Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Manab Mondal

Abstract Crime Inspirational

2.0  

Manab Mondal

Abstract Crime Inspirational

কালো বলে ভালো

কালো বলে ভালো

5 mins
169


মাম্পী গজ গজ করতে করতে বললো "শালা বলে না , বাঁশের চেয়ে কঞ্চির দর বেশি। রফিকুল চাচার বেশি বেশি। শেঠ কি আমাদের বার্থ সার্টিফিকেট দেখতে চাই তো যে। আমাদের নিয়ে গেলে কি হতো?? আগে বছরের শেঠ দারুন খাইয়েছিলো বল্ল শিউলি.."


শিউলি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বললো " আবার পাঁচশো টাকা করে প্রনামী দিয়ে ছিলো । তোর জন্য আমিও কেস খেলাম। কে বলেছিলো ঐ সব তেল মেখে লাউএর মতো বুক বানাতে? নয়তো ব্যাটে আমরাও কুমারী হিসেবে ঠিক সিলেক্ট হয়ে যেতাম।"

বস্তির মেয়ে ওরা। ওদের মুখের ভাষা ওরকম। কৃষ্ণা ওদের কথা শুনেছিলো মন দিয়ে, আগের বছর থেকে কৃষ্ণাও যদিও বাতিল হয়ে গেছে। নবরাত্রি দিন বাবুলাল শেঠ ওদের বস্তি থেকে তেরো বছরের নীচে কুমারী মেয়েদের নিয়ে যায়। মা দূর্গা হিসেবে পূজা করে। নতুন জামা কাপড় দেয়, ভালো ভালো খেতে দেয়। আবার টাকা দেয়। হঠাৎ বড় হয়ে যেতেই ও বাতিল।

মাম্পি একটু চাপা সুরে বললো " ঐ ক্রীমটা দিদি এনেছে আসলে জানিস। বেচারি কতো ছোট থেকে কাজ করে বিয়ে জন্য টাকা জমালো। লাল্টু দা তো ওকে বিয়ে করবে বলেছিলো।ওর সাদা মনে কাদা নেই। ও বিশ্বাস করে ছিলো। ওর থেকে টাকা নিয়ে সৌদি আরবে কাজে গেলো । আর এখন শালা যোগাযোগ করে না। এখন ঘট মাসি বলছে ওর শরীরে মাংস টাংস নেই , ওর জন্য পাত্র পাওয়া মুশকিল। আমি তাই আগে থেকেই ওই ক্রীমটা লাগাচ্ছি।যাতে আমার বিয়ে হোতে কোন প্রব্লেম না হয়।"

কথা শুনে তিরিং করে লাফিয়ে কৃষ্ণা গেলো ওদের কাছে বললো " হ্যারে তোর ঐ বুক বাড়ানোর ক্রীমটা নাম বলল না মাম্পী।".

ওরা হো হো করে বিচ্ছিরি হাসি হাসলো। আর বলো " তুই যতো ক্রীম মাখিস। তোর কপালে ওই বিশু জুটবে । অন্য কেউ ঘাস দেবে না তোকে।"

শিউলি তো আরো অসভ্য বললো " বিশু দাকে বলিস ও বড়ো করে দেবে।"

এই জন্য ওদের সঙ্গে কথা বলতে চায় না কৃষ্ণা। তবে সত্যি ওদের কত ছেলে টোন করে , কিন্তু ওর দিকে কেউ তাকাও না। বিশুদাকে নিয়ে ওরা উল্লটো পাল্টা যাই বলুক, ছেলেটা খুব ভালো। ওর থেকে বছর দশেকের বড়ো । কলেজ পড়া শেষ করেছে সবে। এখন এখানে এসে ছেলে মেয়েদের পড়ায়। বিশু দা একটু অন্যরকম কথা বলে। বলে " তুই কালো মেয়ে তো কি হয়েছিস তোর! পড়াশোনা কর ভালো করে। নিজের পায়ে নিজে দাঁড়া, তোকে ছেলেদের পছন্দ করবে মানে? তুই ছেলেদের নির্বাচন করবি, যেমন আগে রাজকন্যারা করতো।"

কৃষ্ণা ও বড় হবার স্বপ্ন দেখে কিন্তু ওর তো বাবা নেই । মা যদি ওর পড়াশোনা না করায়। ওর ভয় হয়। এ বস্তিতে অনেক মেয়ের তো আঠারো না হতে হতেই বিয়ে হয়ে যায়।

তবে বিশু বলে "আমি যখন পেরেছি তুইও পারবি।"

কৃষ্ণার তবু বাবা ছিলো। কিন্তু বিশুদা নাকি কোন দিন ওর বাবাকে দেখে নি। রোজ রাতে ওর মায়ের কাছে একটা লোক আসতো , মায়ের ঘরে থেকে অনেক অদ্ভুত আওয়াজ আসতো। কিন্তু ও বড় হতে বুঝতে পারছিলো ওর মায়ের কাছে একটা নয় অনেক গুলো লোকই আসতো। ওর মা ওকে পড়াশুনা করনোর জন্য পরে, যদিও একটি আশ্রমে রেখে এসেছিলো। কিন্তু বিশুদা চেষ্টা করেও ওর মাকে ঘৃণা করতে পারে নি। কারণ ওকে মানুষ করার জন্য, ওর মা অনেক কষ্ট করেছে। যেমন কৃষ্ণার মা করে। কিন্তু কৃষ্ণা ওর বাবাকে ঘৃণা করে।

