মায়েরই মন্ত্রে বিশ্বশান্তি
মায়েরই মন্ত্রে বিশ্বশান্তি
হে বিশ্ববিধাতা
দাও হে মোরে মুক্ত করে
আমার অবলা শব্দশৃঙ্খল চূর্ণ করে
তোমারি ভুবনে মনুষ্যজাতি
আসে তারা কোথা হতে
সৃষ্টি হয় কি উপায়ে
সে যে অবলা নারীর ঐশী বলে
রেখোনাকো আর বদ্ধ করে
কেবল অবলা নারী বলে
নির্লজ্জ ও বর্বর পুরুষের
বস্ত্রহরণ থেকে বাঁচতে
পঞ্চবটি বনে নির্যাতিতা হয়ে
আগুনে ঝাঁপিয়ে অগ্নিপরীক্ষা দিয়ে
সতীত্বহরণকারী পাষণ্ডদের হাতে
নির্ভয়া হয়ে মরতে পারে
কেবল অবলা নারী বলে
বলো সমাজের উচ্চশির পুরুষপ্রজাতি
তুমি কি এলে পাতাল ফুঁড়ে
না তারা-নক্ষত্র হতে
গগনযান থেকে নিচে লাফিয়ে
প্রেমের শ্রীখন্ডী হয়ে আলাপ জমিয়ে
সতীত্ব নাশ করো কলঙ্কিতা আখ্যা দিয়ে
কেবল অবলা নারী বলে
বাঁশ-খড়-মাটির কাঠমোতে
মূর্তি গড় তুলি রাঙিয়ে
দাও তারে পূজা জননী জ্ঞানে
পত্নীকে পনের দাঁড়িতে মেপে
উন্নতশির হয়নাকো নত
পুরুষজাতি যে সমাজে উদ্ধত
হাসিলে বলো নির্লজ্জা
কাঁদিলে ছিঁচকাঁদুনী
সাজিলেগুজিলে ভ্রষ্টা নারী
না সাজিলে অলক্ষী
রাতে একাকী বাহির হলে
বাজারে নষ্ট মেয়ে
গৃহকর্মে লাগিয়ে থাকিলে
সেকেলে আনস্মার্ট লেডি
ছেলের রেজাল্ট খারাপ হলে
মায়ের যত দোষ
স্বামী পরকীয়াতে লিপ্ত হলে
বৌয়ের ঘাড়ে বোঝ
যদি সে হয় কর্পোরেটের
সিনিয়ার এক্সিকিউটিভ
তবে তো আর কথাই নেই
ছলনাময়ী দাম্ভিক
অকালপ্রয়ানে স্বামীকে হারালে
ঘরের অপয়া বধূ
সবার চক্ষে পতিঘাতিনী
নারীলোভী খোঁজে মধু
শিল্প-কলাতে পারদর্শিনী
হয় সে ব্যাভিচারিণী
অন্যায়কারীর প্রতিবাদী হলে
কহ তারে রাক্ষসী
সবই লাঞ্ছনা সহে নীরবে
কেবল অবলা নারী বলে
দেশমাতৃকা নাহি চাহে আর
দেশের অবলা নারী
যুক্ত হবে সে বিশ্বস্বার্থে
হয়ে দশরূপা রনংদেহী
নারী উৎপীড়কের কাটিবে শির
ভুলুন্ঠিত হবে মহাকাল শিব
দিকে দিকে হইবে ধ্বনিত
মাতৃমন্ত্রের বন্দনা গীত
কাপুরুষেরা দিবে প্রাণ আহুতি
সুপুরুষেরা দিবে করতালি
ধন্য হইবে বিশ্ববাসী
মায়েরই মন্ত্রে বিশ্বশান্তি