ফেরা
ফেরা
আনুমানিক বেলা তিনটে প্রায়...
নিয়ত উদ্বিগ্ন তারা বড় অসহায়,
গন্ডগ্রাম্য বাপ-মার চোখ
হাতফোনের চার ইঞ্চির পর্দায়,
কখন ভেসে ওঠে ছেলের মুখ
অপলক তাকিয়ে তারা,
এক ঝলক সে দেখায় কী পরম সুখ,
অপার শান্তি তার গলায় কথা বলায়।
আগের বার এসে ছেলে দিয়ে গেছে এই যন্ত্র
যাকে বলে নাকি ফোন,
বাপ-মার দুশ্চিন্তার কথা বলে দিয়েছিলো বোন,
দিনান্তে একবার কুশল বিনিময়
তাতেই শান্ত বাপ-মার মন,
ছেলে আছে, কোথাও কোনও প্রান্তে সে আছে,
অবুঝ স্নেহের স্বান্তনা আপন,
ভালো আছে আদরের রতন ধন।
বেলা তিনটে নাগাদই
ছেলে কথা বলে রোজ,
দেরী কেন? আজ কি তবে তার কোনও বিপদ....
বাপ-মার তাই সময়ের এতো খোঁজ ?
না না, হাত কাঁপিয়ে ফোনে
ভাসলো ছেলের মুখ,
''কেমন আছো তোমরা'' শুনে
দূর হটে সব দৈন্য দুখ।
বাপ-মা একসাথে, "তুই কেমন আছিস বাপ?"
"আমি ভা......" শেষ হোলো না কথা,
নামলো বিষম অভিশাপ!
শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ, দৃষ্টিদূষণ,
চিত্তদূষণ, আত্মদূষণ....
সেই দূষণে কুটি কুটি
মানবিকতার বড্ড দামী ভূষণ!
ফিরবে বটে ঘরের ছেলে ঘরে,
অদৃষ্টদোষে হেরে বাপ-মার বুক খালি করে,
বুকফাটানো আর্তনাদে,
সত্যি যে গেছে নাড়ী ছিঁড়ে।
তেরঙ্গা মোড়া কাঠের বাক্সে চড়ে....
নিজের গ্রামে ফিরছে ছেলে, নিরস্ত্র বীরের মরণ মরে।।
