Debdutta Banerjee

Classics

3  

Debdutta Banerjee

Classics

স্নেহ যখন অন্ধ

স্নেহ যখন অন্ধ

8 mins
472


বসার ঘরের ঘড়িতে ঢং ঢং করে আটটা বাজল। অয়ন আজ তাড়াতাড়ি ফিরবে বলেছিল। কিন্তু শেষ দু ঘন্টায় ফোন তোলেনি। দিঠি আস্তে আস্তে এসে বারান্দায় বসে। তিনদিন আগে পা মচকে লিগাম‍্যান্টে চোট নিয়ে ও এখন গৃহবন্দী। আজ অয়নের চাইনিজ খাবার আনার কথা।তাই রান্না করেনি ও। হঠাৎ মুঠো ফোনটা নিজের অস্তিত্ব জানান দিয়ে বেজে ওঠে। অয়নের ফোন। ও ফোনটা নিতেই অয়ন জানায় একটা বাজে কেসে ফেঁসে রয়েছে বাড়ি কখন আসবে ঠিক নেই। দিঠি যেন খেয়ে শুয়ে পরে। খাবার আনার কথা যে ও বেমালুম ভুলে গেছে বুঝতে পারে দিঠি। কি কেস জিগেস করতেই অয়ন জানায় টিভিতে লাইভ দেখাচ্ছে ঘটনাটা। বিখ‍্যাত ব‍্যবসায়ী জাভেরি জির বাড়ির ঘটনা।

পা টাকে সাবধানে ফেলে ঘরে এসে টিভি চালায় দিঠি। আজকাল এই হয়েছে এক নতুন নিয়ম। খবরের চ‍্যানেল গুলোর এই এক মজা, একটা খবর কে এক্সক্লুসিভ বলে বার বার দেখাবে। দ্বিতীয় খবর না আসা পর্যন্ত ওটাই গুরুত্ব পাবে। সব চ‍্যানেলেই দেখাচ্ছে খবরটা। সবার দাবী একমাত্র তাদের চ‍্যানেলের খবর ইউনিক, সবার চেয়ে আলাদা। বেশ কয়েকটা চ‍্যানেল ঘুরিয়ে দিঠি খবরটা শোনে। অয়নদের চ‍্যানেল ও একই খবর করেছে। নতুনত্ব কিছুই নেই। জাভেরি জির বিধবা স্ত্রী রমাদেবী থাকেন ওদের বাংলোর পাশেই গঙ্গার লাগোয়া একটা ছোট বাংলোতে, আউট হাউস মত। একদম গঙ্গার ধারে কারণ উনি রোজ গঙ্গা স্নান করেন। একটি কাজের মেয়ে বাবলী আছে ওনার দেখাশোনার জন‍্য। এছাড়া কাজের ও রান্নার লোক আছে। আজ দুপুরে এক অনুষ্ঠান বাড়িতে গেছিলেন উনি, বিকেলে ফিরেছেন। কানে পরেছিলেন দুর্মুল‍্য হীরার আ্যন্টিক এক জোড়া দুল। ফিরে দুলটা খুলে ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে রেখেছিলেন। ভেবেছিলেন কাপড় ছেড়ে পরে লকারে তুলবেন। সন্ধ‍্যায় দেখেন দুল নেই। বাড়িতে সর্বদা কাজের মেয়ে বাবলী আর রাধুনী উষা ছাড়া কেউ ছিল না। দু জনেই ওনার ঘরে এসেছিল। ওরা ছাড়া আর কেউ নেয়নি। কিন্তু কেউ স্বীকার করছে না। রাধুনীটির তিন কুলে কেউ নেই। এই বাড়িতেই আছে তিরিশ বছর। অন‍্য মেয়েটি চার বছর হল কাজ করছে। সন্দেহর তিরটা ওর দিকেই বেশি। কিন্তু সারা বাড়ি খুঁজে চোরাই মাল পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ কেউ বাড়ির বাইরে যায় নি। পুলিশের বিশ্বাস ঘরেই রয়েছে দুল জোড়া। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন গুছানো বাড়ি এখন পুলিশের অত‍্যাচারে লন্ডভন্ড। বাথরুম থেকে রান্নাঘর দুলের খোঁজে মশলার কৌটা থেকে লিকুইড সোপের বোতল , চালের টিন থেকে আটার কোটা কিছুই বাকি রাখেনি পুলিশ। এমনকি ফুলের টব উপরে, কুশন ছিড়েও দেখা হয়েছে। এর সাথে দফায় দফায় জেরা করা হয়েছে বাবলী আর ঊষাকে। কিন্তু পুলিশ এক পা ও এগোতে পারেনি কেসটায়। অয়নের আশা ছেড়ে দিঠি এক কাপ কড়া ব্ল্যাক কফি আর কুকিজ নিয়ে বসে। সন্ধ‍্যায় পাশের ফ্ল্যাটের বৌদি কড়াইশুটির কচুরী আলুর দম খাইয়েছিল তাই খিদা তেমন নেই। একটা নাম করা চ‍্যানেল বিজ্ঞ লোকজন কে নিয়ে এই ঘটনার বিশ্লেষনে নেমেছে। কলকাতা পুলিশ কে তুলোধোনা করছে কিছু লোক, কেউ জাভেরিদের ব‍্যবসা কতটা সৎ অসৎ এসব প্রসঙ্গ টেনে আনছে। কেউ আবার কাজের লোক ও রাধুনীর পক্ষ নিয়ে চেঁঁচাচ্ছে। গরীব বলে ওদের হেনস্থা করছে পুলিশ একথাও উঠে এসেছে।

দিঠি টিভিটা অফ করে অয়ন কে ফোন করে। অয়ন জানায় এই মুহুর্তে ঠাকুর ঘর তল্লাসী চলছে। জাভেরিদের দুই ভাই প্রসুন আর শ্রমণ উপস্থিত হয়েছে । হীরার দুল দুটো নাকি বহু পুরানো, হারদ্রাবাদের নিজামের জিনিস। পারিবারিক সম্পত্তি। এর সাথে ওদের পরিবারের ঐতিহ‍্য এবং সৌভাগ‍্য জড়িত। দিঠি অয়ন কে বলে জাভেরিদের ব‍্যবসা কেমন চলছে, দুই ভাইএর মিল কেমন , ওদের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নিতে। আর বাবলীকে কে কাজে ঢুকিয়েছিল তাও খোঁজ নিতে। অয়ন একটু পরেই জানায় জাভেরিদের ব‍্যবসার অবস্থা এই মুহুর্তে টলমল। দুই ভাইয়ের তেমন সদ্ভাব নেই। বড় ভাই প্রসুন প্রোমোটিং ব‍্যবসায় মার খেয়েছে কয়েক কোটি। ছোটভাই শ্রমণ অবশ‍্য ট্রান্সপোর্ট ব‍্যবসাটা করে দাঁড়াতে চাইছে। তবে লোন প্রচুর বাজারে।দিঠির চোখে ঘুম নেই। পায়ের জন‍্য ঘটনাস্থলে যেতে না পারলেও ওর মন এখন ঐ বাড়িতেই। টিভিতে দেখে দেখে পুরো বাড়ির ম‍্যাপটাও মুখস্ত হয়ে গেছে। কিন্তু একটা বাড়িতে দুটো হীরার কানের খোঁজা আর খড়ের গাদায় সূচ খোঁজা প্রায় এক রকম।এমন একটা কেস ওর মনে পড়ছিল যেখানে ঘরে ধোঁওয়া দিয়ে আগুন লেগেছে বলায় অপরাধী চোরাই মাল সহ পালাতে গিয়ে ধরা পড়েছিল। তবে ওটা শেষ অপশন। আপাতত মাথাটা খাটানো যাক। ঘরে বসে বসে বুদ্ধিটা কেমন জমে যাচ্ছিল। প্রথমেই অয়নকে বলে ঐ বাড়ির পুরো ভিডিওটা হোয়াটস আপে আনায়। যে পুলিশ অফিসার ইনভেস্টিগেশন করছে সে দিঠির চেনা। অয়ন ক্রাইম জার্নালিষ্ট হওয়ায় এবং দিঠি যেহেতু এসব ব‍্যপারে উৎসাহ রাখে ওদের সবাই চেনে। উত্তর কলকাতার বাগবাজারের ইন্সপেক্টার বর্মণকে দেখে দিঠি খুব খুশি হয়। ভদ্রলোক খুব সুন্দর ইন্টারোগেট করেন। ওনাকে ফোন করতেই দিঠি দুই কাজের লোক সহ বাড়ির সবাইকে জেরা করার ভিডিও পেয়ে গেছিল। আজকাল দিঠি অবসর সময় অপরাধিদের মনস্তত্ত নিয়ে পড়াশোনা করছে। ওদের নড়াচড়া কথা বলা চোখের দৃষ্টি এসব খেয়াল করেও অনেক কিছু বোঝা যায়। ল‍্যাপটপে ভিডিওটা মনোযোগ দিয়ে দেখতে দেখতে কয়েকটা জায়গা ভালো করে খেয়াল করল দিঠি। রমা জাভেরি এবং ওনার দুই ছেলের জবানবন্দি বার বার শোনে ও। অয়নকে ফোন করে জেনে নেয় দিঠি যে বাবলীকে জাভেরিদের ছোট বৌ কাজে ঢুকিয়েছিল। আর ঊষা তিরিশ বছর ধরেই রয়েছে, ঢুকেছিল বড় ছেলের আয়ার কাজে। ও একসময় প্রসুন জাভেরিকে কোলেপিঠে করে মানুষ করেছে। হঠাৎ একটা কথা মাথায় আসে দিঠির। ভিডিও টা বেশ মন দিয়ে দেখে দিঠি। ঊষা রান্নাঘরের পাশের ঘরে থাকে। আর বাবলী বৃদ্ধার ঘরেই শোয়, ওর জিনিস থাকে পাশের ছোট ঘরে। তবে ঐ ঘরে ওর একটা বাক্স আর একটা ব‍্যাগ ছাড়া কিছুই নেই। ঊষার ঘরে ওর খাট, বিছানা, আলমারী, ছোট্ট ঠাকুরের আসন, একটা টেবিলে পুরানো একটা টেডি বিয়ার (আপাতত তুলো বার করে পুলিশ সেটা ঘেঁঁটে রেখেছে), দুটো ফুলদানি, একটা মাটির ঘট, দুটো বাচ্চার বহু পুরানো ফটো, কয়েকটা মাটির পুতুল, একটা নারকেলের তৈরি বাঁঁদর এমন খুচখাচ অনেক কিছু ছিল। আসলে এটাই ওর বাড়ি, যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। রান্না ঘরের মশলার কৌটা লন্ডভন্ড, নোংরার ঝুড়িতে কিছু আলুর খোসা, চাপাতার প‍্যাকেট, দুধের প‍্যাকেট, লবনের প‍্যাকেট, একটা ফেবিকলের টিউব, দুটো ছেড়া খাম, মিষ্টির বাক্স, সব ভিডিও করা হয়েছে।দিঠি নিজের পা টার দিকে তাকায়, দেখে ঘড়িতে রাত সাড়ে এগারোটা, অয়নকে বলে সে একবার যেতে চায় ঐ বাড়ি। বর্মণদা শুনে খুশি। এর আগেও দিঠি ওনাকে হেল্প করেছে। কিছুক্ষণের মধ‍্যেই ওলা নিয়ে পৌঁছে যায় দিঠি। রাতে আজকাল যাতায়াতের বেশ সুবিধা হয়েছে।

লন্ডভন্ড ঘরের মাঝে বসে রয়েছে ছোট ছেলে শ্রমণ, বড় ছেলে শুতে গেছে মায়ের ঘরে। বৃদ্ধা রমাদেবী আপাতত শুয়েছেন একটু। বর্মনদা অয়ন আর দু জন পুলিশ রয়েছে বসার ঘরে। দুটি মহিলা কন্সটেবল ও ছিল । দুটো চ‍্যানেলের ওবি ভ‍্যান রয়েছে বাইরে।ওদের মেইন রিপোর্টাররা হয়তো ঘুমিয়ে নিচ্ছে ভ‍্যানে। দিঠিকে চেনে সবাই। তাই নড়েচড়ে বসল ওদের রিপোর্টাররা। তবে পুলিশ আর ঢুকতে দিল না ওদের এত রাতে। বাড়িটা ভাগ‍্যিস একতলা, পআ টা টেনে হাঁটছে দিঠি। পিছনেই গঙ্গা, নিজস্ব সিঁড়ি রয়েছে। ভালো ব‍্যবস্থা। দিঠি প্রথমেই বাবলীর সাথে দু একটা কথা বলে নেয়। তারপর রাধুনী ঊষাদিকে ডেকে নেয় তার ঘরে। ঘরটা ভালো করে ঘুরে প্রতিটা জিনিস উল্টে পাল্টে দেখে।ঘটে কয়েন ছাড়া কিছু ফেলা সম্ভব না, মাটির পুতুল গুলো সলিট, ফাঁপা নয়, ফুলদানী খালি। তোষক বালিশ সব পুলিশ চেক করেছে। এসব দেখতে দেখতে দিঠি জোরে জোরে শ্বাস টানছিল। ওর মুখে হালকা হাসি ফুটে ওঠে। দিঠি ঊষাদি কে ডেকে বলে -"আমি জানি তুমি নিজের জন‍্য ওটা নাও নি। কাউকে দিতে চেয়েছিল। চুরি না করে মাসিমাকে বললে হতো না। "-"আমি জানি না আপনি কি বলছেন। "ঊষাদির দৃষ্টি স্থির। -"মাসিমা জেরায় বলেছেন যে তুমি ওটা বড় ছেলেকে দিতে বলেছিলে বহুবার। ওনার আক্ষেপ তোমার কথা শুনলে চুরি যেত না হয়তো।" দিঠি মিষ্টি করে হাসে। বলে -"আমি জানি ওটা কোথায় আছে? তুমি বার করবে নাকি আমি বার করবো?''অয়ন আর বর্মন দা নিজেদের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে। রমা জাভেরি উঠে এসেছেন আবার। বাবলীও দরজায় উঁকি দেয়। শ্রমণ জাভেরি মাকে ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ঊষাদি চুপ, মাথা নিচু করে বসে থাকে। দিঠি বলে -"মিসেস জাভেরী আপনার জিনিস চুরি হলেও পরিবারের মধ‍্যেই থাকত। ঊষাদি ওটা নিয়েছিল আপনার বড় ছেলেকে দেওয়ার জন‍্য। অবশ‍্য এতে প্রসুন জাভেরির ইন্ধন বা প্ল্যান ছিল কিনা জানি না। তবে মনে হয় ছিল না। তাহলে ওটা সন্ধ‍্যায় হস্তান্তর হয়ে যেত। আসলে ঊষাদি আপনার বড় ছেলের আয়া ছিল। ছোট ছেলের জন্মের পর বড় ছেলে ওর কাছেই মানুষ শুনলাম। খুব ভালোবাসে উনি আপনার বড় ছেলেকে। ইদানীং ওঁঁর ব‍্যবসায় মন্দা যাচ্ছিল। ঐ হীরা আপনাদের পরিবারের মঙ্গলের প্রতিক, সৌভাগ‍্য বয়ে আনে শুনেছি। তাই ঊষাদির মনে হয়েছিল ওটা ওর কাছে গেলে ওর ভালো হবে। তাই...."-"অনেক কিছুই বললেন আপনি। কিন্তু জিনিসটা কোথায় ? সবটাই তো মনগড়া গল্প মনে হচ্ছে। আপনি খুব ভাল লেখেন শুনেছি। '' বলতে বলতে ঘরে ঢোকে বড় ছেলে প্রসুন জাভেরি।-"আসুন, আসুন। সব আছে। আগে বলুন তো এই দুল নিয়ে ঊষাদির সাথে আপনার কথা হয়নি আগে? ও চাইতো দুলটা যেহেতু সৌভাগ‍্য বয়ে আনে ওটা আপনার ঘরে যাক।'' দিঠির চোখ জ্বলে ওঠে। -''তার থেকে প্রমান হয় না যে ও চোর। এটা গল্পগাছার জায়গা নয়। যদিও আপনি পুলিশ নন। তবুও এত কথা বলছেন যখন প্রমান দিন আগে। '' প্রসুন জাভেরি বেশ জোরেই চিৎকার করে ওঠেন। দিঠি টেবিলের দিকে এগিয়ে যায়, হাতে তোলে একটা ফুলদানী, রেখে তুলে নেয় টেডিটা, একটু হেসে রেখে দেয়। বাচ্চাদের ফটোটায় দুই ভাইকে চেনাই যায় না প্রায়। বিবর্ন ফটো। ওটা হাতে নিয়ে দিঠি লে ওঠে, -"যশোদা মা ও স্নেহে অন্ধ ছিল। ''আবার ঊষাদির দিকে তাকিয়ে নারকেলের বাঁদরটা তুলে নিতেই ঊষাদি ছিটকে উঠে দাঁড়ায়। ওর দু চোখে জল। -"আচ্ছা, এর পেটে তো জল থাকার কথা, জলশুদ্ধু নারকেল দিয়ে এটা বানায় শুনেছি। এটার পেট খালি কেন? "-"জ..ল , জল ছিল তো ওটায় , কেরালা থেকে এনেছিলাম ওটা গতবছর।" বলেন মিসেস জাভেরী।-''কিন্তু এখন নেই, একটু দেখি তো,'' পাথরের চোখদুটো খুলে ফেলে দিঠি। অন্ধ বাঁদরটাকে হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে দেখে বলে দিঠি -"স্নেহ ভীষন অন্ধ। গান্ধারীর কথা মনে পরে যাচ্ছে। ধৃতরাষ্ট্র ও স্নেহান্ধ ছিল। " -"চোখের ভেতরে গর্তে আঠা দিয়ে পাথরটা লাগিয়েছিল কেউ, এখনো ফেবিকলের গন্ধ চোখের পাথর দুটোয়," ভেতরে সেলোটেপ দিয়ে আটকানো কানের দুটো। দিঠি টেনে বার করে আনে। আলোয় ঝলমল করে ওঠে নিজামের হীরার দুল। দিঠি বলে -'' ময়লার ঝুড়িতে ফেবিকলের টিউব দেখে খটকা লেগেছিল। এই ঘরে ঢুকেও হালকা ফেবিকলের গন্ধ পাই। ফাঁঁপা জিনিসের ভেতর ওগুলো চিপকে রাখার জন‍্য, আর চোখটা আটকানোর জন‍্য ঐ ফেবিকল ব‍্যবহার করা হয়েছিল বুঝেছিলাম। আর এই বাদরগুলোর পেটে জল থাকে। দুল রাখতে গিয়ে জল বার করে ফেলা হয়েছিল। ''

ঊষাদি বলে -"এটা সত‍্যি প্রসুনের দরকার, ওর ব‍্যবসার যা অবস্থা....''-"তাই বলে তুই চুরি করবি, ওকে যা যা দিয়েছি সব বেচে খেয়েছে। বৌ এর গয়নাও সব শেষ। এটা দিলে এটাও বেচে ফেলত। তোর হার, চুরি, কানের যে টুকু ছিল দিয়েছিলি তো ওকে? কোথায় সে সব? তাই বলে তুই এভাবে....'' কাঁঁপতে থাকেন রমা দেবী। শ্রমন ওনাকে বসায়। বর্মনদা ভেবে পায় না ঊষাকে এরেষ্ট করবে কি না, একপা এগিয়ে দাঁড়িয়ে যাযন। ঘরে সবাই চুপ। প্রসুনের চোয়াল ঝুলে পড়েছে। ধপ করে বসে পড়ে একটা চেয়ারে। দিঠি আর অয়ন বাইরে বেরিয়ে আসে ধীরে ধীরে। বাকিটা ওদের পারিবারিক ব‍্যাপার। বাইরে রয়েছে বাকি সাংবাদিকের দল খবরের আশায়। জাভেরিরা কতটা কি বলবে সেটা ওদের ব‍্যাপার । আপাতত ওলা বা উবের প্রয়োজন। এবার ক্লান্ত লাগছে ভীষন দিঠির। কাল ডাক্তার দেখাতে হবে আবার। রাত দেড়টা, বাড়ি ফিরে একটা ঘুম খুব দরকার।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics