Drishan Banerjee

Thriller Crime

3  

Drishan Banerjee

Thriller Crime

সিল্ক-রুট সরগরম ৯

সিল্ক-রুট সরগরম ৯

8 mins
7.5K


বাইরে আবার তুষারপাত শুরু হয়। শীত এবার গিয়েও যাচ্ছে না। ডিউটি অফিসার এবং বেঙ্গল পুলিশের দুই অফিসার সবাইকে আলাদা আলাদা করে পাশের ঘরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করল। দিঠি, অয়ন এবং জিষ্ণু সেখানেই ছিল। একমাত্র রায়ান ও অঙ্কনা জানাল নিজেদের উকিলের সামনে ছাড়া তারা কিছুই বলবে না। উকিল রওনা দিয়েছে গ্যাংটকের জন্য।

 

যিষ্ণুর সাথে আলাদা করে অনেকক্ষণ কথা বলল দিঠি ও অয়ন। হোটেলের মালিক থেকে গাড়ির প্রতিটা ড্রাইভারের সাথে কথা বলল ওরা।

 

একটু পরে সবাই এলো ডাইনিংএ। জিষ্ণু বলল -"স্নোফল বন্ধ না হলে গাড়ি চলবেনা এপথে। এতো লোককে নিতে বেশ কয়েকটা হেলিকপ্টার লাগবে। কথা চলছে। আপাতত দিঠি আমার বান্ধবী, যে এই সিনেমার গল্পটা লিখেছিল সে সময় কাটানোর জন্য আমাদের একটা গল্প বলবে। "

সবাই উশখুশ করছিলো ফেরার জন্য।অনেকেরই এসব আর ভাল লাগছিল না। শালু আর হোটেলের মালকিন বাইরে চলে যাচ্ছিল। পুলিশের লোক আটকে দিল। বেঙ্গল পুলিশের অফিসার বলল যে সবাইকে থাকতে হবে এখানেই। অয়ন সবার দিকে তাকিয়ে বলল -"মদন আর হোটেলের মালিক কোথায়?ওনাদের ডাকুন ।"

মালকিন জানালো ওরা খাবারের ব্যবস্থা করছে সবার। পুলিশের নির্দেশে ডেকে আনা হল ওদের। দিঠি ওর গল্প শুরু করলো।

 

 -" আমি একটা গল্প লিখেছিলাম সিমলার উপর বেস্ করে প্রেমের গল্প। জিষ্ণু সেটাকে চিত্র নাট্যের রূপ দিয়ে সিনেমা করতে নামে। কিন্তু ওর প্রযোজক জৈন ওকে বলে সিনেমাটা সিকিমে করতে। কম বাজেটে সিকিমে শুটিং হতে পারে। বরফ রয়েছে প্রচুর। জিষ্ণুকে মদনের সাথে পরিচয় করায় জৈন। জিষ্ণু লোকেশন দেখে খুব খুশি। পুরো টিম নিয়ে চলে আসে। আমিও গল্পের জন্য আর পাহাড়ের টানে পিছু পিছু আসি। এখানে এসে প্রথম কয়েকটা ছোট ঘটনা ঘটে। আপাতদৃষ্টিতে যদিও মনে হয় ওগুলো নিছক দুর্ঘটনা,কিন্তু আমার সন্ধিগ্ন মন মেনে নেয় নি। প্রথম পাপর ক্ষেতিতে ঝরনার ধারে পাথর গড়িয়ে পড়া, তারপর মৌ এর ভয় পেয়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, গাড়ি দুর্ঘটনা, যাতে নায়ক নায়িকার কিছু হতে পারত, জারিনাকে বিষ দেওয়া, প্রকাশ জিকে বিষ প্রয়োগ, অবশেষে জৈনকে খুন।

এবার পর পর ব্যাখ্যা করি। পাপর ক্ষেতিতে রকি আহত হলেও সাথে ছিল জৈন। রকি ওনাকে না সরালে পাথরটা জৈনের গায়েই পড়তো সেদিন। এটা রকি নিজে আমায় কাল বলেছে।

