ভোঁ-কাট্টা
ভোঁ-কাট্টা
লাটিমের লেত্তি আর ঘুড়ির সুতো,
আমার দৌড় ঐ পর্যন্তই !
না পেরেছি কোনোদিন লাটিম ঘোরাতে,
না পেরেছি আমি ঘুড়ি ওড়াতে।
তবে কাটা ঘুড়ির ছেঁড়া সুতো,
যখনই চোখে পড়েছে, যত্ন করে তুলে রেখেছি।
কড়কড়ে মান্জা দেওয়া, নানা রঙের সেসব সুতো,
আমার কাজে নাই বা লাগলো, দান করতে পেরেছি।
তারপর যখন কেউ সেই সুতো কাজে লাগিয়ে,
আকাশে ঘুড়ি উড়িয়ে দিয়েছে
দুচোখ মেলে প্রাণ ভরে শুধু দেখে গিয়েছি।
যদিও লাটাইটা থাকে অন্য কারো হাতে,
তবুও ঘুড়ির উড়ে যাওয়া দেখতে কিন্তু বেশ লাগে।
কখনও কাঁচ গুঁড়ো করে সুতোতে,
আঠা দিয়ে দেখেছি কাউকে মান্জা দিতে।
ওরে বাবা! যদি হাত যায় কেটে, এসব ভেবেছি।
এই তো বছর কয়েক আগেও পৌষ সংক্রান্তীতে,
ঘুড়ির মেলা অনুষ্ঠিত হবে শুনে,
বুড়ো বুড়ির থানে ছুটে গিয়েছি।
নিচে কাঁচা হলুদ রঙের সর্ষে ফুলের খেত,
আর ওপরে নীল আকাশে নানা রঙের এত্তো ঘুড়ি !
এই প্রথম বোধহয় এতো সুন্দর পরিবেশে,
এরকম ফাঁকা মাঠে, ছুটির আমেজে,
বড়দেরও ঘুড়ি ওড়াতে আমি দেখলাম।
বড়রাও যেন শিশু হয়ে গেছে, নেই গাম্ভীর্যের দাম!
আশ্চর্য যে, কোনও ঘুড়ি কেন যেন কেউ কাটছেনা !
বোধহয় সম্প্রীতির অটুট বন্ধন উদ্দেশ্য এই মেলার,
আমার তো মনে হয় তাতে গেছে কমে আনন্দ টা।
মিস করেছি "ভোঁ-কাট্টা" চিৎকারের শব্দ টা!
চোখ বুজলেই যা এখনও শুনতে পাই,
কাটা ঘুড়ির পেছনে আমি বাদে আর ছেলেপুলে,
দেখি, খুব করে দৌড় দিয়েছে সকলে মিলে।
পেয়ে গেলে, মুখে স্বর্গ জয়ের হাসি নিয়ে ফিরেছে,
ঐ হাসি মুখ গুলো দেখেই যে আমার মনটা ভরেছে।
