পরিচয়
পরিচয়
আঠারোবছর ধরে কানা ছেলেটাকে নিয়ে রোজ ভোরে প্রাতঃভ্রমনে বেরিয়ে, পদ্মলোচনকে শুনতে হয় নানা গঞ্জনা । তির্যক বা কটুকথা, কম শুনতে হয়না পদ্মলোচনের ছেলে, পদ্মনাভকেও।
আসলে কি বলুনতো, সমাজে যাঁরা জন্মগতভাবে পঙ্গু তাঁদের ভালোচোখে আমাদের সমাজ এখনও মেনে নেয়না। ওই পঙ্গু মানুষজনদের, মনের সাথেও লড়তে হয় আবার সমাজের সাথেও লড়াই করতে হয়।
আসলে আপনিও ভাবছেন এ আবার নতুন কি কথা। হ্যাঁ। আমিও জানি পুরোনো কথা, তাই এমনই সব হাহাকার বা নাকেকান্না লেখাগুলো আমিও স্ক্রল করে এড়িয়ে যেতাম। তাহলে পদ্মনাভর সেদিনের সিদ্ধান্ত কি সঠিক ছিল? কি সেই সিদ্ধান্ত?
আজথেকে আঠারো বছর পিছিয়ে যেতে হবে, পদ্মনাভ'র শৈশবের দিনগুলোয়। তাহলে আর দেরি কেন,পিছিয়ে যাই?
পদ্মনাভ তখন বয়সে খুব ছোট, তিনবছর বয়স। পাশের বাড়ির রিন্টু, মন্টু, সোনাই আর বুবলীরা রোজ বিকেলে বাড়ির উঠোনের সামনের খোলা মাঠটায় কানামাছি ভোঁভোঁ খেলে। ছোট্ট পদ্মনাভর মা কাকিমা মাটির বাঁধানো উঁচু দোরগোড়ায় বসে বাইরের উঠোনে পা মেলিয়ে এর ওর বাড়ির বউরা মিলে গল্পে মাতে। পদ্মনাভ মায়ের কোলে বসে শুধু এদিক-ওদিক তাকায় আর মাকে বলে-" মা,আমিও ওদের সাথে কানামাছি ভোঁভোঁ খেলবো। ওরা কত সুন্দর খেলছে, আমিও খেলবো মা।" ছেলেকে কোলে নিয়ে পদ্মনাভর মা ছেলের কানেকানে বললেন-"তুই বাবা খেলতে যাসনা, পড়ে যাবি। তোর সাথে ওদের ধাক্কা লেগে যাবে। তুই চোখে দেখতে পাসনা তো। তোর বাবাকে আমি বলেছি, আমাদের আর কিছু টাকা হাতে জমুক আমি ঠিক তোর চোখ অপারেশন করিয়ে আনবো। তখন তুই স-বার সাথে খেলবি আর সবার আগে এই কানামাছি ভোঁভোঁ খেলবি।
ছোট্ট পদ্মনাভ মায়ের কথা শুনবেই না। সে ঝোঁক ধরেছে কানামাছি ভোঁভোঁ খেলবেই আজ। পদ্মনাভর এমন বায়না শুনে সমবয়সী টুটুল এসে, পদ্মনাভর হাত ধরে তোতলাতে তোতলাতে বলে-আই পদ্ম কেলবি আয়। আমার বদলে তুই কানামাচি হ।"
টুটুলের এমন প্রস্তাব শুনে পদ্মনাভ আনন্দে মায়ের কোল থেকে লাফ দিয়ে ওঠে। পদ্মনাভ পা হড়কে দোর থেকে, নিচু উঠোনে পড়ে যায়। দুম করে উঠে দাঁড়িয়ে অন্ধের ন্যায় একহাতে চোখ ডলে আর অন্যহাতে মাকে খুঁজতে থাকে। সুনয়নাদেবী ঝপকরে উঠোনে নেমে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বললেন-"বলছিলাম না খেলতে যাসনা, কেমন পড়লি দেখলি? দেখি কোথায় লাগলো। বলতে বলতে ছেলের চোখ ও কপাল শাড়ির আঁচল দিয়ে মুছে দিলেন।"
টুটুল পদ্মনাভকে, মাঝ মাঠে হাত ধরে নিয়ে গেল কানামাছি হতে। স্থির ভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে পদ্মনাভ। কেন বলুনতো? সে জানেইনা তাকে এই খেলায় কি করতে হবে। বুবলী ছুটে এসে পদ্মনাভর চোখে ফেট্টি বাঁধছে। অ'দূরে দাঁড়িয়ে থাকা রিন্টু বলে উঠলো-" আরে ওর চোখ বাঁধছিস কেন? ওতো কানা ব্যাটারি।" পদ্মনাভ একই জায়গায় দাঁড়িয়ে দু'হাত সামনে করে গোলগোল ঘুরছে।
ছেলের প্রতি এমন তির্যক মন্তব্য শুনে সুনয়নাদেবীর চোখ ছলছল করে ওঠে। অন্যদের থেকে চোখের জল লুকোতে ঘরের ভিতর ছুটে গিয়ে শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখটা মুছে এসে দেখেন, মন্টু পদ্মনাভকে বুঝিয়ে দিচ্ছে তাকে এই খেলায় কি কি করতে হবে। পদ্মনাভ বেশ মনোযোগের সাথে বুঝে নিল তার কর্তব্য। ছেলের বুঝে যাওয়া দেখে, শাড়ির আঁচল মুখে চেপে গুমরে উঠলেন, সুনয়নাদেবী। হাসিকান্নার মেলবন্ধনে এক খুশির ঝলক চমকে উঠলো সুনয়নাদেবীর চোখেমুখে। পদ্মনাভ সমানে বলে চলেছে -'এই বুবলি আমার চোখে ফিতেটা বাঁধনা।'
সরলতার সাথে সুনয়নাদেবী, ছেলের চোখে ফিতেটা বাঁধবার আকুতি জানালেন। বুবলিও তাই করল। বেশ মজার সাথে সবার সাথে সেদিন খেললো পদ্মনাভ।
সন্ধ্যায় আম্মা টিভি দেখছে আর ছোট্ট পদ্মনাভ আম্মার আঁচল টেনে টেনে বলছে "আম্মা,ঠাই ঠাঁই আওয়াজটা কিসের গো?
ঠাম্মা বললো-"অ'তুই বুঝবিনা"।
-বলোনা ঠাম্মা। ওদের বাড়ির বিল্টুও এমন ঠাঁই ঠাঁই করে কি করছিল সেদিন। বলছিল ওটা বন্দুক। ওর মধ্যে গুলি ভরা আছে। ওই গুলিটা কারুর পেটে লাগলে নাকি সে মরে যায়।
-হুম। ঠিক বলেছে।
আনন্দে লাফাতে গিয়ে পদ্মনাভ সামনের টেবিলে বাড়ি খায়। আনন্দটা কান্নার রূপ নেয়।
পদ্মনাভর খুব ইচ্ছে স্কুল যাবে। সেও পড়বে। গ্রামেতো আর অন্ধদের স্কুল নেই। তাই পদ্মনাভর এস্বপ্ন হয়তো এজীবনে পূরণ হবেনা। সারাদিন ঘরে থাকে পদ্মনাভ। সকাল সন্ধ্যায় বাবার হাত ধরে একটু হেঁটে আসে ঘরের সামনের বড় রাস্তার পাশধরে। গাড়ির হর্নের শব্দ পদ্মনাভর অচেনা নয়। কিন্তু ছোট্ট পদ্মনাভ তার কল্পলোকে গাড়ি নামক যন্ত্রটা ঠিক কেমন দেখতে তা ভাবলেই ওর মন হরশিত হয়ে ওঠে। পদ্মলোচনবাবু আজকাল ছেলের নানান প্রশ্নের সম্মুখীন হন।
- বাবা গাড়ি কেমন দেখতে? বাবা গাড়ি চড়ে লোকে কোথায় যায়? বাবা ফুল কি? বাবা লাল ফুল কেমন রঙ?
ছেলের এমন প্রশ্নবানে, পদমলোচনবাবু ছেলের কল্পরেখায় নিজগুনে কাল্পনিকরূপ বুনে দেওয়ার চেষ্টা করেন। আর যে সকল প্রশ্নের উত্তর বুনতে পারেননা,তখন তিনি পদ্মনাভকে একটাই আশ্বাস দেন-"নিজের চোখে না দখলে বুঝতে পারবিনা। একটু সবুর ধর আর একটু বড় হলেই তোর চোখ অপারেশন করিয়ে আনবো। তখন তুই সব দেখতে পাবি।"
বাবার মুখ থেকে চোখে দেখার আশ্বাসবাণী শুনে, পদ্মনাভ বাঁ হাতের কড়ে আঙুলের নখ দাঁতে কাটতে কাটতে একটু থমকে যায়। আশার আলো পরখ করবার চেষ্টা করে।
এখন পদ্মনাভ দশে পা দিল। জন্মদিনের কেক এসেছে। কেক চোখে না দেখলেও খেতে যে বেশ, তার স্বাদ ভালো জানে।
ব্লু রঙের পাঞ্জাবি পরে, সন্ধ্যায়, পাড়ার বন্ধুদের সাথে কেককাটে পদ্মনাভ। দশের পদ্মনাভ এখন আরও বেশি মরিয়া চোখে দেখার তাড়নায়। সকলে মিলে যখন হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ । হ্যাপি বার্থডে পদ্মনাভ। বলতে বলতে উইস করছে। শুনে পদ্মনাভর মুখটা পুলকিত হয়ে ওঠে। শুধু চোখে দেখা হলনা।
এইদিন পদ্মনাভ মামাবাড়ি থেকে একটা মিউজিক সিস্টেম গিফ্ট পেয়েছে। একদম নতুন মডেল। শুধু মেমোরি চিপওলা পেনড্রাইভ যুক্ত করলেই গান বেজে উঠবে। তার মামা সেই কলকাতা থেকে কিনে এনেছেন ভাগ্নার মনোরঞ্জনার্থে।
মিউজিক সিস্টেমে গান বাজতেই পদ্মনাভর মনটা আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে। পদ্মনাভর বাবা গ্রাম থেকে দূরের অফিসে চাকরি করতেন। এখন আর চাকরি করেননা। শুধু চাষাবাদ করেন আর ছেলেকে পড়তে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন । কি আর করবেন। ছেলে পড়তে চায় তাই পড়ার কথাগুলো নিজের মত করে ব্যাখ্যা করে ছেলেকে বোঝাতেন।
পদ্মনাভ প্রতিদিন, দিনের বেশিরভাগ সময় গানশোনে। ওর প্রিয় গানের তালিকার মধ্যে রয়েছে রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি, শ্যমাসঙ্গীত আর বাউলগান।
গানের প্রতি পদ্মনাভর বিশেষ টান ও ভক্তি দেখে পদ্মলোচনবাবু ছেলের জন্য একটা হেডফোন কিনে দেন। বেশ আনন্দে পদ্মনাভ মিউজিক সিস্টেমে গান বাজায় আর আপনমনে শোনে।
পনেরোর পদ্মনাভ গানের প্রতি টান আর দিনের বেশিরভাগ সময় গানেই ডুবে থাকতে চায়। গানের ছন্দ, তাল ও গানের ভাষা পদ্মনাভর কণ্ঠস্থ। আজকাল পদ্মনাভর গান শুনতে হয়না। সে খালি গলায় নিজেই গান করে।
চোখে না দেখা ছেলের এমন সুমধুর কণ্ঠশুনে পদ্মলোচনবাবু ও তাঁর স্ত্রী সুনয়নাদেবী দিনেদিনে অবাক হন। ঘরের মধ্যথেকে গানধরলে বাইরের লোকে পদ্মনাভর গান শুনলেই বলে, এ শুধু গান নয় এ ঈশ্বরপ্রদত্ত কন্ঠ। ছেলের প্রতিভা দেখে পদ্মলোচনবাবু ঠিক করলেন আধপেটা খেয়েও তিনি ছেলের জন্য ঘরে ওস্তাদ এনে গান শেখাবেন।
শিক্ষা জগতে পদ্মনাভর প্রথম প্রবেশ গানবাজনার মধ্যদিয়ে। সুরেলা কণ্ঠ, কঠিন অধ্যবসায় আর আগ্রহ পদ্মনাভকে গানের জগতে প্রবেশ হতে বেশি সময় ব্যয় করতে হয়নি।
সেবার পাড়ায় পুজোর ফাংশনে শেষ বেলায় একটা গান গাওয়ার সুযোগ হয় পদ্মনাভর। বাবার হাত ধরে স্টেজে উঠে মিউজিশিয়ান কে বলে শ্যামাসঙ্গীত-"আমার সাধ না মিটিল সুর তুলতে।" প্রথম স্টেজে উঠেই পদ্মনাভ সফল। অন্ধ ছেলেটার কণ্ঠে যেন স্বয়ং মা ভর করেছিলেন। দ্বিতীয় গান,তৃতীয় গান, চতুর্থ গান। প্রত্যেকটা গান অসাধারণ। কলকাতা থেকে আগত বিখ্যাত সংগীতশিল্পীরা ব্যাক স্টেজে চুপচাপ এই অন্ধ ছেলেটার গান শুনছে। শ্রোতামণ্ডলীরা প্রতিটা গানের পর করতালিতে আসর মুখরিত করছেন। সেদিন আর কলকাতার শিল্পীদের গাওয়া হলোনা। তাঁরাও স্টেজে ওঠার চেষ্টা করলেন না। শুধু গান শুনে গেলেন। আর পদ্মনাভর বাবার ফোন নম্বর নিয়ে গেলেন। যদি কোথাও গানের সুযোগ আসে তাহলে তাঁরা পদ্মনাভর জন্যে গান গাওয়ার ব্যাবস্থা করে দেবেন। তাঁরাও পদ্মনাভর গানশুনে মুগ্ধ হয়েছেন।
সারা গ্রাম পদ্মনাভর গান শুনে বাহ্ বাহ্ ছাড়া কিছুই বলেনা। পদ্মনাভর কেরিয়ার অনেকটা পদ্মের পাপড়ির ন্যায় বিকশিত। শুধু ভালো একটা সুযোগের অপেক্ষা। পদ্মনাভ রোজ রেওয়াজ করে। তার সুরেলা কণ্ঠ সবাইকে মুগ্ধ করে। পদ্মনাভ আশেপাশের গ্রাম থেকে ছোটখাটো অনুষ্ঠানে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে ডাক পায়। যৎসামান্য অর্থমূল্যও পায়। সেই টাকায় নিজের গানবাজনার খরচ আসে।
ছেলের সর্বক্ষণের সঙ্গী পদ্মলোচনবাবু। যেখান থেকে গান গাওয়ার অনুরোধ আসে সেখানে তিনি ছেলেকে নিয়ে যান। একদিন এক সংগীতানুষ্ঠানে যাওয়ার পথে রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে পদমলোচনবাবু ও পদ্মনাভর গুরুতর এক্সিডেন্ট হয়। পদ্মলোচনবাবুকে হসপিটালে ভর্তি করতে হয় আর পদ্মনাভর সামান্য চোট লাগায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর এম্বুলেন্স করে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে যায়।