পরের দিন মৌকে কেউ ডেকেছিল জঙ্গলে। ও কিছু দেখে ভয় পেয়েছিল। মৌএর সাথে এই টিমের কারো একটা ভালো রিলেশন আছে যার নাম আর্ দিয়ে।" এটুকু বলেই দিঠি দেখল মৌ মুখ নিচু করে বসে আছে।

-"আমার যদি ভুল না হয় স্ক্রিপ্ট রাইটার ঋতেশ ওর বন্ধু, টিমের কয়েকজন আমায় এ কথা বলেছে। মৌ কে এই টিমে ঋতেশ এনেছিল। কিন্তু ওরা দুজনেই ঋতেশ করেও উপরে উঠতে পারছিল না। জৈনের শকুনের চোখ। ওর চরিত্র এমনি যে ও মেয়েদের দুর্বলতার সুযোগ নিতে জানে। মেয়ে হলেই হল। ও মৌকে ডেকেছিল জঙ্গলে, আর মৌ জানত যদি ও না যায় এটিম থেকে বিদায় নিতে হবে। ঋতেশ কে জানাতেও সাহস পায় নি। কিন্তু কেউ একজন শুনেছিল জৈনের এ প্রস্তাব। মেয়েটিকে বাঁচাতে ও জৈনকে ভয় দেখাতেই একটা গ্যাস বেলুনের মতো প্লাস্টিকের বেলুনের ভুতুড়ে পুতুলকে ফসফরাস জাতিয় কিছু মাখিয়ে ওখানে উড়িয়ে ছিল সে। সাথে ফোনে ঐ হাসির আওয়াজ। জৈন কে আসতে দেখে ওটা ওড়াতেই মৌ ওটা আগে দেখে চিৎকার করে ওঠে। ওর চিৎকারে বেলুনটি ফাটিয়ে দেয় মৌ এর উপকারী বন্ধু ও জৈনের শত্রু। এরপর আমাদের ভিড়ে মিশে যায় সে। আমরা ওখানে গিয়ে জৈনকে সবার আগে দেখতে পেয়েছিলাম। আমি নাকে গ্যাসের হাল্কা গন্ধ পেয়েছিলাম। পরদিন উপর থেকে দিনের বেলা জুম করে ফটো নিতে গিয়ে চুপসানো বেলুনের ফটো আসে অয়নের ক্যামেরায়। এই বেলুন গুলো রবারের নয় প্লাস্টিকের। গাছের মাথায় ঝুলে ছিল।"

দিঠির কথায় মৌ এবং ঋতেশ কোনো প্রতিবাদ করে না।

দিঠি এক গ্লাস জল খায়। বলে -"এর পর দিন জারিনা ও অঙ্কনার মারপিট হয় যেটা কাকতালীয়। তার পরদিন জৈনের গাড়ির এ্যাক্সিডেন্ট হয়। যদিও ঐ গাড়িতে নায়ক নায়িকার ফেরার কথা কিন্তু অনেকেই শুনেছিল জৈন ঐ গাড়িতে যাচ্ছে। তার মধ্যে একজনের সব চেয়ে বেশি সুযোগ ছিল ঐ তার কেটে দেওয়ার। সে সেটাই করেছিল। এদিকে জৈনের ঘরে একটা কফ্ সিরাপ ছিল। কেউ তাতে বিষ মিশিয়ে দিল এই ভেবে যে জৈন যে কোনোদিন ওটা খাবে। প্রকাশজি জৈনকে বলেছিল জারিনার জন্য কফ-সিরাপ আনিয়ে দিতে কাউকে দিয়ে, জৈন নিজের কফ্ সিরাপটা রোহিতকে দিয়েছিল প্রকাশজিকে দিতে। আর ওটাই জারিনা খেয়েছিল। রোহিত আমায় বলেছে যে ও কফ-সিরাপ পৌঁছে দিয়েছিল। এবার আর খুনি রিস্ক্ নেয় নি। জৈনের ঘরের হুইস্কির বোতলে বিষ মেশায়।জৈন যে কোনো সময় খাবে ওটা। এমন কপাল নাথাং এ ঘর কম বলে জিষ্ণু জৈন আর প্রকাশজি এক ঘরে ছিল। আর রাতে জৈনের শুটিং পড়েছিল সেদিন। ও আর মদ খায় নি। বেচারা প্রকাশজি ওনার বোতলটা নিয়ে খেয়েছিল সেদিন। আর তারপর ফাঁকা হোমস্টেতে কাউকে ডাকতেও পারে নি। পরদিন আমরা মন্দিরে গেলাম। জৈন কিন্তু ভয় পেতে শুরু করেছিল। ঘর ছেড়ে বের হচ্ছিল না। জীবনে এতো পাপ করেছিল যে বিপদ কোনদিক দিয়ে আসবে বোঝে নি। তবে নিজের বিপদ সম্বন্ধে সচেতন ছিল। জারিনা ওনাকে একটা ভোজালি গিফট্ করেছিল । আসলে প্রকাশ জারিনাকে নায়িকা করবে বললেও ক্ষমতা যে জৈনের বেশি জারিনা বুঝে গেছিল। ওর মেয়েদের প্রতি দুর্বলতাও জারিনা জানত। তাই ওকে নিজের দিকে টানতে চেয়েছিল জারিনা। ফাঁকা হোটেলে জৈন ওটাকেই অস্ত্র হিসাবে কাছে রেখেছিল। খাবার দিয়ে এসেছিল মদন। আর তারপরেই জৈনকে ঐ ভোজালি দিয়েই কেউ মেরে দেয়।" এটুকু বলতেই ঘরে একটা চাপা গুঞ্জন ওঠে। জিষ্ণু বলে -"জৈনকে মেরে কার কি লাভ? সিনেমা বন্ধ হয়ে গেছে কেউ টাকা পাবে না। আর এ সবের প্রমাণ আছে তোর কাছে?"

