Unmask a web of secrets & mystery with our new release, "The Heel" which stands at 7th place on Amazon's Hot new Releases! Grab your copy NOW!
Unmask a web of secrets & mystery with our new release, "The Heel" which stands at 7th place on Amazon's Hot new Releases! Grab your copy NOW!

সূর্য্যেন্দু গায়েন

Classics Fantasy Inspirational

4.0  

সূর্য্যেন্দু গায়েন

Classics Fantasy Inspirational

18+যৌবন

18+যৌবন

7 mins
6.5K


18 যৌবন


আজ এক সম্পূর্ণ আলাদা ধরণের গল্প লেখার চেষ্টা করলাম | প্রেম, পরিবার, প্রকৃতি নিয়ে অনেক লেখা গল্প পড়লাম | অনেক লেখলাম | আজ যেটা লিখবো সেটা আশা করি ছাত্র ছাত্রীদের ভালো লাগবে | অনেকে আবার তাদের পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করবে | আসি এবার আজকের গল্পে |


                  অডিটের শিক্ষক, প্রফেসর অরিজিৎ পট্টানায়ক | খুব ফ্রাঙ্ক স্বভাবের স্যার | মর্নিং কো-এড কলেজে পড়ি | স্যারও খুব ভালো অডিট সাবজেক্ট পড়ান | চাঁছাছোলা কথা বলেন | যার সমালোচনা করেন, তার তো অবস্থা খারাপ | ওই যেমন বলেন, আচ্ছা তোমরা যে অঙ্ক শেখো, কি কাজে লাগবে তোমাদের ? শুধু যোগ, বিয়োগ, গুন ও ভাগটুকুই শিখলে যথেষ্ট, অন্তত আমার মনে হয় | আচ্ছা এই বীজ গণিত শিখে কি লাভ ? তুমি যদি রিসেপসনিস্ট এর জব কর, তোমার ওই কাজে বীজ গণিত কি কাজে লাগবে ? কোনো ছাত্র পড়া না পারলে আবার বকা ঝকা নয় | উল্টে অন্যরা হাসলে উনি বলেন, হাসছো কেন তোমরা ? আজ পারেনি কাল পারবে | মনে হয় কোথাও পার্ট টাইম জব করে, তাই পড়ার সময় ঠিক মতো পাচ্ছে না | আবার যে ছাত্রের সম্পর্কে উনি একটু আধটু চেনেন , তাকেও তার মতো উত্তর দেন |


            এই সেদিন যেমন সমর পড়া বলতে পারেনি | স্যর সোজা বলে বসলেন, কি সমর আজকাল মনে হয় খুব মেয়ে বাজি হচ্ছে ? ওই সুমিতা, তুই মনে হয় সমর এর সাথে প্রেম করিস ? আচ্ছা সুমিতা তুই বল, সমর যদি পড়া মন দিয়ে না করে তাহলে তার রেজাল্ট ভালো হবে না, আর রেজাল্ট ভালো না হলে সে ভালো চাকরী পাবে না | ভালো চাকরী যদি না পায়, তাহলে তুই কি সমর কে বিয়ে করবি ? আমার তো মনে হয় করবি না, কারণ তুই এটুকু বুঝিস আজকালকার বাজারে কম বেতনের কাজে সংসার চালানো কি কষ্টের | তাহলে ক্ষতি-টা কার হলো ? আমার মনে হয় ক্ষতিটা হলো , সমর আর সমরের সময় নষ্ট করা প্রেমের | সুমিতাও একদিন অন্য কোনো চাকুরিয়ালা ছেলের সাথে বিয়ে করে চলে যাবে | লাইফ স্টাইল নষ্ট হবে সমরের | সমর যদি ভালো পড়াশোনা করে, ভালো চাকরী পায়, সুমিতাকে বিয়ে ও করতে পারবে আবার প্রেম করাটাও সার্থক হবে | 18 যৌবনের ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে স্যারের এই সকল আদেশ উপদেশ দারুন লাগলো |


