পালা বদলের পালা
পালা বদলের পালা


শ্যামবর্ণা মেয়েটি তখন দিয়েছে সদ্য উনিশে পা,
কোনো এক উপলক্ষ্যে তার ছেলেটির সাথে দেখা।
লুকিয়ে চুরিয়ে প্রেম পর্বে হঠাৎ তাদের ছন্দপতন,
হাতেনাতে তারা ধরা পড়ে জানাজানি হোলো যখন।
বাড়ীর লোকের জোর আপত্তি আর বেজায় বাধা,
চব্বিশের ছেলে খাচ্ছে যে উনিশ মেয়ের কাঁচা মাথা।
সাথ দিলো না মামী মাসী পিসী কাকী জ্যেঠি বা মা,
বাবার হুকুম মানলো সবাই কাড়লো না তো কেউ রা।
চব্বিশের ছেলে পঁচিশে এসে পেলে সাদামাটা চাকরি,
তুলনায় তুলনায় ঝাঁজরা মেয়ের বয়স সবেই কুড়ি।
অসাধারণ বাবার মেয়ের হয় না বিয়ে সাধারন বরে,
পরিচয়পর্বেই নাক কাটা বাবার মেয়ে যদি বিয়ে করে।
জেদী বাবার জেদী মেয়ে করলো বিয়ে সবার অমতে,
ছেলের বাড়ীর লোকেরা মোটেও সায় দিলো না তাতে।
আজীবনের দুঃখ মেয়ে বেড়ায় বয়ে অভিমানী বুকে,
স্বামী বা বাবা কেউই তো আজও দাঁড়ায় নি কো ঝুঁকে।
সেই উনিশ মেয়ে দেখতে দেখতে হাজির ঊনপঞ্চাশে,
বাবা মায়ের স্নেহের অভাব তবু ভবিষ্যতের আশে।
মেয়ে বৌ স্তর পেরিয়ে সে এখন ঘোর সংসারী মা,
বদলেছে তার ধরণ ধারণ বদলেছে তার ভূমিকা।
তার যুবতী মেয়েই পঁচিশ এখন পড়াশোনার শেষে,
পেয়েছে পুরনো এক সহপাঠী যুবক প্রণয়ীর বেশে।
চব্বিশের সেই সে ছেলে এখন দম্ভে উন্নাসিক বাবা,
মেয়ের প্রেমের যাচাইয়ে তার আজ পূর্ণ অহমিকা।
বাবা মায়ের অবুঝ শাসন সে সয়েছিলো মুখ বুজে,
কিন্তু মেয়ের প্রেমের মূল্য দিতে দায় নিয়েছে নিজে।
স্বামীর সাথে ঝগড়া করে বুঝিয়েছে আজ তাকে,
সত্যি তো দোষ খুব যায় না দেওয়া তাদের বাবা মাকে।
তিরিশ বছর আগে যারা ছিলো শুধুই দুজন প্রেমী,
তিরিশ বছর পেরিয়ে তারাই খুঁজছে হায় জামাই দামী।
চব্বিশের ছেলেই চুয়ান্নতে প্রতিষ্ঠিত দায়িত্বশীল বাবা,
ভরসা ছাব্বিশের জামাই সময় থাবায় জিতবে ঠিক জীবন দাবা।।