দিঠি একটু হেসে বলে -" বাকিটা শোন। আসল গল্প এবার শুরু হবে। এবার একটা অন্যরকম গল্প বলবো, ঘটনাটা বহু পুরনো। প্রায় তেইশ বছর আগে গ্যাংটকে শুটিং করতে আসে একটা দল। লোকাল কিছু মেয়েকে নাচের একটা দৃশ্যে নেওয়া হয়েছিল। সিনেমার এক সহ অভিনেতার সাথে একটি মেয়ের বেশ বন্ধুত্ব হয়। মেয়েটি দেখতে অপূর্ব সুন্দরী। ছেলেটি বলে সে ওকে নায়িকা করে দেবে এবং ওকে টালিগঞ্জ নিয়ে যায়। বাড়ির অমতে মেয়েটি চলে যায়। কিন্তু মেয়েটির দাদার বড় ছেলে ছিল ওর সমবয়সী। দুজনে পিসি ভাইপো হলেও ওরা ছিল বন্ধুর মতো। সেই ছেলেটি কিছুদিন পর পিসির খোঁজে কলকাতা যায়। পিসিকে না পেয়ে সেই অভিনেতার খোঁজ করে। কিন্তু ঐ সহ অভিনেতা কোনো তেমন পরিচিত মুখ ছিল না। তাই অনেক খুঁজেও তাদের পায় না। আশা ছাড়ে না ছেলেটি। কলকাতার ওলি গলি ঘুরে পিসির সন্ধান পায় এক রেড-লাইট এরিয়ায় ।প্রায় দেড় বছর বাদে মেয়েটিকে হঠাৎ খুঁজে পেয়ে সে ভীষণ খুশি। এদিকে মেয়েটির কোলে তখন তার কয়েক মাসের শিশু পুত্র। ভাইপোকে নিজের দুর্দশার কথা খুলে বলে সে। জানায় এই শিশুর বাবা ঐ অভিনেতা। ওকে ভোগ করে এ অবস্থায় এই নরকে ফেলে গেছে। ভাইপোর হাতে নিজের ছেলেকে দিয়ে আত্মহত‍্যা করেছিল মেয়েটি কারণ ঐ অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরার পথ ছিল না। আর পাহাড়ের নিয়ম বড় শক্ত। ঘরে ফেরার মত মুখও ছিল না ওর। চোখের জলের সাথে পিসির শেষ চিহ্নকে নিয়ে ফিরে আসে সেই যুবক। প্রতিহিংসার আগুন বুকে নিয়ে দিন গোনে। লক্ষ্য একটাই, ঐ অভিনেতাকে উচিত শিক্ষা দেওয়া। "এটুকু বলে দিঠি একটু বিশ্রাম নেয়। ঘরে সবাই চুপ। সবার চোখে বাকিটা শোনার আগ্ৰহ। দিঠি বলে"এবার সেই শিশুপুত্র কে বড় করে ঐ পরিবারের সবাই। কিন্তু ঐ ছেলেটি খুঁজে ফেরে ঐ অভিনেতাকে। কোনো নতুন দল পাহাড়ে শুটিং এ এলে ছেলেটি তাদের সাহায্য করার নামে দলে ঢুকে ঐ অভিনেতাকে খোঁজে। সিনেমা জগতের সাথে একটা সম্পর্ক তৈরি হয় এভাবে। অনেক খোঁজ নিয়ে জানতে পারে লোকটি বড় ব‍্যবসায়ী। এখন আর অভিনয় করে না তেমন , প্রযোজনার কাজ করে। ছেলেটি ওনার সাথে দেখা করে এবং পরের সিনেমার জন্য ওকে এই পাহাড়ে টেনে আনে। পাহাড়ের প্রতি দুর্বলতা জৈনের বরাবর ছিল। আর তারপরের গল্প আগেই বলেছি। "