        ক্লাস রুমে করতালি আছড়ে পড়লো | পাশের রুমে অংকের স্যার গজ গজ করে অঙ্ক শেখাতে লাগলেন | নির্ধারিত সময়ে প্রফেসর পট্টানায়ক ক্লাস শেষ করে বাই স্টুডেন্টস বলে ক্লাস ছাড়লেন | যাওয়ার সময় অঙ্কের স্যার এর রুমে একটু উঁকি মেরে বললেন, সরি প্রফেসর বঙ্কিম | ডিসটার্ব করলাম বুঝতেই পারছো 18 যৌবনের ছাত্র ছাত্রী তো তাই---- বলে চললেন স্টাফ রুমের দিকে | এদিকে অংকের স্যার ভুলে গেছেন পরের কি থিওরী বসিয়ে ক্লাসটা শেষ করবেন | উফফ |

কি রকম যেন একটা ঝড় বয়ে গেলো ক্লাস টায় |

ইতি মধ্যে ক্লাসে নোটিশ এলো আগামী মাসের দু তারিখ ইভিনিং কলেজ এর সাথে ফুটবল প্রতিযোগিতা আছে | সকলের অংশগ্রহণ কাম্য | সবাই তো আত্মহারা | হো হো একটা রব উঠলো সারা কলেজে |

নেক্সট দিন ক্লাসে পট্টনায়ক স্যার এলেন | সবাইকে উৎসাহ দিয়ে গেলেন | বললেন এবারেও কাপ টা যেন আমাদের কলেজের হয় | ছাত্র ছাত্রী সকলে উৎসাহিত হলো |

         এবার সময় মাঠে নামার | পট্টনায়ক স্যার স্টেডিয়াম এর দর্শকাশন থেকে উৎসাহিত করছেন | আমাদের কলেজ এক গোলে পিছিয়ে ছিলো | এমন সময় পট্টনায়ক স্যার গেলেন মাঠের ধারে | সুশীল কে উৎসাহিত করার জন্য এমন এক বিষয় তুললেন যা দেখে সকলে অবাক |

= সুশীল তুমি সীমা'র সাথে প্রেম করো মনে হয় না ?

= হ্যাঁ স্যার | বললো সুশীল।

= এটাই তোমার সুযোগ, সীমা তোমাকে ভালোবাসতে চায় না | যদি তার মন জয় করতে চাও তাহলে চাই একটা গোল | সীমা স্টেডিয়ামে আছে |


             ব্যাস কে আর দেখে সোজা কর্নার থেকে গোল | দ্বিতীয়ার্ধে আমাদের কলেজের হয়ে আর এক গোল করলো জাভেদ | সে তার গার্লফ্রেন্ডকে কথা দিয়েছিলো এক গোল দেবেই | জয় হাসিল | জয় হাসিল হবেই না বা কেনো ? এ যে অফুরন্ত 18 যৌবনের লড়াই | পট্টনায়ক স্যার সকলকে বাহবা দিলেন। এবং পরের বার ট্রেকিং এর এডভেঞ্চার এর জন্য ঘোষণা করলেন |


          উল্লাস আর আনন্দের সঙ্গে সকলে পড়াশোনা করতে লাগলো | এ যেন এক অদম্য 18 এর স্পৃহা |


অতি উৎসাহের সঙ্গে যারা যারা যেতে চাইলো তারা সকলেই বেরিয়ে পড়লো অযোধ্যা পাহাড়ের উদ্দেশ্যে |

সুনীলের গোছগাছ করতে দেরি হচ্ছে, বাড়ী থেকে এখনো বেরোতে পারেনি | এদিকে অনিক ফোন করে দু চারটা গালাগাল ও দিয়ে দিলো | রিয়া আর সীমা যেন দুই বোন | কি সাজুগুজু চলছে | ওদেরও লেট | ব্যাস প্রকাশের মাথা গরম | সোজা ফোন রিয়াকে | কিরে তোরা কোথায় ? বাসের টাইম হয়ে গেছে | সত্যি তোরাও না | এতো সাজের কি দরকার ? তোদের কি আজ সম্বন্ধ কেউ দেখতে আসছে নাকি ? যতসব |


