ফেরা
ফেরা
আজ মনের গলি দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে
পৌঁছে গেলাম সেই ছোট্টবেলার দিনে,
অনাবিল আনন্দে মন ভরে গেলো,
পরিচিত সেই শৈশব চোখের সামনে ভেসে এলো।
ঐ তো-খোকন,মদন,বিল্লু সব মাঠে ক্রিকেট খেলছে,
খেলায় না নেওয়ায় সুবলটা বসে কাঁদছে।
মিলি,জবা,বুল্টিরা বসে রান্নাবাটি আর পুতুল খেলছে।
ভোম্বল, বাচ্চুরা ছিপ দিয়ে খালেতে মাছ ধরছে।
সেই কিত কিত,লুকোচুরি,কানামাছি
কুমীর ডাঙা,যত সব খেলায়-
বাচ্চাগুলো সব মেতেছে বিকেল বেলায়।
কিছু বাচ্চা শোভনদের বাড়ি বানাবার বালি দিয়ে
মনের সুখে নিজের কল্পনার প্রাসাদ বানাচ্ছে।
বিচ্ছুটা বট গাছে টায়ার বেঁধে আপন মনে দোল খাচ্ছে।
বাবলু একটা লেবু লজেন্স গুঁজে দিলো আমার হাতে,
মনটা ভালো হয়ে গেল দেখা হয়ে পুরোনো বন্ধুদের সাথে।
আনন্দে লাফিয়ে উঠে ভাবলাম-যাই-
সত্যি একবার ঘুরে আসি ছোট্টবেলার সেই পাড়ায়।
টাইম মেশিনে চড়ে ধীরে ধীরে তাই এগিয়ে গেলাম-
পাড়ার সেই কাঁচা সরু গলিগুলো কংক্রিটের রাস্তায় পরিণত,
নুড়ি পাথরের রাস্তারা এখন অস্তমিত।
কোথায় গেল সেই ছোট ছোট বাড়িগুলো!!-
চারিদিক ভরে গেছে বড় বড় আবাসন আর কংক্রিটের জঙ্গলে।
নেই কোন ঝোপঝাড়- যার পেছনে লুকোচুরি খেলতাম,
নেই সেই মাঠ-ঘাট যেখানে সবাই খেলাধুলা করতাম।
এখানে কারো সময় নেই কারো সাথে মেলামেশা করার,
এখানে কারো মন নেই ঘরের বাইরে খেলার।
শিশু মন হারিয়ে গেছে পড়াশুনার চাপ-
আর হোমওয়ার্ক এর দাপটে,
ছোট থেকেই দৌড়োচ্ছে তারা বড় হওয়ার আশাতে।
ডাক্তার ইঞ্জিনিয়র কিংবা বড় কিছু হতেই হবে,
না হলে সমাজে বাবা-মা’র মুখ রক্ষা কি করে পাবে!!
হাতে সবার মোবাইল-ভিডিও গেমস্
ইউ টিউব-ফেস বুক করছে,
নেট দুনিয়ার দাপটে খেলাধুলো,
কথা বলা সব তারা ভুলছে।
কারো মুখে হাসি নেই,সব যেন যন্ত্র,
বড় হওয়াই জীবনের লক্ষ্য-একমাত্র মূল মন্ত্র।