ঘরের সবাই মদনের দিকে তাকিয়ে আছে। ও দিঠিকে দেখছে এক ভাবে। এ বার জোরে হাততালি দেয় মদন, বলে -"ম‍্যাডাম দারুণ লেখেন বোঝা গেল। কিন্তু প্রমাণ কি আছে? আমি মানছি আমার পিসির গল্পটা। ওটা আপনাকে আমার মাসী বলেছে। জৈন যে ঐ লোক তাও ঠিক, টালিগঞ্জে খোঁজ নিলেই জানা যাবে। শালু আমার পিসির ছেলে এটাও ঠিক। কিন্তু প্রমাণ কি আছে ম‍্যাডাম?"

দিঠির চোখ দুটো জ্বলে ওঠে, বলে প্রথম দিন তুমি পাথরটা কাউকে দিয়ে ফেলিয়েছিলে, সব তোমার লোক, এবং বেশির ভাগ তোমার আত্মীয়। এটা প্রমাণ করা কঠিন হবে না। মৌকে ভয় কে দেখিয়েছিল ঠিক জানি না, তবে ওটা শালুর কাজ মনে হয়। ও জানত এই লোকটা ওদের পারিবারিক শত্রু। গাড়ির ব্রেকের তার শালুই কেটে ছিল আমার ধারনা। এটা প্রমাণ হবে না হয়তো। তবে জারিনার কফ সিরাপে বিষ তুমি দিয়েছ মদন। ওটা জৈন খেত তুমি জানতে। জৈনের ঘরে তোমার অবাধ গতিবিধি ছিল। মদের বোতলে বিষ তুমি দিয়েছ কারণ তুমি জানতে জৈন একা থাকবে এবং ড্রিঙ্ক করবে। এই বিষ জোগাড় করা খুব সহজ তোমার পক্ষে। এতেও যখন কিছু হল না তুমি আর কোনো রিস্ক না নিয়ে ওকে ভোজালি দিয়েই মেরে দিয়েছ। একমাত্র তুমিই ঐ ঘরে গেছিলে ওর খাবার নিয়ে। আর ভোজালিটা দেখেই আর দেরি করো নি। এই হোমষ্টের সবাই ঘুরতে গেছিল।ফাঁকা জায়গায় এতো ভাল সুযোগ তুমি কাজে লাগিয়ে ছিলে।"

-"এটা তো গল্প,অনুমান।আর প্রমাণ?"মদন ঠাণ্ডা মাথায় বলে।

অয়ন বলে-"মদন মরার আগে তুমি জৈনকে তোমার পিসির ফটো দেখিয়ে পুরো ঘটনাটা বলেছিলে। খাবার দিতে এসে তুমি ওর ঘরে ভোজালিটা দেখ। পিসির ফটো তোমার সাথেই থাকতো। তোমার পার্সে আমি দেখেছি আগেই। ফটোটা এই মুহূর্তে তোমার কাছে নেই।ওকে ফটো দেখিয়ে এসব বলে তারপর মেরেছ। ফটোটা তুমি ঐ ঘরে ফেলে এসেছিলে। জৈনের খাটের নিচে ওটা ছিল। "

