The Stamp Paper Scam, Real Story by Jayant Tinaikar, on Telgi's takedown & unveiling the scam of ₹30,000 Cr. READ NOW
The Stamp Paper Scam, Real Story by Jayant Tinaikar, on Telgi's takedown & unveiling the scam of ₹30,000 Cr. READ NOW

susmIta Saha

Classics Inspirational

3  

susmIta Saha

Classics Inspirational

রকি কিছু বলতে চায়

রকি কিছু বলতে চায়

5 mins
832


" নো মাম্মা নো , প্লীজ্ আজ তুমি অফিসে যেওনা , প্লীজ্ টেক্ আ ডে অফ্ টুডে " - সাত বছরের রকি বারবার একই আব্দার করতে থাকে । পৃথা একটু বিচলিত বোধ করে । রকির কপালে হাতটা ছুঁয়ে পৃথা বোঝার চেষ্টা করে ...নাঃ,আজ জ্বরটা একেবারেই নেই , কপাল ঠান্ডা । গতকাল সন্ধেতেই শমীক রকিকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে নিয়ে এসেছে । চিন্তার কিছু নেই । গত তিনদিন ধরে ভাইরাল ফিভার । যা জ্বরজারি হচ্ছে চারদিকে । কাল রাত থেকে অবশ্য আর জ্বর আসেনি । কিন্তু ডাক্তার এই সপ্তাহের আরও দুটো দিন রকিকে স্কুলে পাঠাতে বারণ করেছেন। ভাইরাল ফিভার শরীরকে বড় দুর্বল করে দেয় । তাছাড়া , বাচ্চারা যত ইনফেকশন , সব স্কুল থেকেই তো আনে। পৃথার কপালে চিন্তার ভাঁজ । আজ তাহলে রকির সাথে বাড়িতে থাকার জন্য কে ছুটি নেবে ? অফিসের আজকের প্রেজেন্টেশনটা এত ভাইটাল । অনেকদিন ধরে খেটেখুটে তৈরি করেছে । টীম লীডার হিসেবে পৃথার ভূমিকা এই প্রজেক্টটাতে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ । উফ্...কি যে করা যায় ... গত দুদিন শমীক বাড়িতে থেকে অফিস ম্যনেজ করেছে । সপ্তাহে দুদিনের বেশি "ওয়ার্ক ফ্রম হোম" নেওয়া মুশকিল । ওর পক্ষেও আজ কিছুতেই বাড়িতে থাকা সম্ভব নয় । সত্যি , মা বাবাও ঠিক এই সময়েই দেশে নেই । ছোট ভাই সিদ্ধার্থের কাছে আমেরিকায় গিয়েছেন , তিনমাসের জন্য বেড়াতে । ওঁরা কাছে থাকলে তো আর কোনো চিন্তাই থাকেনা । আর একটা সমাধান অবশ্য আছে , সে হল - "রঘুদা"। পৃথার বাপেরবাড়ির সেই কোন্ আমলের লোক । হ্যাঁ , রঘুদার নামের সঙ্গে "কাজের লোক" শব্দটা ভাবতেও ওদের বাড়ির সকলের দ্বিধা হয় । পৃথা যখন খুব ছোট্ট মেয়ে, সেই তখন থেকে কিশোর রঘুদা ওদের বাড়িতে । ঠাকুরদা ঠাকুমা দুজনেই বহু বছর রোগশয্যায় ছিলেন । রঘুদা প্রাণ দিয়ে তাদের সেবা করতো । বাবা ও মায়ের দুজনেরই ভরসার জায়গা রঘুদা। পৃথার মেয়েবেলা এবং কৈশোরের দিনগুলোতেও বাড়িতে যুবক কাজের লোক রঘুর উপস্থিতি কোনো সমস্যা তৈরি করেনি...একদিনের জন্যও না । বরং পৃথার বিয়ের সময়, ওর বাবা যখন বেশ অসুস্থ ছিলেন রঘুদাই বড় ছেলের মতো দু-হাতে সব সামলে পৃথার বিয়ে দিয়েছে । মায়ের তো রঘুকে ছাড়া একটা দিনও চলেনা । মা বাবা বিদেশে গেলেও বাড়ির সব ব্যাঙ্ক , পোস্ট অফিসের কাজও রঘুদারই দায়িত্ব । শুধু পৃথার ছোট ভাই সিদ্ধার্থটা কেন কে জানে রঘুদার কাছে ঘেঁষতে চাইতো না । ওদের দুজনের আর কিছুতেই ভাব হয়নি। তারপরে ক্লাস ফাইভ থেকে তো ভাইটা হোস্টেলেই চলে গেল । শেষমেষ সেই কত দূর বিদেশে । আর এই আরেক জন...রকি । সেও কিছুতেই রঘুকাকার কাছে থাকবে না । একেবারে মামার স্বভাবটি পেয়েছে । কোনো প্রয়োজনে একদিন রঘুকাকার কাছে থাকার কথা বললেই রকি চিৎকার করে কান্নাকাটি করে বাড়ি মাথায় করে... শোওয়ার ঘরের এক কোণে রাখা ট্রেডমিলে হাঁটতে হাঁটতে শমীক পুরো দৃশ্যটা দেখছিল। এইসব পরিস্থিতিতে পিতার হৃদয়ও বিচলিত বোধ করে । শমীকেরও বড্ড অসহায় লাগছিল । সাত বছরের শিশুপুত্রের সদ্য জ্বর থেকে ওঠা ক্লান্ত মুখটা তাকে বিষণ্ণ করে...। কিন্তু আজ একবার অফিসে যেতেই হবে। কোনো উপায় নেই । এক্সারসাইজ করতে করতে শমীকের বারবার নিজের শৈশবের কিছু দৃশ্য মনের মধ্যে ভেসে আসছে ... মা ন্যাওটা শমু সামান্য শরীর খারাপ হলেই মায়ের আঁচলটা ছাড়তে চাইতো না । মাও কিন্তু প্রশ্রয় দিতে কখনও কার্পণ্য করেনি। তখনকার দিনে সেটাই হয়তো ছিল মাতৃত্ব প্রকাশের ভাষা । কিন্তু দিনকাল তো বদলাবেই । পৃথা নিজেও ছেলে অন্ত প্রাণ । গোটা পরিবারের প্রতি ওর দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ অতুলনীয় । একই সঙ্গে সময়ের চাহিদা অনুযায়ী ওর চাকরীটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ । পৃথার অসুবিধা এবং অসহায়তাটাও শমীক খুব ভালো বোঝে... রঘুদাকে একদিনের জন্য এ বাড়িতে এসে থাকতে বললেই ঝামেলা মিটে যায় । রঘুদা নিজেও তো আসার জন্য এক পায়ে খাড়া । কিন্ত রকিটা যে কিছুতেই ... রকির ভয় করছে , ভীষণ ভয় করছে । ভয়েই রকির আবার জ্বর এসে যাচ্ছে । মা এখন বাথরুমে ঢুকেছে । মাকে রেডি হতেই হবে। অফিসে মায়ের আজ বড্ড জরুরি মিটিং । রকির গলা জড়িয়ে গালে চুমু খেয়ে মা বারবার রকিকে সে কথা বুঝিয়েছে । রকি বোঝে ...অনেকটাই বোঝে । মা যখন ওকে আদর করে আফিসের কথা বলছিল , রকি বুঝতে পারছিল - মা তখন মনেমনে রকির জন্য কাঁদছে । মার চোখে জল এসে যাচ্ছিল...কিন্তু ... বাবাও খুব ভালো । গতকাল আর পরশু সারাদিন বাবা বাড়িতে রকির কাছে থেকেছে । দুজনে মিলে সারাদিন কত গেমস্ খেলছে , বাবা স্টোরিও বলেছে । রকির তখন এত ভালো লাগছিল । কিন্তু ও বোঝে , আজ বাবাকে অফিসে যেতেই হবে। স্নান করতে ঢোকার আগে মা শেষপর্যন্ত রঘুকাকাকেই ফ়োন করলো । রঘুকাকা এসে সারাদিন রকির সাথে এ বাড়িতে থাকলেই মা বাবা নিশ্চিন্ত । কিন্তু রকির ভয় করে , বড্ড ভয় করে ...ওর কান্না পায় । ও কিছুতেই কারুকে বুঝিয়ে বলতে পারেনা । রঘুকাকার আদরকে রকির বড্ড ভয় করে , ওর কষ্ট হয়...দম বন্ধ হয়ে যায় । রঘুকাকার আদরটা অন্যরকম । রকি বারবার বারণ করলেও রঘুকাকা জোর করে ওকে আদর করে । কয়েকদিন আগে রকিদের স্কুলের স্নেহাকে একজন আঙ্কেল জোর করে আদর করে ব্যথা দিয়েছিল । স্কুলেরই একজন পিওন আঙ্কেল । সেই নিয়ে কত কথা হল । বাড়িতে বাবা মাও যখনই ওই সব আলোচনা করে , রকিকে দেখলেই চুপ করে যায়...থেমে যায় । কিন্তু একদিন রকি টিভিতে দেখে ফেলেছে- বড়রা সবাই টিভিতে ওই আঙ্কেলটাকে ভীষণ শাস্তি দেওয়ার কথা বলছিল । রকির বেস্টফ্রেন্ড আর্যও চুপিচুপি বলেছে- সব গার্লসদের পেরেণ্টরা নাকি এখন ভীষণ অ্যালার্ট । গার্লসদের এখন আর কোনো বয় বা ম্যান বা ওল্ডম্যানের সঙ্গে কখনও একা রাখেনা । রকি ভাবে তবে কি ও বয় বলেই ওর কথাটা কেউ বোঝেনা ? ভাবেনা ? রকির ইচ্ছে করে রঘুকাকার কথা সবাইকে বলে দিতে । কিন্তু পারেনা । রঘুকাকা ওকে ভয় দেখিয়ে বলেছে -"রকি যদি ওই আদরের কথা কারুকে বলে দেয় তাহলে রকির বাবা মা আর কোনোদিন অফিস থেকে বাড়িতে ফিরবে না , সোজা আকাশে চলে যাবে।" রকি কাঁদে...মনেমনে খুব কাঁদে । ওর ভয় করে , কষ্ট হয় । রঘুকাকা আদর করার পরে রকির হিসি পটি করতে এত কষ্ট হয় । ওর বড্ড ব্যথা করে । ভয়ে রকি সেকথা কারুকে বলতে পারেনা । ওর জ্বর এসে যায় কিন্তু না , রকি আর পারছেনা । রঘুকাকা তো আদরের কথা বলতে বারণ করেছে , লিখতে বারণ করেনি । আজ রকি একটা লেটার লিখবে । সব কথা লিখে জানাবে মাম্মাকে , বাবাকে আর স্কুলের ক্লাসটীচার ম্যামকে। রকি লিখছে - "তোমরা শোনো , প্লীজ্ একটু শোনো , বোঝো একটু ভাবো ...অনেক ছোট্ট রকিরা কাঁদছে।" প্লীজ্ সবাই শোনো ...


Rate this content
Log in

More bengali story from susmIta Saha

Similar bengali story from Classics