শেষ জীবনে
শেষ জীবনে
শেষ জীবনে
মানিক চন্দ্র গোস্বামী
দূরে, ওই যে মহুয়া গাছটা,
ঝড় ঝাপটার ব্যথা বেদনা সয়ে,
এখনও মাথা রেখেছে উঁচু।
শিরদাঁড়া সোজা রেখে আছে দাঁড়িয়ে,
সেই আদ্যিকাল থেকে।
কেউ জানেনা বয়স কত তার।
কত যুগের পরিবর্তন দেখলো একাকী।
কত কাহিনী সঞ্চিত রয়েছে বুকের ভেতর।
আশেপাশে বন্ধু বান্ধব কেউ নেই আর।
কেউ চলে গেছে ঝড়ের দাপটে,
কেউ বা কুঠারের আঘাতে।
কত জনকে নিঃশেষিত হতে দেখেছে যুগ যুগ ধরে।
একাকী আকাশ পানে চেয়ে,
দূরে তারাদের বলতে ইচ্ছে করে
জমে থাকা কত কথা।
রোমন্থন করতে ইচ্ছে জাগে অতীত স্মৃতি।
তারারা শোনে না সে কাহিনী।
ব্যথিত হয়না কষ্টের জীবনীতে ।
বরং আলোর প্রভার তারতম্যে বিদ্রুপ করে, মুচকি হাসে।
চাঁদের স্নিগ্ধতাকে শরীরে জড়িয়ে রাখতে পারে না আর।
সূর্য্যের তেজ আর সহ্য হয়না বুড়ো হাড়ে।
যে চাঁদ তারাকে এখনও আপন করে পেতে চায়,
বিদ্রুপাত্মক হাসি হাসে তারা।
বলে, তোমার আবার দুঃখ কিসের,
বেশ তো আছো সুখেই,
রোদ, বৃষ্টি, হাওয়া কিংবা পাখি,
সবার সাথেই তোমার খেলা চলে দিনে, রাতে।
সৌন্দর্য্য রয়েছে তোমার রূপে,
ডালপালা, সবুজ পাতায় প্রাণের চঞ্চলতা।
বয়স হয়েছে, আজ তো রুগ্ন হবেই,
পায়ের জোরও তো আসবে কমে।
সাবধানে থাকো।
উথাল হাওয়ায় সামলে রেখো নিজের মনোবলে।
নয়তো ঘটে যেতে পারে বিপর্যয়, শেষ জীবনে।