-"কিন্তু ফটোটা আমি ফেলে এসেছি বা ওকে আমি মেরেছি কি করে প্রমাণ হবে? " মদন আবার বলে ওঠে।

-"যদি তুমি নিজে থেকে স্বীকার না করো, শালুকে নিয়ে টানা হ‍্যাঁচড় হবে। কারণ ও জৈনের ছেলে, অবৈধ হলেও ডিএনএ টেস্টে ও ছেলে এটা প্রমাণ হবেই। এবং জৈনের কোটি-টাকার প্রপার্টির ওয়ারিশ ও। খুনের সুযোগ এবং কারণ দুটোই ওর ছিল। ও যে ব্রেকফেল করাতে পারে, বিষ মেশাতে পারে এবং খুন করতে পারে কোর্টে আমরা প্রমাণ করে দেবো। যদিও জৈনের ওষুধ থেকে মদের বোতল সব তুমি কিনে আনতে। তোমার সুযোগ ছিল বেশি। তবুও তুমি নিজে মুখে না বললে বাচ্চা ছেলেটা জেলে যাবে। " অয়ন মদনের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। এমন সময় সবাইকে অবাক করে ওদের হোটেলের মালিক বলে ওঠে -" ইয়ে খুন ম‍্যায়নে কিয়া। আপ মুঝে লে যাও।" সাথে সাথে ওর মাসি বলে ওঠে -" নেহি সাহেব। ইয়ে সব ম‍্যায়নে কিয়া।"মাঝখানে শালু ঢুকে বলে-"আপনে সহি বোলা। ম‍্যায়নে কিয়া, ও মেরা বাপ বননেকা লায়েক নেহি থা। "

মদন আস্তে আস্তে এগিয়ে আসে । বলে -"লোকটা শয়তান ছিল। এই বয়সেও মেয়ে দেখলে গলে যেত। কত মেয়ের সর্বনাশ করেছে সেটা আমিই জানি। আমাদের পরিবারটাকে শেষ করে দিয়েছিল। আমিই ওকে শেষ করেছি। আপনি ঠিক বলেছেন। ওকে মারবো পিসিকে কথা দিয়েছিলাম।"

পুলিশ অফিসারেরা কিছু বলার আগেই ওরা সবাই মিলে মদনকে বোঝাতে লাগলো। কিন্তু মদন নিজের জেদে অনড়।

অয়ন দিঠি আর জিষ্ণু উঠে বাইরে এলো। বেঙ্গল পুলিশের দুই অফিসার ও এলো। ওনারা দিঠি এবং অয়নকে বললেন যে এই ভাবে এতো কঠিন কেসের খুনি এত সহজে ধরা পড়বে ওনারা ভাবতেই পারেন নি। পুরোটাই একটা সিনেমার মতো মনে হল।

অয়ন বলে -"ছেলেটার বিরুদ্ধে প্রমাণ কম। ও নিজেই যেহেতু স্বীকার করলো সাজাও যাতে কম হয় সেটা আপনারা দেখবেন। ও ক্রিমিনাল নয়। ভাল ছেলে। আমিও খবর এমন ভাবে করবো যাতে ওর সাজা কম হয়। "

 জিষ্ণু বলল -'' আমি ভেবে নিয়েছি, দরকারে ফ্ল্যাট বিক্রি করেও আমি সিনেমাটা শেষ করবো। এসব মিটলেই শুটিং শুরু হবে। তবে মদন না থাকলে পাহাড়ে সত্যি অসুবিধায় পড়বো। শেষটা ভাবছি কলকাতায় টেনে নেবো। তাহলে খরচাও কম আর ঝামেলাও। "

একটু পরেই হেলিকপ্টারের আওয়াজ শোনা গেলো। অবশেষে ইউনিটের সবার মুখে হাসি ফুটল। বাইরে তুষার পাত বন্ধ হয়ে রোদ উঠেছে। সব দুর্যোগ শেষে নাথাংভ‍্যালী হাসছে।

সবার মুখে সেই খুশির ছোঁওয়া।

 

সমাপ্ত


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Thriller