যেদিন আমার ঈর্ষা হয়েছিল।
যেদিন আমার ঈর্ষা হয়েছিল।


ঘটনাটি আজ থেকে বছর আঠের আগে। দূর্গা পূজা সবে শেষে হয়েছে। পাড়ার মোড়ে আড্ডার ঠেকে মোটামুটি সবাই হাজির। বিশুদা হঠাৎ বলে উঠল,...
আগামীকাল রতনদার চায়ের দোকানে কালীপুজোর মিটিং টা শেরে ফেললে কেমন হয়?
আমরা সমস্বরে সহমত জানালাম।
পরদিন সন্ধ্যায় আমরা কজন ঠেকের সকল মেম্বারদের নিয়ে , বিশুদার সভাপতিত্বে আসন্ন কালীপুজোর মিটিং শুরু হয়। গতবছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব, পুঁজির বাজেট, কমিটি গঠন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার পর ঠিক হল দক্ষিণেশ্বরের কালী মন্দিরেরে অনুকরণে তৈরি হবে আমাদের শোলার প্যান্ডেল। সেইমত প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেল নুতন উদ্যোগে। আমাদের প্রস্তুতির খবর পেয়ে পাশের মোড়ের ঠেকের ভাইভাই সংঘের ছেলেরাও তাদের পুজোর প্রস্তুতি শুরু করে দিল।
টানা বেশকিছুদিন অক্লান্ত পরিশ্রমের পর তৈরি হল আমাদের আকাঙ্খিত কালী মায়ের প্যান্ডেল। আমাদের চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভাইভাই সংঘেরে পুজোর প্যান্ডেল ছিল প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের অনুকরণে।
পুজোর দিন আকাশ হালকা মেঘলা। সন্ধের দিকে প্যান্ডেল তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হল। সারারাত ধরে পুজো হল। খুব আনন্দ করলাম সকলে। পুজো শেষে ক্লান্ত শরীরে ঘন্টা কয়েকের জন্য বাড়ী যাই। হঠাৎ একটা ঝড় ওঠে, থামতেই দ্রুত পায়ে গিয়ে দেখি আমাদের প্যান্ডেল ঝড়ে লন্ডভন্ড। অথচ পাশের ভাইভাই সংঘের আইফেল টাওয়ার কোন দৈব কারণে মাথা উঁচু করে স্বমহিমায় মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে।
চোখে জল চলে এসেছিল সেদিন। দুঃখ কষ্টের সাথে সাথে ঈর্ষাও হয়েছিল খুব।