নারীসুমারি
নারীসুমারি
হয়তো শব্দটি তার জন্য অসঙ্গত, বা অসম্মানজনক,
তবুও শব্দটি অভিধানে থাকার প্রয়োজন আছে।
হয়তো তাতে কমতে পারে কন্যাভ্রুণ হত্যা,
ভীরু হাতে কম্পমান বরমাল্য হাতে অপেক্ষারত মেয়েটি--
হয়তো তাতে বেঁচে থাকতে পারে, বধূহত্যা বানচাল করে।
তার প্রতি কতকাল আর আত্মহত্যা ও অপমৃত্যুর
মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করার কুনাট্যরঙ্গ হবে?
জন্মে, শ্রমে, কামে, ঘামে, স্বপ্নে, কর্মে, ধর্মে...
সর্বত্রই সে থেকেও কতকাল না-থাকার তালিকাভুক্ত হবে?
হৃদয়ে আলো জ্বেলে, নাভিমূলে আলো নিভে যাবে আর কতকাল?
শব্দটি না থাকলে পুরুষের চক্ষু দ্বারা লেহনের সঙ্কেতে, ভরে উঠবে তার ভীতসন্ত্রস্ত দেহবাগান।
ফাগুন সন্ধ্যার আগুনে প্রতিদিন ছারখার হওয়ার চিত্রমালা,
রোজ প্রদর্শনীতে দেখানো হবে অরূপবানের অঙ্গুলি হেলনে।
নারী-নারী, কন্যা-কন্যা, ডাক ছেড়ে যায় নাভিরজ্জুর প্রান্তদেশ,
সেই ডাক শোনামাত্র লবণাক্ত হয়ে ওঠে আদমকুমারী--
নাসারন্ধ্রে, আঁখিপক্ষে, ঊরুসন্ধিতে, জরায়ুর দেওয়ালে।
কারা তাকে প্রতিদিনে প্রতিরাতে এভাবে ভেজায়?
সেই হিসাব মেলাতে, জনে জনে তালিকাবদ্ধ করতে,
শব্দটি সত্যিই বড় প্রয়োজন, প্রয়োজন প্রকৃত নারীসুমারি।