটু সুস্থ হলেই, লাবণী চলে যাবে আমাকে ছেড়ে। ডিভোর্সের কাগজপত্র রেডিই আছে"। 

রুদ্ধস্বরে প্রশ্ন করলাম , "ডিভোর্স! কেন"? 

কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর চয়ন বলল, আমার মতো পাপীর সাথে থাকতে চায় না ও।" 

আমার চোখে জল আসছে না কেন? চয়ন যে আমার সন্তানেরই মতো। ওর এই অবস্থার জন্য আমি কি তৃপ্তি অনুভব করছি! হে ভগবান! এটাও যে পাপ। 

"নিজের পরিচয় না দিয়ে তোমাকে ডেকে পাঠিয়েছি এখানে। পরিচয় পেলে হয়তো আসতে না। আমাকে ক্ষমা করো কাকীমা "। একটা হাত দিয়েই আমার পা ছুঁতে চায় চয়ন। দুপা পিছিয়ে গিয়ে ক্ষুব্ধ স্বরে বলি, "ক্ষমা! ক্ষমা চাওয়ার নাটক করছ! তোমাদের সকলের দেওয়া ঈর্ষার বিষে আকন্ঠ নিমজ্জিত আমি। সে বিষের জ্বলন দিনে রাতে আজও অনুভব করি । পারবে ফিরিয়ে দিতে আমার নীলা কে! পারবে আমার সুখের সংসারটা ফিরিয়ে দিতে!"দুচোখ দিয়ে জল নয়, যেন আগুন ঝরছে আমার। বুকের ভেতর গোপন ক্ষতের উৎসমুখটা খুলে গিয়েছে আবার। রক্ত ঝরছে অবিশ্রান্ত। আজ থেকে প্রায় দশবছর আগের কথাগুলো সব মনে পড়ে যাচ্ছে। 


      ভাসুর, জা, শ্বশুর, শাশুড়ি, দুই বিবাহিত ননদ মিলে একান্নবর্তী পরিবার। ভাসুরের ছেলে চয়ন, আমার মেয়ে নীলার থেকে প্রায় দশ বছরের বড়। চয়ন যেন চোখে হারাত ওকে। বাড়ির সকলে বলত," দেখো, ওদের বাবাদের মধ্যে কত অশান্তি। এক বাড়িতে থাকলেও, দুই ভাই যেন একে অপরের শত্রু। অথচ এরা দেখো, কি ভাব দুজনের !" 

কিছুদিন ধরেই দেখছিলাম, আমার অমন হাসিখুশি মেয়েটা কেমন যেন বদলে যাচ্ছে। হাসে না, খেলে না।মেঘলা আকাশের মত মুখ নিয়ে ঘুরে বেড়ায় । অথচ চয়ন ডাকলে দৌড়ে গিয়ে হাজির। সন্দেহ দানা বাঁধল। একদিন ধরা পড়ল আমার হাতে। দেখি, আমার ওইটুকু মেয়েটা, তার দাদাভাইএর কাছে যৌনতার পাঠ নিচ্ছে! সাবধান করলাম চয়ন কে। বুঝিয়ে বললাম। তখনকার মতো চুপ করে গেল। শুভায়ন বলল, "এ নিয়ে কারোকে কিছু বোলো না । নীলাকে সাবধানে রাখো। চয়ন আপনিই শুধরে যাবে।" বললাম না কারোকে। এরপর, একদিন দুপুরবেলায়, নীলাকে দেখলাম নিজের ঘরে শুয়ে খুব কাঁদছে। জিজ্ঞেস করলাম, "কি হয়েছে সোনা? কাঁদছিস কেন?" অসহায় দৃষ্টিতে মেয়েটা তাকাল আমার দিকে।দেখি, ওর ট্রাউজারে রক্তের দাগ। বলল," বড্ড ব্যথা করছে মা"। মাথায় আগুন জ্বলে উঠল। শাশুড়িমা আর শুভায়নকে ডেকে এনে দেখালাম মেয়ের অবস্থা। "আমি থানায় যাব। এফ আই আর করব চয়নের বিরুদ্ধে।" মা, ছেলে দুজনেই বলল, "একদম না। এবাড়ির বদনাম হয়ে যাবে । নীলাকে তোমার আরো সাবধানে রাখা উচিৎ ছিল। " 

