Riya Singh

Abstract Romance

3  

Riya Singh

Abstract Romance

শেষ ঠিকানা তুমি (এগারো)

শেষ ঠিকানা তুমি (এগারো)

5 mins
167


দুটো মানুষের মধ্যে দানা বাঁধছে অনুভূতি যার শেষ অবধি কি হবে?


অরিন্দমের সাথে কথা বলার পর একসপ্তাহ কেটে যাওয়ার পর অনুর সাথে দেখা করতে এলো অয়ন্তিকা। এসে সবার আগে চোখ বুলিয়ে দেখে নিলো কোথাও অরিন্দম আছে কিনা। অন্য কিছু কি করা দেখি ওকে বলল কাউকে কি খুঁজছো দি? কিন্তু কাকে ? দাদা কে বুঝি!


অয়ন্তিকার ভড়কে যাওয়া মুখ দেখে আসলে অনু খুব মজা পেয়েছে তাই হাসি চেপে বললো,


বলো কাকে চাই ? দাদাকে ডেকে দি কথা বলো তোমরা।


এই না না আমি তো...(অয়ন্তিকা)


হুঁ তো! অনু অয়ন্তিকার কথাটা পুরো করে বললো কাকে বলো?


রামুকাকা কে ইয়ে মানে খুঁজছিই,উনি কোথায়? 


অয়ন্তিকার জবাব শুনে অনুর এতো হাসি এলো। কোনরকমে রান্নাঘর দেখিয়ে বললো,


ওইতো ওখানে যাও।


এরপর অয়ন্তিকা ওইদিকে যেতে অনু আর চাপতে পারলো না সোফায় বসে একাই হাসতে লাগলো। ওকে এরকম পাগলের মতো হাসতে দেখে অরিন্দম ওর দিকে এগিয়ে এসে বললো,


বলছি এখানে কি কমেডি হচ্ছিল ? বোধহয় মিস করে গেলাম একটু বল একাই হাসবি নাকি!


অনু কোনরকম হাসি থামিয়ে বললো,


বলছি অয়ন্তিকা দি ...


আবার হাসে,এই হেসে নিয়ে যা বলার বল (অরিন্দম)


বলছি বলছি, অয়ন্তিকা দি এসেছে এমন কথা বললো যে হাসি পেয়ে গেল তাই (অয়ন্তিকা)


সেটা কি আমাকে বলা যাবে? তাহলে বলতে পারিস কিন্তু! (অরিন্দম)


না যাবে না ইটস গার্লস টক। (অয়ন্তিকা)


ওহো আজকাল গার্লস টক হচ্ছে দাদাকে ছেড়ে? ভালো ভালো।(অরিন্দম)


কি কথা হচ্ছে? আমাকেও বল অনু


খাবারের প্লেট হাতে অয়ন্তিকা ওদের সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়লো।


এই দি তুমি না একা একা এসব করতে গেলে ধুস জমিয়ে আড্ডা দেবো বললাম।( অনু)


এই এসব কিছুই না, রামু কাকা একা একা কত করবে রে বল তো? বুড়ো মানুষটা খাটবে আমরা বসে থাকবো নাকি? আমি তাই একটু সাহায্য করলাম যদি ওনার কাজ হালকা হয়।( অয়ন্তিকা)


কি ব্যাপার বলোতো দি ? তুমি এরকম গিন্নি এর মতো কথা বলছো? হুঁ! বলো বলো একটা জিজু খুঁজতে হবে নাকি! (অয়ন্তিকা)


এই তুই চুপ কর খালি পাকা পাকা কথা।(অয়ন্তিকা)


ঠিক ই বলেছি, কেমন পছন্দ বলো শুনি?(অনু)