         ওদিকে রিয়া রেগে আগুন | ধূর ! যাবো না | আরও দেরী | শেষমেষ সকলের এক হয়ে বেরোতে বেরোতে 2 ঘন্টা লেট |


          বাসে উঠে একপ্রস্থ ঝগড়া | যাদের যাদের লেট তাদের উপর গরম দেখানো হলো | যাক পট্টনায়ক স্যার এর হস্তক্ষেপে সমাধান হলো | আর সব হবেই বা না কেন ? সকলেই যে 18 যৌবনের অগ্রদূত | বাসে হইহুল্লোড় আর গল্প আড্ডায় সকলে মশগুল | এমন সময় ড্রাইভার সজোরে ব্রেকে পা দিলো | সকলে হুড়মুড়িয়ে পড়লো | কি হলো কি হলো | ওই এক কালো বিড়াল রাস্তা কেটে চলে গেলো তাই ব্র্যাক | যত সব অদ্ভুত রীতি, গজ গজ করে চললো লিটন | কারণ, ওর কনুই'এ লেগেছে একটু | প্রভাস বললো ভাগ্যিস ব্র্যাক কসেছে | না হলে বিড়ালটা মারা পড়তো | গাড়ি আবার নির্দিষ্ট গতিতে এগিয়ে চললো গন্তব্যের দিকে |


           দেরীতে হলেও গাড়ি গিয়ে দাঁড়ালো হোটেলের সামনে | সকলে হইহই করে নেমে যে যার নির্ধারিত রুম এ প্রবেশ করলো | মেয়েদের সাথে কয়েকজনের মা ও এসে ছিলো | সকল মেয়ে এক রুমে | আর ছেলেরা অন্য রুমে | সুভাষ আবার একটু ভয় পায় , বাথরুমের ধারে বিড়াল ডাকছিলো, ভয়ে বেরিয়ে এসে বললো, ভাই সাবধান থাকিস সকলে,আমি ভুতের কান্নার শব্দ পেয়েছি | ব্যাস এই কথা কোনো প্রকারে মেয়েদের রুমে পৌঁছে গেছে | সে কি থরোহরিকম্প | যাইহোক সেই রাতে বিভাস ও হোটেলের ছেলেরা মিলে আবিস্কার করলো এক হুলো বিড়াল |


          পরের দিন ট্রেকিংয়ে বেরোতে হবে | সকলে রাতের খাবার খেয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লো | ইয়ার্কির ছলে সুনীল মাওঃ মাওঃ করে উঠল | ব্যাস ! কে দেখে, সব হুড়োহুড়ি করতে শুরু করেছে | কেউ কেউ তো মশারি ছিঁড়ে বেরোতে চাইছে | যাক, প্রফেসর পট্টনায়ক, সব সামলে নিলেন | স্যার তো বলেই দিলেন, আচ্ছা তোরা সকলেই তো 18 যৌবনের লহর , এতো ভয় পেলে হবে কি ভাবে ? কাল আবার ট্রেকিং আছে | স্যার, সুভাষের উদ্দেশ্যে বললেন, সুভাষ কাল ট্রেকিং এ যাবে তো তুমি ? পাহাড়ের মাথায় চড়তে হবে। সুভাষ ভয়ে জুবুথুবু | তাও উত্তর দিলো, হ্য স্যার আমি যাবো | সেদিনের রাতটা সকলেরই কাটলো খুব রোমহর্ষক ভাবে |

