শিউলি
শিউলি


আমাকে এখানে রোজ দাঁড়াতে হয়!
না,কারো জন্য নয়,
কারো অপেক্ষাতেও নয়,
তবুও আমাকে এখানে রোজ দাঁড়াতে হয়।
এই তো,আর একটু পর ছটা বাজবে।
আকাশের আলোটা নিভু নিভু,
ধীরে ধীরে গলিটা শান্ত হয়ে আসবে।
একটা,দুটো,তিনটে সাইকেল,
তারপর একদল ক্ষুদে...
খালি গায়ে, ভেজা গেঞ্জিতে,হাতে ফুটবল।
তারপর গলির নেকড়ে গুলো,
জড়ো হবে দূরের ডাস্টবিনটায়।
ব্যাস, তারপর সব শান্ত।
অথচ সেদিন শান্ত ছিল না!
অথবা কারো হুশ ছিল না!
স্বপ্না নামের যে মেয়েটি আমার স্বপ্ন বেয়ে আসতো,
রোজরাতে আমার মেঘবালিকার মতোন...
আমার স্বপ্নেই শুধু আসতো!
তার চিৎকারে,সেদিন এই গলিটা শান্ত ছিলনা।
রাত্রি নয়টা,
নেড়িকুকুরগুলোর ঝগড়া লেগেছে,
মাংসের হাড়ের গন্ধে ওরা লালায়িত,
টেনে হিচড়ে ছিঁড়ে নিচ্ছে ছিবড়েগুলো।
স্বপ্না নামের মেয়েটিকেও হয়তো,
ছিঁড়েছে, খুবলেছে আর...
শেষ নিশ্বাসটা স্বপ্না আমার কোলেই ফেলেছিল।
কি ভীষণ ঠান্ডা ছিল সেই নিশ্বাসটা।
স্বপ্না নামের সেই মেয়েটি, জানিনা কোথায়!
একটা সুবাস ভেসে আসছে,
শরৎ এলো বুঝি!
একটা একটা করে শিউলি ঝরে,
স্বপ্না আমার মেঘবালিকা,শিউলি ভালোবাসে।
এক একটা শিউলি,এক এক ফোঁটা অশ্রু।
অভিমানের,যন্ত্রণার,লজ্জার আর ক্ষোভের,
স্বপ্না এই শিউলি হয়েই আমার বুকে ঝরে,
রোজ আমার বুকপকেটে শিউলিভরা থাকে।
স্বপ্না আমার মেঘবালিকা,আজো আমার স্বপ্নে আসে।
এখানে আমাকে রোজ দাঁড়াতে হয়,
কেন জানিনা,তিন বছর পরেও,
এই শিউলিতলায় আমাকে রোজ দাঁড়াতে হয়!