কবিতা # কুটনি বুড়ি
কবিতা # কুটনি বুড়ি
নাতনি:
ও ঠাকুমা শুনবে তুমি মজার একটা কথা?
শোনার পরে মনে তোমার হয় না যেন ব্যাথা।
ঠাকুমা:
” বলি ও পোড়ামুখির জাত!
তোর মজার কথা বলতে যেয়ে শেষ হবে কি রাত?”
নাতনি:
শোন্ তবে –
মোদের পাড়ায় আছে যে এক বিশাল কুটনি বুড়ি,
সবার কানে লাগায় কেবল কুমন্ত্রণার সুরসুরি।
বাড়ি বাড়ি ঘুরে কেবল খবর জোগাড় করা,
সংসারেতে কাজ নাই তার এমন লক্ষীছাড়া।
ঘোষ বাড়ির খবর নিয়ে বোস বাড়িতে বলে,
তার মধ্যে যত পারে তিক্তমধু ঢালে।
উত্তর পাড়ার খবর নিয়ে দক্ষিণ পাড়ায় যায়,
কুমন্ত্র ঢেলে সেথায় পান সুপারি খায়।
ঘোরাঘুরি বন্ধ এখন “করোনার” এই জেরে!
কুটনামি তার চলছে এখন বদ্ধ হয়ে ঘরে।
ল্যান্ডফোনেতে ঘন্টা ভরে কিচিরমিচির চলে ;
হটস্আপ আর ম্যাসেঞ্জারেও যতই পারে ঢালে।
পরনিন্দা পরচর্চা এটাই যে তার কাজ,
সবার সাথে ঝগড়া বাধায় দেখাই সাধুর সাঁঝ।
মিষ্টি হেসে বন্ধু বলে তুই তোকারি করে,
অল্পখনেই সকল লোকের মনটি কে জয় করে।
পেট ভর্তি হিংসা ভরা মুখে নকল হাসি,
কুটনি বুড়ির গুনটা জানে সকল মাশি পিশি।
বুড়ি হয়ে কচি সাঁঝে লাগায় মুখে রং,
অশালীন সব পোশাক পড়ে দেখায় রূপের ঢং।
পাড়া পড়শি বন্ধুরা সব দেখে বুড়ির সাঁঝ,
কেবল করে কানাঘুষো কেউ খোলে না রাজ।
সম্পর্ক ভেঙ্গে যাবে এমন চিন্তা করে,
দিদি বলে সবাই ডাকে মিষ্টি মধুর স্বরে।
বলি-ও ঠাকুমা, বলো দেখি কে সেই কুটনি বুড়ি?
এই পাঁচালি শুনে কানে লেগেছে সুরসুরি!
ঠাকুমা:
বিশাল রেগে গজ্গজিয়ে ধরলো চুলের মুঠি,
পোড়ামুখি দেখবি এখন ভাঙ্গবো পিঠে লাঠি।
এতক্ষণে শুনেছি তোর কুপাঁচালির গলা,
সারা গাঁয়ে জ্বলছে আগুন কানটা করে জ্বালা।
নামটা খুলে বল্ তো দেখি, কে সেই কুটনি বুড়ি!
নইলে চুলের মুঠি ছাড়বো না তোর, কি বুঝলি নেড়ি?
নাতনি:
ও-ঠাকুমা শুনবে যদি ছাড়ো চুলের মুঠি,
একটু দূরে সরে দাঁড়াও দিয়ে হাতের লাঠি।
শোন্ তবে কানটি খুলে কুটনি বুড়ির নাম!
“কমলাদিদি” – বলে নেড়ি ছুটে পালায় ধাম।