অন্তহীন
অন্তহীন
চোখের ঝাঁঝ, মাথার শিরা ফুলে ওঠা
অগ্রাহ্য করে তাকানো যায় না বেশিদূর,
জমিজিরেত মড়ক লাগা গাঁয়ের মত ফাঁকা;
সূর্যদেবের আশীর্বাদ নয়,এবার নিষ্ঠুর নির্মম
অন্তহীন চাবুক আছড়ে পড়েছে দিকে দিকে।
এক কণা দানা ভেজেনি রুক্ষ মাটিতে,
তাই শুকনো ফাটল বেয়ে উঠে আসছে কেঁচোর দল,
বাস্তু থেকেও বাস্তুহারা,তুচ্ছ,অসহায় প্রাণের হাহাকার ;
জ্বলে যাওয়া মরসুমে চাতকের আশা বোধহয় বৃথা।রঙিন আসরে তবু ফোয়ারা ছুটবে, ফুর্তির জোয়ার,
শূন্য বুকে রক্ত ফ্যাকাশে, দিশাহীন রানারের
মত দৌড়াদৌড়ি করে হাঁপিয়ে যাবে শেষমেশ।
ফোয়ারার নেশা ফুরোলে দেখতে পাবে,
ওই কেঁচোর মিছিলের মত মানুষ বেরিয়েছে পথে,
তোমার সুবিশাল ধানের গোলা,বাহারি বাগান, পুকুর, মাছ,
ঠিক লঙ্কার মত পুড়বে, ঝাঁপি হোক বা ভারী সিন্দুক;
তার জন্য কোনো ভেদাভেদ হবে না দেখো।
ওরা কঙ্কালসার শরীর,কোটরাগত চোখে,
সাক্ষাৎ মূর্তিমান অভিশাপের মত ঝিম ধরা
খিনখিনে গলায় বলে উঠবে, ভাত নেই, ভাত নেই!
পাঁজরের স্বচ্ছ নকশায় পরিহাস করবে
অদেয় খাজনার হিসাব, আরো যা কিছু বাদবাকি।
অবসন্ন, প্রেতসদৃশ লিকলিকে আঙুল নিয়েও
তারা আঙুল তুলবে, তোমার কারণসুধার পাত্র
উপচে গেলেও আর আগুন নেভাতে পারবে না!
প্রস্তুতির সময় তুমি পাবে না, যেমন পায়নি ওরা,
শেষের সে দিনে আশ্রয়ের প্রশ্নে পাতালও নেবে মুখ ফিরিয়ে,
মাটির কাছে আমাদের অনেক ঋণ, মাটিই ফিরিয়ে নিতে জানে।