         18 যৌবনেও যে ভয়ের সঞ্চার হয়, তা সুভাষের মুখ চোখ না দেখে বোঝা মুস্কিল | পরের দিন সকালে সকলে মিলে হালকা নাস্তা করে ট্রেনারের সঙ্গে বেরিয়ে পড়লো | তার মধ্যেই সুভাষ দুবার হিসি করে এলো, শুধু ভয়ে | যারা যারা আগে থেকে ট্রেকিং এর ট্রেনিং নিয়েছিলো, তারাই পাহাড়ে উঠবে বলে ঠিক হলো | বাকিরা নীচে থেকে উৎসাহিত করবে |   ছোটখাটো পিকনিক তাদের জন্য আয়োজন হলো |


           18 যৌবনে যেন , কোনো বাধা আসতে পারে না | অনেকেই গেলো ট্রেকিংয়ে | দু চার জন মেয়েও গেলো | অদম্য সাহস ও 18 বয়সের গরম রক্তই পারে প্রতিকূলতাকে সরিয়ে এগিয়ে যেতে | সুভাষ তো বলেই বসলো, স্যারঃ ওরা ট্রেকিংয়ে যাচ্ছে যাক না, আমি ওদের জামা কাপড় পাহারা দি | সবাই চলে গেলে হবে কি করে স্যার বলুন ?

               হুম | হুম | ঠিক আছে | ভালো করে নজরে রেখো | আর হ্যাঁ, বিড়াল হইতে সাবধান |

            ট্রেকিং এর সব প্রস্তুতি সারা | রওনা দিলো ট্রেকিং টিম | সকলে মিলে উৎসাহিত করলো | ট্রেকিং চলতে চলতে হঠাৎ সুশীল এর পায়ে কি যেনো নরম নরম ঠেকলো | সুশীল ক্ষণিক দাঁড়ালো | নীচে পায়ের কাছে তাকিয়ে যেই বিস্ফারিত চোখে দেখলো, অমনি, বাবাগো মাগো বলে চিৎকার | সাথে, সাপ সাপ বলে লাফিয়ে উঠলো | সুশীল সোজা দৌড় দিলো বেস ক্যাম্পে | বাকি যারা ছিলো তারা সাবধানতা অবলম্বন করে এগিয়ে গেলো | আবার বিপিত্তি লিটনের কোমরে বাঁধা দড়ি, খানিকটা আলগা হয়ে এসেছে | ট্রেনার সঙ্গেসঙ্গে বাঁধনটা শক্ত করে বাঁধলো | দুপুরের দিকে সাকসেসফুল ট্রেকিং এর পর সকলে নিরাপদেই ফিরলো |

              যে যার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করছিল, এমন সময় সুভাষ এসে বললো, ভাই সকল, আমি কিন্তু তোদের জামা কাপড়ের উপর তীক্ষ্ণ নজর রেখে ছিলাম | যাতে এদিক ওদিক গুলিয়ে না যায় | আমারও এক দারুন অভিজ্ঞতা হলো | সকলে মিলে হো হো করে হাসলো | তার মাঝে কেউ একজন মাওঃ মাওঃ করে উঠলো | সুভাষ বললো, কে রে হতছাড়া আয় তোর দাঁত ভেঙে দেবো | আর ভাঙবেই না কেন, সে যে 18 এর দাবিদার | মুখে চোখে অদম্য সাহস শুধু বিড়ালের ভয় আছে একটু |


পরের দিন সকলে বাড়ি ফিরলো এক নতুন অভিজ্ঞতার সাথে | প্রফেসর পট্টনায়ক লিটন'কে জিগ্যেস করলেন, লিটন তুই কিভাবে চড়লি পাহাড়ে ? তোর তো অভিজ্ঞতা নেই আগে | তখন ক্লাসের সকলে মিলে বলে উঠলো স্যার" আমরা সবাই 18 , কোনো বাধা আটকাতে পারবে না আমাদের | আমরা অফুরন্ত যৌবনের অধিকারী ||



Rate this content
Log in

More bengali story from সূর্য্যেন্দু গায়েন

Similar bengali story from Classics