রাতের নায়িকা

                            রাতের  নায়িকা 

                   …………………………..

                         দুচোখে স্বপ্ন নিয়ে গ্রামবাংলা থেকে চন্দ্রিমা ছুটে আসে কোলকাতায়। মধ‍্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে চন্দ্রিমা। অভাববোধ না থাকলেও তেমন হায়ফাই বা আলট্রা মর্ডান নয়, তবে গ্রাম‍্য পরিবেশে বেশ হট গার্ল সে। গ্রামের ছেলে পুলেদের মন্তব‍্যে আপ্লুত হয়ে নায়িকা হতে ছুটে আসে কোলকাতায়। তার স্কুলের এক বান্ধবী পড়াশুনার সুবাদে সে কোলকাতার কুদঘাট সংলগ্ন অঞ্চলে একটি বাড়িতে P.G হিসাবে থাকে। যোগাযোগ করে সেখানেই গিয়ে ওঠে চন্দ্রিমা। কুদঘাটথেকে টালিগঞ্জের দূরত্ব খুব বেশি নয়। সবকিছু ভেবে চিন্তেই চন্দ্রিমা সেল্টার নেয় সেখানে। মেয়িটির কিছুটা সাশ্রয় হয় আর একাকিত্ব ভাবটাও কাটে তার।

                            যাইহোক চন্দ্রিমা কোলকাতায় পদার্পন করে। পেপারের অ‍্যাড দেখে অডিশন দিতে শুরুকরে সে, কোথাওবা টাকার গল্প আবার কোথাও তার পোশাক আশাকে গ্রাম‍্যভাব থাকায় সমস‍্যার সৃষ্টিহয়। বেশ কিছুদিন কাটে এভাবে তারপর এক অডিশনে তারসাথে আলাপ হয় বিট্টুর। বিট্টু ঐ হাউসের ড্রেস ডিজাইনার। অন‍্যদের হাতে অত সময়নেই যে একটি মেয়েকে আপগ্রেট করেনিয়ে কাজ করায় কিন্তু বিট্টু তাকে আশ্বস্ত করে যে সে তাকে ফ্লিম যগতের মতো আপডেট করে তুলবে। ধিরে ধিরে বিট্টুর সাথে চন্দ্রিমার সম্পর্ক গাড় হয়ে ওঠে। পোষাক আশাকে কিছুটা বদল এনে এদিক ওদিক তাকে নিয়ে যায় সে। একদিন সন্ধাবেলায় বিট্টু তাকে ফোনকরে যানায় কোলকাতার একটা হোটেলে বম্বের এক প্রডিউসার এসেছেন তোমার ফোটো দেখিয়েছি ওনার খুব ভালো লেগেছে তোমায় ভোরের ফ্লাইডেই তিনি আবার ফিরে যাবেন তাই তোমার সাথে একটু কথা বলতে চান তিনি।

                                বিট্টুর কথা মত চন্দ্রিমা হোটেলে

 আসে হোটেলের গেটথেকে চন্দ্রিমাকে রিসিভ করে বিট্টু। নিয়ে যায় হোটেলের রূমে। সেখানে গিয়ে তার দেখাহলো এক সুঠাম চেহারার যুবকের সাথে, বিট্টু আলাপ করিয়ে দিল তার সাথে চন্দ্রিমা এহলো মিঃ সিঙ্ঘানিয়া বহুছবিতে আর মিস্টার সিঙ্ঘানিয়া এ হলো চন্দ্রিমা। একটা আলাপ চারিতা হলো তাদের মধ‍্যে। প্রডিউসার তাকে অফার করলেন হট না সফট ভ্রিংস ম‍্যাডাম চন্দ্রিমা নম্রতার সাথে যানায় সফ্ট। তিনি বিট্টুকে বলেন তোমার হট চলবেতো? বিট্টু মাথা নেরে সন্মতি জানায় দুটো লার্জ হট আর একটা সফট ড্রিংকস নিয়ে আসতে বলে তাকে। 

                           বিট্টু ড্রিংকস নিয়ে আসে খেতে খেতে কাজের বিষয়ে কথা শুরুহয়, কিছুটা খাবার পর চন্দ্রিমার মাথাটা কেমন যেন করতে থাকে, তারপর কি হয়েছিল কিছুই জানেনা সে। সকালে যখন চোখ খোলে তখন দেখে তার জামাকাপড় নিচে পড়ে রয়েছে গায়ে একটা মখমলের চাঁদর, মাথাটা তখনও ভার, চটপট উঠে কাপড় জামাটা পড়েনেয় সে তলপেটের কাছটা বেথা করছে মৃদু মৃদু, চোখ দুটো ছলছল করে ওঠে তার। বিট্টু কফিনিয়ে এসে বলে এটা খেয়ে নাও। চন্দ্রিমা বলে তোমরা কি করেছো আমার সাথে। বিট্টু এবার ধমক দিয়েই বলে এটা খেয়ে নাও আগে। চন্দ্রিমা কফিটা খেয়ে নেয়, বিট্টু একটা ট‍্যাবলেট তার হাতে দিয়ে বলে এবার এটা খেয়ে নাও। চন্দ্রিমা ঔষধটা খেয়েনেয় তারপর বলে বিট্টু তোমরা কি করেছ আমার সাথে। বিট্টু বলে আমি কিছু করিনি যা করার উনি করেছেন তোমাকে ওনার খুব পছন্দ হয়েছে বিশ হাজার টাকা অ‍্যাডভান্স দিয়ে গিয়েছেন, ছবিটা শুরু হলেই তোমাকে ডাকবেন। টাকাটা চন্দ্রিমার ব‍্যাগে গুঁজেদিয়ে বলে চলো এবার বেরতে হবে। চন্দ্রিমা বলে এটা ঠিক করলেনা বিট্টু। বিট্টু হেসে বলে প্রডিউসারদের খুশিনাকরতে পারলেযে নায়িকা হওয়া যায়না আর তাছাড়া সাত আট ঘন্টায় এতগুলো টাকা তোমায় কে দেবে। চন্দ্রিমা কেঁদে ফেলে বিট্টু চোখের জলটা মুছিয়ে দিয়ে বলে এটাই বাস্তব দশটা প্রডিউসারকে খুশি করে একটা কাজ পাওয়া যায়। কাজ করে তুমি কয়টাকা কামাবে ওটা সুধুমাত্র ব্রান্ড, যে তোমাকে সন্মান দেবে টাকাতো দেবে প্রডিউসার।

                                   তার পর প্রায় চার বছর কেটে গিয়েছে চন্দ্রিমা এখনো নায়িকা হতে পারেনি তবে ইন্ডাস্ট্রিতে নাইকাদের থেকে বেশি পরিচিতি তার। এখন আর বিট্টুকে লাগেনা। তার একরাতের দর এখন এক লক্ষটাকা, চন্দ্রিমা হয়তো ভূলেই গিয়েছে সে কোলকাতায় এসেছিল নায়িকা হতে। আজ কুদঘাটের বুকে তার একটা ঝাঁচকচকে ফ্লাড রয়েছে, রয়েছে A.C গাড়ি। চন্দ্রিমার নায়িকা হওয়া হবেকিনা জানিনা তবে রাতের নায়িকা হিসাবে সে বেশ পপুলার।

                          🙏 সমাপ্ত 🙏

                           কৃষ্ণ ব‍্যানার্জী