অ্যাম্বিশন
অ্যাম্বিশন


কনভেন্টের সিস্টেমেতে দম করে হাঁশফাঁস--
মা বলেছে, শিখতে হবে - - এটাই সোশ্যাল ক্লাস।
সকাল হলেই পেট গুরগুর, ভয়েই গলা কাঠ
মা বলছে, "কাম অন বাবু হতেই হবে স্মার্ট" !
সন্ধ্যা বিকেল মিলিয়ে মোট আটটা টিউশন
খেলেধুলো অতীত এখন, মন্ত্র শুধুই- গো অন
বদল এখন ঘরের মাঝেও, মা হয়েছে মাম্মা,
ভুলেই গেছে দাদুর আদর, স্নেহের পরশ, ঠাম্মা।
রুটিন মাপা জীবন এখন, দৌড়ে চলো সামনে
"পারতে তোমায় হবেই হবে, ক্যা নেহি কিয়া হামনে!"
টাকার হিসাব জমিয়ে রাখে, স্বপ্ন বিকোয় নিঃস্বে-
ব্যবসা যেন, লাভের শেষে সুদের ফসল দিক সে।
একটু যদি মার্কস কমেছে, লজ্জা ভীষণ লজ্জা!
পরের বারে এমন হলে বন্ধ বাড়ির দরজা।
এমন করেই ছুটছিল সব, যেমনি ঘোড়া রেসের মাঠে
ঘড়ির কাঁটায় লাগাম দিয়ে, বাধ্য ছেলের জীবন কাটে।
বোর্ড এক্সাম সামনে যখন, দিন রাত সব বইয়ের ফাঁকে
এই তো সময় একটু খেটে সাজিয়ে ফেলো জীবনটাকে।
"আমার বাবু খুব সিরিয়াস, পড়াশোনায় দারুণ মাথা
র্্যাঙ্ক করাটা ব্যাপারই না, ফার্স্ট হওয়াটাই আসল কথা"
মায়ের এমন বাক্য শুনে বাবুর মাথায় বজ্রপাত
বাবাও বলেন, রেজাল্ট আসল - - বাদ বাকি সব যাক নিপাত।
বাবা-মায়ে টেক্কা দিয়ে করছে ছেলের টার্গেট সেট
ছেলের চোখে সর্ষে ফুল আর মাথার ভেতর ডিহাইড্রেট!
পরীক্ষা শেষ, ক্লান্ত ভীষণ-- তবুও কোনো রেহাই নেই
রুটিন মাপা জীবন ছিল, আবারও ফের দৌড় সেই।
আসছে কমে দিনের হিসাব উত্তেজনার পারদ হাই
ডেডলাইনের আতঙ্কেতে ছেলের চোখে ঘুমটি নাই।
যদি না হয় স্বপ্নপূরণ, কোথায় যাবে কার কাছে?!
বন্ধ হবে দরজা বাড়ির, বাবার নোটিশ দেওয়াই আছে।
সেদিন ভোরে বাঁধল দড়ি ফ্যানের সাথে বেশ কষে
হারিয়ে গেল হারার আগেই, মিথ্যা নিছক ভয়ের বশে।
হেডলাইনে নাম জ্বলজ্বল, সত্যি সবার অভিলাষ
প্রথম হওয়া ছাত্র কোথায়? বরফ চাপা মর্গে লাশ!