কৃষ্ণার মা সাক্ষাত দূর্গা দেবী। একা হাতে সংসার চালায়। দেখা শোনা করেই বিয়ে ওর মা বাবার। ওর বাবা নাকি ভালো পড়াশোনায় ছিলো। একটা কোম্পানিতে ম্যানেজার ছিলো। ভালো মাইনে পত্তর পেতো একটা সময়। কৃষ্ণা ছোট বেলায় এই বস্তিতে থাকতো না। ও জন্মাবার পর পর বাবার কারখানা বন্ধ হলো হঠাৎই । ওর বাবা নাকি কাজ হারানোর শোকেই তখন মদ খাওয়া ধরলো। ভালো চাকরি জুটছিলো না , তাই লটারি টিকিট কেটে ভাগ্য বদলানোর চেষ্টা করতে থাকলো। কিন্তু ভাগ্য প্রসন্ন হতো না কখনোই। কিন্তু সেই রাগে এসে ওর বাবা ওর মাকে পেটাতো। পরে একদিন পথ দূর্ঘটনায় ওর বাবা মারা গেলো। ও কিন্তু সেইদিন ওর বাবা জন্য একটুও চোখের জল ফেলে নি। কারণ ওর বাবা তো ওর জন্য অন্যদের বাবাদের মতো কিছুই করে নি। যা করতো ওর মা করতো। ওর মা দূর্গার মতো লড়াই করেছে সংসারে জন্য। ওর বাবা শিব ঠাকুরের মতো নেশা করতো, আর বাচ্চা পায়দা করতো। ওর নীচে এখনো একটা বোন আছে ভাই আছে। ভাইকে নিয়ে মা চিন্তা করে না। কিন্তু বোনকে নিয়ে দিদিকে নিয়ে ওকে নিয়ে চিন্তা করে। কিভাবে বিয়ে দেবে সে তিন তিনটে মেয়েকে? ভাবে মেয়েরা কি সত্যি পরিবারের বোঝা! অথচ এ সমাজে তো পরিবারের সুখ শান্তির জন্য মেয়েদেরই পূজা করে।

ও নিজের মতো দূর্গা পূজা দেখতে বেরিয়ে গেলো। শিউলি , মাম্পিরা বয় ফ্রেন্ড জোগাড় করেবেই এ বছর। প্রেম করে বিয়ে করলে ছেলেরা তেমন দাবিদাবা করে না। বাপ মায়ের পয়সা বেঁচে যাবে। কৃষ্ণা ভাবে ও ওরকম বিয়ে করবে না। ও আগে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। কোন ছেলেকে ওর জীবনের মালিক হতে দেবে না। তাই ওদের সাথে ও যাবে না। তাছাড়া রফিকুল চাচা ওদের দুইজন কে কিছু টাকা দিয়েছে। বলেছে শেঠের বাড়িতে যেতে একটু রাতের দিকে। শেঠের ছোট ছেলে ওদেরকে ডেকেছে। ওকে ডাকে নি বলে ওর দুঃখ হলেও ও চাপ নেয় নি। দূর্গা পূজার সময় কলকাতা শহরে উৎসবের মেজাজে কারো মন খারাপ থাকে নাকি? চারদিক থেকে ঢাকে বাদ্যি। খাবারের গন্ধ। আলো ঝলমলে শহর , মনের মধ্যে সব দুঃখের অন্ধকার দূর হয়ে যায় নিমিষেই।

রাত কেটে ভোর হলো । বেলা হয়ে গেছে অনেক, শিউলি আর মাম্পির কোন খোঁজ খবর নেই। সবাই খুব চিন্তিত ছিলো। কিন্তু মাকে তো বিদায় দিতে হবেই। দেখতে দেখতে সন্ধ্যাও হয়ে গেলো। ওদের পরিবারের লোকজন ছাড়া সবাই মিলে মাকে পির পুকুরে বিসর্জন দিতে নিয়ে যাওয়া হলো। মাকে বিসর্জন দিতেই সবার মন খারাপ হয়ে গেলো। আর এই মন খারাপটা বেড়ে গেলো ওদের সবার আরো। মায়ের কাঠামোটা তুলে নেওয়া হয় এখন সঙ্গে সঙ্গেই তাড়াতাড়ি জল থেকে। জল যাতে দুষিত না হয় তার জন্য। এই কাঠামো তুলতে গিয়ে পাড়ার লোকজন আরো দুটো জিনিস পেলো। শিউলি আর মাম্পির লাস। কিন্তু ওদের শরীর জামা কাপড় ছিলো না। শরীরে ছিলো কামড়ানো আঁচরানোর দাগ। কৃষ্ণা কথাতেই রফিকুল চাচাকে ধরা হলো।

মুসলিম মানেই ধর্ষক হতেই হবে। কৃষ্ণা সেটা যদিও মানে না লোভি পুরুষরাই ধর্ষক , ধর্ষকদের আবার ধর্ম আছে নাকি?? কিন্তু আসল কালপিট তো শেঠের ছোট ছেলে আর ওর দুই বন্ধু। রফিকুল চাচা তো শুধু উৎচ্ছিঠে ভাগ পেয়েছিলো। কিন্তু রফিকুল চাচার শুধু নাকি সাজা হবে কারণ ও গরীব। বাকি তিন জনের বয়স আঠারো হয় নি ঠিক ছাড়া পেয়ে যাবে সবাই বলছিলো। আসল শাস্তি পেলো তো মাম্পি আর শিউলি। ওদের অপরাধ ওরা মেয়ে।

যদিও কৃষ্ণার মা বললো " মা দূর্গা কৃষ্ণাকে বাঁচিয়েছে। ভাগ্যিস কৃষ্ণা কালো নয়তো ঐ অসুর গুলোতো। কৃষ্ণাকে ধর্ষণ করতো।"

কৃষ্ণাও ভাবলো সত্যি সে কালো বলে বেঁচে গেলো।

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract