প্রকৃত শিল্পের কদর কম
প্রকৃত শিল্পের কদর কম
বর্তমান দিনে যত চারিদিকের অবস্থা দেখি অবাক হয়ে যাই। বিস্মিত হয়ে যাই মানুষের রুচিবোধ দেখে।
ডাইরি তে লিখছিল ব্যর্থ রাইমা উপরোক্ত লাইন দুটো।
ঘটনাটা ঘটেছিল বহু বছর আগে একটা সোশাল পোস্ট কে কেন্দ্র করে। রাইমা দেখে পোস্টটা তে সাংঘাতিক লাইক, কমেন্ট, শেয়ার.......
পোস্ট এর মালিক একটি মেয়ে, না শুধু মেয়ে বললে ভুল হবে , হট গার্ল!
আকর্ষনীয় তার চেহারা।
দেখলেই তাক লেগে যায় তার দেহের চিকন নকশা দেখলে।
অন্যদিকে রাইমা খুব একটা ভালো দেখতে না হলেও তার হাতে ছিল অসাধারণ দর্শনের আঁকা।
রত্নের মূল্য জহুরী বোঝে। কিন্তু আজ জহুরী কোথায়? হ্যাঁ জহুরী আছে ঠিকই তবে তাদের রুচিবোধ অনুযায়ী রাইমা অনেক নীচু অবস্থানে আছে।
বরং উঁচু আছে রুপসার মতো মেয়েরা যারা রাইমার মতো মেয়েদের গোটা অস্তিত্ব ঢেকে দিতে পারে তাদের রূপের জাদুতে।
রাইমার হাতের আঁকা ছবি টা আস্তে আস্তে হারিয়ে যেতে শুরু করে রুপসার ছবির কাছে। রূপসার ছবি তে রূপসার এক অল্প পোষাক পরিহিত নকল প্রতিমূর্তি যার পেছনে মরীচিকার মতো ছুটছে অসংখ্য মানুষ আর রাইমার আঁকায় কি ছিল ??
রাইমার আঁকায় ছিল এক সুন্দর পৃথিবী যেখানে গগনচুম্বী অট্টালিকার ছায়ায় গৃহহীন নরনারী নেই, যেখানে সবাই সবার বন্ধু , যন্ত্রণা হীন পরিবেশ, পাপমুক্ত সমাজ, পরিবেশ দূষণ নয়, মনের দূষণ কে মানুষ সরাতে সক্ষম হয়েছে সেখানে........
কিন্তু আজ রাইমা বুঝতে পারছে তার আঁকা ছবি তার মতোই হারিয়ে গেছে সবার মাঝে। মানুষ নিজের চোখকে যদি ভুল দেখাতে চায়, তাহলে কার সাধ্য তাকে ভালো দেখানোর?
যেদিন মানুষ বুঝবে রূপসা নয়, রাইমারাই পারে পৃথিবী টা কে নতুন করে সুন্দর করতে, সেদিন ই হয়ত সব.......
আশায় দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে রাইমা।
তার আঁকা টা দেখার মতো কি কেউ নেই?
এই প্রশ্নের উত্তর সত্যি যদি বলতে হয় তাহলে নেই।
আজকের দিনে দাঁড়িয়ে দেখলে দেখা যায় এমন অনেক মানুষ আছে যাদের প্রকৃত প্রতিভা চাপা পড়ে যায় প্রকাশের মুখে এসেও। এমন অনেক মানুষ আছে যারা হয়ত বাকি পাঁচজনের থেকে বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন কিন্তু অধিকাংশ মানুষের নজর ই নিম্নমুখী।
পায় না অনেকেই তাদের প্রকৃত শিল্পের কদর। বিচার হয় বিশ্লেষণের মাধ্যমে নয়, দর্শনের মাধ্যমে। যেটা উপর উপর দেখতে ভালো সেটাই শ্রেষ্ঠ। অন্তর্নিহিত দৃষ্টিক্ষমতা এখন আর নেই কারোর , তাই প্রকৃত মানুষের যেমন কদর কম তেমনই প্রকৃত শিল্পের শিল্পেরও কদর কম!