Doyel Kar

Abstract Tragedy Others

4.0  

Doyel Kar

Abstract Tragedy Others

শেষ বেলার খাবার

শেষ বেলার খাবার

2 mins
150



হর্ষবর্ধন ব্যানার্জি একজন শ্রমজীবী মানুষ। শ্রম করে যে অর্থ উপার্জন করেন সেটা দিয়েই তার পাঁচ জনের সংসার চালান।পাঁচজন বলতে তার স্ত্রী দুই মেয়ে আর এক ছেলে।প্রত্যেকদিন তিনি সকাল ছটা থেকে কাজে যান আর সন্ধ্যে ছটা পর্যন্ত কাজ করেন আর এই কাজ করে তার দিন চলতো।তিনি খুব বড় কাজ করেন না, তিনি পেশাতে ছিলেন একজন রাজমিস্ত্রি। অভাবের সংসারে খুব ভালোই দিন চলছিল হঠাৎ একদিন করোনাভাইরাস এর আবহে একমাসের লকডাউন পরে তাতে তিনি তার কাজ হারান। হারান বলাটা ঠিক নয় কাজ পান না। হর্ষবর্ধন তার সঞ্চিত সামান্য অর্থ দিয়ে সংসার চালাতে লাগল টেনেটুনে ফ্যান ভাতের কোনরকম ভাবে এক মাস চলে যায়।আজ হর্ষবর্ধন এর মনে একটু আশার আলো ফুটে উঠেছে কারণ আজ থেকে লকডাউন উঠে যাচ্ছে তাই তিনি সতেজ ভাবে বেরিয়ে পড়লেন কাজের সন্ধানে।তাই তিনি কাজ খুঁজতে খুঁজতে পাড়ার চায়ের দোকানে বসলেন তখন হঠাৎ টিভিতে খবর এলো আবার তিন মাসের জন্য লকডাউন হর্ষবর্ধন খবরটি শুনে মন মরা হয়ে গেল তিনি কাজের আশা ছেড়ে দিয়ে বাড়ি ফিরে এসে গিন্নিকে বললো ও গিন্নি আবার তিন মাস লকডাউন এবার তো মনে হয় ফ্যান ভাত জুটবে না,আর পকেট এ পড়ে আছে ১৭০ টাকা এবার কি হবে..? তিনি খুব চিন্তিত, গিন্নির মন খারাপ..একেতো অভাবের সংসার তার ওপর পাঁচজন কি করে চলবে তাই জন্যেই বললো....দেখো না কিছু করা যায় কিনা হর্ষবর্ধন বলল ধার করে তো আর তিন মাস চালানো যাবে না দেখি কিছু ব্যবস্থা যদি করতে পারি বলে বাজারে তিনি চলে গেলেন এক ঘন্টা পর তিনি ফিরে এলেন এক কেজি বাঁশ কাটি চাল আর মাছ নিয়ে। ও গিন্নি শোনো এই নাও চাল এনেছি মাছ এনেছি খুব ভালো করে রান্না করো আর জমিয়ে খাব।গিন্নি তো অবাক হয়ে হর্ষবর্ধনের দিকে তাঁকিয়ে রইলো তারপর বলল তুমি কি কোন কাজ পেয়েছ এত খরচ করে আনলে কেন জিনিসগুলো..? হর্ষবর্ধন হেসে বলল না গিন্নি আমি কাজ পায়নি তবে আজ মন ভরে খেতে ইচ্ছে হচ্ছে তাই শেষবারের মতো ভালো খাবার খেতে চাই তুমি ভালো করে জমিয়ে রান্না করো আজ আমরা সবাই মিলে জমিয়ে খাব বলে বাইরে চলে গেলেন।ঠিক দুপুর টাইমে খাওয়ার সময় সবাই একসাথে বসলো হর্ষবর্ধন বলল আজ সবাই পেট ভরে খাও বলে হর্ষবর্ধ মাছের তরকারি দিয়ে ভাত মেখে প্রথমে দুই ছেলে আর মেয়েকে খাইয়ে দিলেন তারপরে গিন্নিকে খাইয়ে দিয়ে নিজে খেতে লাগল গিন্নি হাসিমুখে কান্না করতে করতে বলল শেষে তুমি এই পথ বেছে নিলে..হর্ষবর্ধন অবাক হয়ে তাকালো...গিন্নি বলল আমি দেখেছি তোমাকে খাবারে বিষ মেশাতে,তবে জানো আমার একটুও খারাপ লাগে নি। হর্ষবর্ধন কেঁদে ফেলল আর বলল ক্ষমা করো গিন্নি আমি আর পারছিনা, পারছিনা ছেলেমেয়েদের,তোমার ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে। গিন্নি হেসে বলল ঠিক আছে জীবনের শেষ খাবারটা নয় তো একসাথেই খেয়ে যাই বলে হর্ষবর্ধন ও তার গিন্নি একে অপরকে হাসিমুখে অশ্রুসিক্ত নয়নে খাবার খাইয়ে দিতে লাগল। কিছুক্ষন পর পাঁচটি দেহ মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে রইল আর পড়ে রইল পাতে "শেষবেলার খাবার"।







                       



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract