Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

PARAMITA BASAK

Abstract

4  

PARAMITA BASAK

Abstract

অপবাদ

অপবাদ

3 mins
26


সকাল বেলা ফোনটা পেয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেলো দিয়ার। দেবমাল্য নামটা শুনলে আজ ও মনটা কেমন খারাপ হয়ে যায়। কি দোষ ছিল ছেলেটার। যার জন্য পরিণতিটা এতটা খারাপ হয়েছিল। ভালোবাসা কি সত্যি এত বড়ো অপরাধ। যার শাস্তি এভাবে মাথা পেতে নিয়েছিল ছেলেটা।

সাত সাত টা বছর কেটে গেছে। সময় কিভাবে চলে যায় বোঝা যায় না। । চোর অপবাদ মাথায় নিয়েই ফিরতে হয়েছিল দেবমাল্য কে। না সেদিন কোনো পুলিশ কেস হয়নি। সেদিন দিয়ার চুপ করে থাকা টা আজ ও মেনে নিতে পারে না। তবে চক্রান্তটা কার ছিল সে সম্বন্ধে তার আজ আর কোনো মাথা ব্যাথা নেই। সেদিন যেই বন্ধুরা সেখানে উপস্থিত ছিল তারা বারবার দেবমাল্য কে বলেছিলো প্রতিবাদ করতে। কিন্তু দিয়ার উদাসীনতা দেবমাল্যের প্রতিবাদের ভাষা যেন ছিনিয়ে নিয়েছিল। তাই হয়তো আজ ও নিজেকে গুটিয়ে রাখতেই ভালোবাসে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও আজ তাকে যেতে হবে বন্ধু সজল এর বাড়ি দূর্গা পূজা উপলক্ষে, অনেক বলেও এড়িয়ে যেতে পারেনি সে। কিন্তু দূর্গা পূজার স্মৃতি তার জীবনে যেভাবে জড়িয়ে আছে তা থেকে বেরিয়ে উঠতে পারেনি সে আজ ও। তাই নিজেকে আজ সুপ্রথিষ্ঠিত জায়গায় দেখেও অতীতটাকে মুছে ফেলতে পারে না। সজল আর দেবমাল্য একই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। সেই সূত্রেই আলাপ সজল এর সাথে। এবারের পূজাতে দেবমাল্য কে তার বাড়িতে যেতেই হবে এমনই তার ইচ্ছা।

বনেদি বাড়ি সজলদের। বহু বছরের পুরানো পূজা। ঠাকুর দালান এ ঢুকতে গিয়ে ঢাকের শব্দ যেন দেবমাল্যর কানে অস্বস্তির সৃষ্টি করছিলো। পুরানো দিনের বাড়ি অনেকটা রাজবাড়ীর মতো। সজল বাড়ির সকলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় দেবমাল্যের। কিন্তু সজলের স্ত্রী দিয়া কে দেখে দেবমাল্যের পায়ের তলার মাটি সরে যায়।

সে বছর পুজোয় গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলো দিয়া তার কলেজ এর বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে। দেবমাল্য ও সঙ্গে গেছিলো। তবে আর পাঁচটা বন্ধুর সঙ্গে দিয়ার যে সম্পর্ক ছিল , দেবমাল্যের সাথে ছিল একটু আলাদা ,বা বলা চলে একটু বিশেষ । স্বভাবে লাজুক ছেলেটা যে কখন দিয়ার মনের অন্দর মহলে জায়গা করে নিয়েছিল তা সে নিজেও বুঝে ,উঠতে পারেনি। যাইহোক পুজোটা বেশ ভালোই কাটছিলো। হৈহুল্লোড় , হাসি ঠাট্টা সব মিলিয়ে বেশ জমজমাতি। কিন্তু বিধির লিখন বুঝি অন্য কিছুই ছিল। দিয়া আর দেবমাল্যর সম্পর্কটা ধরা পরে যায় দিয়ার বাবার কাছে। গ্রামের সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে দিয়া, যেখানে দেবমাল্য শহরের এক খুব ই সাধারণ পরিবারের ছেলে। সম্পর্কটা মেনে নেওয়া তো দূরে থাকে দেবমাল্য কে চোখের সামনে সহ্য করতে পারছিলেন না দিয়ার বাবা।কিন্তু মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে সরাসরি সেকথা বলতেও পারছিলেন না। কিন্তু মেয়ের জীবন থেকে দেবমাল্য কে সরাতে হবে এটা ঠিক করে ফেলেছিলেন। নিজের এক খাস কর্মচারীকে দিয়ে দেবমাল্যের ব্যাগ এ কিছু গয়না গোপনে রাখিয়ে রটিয়ে দেন যে বাড়ির কিছু গয়না পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ এ খবর দেওয়া হলো আর গয়নার হদিশ পাওয়া গেলো দেবমাল্যর ব্যাগ এ। দিয়া ঠিক সেই মুহূর্তে কি বলবে বুঝতে পারছিলো না। কিন্তু সমস্ত প্রমাণ ছিল তার ভালোবাসার মানুষটির বিরুদ্ধে। দিয়া নিরুত্তর থেকে যায়।

দিয়া সেদিন নিরুত্তর ছিল। কিন্তু কোথাও একটা খটকা তার মনে ছিল। কিন্তু সব প্রমাণ দেবমাল্যর বিপক্ষে ছিল তাই সে আর কোনো সম্পর্ক রাখেনি দেবমাল্যের সাথে। আজ এত বছর পর তার শশুর বাড়িতে এভাবে দেবমাল্য কে দেখবে সে ভাবতে পারেনি। সজলের সঙ্গে বিয়ে হবার দুবছরের মধ্যে দিয়ার বাবা মারা যান কিন্তু মারা যাবার আগে সব সত্যি বলে যান দিয়া কে। কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গেছিলো। ক্ষমা চাওয়ার মতো মুখ দিয়ার আর ছিল না। সকালে যখন দিয়া কলেজের এক বান্ধবীর কাছে খবর পায় যে দেবমাল্য আজ সুপ্রতিষ্ঠিত এবং এক ই সাথে সুখ্যাত চিত্রকর ও হয়ে উঠেছে , দিয়ার মনটা যেন নিজের সেদিনের ভুলের জন্য হুহু করে ওঠে। একবার মনে হয় ছুটে গিয়ে দেবমাল্যের পা দুটো জড়িয়ে ক্ষমা চেয়ে নেয় কিন্তু আজ আর সেই মুখ নেই তার। অনেক দেরি হয়ে গেছে। দিয়ার বাবা দেবমাল্যের কাছেও ক্ষমা চাইতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেদিনের ঘটনার পর দেবমাল্য কথায়যেন নিজেকে লুকিয়ে ফেলেছিলো তার হদিস ছিল না কারো কাছে।

আজ এত বছর পর আবার দিয়া, দেবমাল্য মুখোমুখি। নিজের সেদিনের কৃতকর্মের জন্য আজ ও অনুতপ্ত সে। কিন্তু সে কথা প্রকাশ করার মতো ভাষা আজ আর তার কাছে নেই। ঢাকের শব্দে চারিদিক মুখরিত হয়ে উঠলো। কিন্তু দিয়ার মনের ভেতরের শুন্য স্থান পর্যন্ত সে শব্দ পৌঁছলো না।


Rate this content
Log in

Similar bengali poem from Abstract