গুরুতর আঘাতের কারণে পদ্মলোচনবাবুর পায়ে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। তা শুনে পদ্মনাভ মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। বাবার অনুপস্থিত পদ্মনাভ মেনে নিতে পারছেনা। বাড়ির অন্য সদস্যরা যখন হসপিটালে ছোটাছুটি করছে, পদ্মনাভ দিনেরপরদিন বাবাকে কাছে না পেয়ে অস্থির হয়ে ওঠে। সে মনে মনে ভাবতে থাকে, বাবা যদি পঙ্গু হয়ে যায়। তাহলে তাকে কে নিয়ে যাবে এদিকওদিক। মানসিক অবসাদে ভুগতে ভুগতে একদিন একাএকা রান্না ঘরে গিয়ে গ্যাসের পাইপ খুলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই আগুনে পদ্মনাভ পুড়তে থাকে। আশেপাশের বাড়ি থেকে লোকজন ছুটে এসে পদ্মনাভকে উদ্ধার করে হসপিটালে নিয়ে যায়। সেদিন পদ্মনাভ হাসি মুখে নিজের মৃত্যু চেয়েছিল। শুধু একটাই কথা বলে-"বাবা যখন পঙ্গু হয়ে যাবে তাহলে তার জীবনও বৃথা। সুতরাং এ জীবন বাঁচিয়ে রেখে লাভ কি। আমি জন্ম থেকেই অন্ধ। সুতরাং আমার বেঁচে থেকে লাভ নেই। আমি বাড়ি আর সমাজের চোখে বোঝা মাত্র"
পদ্মলোচনবাবুর একটা পা বাদ দিতে হয়েছিল। পদ্মনাভর দীর্ঘ চিকিৎসার পর হসপিটাল থেকে ফেরে। ঘরে দুজন পঙ্গু মানুষ। সুনয়নাদেবীর চিন্তার শেষ নেই। পুরো পরিবার ছন্নছাড়া।
পদ্মনাভর কণ্ঠে আজকাল গান আর আসেনা। হঠাৎ একদিন টিভির এক বিখ্যাত গানের লড়াইয়ের আসরে পদ্মনাভর ডাক পড়ে।
পদ্মনাভ ঠিক করেছিল সে আর গান গাইবেনা। তার গানের জন্যই ,বাবা আজ পঙ্গু।
পদ্মলোচনবাবু ছেলের কাছে করুন আকুতি করেন, গানের আসরে যাওয়ার জন্য বলেন। বাবার কথা ফেলতে পারেনি পদ্মনাভ। অর্গানাইজারের পাঠানো গাড়িতে করে মায়ের সাথে কলকাতা সফর শুরু।
একে অন্ধ, তার উপর পোড়ামুখ। সকলেই অবাক। পদ্মনাভ শোনায় তার নিজের গায়ে নিজে কেন আগুন লাগিয়েছিল। কান্নায় ভেঙে পড়ে উপস্থিত শ্রোতামণ্ডলীরা এবং অন্যান্য বিশিষ্ঠজনেরা।
একেরপর এক গান । মানুষকে মুগ্ধ করতে থাকে। প্রতিটা গানের শেষে করতালিতে ফেটে পড়ে। সেই স্টেজেই পদ্মনাভ দুটো সিনেমায় গান গাওয়ার সুযোগ পায়।
অন্ধ পদ্মনাভ একজন সফল গায়ক। পরিবারের হাল ওরই হাতে। নামীদামী এক মিউজিক কোম্পানী পদ্মনাভর জন্যে সর্বক্ষণ সেবা করবে একজনকে নিয়োগ করেছেন। নিজের অর্থে নিজের চোখ অপারেশন করিয়ে জন্মান্ধের তকমা ঘুচিয়েছে।
কুড়ি বছর বয়সে পদ্মনাভ প্রকৃতি দেখার সুযোগ পায়। নয়ন ভরে দুনিয়া দেখে। বাবার জন্য হুইল চেয়ার ও আনুষঙ্গিক যাবতীয় খরচ পদ্মনাভ তার গান বিক্রি করে,খরচ করে।
"জীবনে সফলতা কখন আসবে,তা বলা মুশকিল। চরম বিপদেও ভেঙে পড়তে নেই। হতাশা মানুষকে মৃত্যুর মুখেও নিয়ে যায়। দুঃসময় আছে বলেই সুসময়ের কদর বেশি। আঁধার দীর্ঘস্থায়ী নয়। আলো তো শুধু অপেক্ষায়"।