"কি বলছ তোমরা! চয়ন অপরাধ করেছে। তার শাস্তি পাবে না! "

" চয়নই একাজ করেছে, তার তো কোনো প্রমাণ নেই। আর নীলাই বা কেন যায় চয়নের কাছে! নিজের মেয়েকে সামলাও বৌমা। যে সব মায়েরা চাকরি করে, তাদের মেয়েদের অমনই হয়।" কথাগুলো আমার দিকে ছুঁড়ে দিয়ে শাশুড়ি চলে গেলেন ঘর থেকে। 

জানি, আমার চাকরি করাটা এবাড়িতে কেউ পছন্দ করে না। শুভায়নও অনেকবার চাকরি ছাড়তে বলেছে। "আমি তো যথেষ্ট মাইনে পাই। প্রয়োজনে তোমাকে দু পাঁচ হাজার টাকা হাতখরচও দিতে পারব। তুমি ছেড়ে দাও চাকরিটা"। 

সদর্পে বলেছি, " মুখ দেখে কেউ চাকরি দেয়নি আমায়, দিয়েছে যোগ্যতা বিচার করে। তাই চাকরি আমি ছাড়ব না "। 

এরপর নীলাকে কার্শিয়ং এর কনভেন্টে ভর্তি করে দিলাম। ছুটি পড়লে আমিই যেতাম ওর কাছে। শীতের ছুটিতে কলকাতায় আনতেই হতো। ওকে ওর দাদু দিদার কাছে রেখে আসতাম। 

     দেখতে দেখতে কেটে গেল অনেকগুলো দিন। চয়ন বি টেক পাশ করে একটা ভালো চাকরিও জুটিয়ে ফেলল। প্রথম কিছুদিন ব্যাঙ্গালোরে থাকতে হবে। 

চলে যাবার সময়ে আমাকে প্রণাম করতে এল চয়ন। আমার মনে তখন দুশ্চিন্তার ঝড় দাপাদাপি করছে। দুপুরের পর থেকে আর দেখিনি মেয়েটাকে। আমার মা খুবই অসুস্থ। শীতের ছুটিতে তাই ওকে এবার বাড়িতেই নিয়ে এসেছি। আসার পর থেকে ঘরের বাইরে খুব একটা বেরোয় নি মেয়েটা। কোথায় যে গেল! সকলে বলছিল, দেখো, দাদা চলে যাচ্ছে বলে হয়তো কোথাও লুকিয়ে বসে কাঁদছে। 

সন্ধ্যার আগেই বেরিয়ে গেল চয়ন। নীলাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না। পরদিন পুলিশের সাহায্যে বাড়ির পেছনে হাইড্রেনের মধ্যে থেকে নীলাকে উদ্ধার করা গেল। নিথর দেহটা দেখে ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙল আমার। পুলিশের কাছে চয়নের নাম বললাম। 

অতীতের দিনগুলোতে ফিরে গিয়েছিলাম। সেখান থেকেই শুনতে পাচ্ছিলাম চয়নের কথা। "বাড়িতে সকলেই অপছন্দ করত তোমায়। সেই অপছন্দের রেশ আমার মনেও সঞ্চারিত হয়েছিল। মনে হত বাড়িতে এত অশান্তি, সব তোমার জন্য। তুমি যে সবার থেকে অন্যরকম, সেটা তো বুঝতাম না। নীলাকে বাঁচাতে তুমি ওকে অন্যত্র পাঠিয়ে দিলে। প্রচন্ড রাগ হল আমার। এতবড় সাহস এই মহিলার! একে তো শিক্ষা দিতেই হবে। সেদিন সবার অলক্ষ্যে নীলাকে আমি ঘর থেকে টেনে নিয়ে গিয়েছিলাম। ও যেতে চায়নি…। "

হঠাৎই চুপ করে গেল চয়ন। রুদ্ধস্বরে প্রশ্ন করলাম," তারপর "! 

আবার বলতে শুরু করল চয়ন -" আমি ভেবেছিলাম সারাজীবনের জন্য কলঙ্কিত করে দেব নীলাকে । তাতে তুমি জব্দ হবে। তোমার তো এমনই হওয়া উচিৎ। তখন এরকমই ভাবতাম। ও যে মারা যাবে, আমি ভাবতেই পারিনি। এটা আমি চাইনি "। বক্তব্য শেষ করে অঝোরে কাঁদছে চয়ন। "শাস্তি দাও কাকিমা। শাস্তি দাও আমায় "। আমি স্তব্ধ। বড়দের মনের গরল কিভাবে ছোটদের মনকেও প্রভাবিত করে! বড়রা বুঝতে চান না এটা। ছোটদের মধ্যে নিজেদের অজান্তেই বুনে দেন হিংসার বীজ। হায় ভগবান! আর কবে সভ্য হবে মানুষ! 

বাড়ির লোকেরা কেসটাকে চেপে দিয়েছিল চয়ন কে বাঁচাতে। পাগলের মতো ছুটে গিয়েছিলাম ব্যাঙ্গালোরে, চয়নের কাছে। অপমানিত হয়ে ফিরেছি। এরপর কলম তুলে নিয়েছিলাম হাতে।'গল্প নয় সত্যি' নামের লেখাটা একটা পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। আমার সৌজন্য সংখ্যাটা পুড়িয়ে দেওয়া হল। আর আমার খাতায় যেখানে লেখা ছিল এই কাহিনী, সেই পাতাগুলো ছিঁড়ে ফেলা হল । একাজ করেছিল শুভায়ন। মেয়েটাকে সুরক্ষা দিতে পারিনি বলে শাস্তি দিয়েছিল আমায়, ডিভোর্স । চলে এসেছিলাম বাপেরবাড়িতে। সেইথেকে আজ পর্যন্ত একাই আছি। 

চয়ন কাঁদছে, লাবণী কাঁদছে ।মন বলছিল এই মেয়েটার কি দোষ! ওতো অপরাধী নয়। কতোই বা বয়স ওর! আর চয়ন! ঈশ্বর ওকে চরম শাস্তি দিয়েছেন। আর কি বাকি রইল। এই মুহুর্তে আমার হাঁটু স্পর্শ করে আছে চয়ন। ওর মাথায় হাত রেখে বললাম, "দেবো শাস্তি। খুব শাস্তি দেব। তোদের আলাদা হওয়া চলবে না। সারাজীবন একসাথে থাকবি তোরা। এটাই তোদের শাস্তি" । কথাগুলো বলে দরজার দিকে ফিরেই চমকে উঠলাম । একী! এ কাকে দেখছি! শুভায়ন! অনেকদিন পরে দেখলাম মানুষটাকে। শরীরটা বড্ড ভেঙে গিয়েছে। বাজে পোড়া মহীরুহ যেন। 

দুজনেই তাকিয়ে রইলাম দুজনের দিকে। সময় যেন থমকে গিয়েছে।" আমায় কি ক্ষমা করে দিতে পার! নূপুর!" শুভায়ন! শুভায়ন বলল এই কথা! বুকের ভেতর থেকে উঠে এল আর্তনাদ, "নাআআআআ! তোমাকে ক্ষমা করা যায় না শুভায়ন। ভালবাসার বিয়ে আমাদের। সেই সম্পর্কের অসম্মান করেছো তুমি। কলঙ্ক লেপে দিয়েছ সম্পর্কের গায়ে।" দরজা পেরিয়ে বাইরে এসে দাঁড়ালাম। ভেতরে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল শুভায়ন। আষাঢ়ের বাঁধভাঙ্গা বৃষ্টি নেমেছে। এতক্ষণ পর আমার চোখেও নামল অঝোর ধারা ।বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছি আমি। ধুয়ে মুছে যাচ্ছে অতীতের কথা। না। আর পেছন ফিরে তাকাব না আমি। ফিরে যাব আমার একলা বাড়িতে। কিন্তু একলা আর থাকব না। ওই বাড়িতে গড়ে উঠবে অসহায় বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের আবাস। এবারে সত্যিই ভাল থাকব আমি। 






Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy