গোগোল
গোগোল


নিকোলাই গোগোল প্রথমে তো কবিতা লিখেছিলেন,
সাড়া জাগায়নি বলে নিজের হাতেই পুড়িয়েছিলেন।
আর কখনও কবিতা লেখা নয়, প্রতিজ্ঞা করেছিলেন,
যদিও ইউক্রেনে জন্মেছিলেন, নিঝাইনের স্কুল থেকে,
সেন্ট পিটাসবার্গ, ইতিহাস পড়তে ভালো বাসতেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস নিয়ে পড়তে চেয়েছিলেন !
ইউক্রেনের ইতিহাস জানার আগ্রহের আতিশয্যও ,
কাজে লাগে না, কিয়েভিয় এক আমলা থামিয়ে দেন।
নিজের যোগ্যতা দেখাতে মুখস্থবিদ্যা কাজে লাগিয়ে,
অসাধারণ বাগ্মীতা! সেন্ট পিটাসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে,
মধ্যযুগীয় ইতিহাসের অধ্যাপকের চাকরী জোটান।
তিনি তো জানতেন যে সত্যিই তাঁর যোগ্যতা ছিলনা,
তাই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ পত্রও জমা দিয়েছিলেন।
হয়তো তাই তাঁর রচিত প্রহসন অনায়াসে লেখেন,
"ভদ্রমহোদয়গন! এই দুনিয়ার সব কিছুই বোকা বোকা"
পোল্যান্ড, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, প্যারিস
ও রোমের ইটালিতে বহুদিন বসবাস করেন।
জেরুজালেম তীর্থ ভ্রমন সেরে, রাশিয়ায় ফেরেন।
দি পোর্ট্রেট, দি ওভারকোট, ডেড সোলস, দি নোজ,
একে একে তার নিজস্ব রচনা নিয়ে মেতে ওঠেন।
লেখার নেশায় বুঁদ হয়ে ক্রমাগত লিখেই চলেন,
আঠারোশো বাহান্ন সালের চব্বিশে ফ
েব্রুয়ারি রাতে,
ডেড সোলসের দ্বিতীয় খন্ডের পান্ডুলিপি পোড়ান।
অত্যধিক আধ্যাত্মিক চর্চার ফলে নিজের কাল্পনিক,
সমস্ত লেখালেখিকে ভ্রান্ত মনে করতে শুরু করেন।
তাঁর সাথে নাকি, "প্রকৃতই মজা করছে শয়তান" ,
তিনি শেষে এমন কথাই বলেন, আহার বর্জন করেন,
নয় দিন বাদে সত্যিই মারা যান।
কিন্তু আত্মা বলে যদি কিছু থাকে, তবে তাঁর শান্তি ?
না, বোধ হয় ওটা তাঁর আত্মার পাওয়া হয়নি।
একশ বছর পরে স্হানান্তরিত করতে গিয়ে _____
কফিনের মধ্যে তাঁর স্কাল পাওয়া যায় নি !
কোন "শয়তান" এর দরকার হয়েছিলো তাঁর মাথার ?
ইটালীর আল্পস, ইউক্রেনের পলটোভা সব জায়গায়,
এক ভুতুড়ে ট্রেন নাকি মাঝে মাঝে দেখা যায়।
মেক্সিকোর মানসিক হাসপাতালে একশো চারজন,
বিশ শতক থেকে উনিশ শতকে পৌঁছে যায় !
প্রমাণ, এক ব্র্যান্ডের সিগারেটের প্যাকেট রাখা হয়।
দুজন সাক্ষীর বয়ানে, ট্রেনটি টানেলে ভ্যানিস হয়,
ইটালির সেই ভুতুড়ে ট্রেনেই নাকি স্কালটা রয়ে যায়।
সত্যিই এই পৃথিবীর ঘটনা বা দুর্ঘটনা সব বিস্ময়কর,
মানুষ যে কি করে বেঁচে থাকে, তা বোঝাই তো দুষ্কর।