অয়ন্তিকা আর অনুর খুনসুটি দেখে অরিন্দম মনে মনে বেশ উপভোগ করছিল। কিন্তু এই জিজু খোঁজার কথা শুনে একটা জোর বিষম খেলো, কোনরকমে কাশতে কাশতে জলের গ্লাস হাতে নিয়ে জল খাওয়ার আগেই অয়ন্তিকা অরিন্দম কে জলটা দিলো,অনু ও বললো,


বলো না কেমন মানুষ চাই? খুঁজতে সুবিধা হবে তাহলে।


অয়ন্তিকা একটু হেসে বললো,


বেশি কিছু না সবার আগে ভালো মানুষ হতেই হবে নিজের দায়িত্ব পালন করে এমন আর বদমেজাজি না একদম ।উফফ রাগ হলে সামলানো যায় না বাপরে!


অনু একবার অরিন্দম এর দিকটা দেখলো,মুখটা দেখতে চাইছিল। অয়ন্তিকার কথা শুনে মুখটা কালো করে থাকলো।ওর তো বেশ মজাই লাগছিল তাই আবার অয়ন্তিকাকে বললো,


চিন্তা করো না আমি তোমার জন্য খুঁজে দেখবো উমম আমাদের কলেজেই দেখবো ওই কোন ইয়াং প্রফেসর থাকলে জমে যাবে, তোমার প্রফেসর হলে অসুবিধা নেই তো!


না নেই অসুবিধা।


অয়ন্তিকার কথা শুনে অরিন্দমের মুখটা আরো চুপসে গেল তাই আর বসলো না উঠে পড়লো কাজ আছে বলে। অয়ন্তিকা তা দেখে ভাবলো,


এর আবার কি হলো? এক্ষুনি তো বেশ কথা শুনছিল হাসছিল।


অনু অয়ন্তিকার মুখটা দেখে একটু কাঁধ এ হাত দিয়ে বললো,


কি হলো? চুপ করে গেলে।


কিছু না,তোর দাদা উঠে গেল ওভাবে কিছু খারাপ ভাবলো নাকি!(অয়ন্তিকা)


আরে না না বাদ দাও,কাজ আছে বললো না অত ভেবো না তুমি যা বলছিলে ,আড্ডা কন্টিনিউ করো তো।(অনু)


তবুও...


অয়ন্তিকাকে থামিয়ে অনু বললো,


এতো ভেবো না ও ওরকম ই একটু চুপচাপ।কবে যে কথা বলেছে মেয়েদের সাথে ওই জানে তুমিও তো বন্ধু অবাক ই লাগল শুনে। ওর এমনিতে মেয়ে বন্ধু আছে বা থাকবে ভাবিনি আমি যা কম কথা বলে।


অয়ন্তিকা নিজের মনেই বিরবির করে বললো,


যা পাহাড় সমান রাগ কে কথা বলবে ওনার সাথে। ওরকম নাকের ডগায় রাগ নিয়ে ঘুরলে কে বন্ধুত্ব করবে। বেশ হয়েছে মেয়ে বন্ধু নেই।


দি কি ভাবো বলোতো? জানো আমি না বলেছি বউদি খুঁজতে আমার জন্য কিন্তু আনছে না খালি ভাগিয়ে দেয় জানো? বলে নাকি বাচ্চা মেয়ে!(অনু)


ঠিক বলে বাচ্চা মেয়ে এসব ভাবতে হবে না তোকে,সময় হলে তোর দাদা নিজেই এনে বলবে তোর বউদি তখন মুখটা হা করে রাখবি।(অয়ন্তিকা)


ধ্যার দাদা আর বিয়ে? আদৌও কারোর প্রেমে পড়বে বলে মনে হয় তোমার? যতটা চেনো বলো দেখি ।(অনু)


সেরকম কিছু না কিন্তু সব মানুষের জন্য কেউ না কেউ থাকেই,আর বিপরীতে থাকা মানুষের প্রতি আমাদের অনুভূতি গুলো বাড়তে থাকে তার সাথে জড়িয়ে পড়ি বুঝলি বলেই অয়ন্তিকা নাক টিপে দিলো অনুর।


অনুর যেন এই কথাগুলো শুনে ভালো লাগলো মনে হলো এই গুলো শুনতে চাইছিল ও। অনেক কিছু পেয়ে গেছে এমন ভাব মুখে ধরা না পড়লেও মনে তো এলো। ধীরে ধীরে সব ওর মনমতো এগোচ্ছে খালি ক্লাইম্যাক্সের অপেক্ষা করছে।কবে যে একসাথে দেখবে? যে হারে এদের গাড়ি এগোচ্ছে ওকেই আবার ভিতরে ঢুকতে হবেই। তাই এই ভেবে অয়ন্তিকার চলে যাওয়ার পর কাউকে ফোন করলো,


হ্যালো, তুই কি ব্যস্ত? আরে না একটু দরকার ছিল। তোর এইমুহুর্তে এখন কোথাও যাওয়ার নেই তো? আরে না আমার বাড়ি আসতে পারবি কাল? বা যেখানে বলবো? ওকে ফাইন দেখা হচ্ছে তাহলে।


কিছুক্ষণ পরে ফোনটা রেখে অনুর মুখে একটা মিস্টি হাসি ফুটে উঠলো এবার সব সত্যি কথা বেরোবোই বেরোবে।


অনু একদিন অয়ন্তিকাকে সাথে নিয়ে বেরোলেও ওকে বললো,


কেউ একজন আসবে দি তোমাকে ওর সাথে আলাপ করাবো। 


কখন আসবে ?(অয়ন্তিকা)


এইতো এসেই যাবে হাই দেখো বলতে বলতে এসেও গেল। এই টা আসলে আমার ফ্রেন্ড হয় কলেজের তোমাকে বলেছিলাম না অনেকগুলো বন্ধু আছে। ও তার মধ্যে সবথেকে বেস্ট বুঝলে তাই আলাপ করালাম।


বুঝলাম ম্যাডাম কিন্তু আপনার দাদা জানে তো,উনি তো আবার কি বলি আর!(অয়ন্তিকা)


তুমি আছো না বাঁচিয়ে নেবে আবার কি! হি হি তুমি আমার সেফ জোন। তুমি একেবারে আমাকে আগলে রাখলে আমার দলের মানুষ আমার ভয় কিসের বলো? (অনু)


সেই তো হচ্ছিল তাই না! নিজে সেফ সাইডে পাশ কাটিয়ে আমাকে রাক্ষসের সামনে দাঁড় করাচ্ছিস তুই কি রে? (অয়ন্তিকা)


উফফ ! তুমি থাকতে চাপ আছে বলো,তুমি দাদার বন্ধু আবার তোমার সামনে দাদা কিরকম জব্দ হয়ে যায় আমার না দারুন লাগে।(অনু)


আমাকে হাড়িকাঠে চাপিয়ে তোর তো ভালো লাগবেই, আমার আবার কেমন লাগে ধুস। কে জানে কি হয় বুক ধড়ফড় করে আমার এই মেয়েকে বোঝালেন তো ।


নিজের মনেই বললো নিজেকে অয়ন্তিকা।


দি অনেক সময় হলো চলো বাড়ি ফিরি,পরে একদিন একে নিয়ে আসবো বাড়িতে আড্ডা হবে জমিয়ে।(অনু)


কি রে এতো দেরি তোর? (অনু)


তুই এতো কিভাবে খবর পেয়ে যাস বলতো? ম্যাজিক করিস নাকী! (অনু)


নিজের বোনের খেয়াল রাখতে হয় ,এটা দেখবো কি করছিস কোথায় যাস।(অরিন্দম)


আমি আজ অয়ন্তিকা দি কে একজনের সাথে দেখা করালাম, আমার চেনা একজন ই দির পছন্দ হবে এমন কেউ। (অনু)


(চলবে)



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract