একদিন রাতে মাটির বাড়িতে
একদিন রাতে মাটির বাড়িতে
ছবি তোলার কথাটা ভেবেছি প্রায় একছর ধরে,
আমার যাতায়াত এর পথে।
এই শহরের বুকে সাঁওতাল পাড়া তে,
একটি মাত্র মাটির বাড়ি পাকা রাস্তার ধারে,
দাঁড়িয়ে আছে আজও মাথা উঁচু করে।
কখনো হয়তো ছিলাম টোটোতে,
হতে পারে ছিলাম হয়তো একা হাঁটতে হাঁটতে।
ছবি তুলতে নিলে কি জানি যদি কারও কষ্ট হয়,
সবাই তো পাকা বাড়ি চায়!
ওরাও হয়তো সরকারের কাছে করেছে এ্যাপ্লাই।
এইসব নানা সাত, পাঁচ ভেবে ছবিটা হয়নি তোলা।
এখন কিন্তু এই কারণেই দুঃখ হচ্ছে মেলা!
দুঃখ ভুলতে যাই বরং আবার পুরোনো কথায় ফিরে,
আশেপাশে সব মোটা দেওয়ালের মাটির ঘরবাড়ি, আর আমরা থাকি পাকা কোয়ার্টারে।
খুব শখ ছিলো ঢুকবো ঐ মাটির ঘরগুলোর ভেতরে।
কিন্তু আমি যে খুব লক্ষ্মী মেয়ে!
না ডাকলে যাই না অযাচিত হয়ে কারো ঘরে।
মায়ের সাথে ওদের কারো বাড়িতে,
গেলে কখনো কোনোদিন বেড়াতে,
ওরা উঠোনে বসতে দিতো, দড়ির খাটিয়া পেতে।
একবার মায়ের কোলে ভাই আর বছর ছয়েকের আমি গিয়েছি বেড়াতে তপনে।
তপন জায়গাটা বালুরঘাটের কাছে,
ওখানে অনেক খেজুর গাছ আছে।
পাকা রাস্তা থেকে একটু দূরেই,
মিতা পিসিদের মাটির সুন্দর এক দোতলা বাড়ি।
মায়ের বান্ধবী হাসিখুশি, সুন্দরী।
মিতা পিসিকে, আমার তো আগেই পছন্দ ছিল।
বাড়িটা দেখে মনটা আরও অনেক খুশি হলো।
দিদুন আর দুটো কাকু বাড়িতে ছিলো,
সন্ধ্যে বেলায় অনেক গল্প হলো।
বাড়িটা নাকি ওরা প্রপার্টি এক্সচেঞ্জ করে পেয়েছিল।
আরো বড় খবর! একদিন নাকি এই বাড়িতে,
সত্যিকারের ডাকাত এসেছিলো!
কথাটা শোনার পর থেকে আমার তো,
একদম বাক্যি হরে গেল!
দরজাটা অবশ্য কাকুরা শক্ত করেই লাগালো।
রাতে কি খেয়েছিলাম গেছি ভুলে, খাওয়া মিটলে,
সকলেই একটা মই বেয়ে গেছি ওপরে চলে।
শোবার ব্যবস্থা ছিলো সবারই ঐ দোতলায়,
মজার কান্ড! মইটাকেও ওপরে তুলে নেওয়া হলো,
যেন ওটাও আমাদের মতই ঘুমায় !
এবারে ডাকাত এলেও আর কোনও চিন্তা নেই,
মই ছাড়া তো ওদের আর ওপরে ওঠার ক্ষমতা নেই!