শেষ নাকি শুরু
শেষ নাকি শুরু
(১)
আমি রাস্তার ধারে জানলার পাশে রাখা টেবিলটার ওপরে বসে বাইরে মধ্যরাত্রির নিস্তব্ধ তিলোত্তমা নগরীর দিকে তাকিয়ে আছি। যদিওবা কখনো সখনোএকটা দুটো গাড়ি ফুল স্পিডে বেরিয়ে যাচ্ছে। বিশেষত রাত্রি জাগরণ আমার বেশ অপছন্দের, কিন্তু আজ ঘুম আসছেনা অতিরিক্ত উত্তেজনায়।
কাল দাদা দেশে ফিরছে দীর্ঘ র্পাঁচটা বছর পর। যদিওবা ফোনে, ভিডিও কলে কথা হতো....কিন্তু তাতে কি আর পোষায়?!
সে এখন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ আউট একজন ইংরেজির প্রফেসর। এখানে এসে সপ্তাহ দুয়ের মধ্যেই একটা নতুন কলেজে জয়েন করবে।
ওর বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন সকলেই ওকে বলেছিলো,
" অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়ানোর সুযোগ সবাই পায়না। তুই যখন পেয়েছিস, তাহলে ওখানেই সেটেল হয়ে যা। "
কিন্তু আমার দাদা, মানুষটা বড্ডো আলাদা। ও পরিষ্কার সবাইকে জানিয়ে দেয়,
" আমার পক্ষে নিজের দেশকে ছেড়ে বিদেশে পড়ে থাকা কোনো ভাবেই সম্ভব না। "
বাড়ির কেউই ওর সিদ্ধান্তে দ্বিমত করেনি, কারণ সকলেই জানে ও নিজের দেশকে কতোটা ভালোবাসে।
দাদা লন্ডনে ওর কোন একটা বন্ধুর সাথে থাকতো, সে নাকি একজন ওখানকার ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসার। বেশ কিছুদিন আগে এক দুষ্কৃতীর কারণে ওদের ক্রাইম ব্রাঞ্চের সকলে প্রচন্ড সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল, ওই দুষ্কৃতীকে কোনো ভাবেই ধরা সম্ভব হচ্ছিলো না।
শুনেছিলাম দাদা নাকি ওর বন্ধুকে ওই কেসটায় সাহায্য করে, আর কিছুদিনের মধ্যে ওই দুষ্কৃতী ধরাও পড়ে যায়।
এরপর ও আরও কয়েকটা কেসে ওর বন্ধুকে সাহায্য করেছে।
আমারতো এটা ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে যে, আমার দাদা একজন গোয়েন্দা!!যদিও গোটাটাই ওর শখ, ওর প্যাশন।
ছোটবেলা থেকেই দাদাকে দেখতাম 'ফেলুদা, ব্যোমকেশের ' বই পড়তে। তারপর একটু বড়ো হতে ' শার্লক হোমস '। নিজের পড়াশুনা, সকলের সাথে হইহুল্লোড় করে যেটুকু সময় নিজের জন্যে বাঁচাতো, সেইসময়টায় এই বইগুলোকেই ও নিজের সঙ্গী করে নিয়েছিল ।
অনেকসময় অনেকে ওকে ব্যাঙ্গ করে বলতো,
" কিরে গোয়েন্দা হবি নাকি বড়ো হয়ে? "
কে জানতো একদিন এই কথাটাই সত্যি হয়ে যাবে!!!
সেই রহস্য প্রেমী ছেলেটাই সত্যকে অন্বেষণ করতে নেমে পড়বে।! হয়ে উঠবে " সত্যাহোরক " !!।
চলবে.......
