Kanij Fatema

Abstract Tragedy Others

3  

Kanij Fatema

Abstract Tragedy Others

নীলাঞ্জনা

নীলাঞ্জনা

2 mins
248


তাহার নাম যখন নীলাঞ্জনা রাখা হইয়াছিল তখন কে জানিত যে বিষাদের নীল সুর তাহার জীবন জুড়িয়া ব্যপ্ত হইবে? সে যে হাঁটিতে পারে না।সজনে ডাটায় ধৃত প্রথমা ফুলকুমারির ন্যায় শৈশবের আঙর তুলিয়া সবে কৈশোরে পা দিয়াছে নীলাঞ্জনা। পল্লিপ্রকৃতির প্রতি মোহিত নবযৌবনার আস্বাদিত ভবের অপরূপ রূপ তাহাকে সর্বদাই পল্লিমায়ের সন্তান ঘোষণা করিতে সমৎসুক ছিল।ঝিলের ধারে শামুক কুড়ানো বা ফড়িং এর পিছু ছোটা তার হয়ে উঠে নি।পায়ে ভর করে চলা তার হয়ে উঠে নি। 

তবে তাহার একাকী জগতে একজন বন্ধু ছিল।ঘোষ বাড়ির ছোট ছেলেটা। তাহার নাম সুনীল।সংসার সমাজের প্রতি কোনো আকর্ষণ তাহার ছিল না।বাউলদের সহিত গান করিয়া এ পাড়া ও পাড়া ঘুরিয়া যা রোজগার করিত তাতে একজনের খরচ জোগানোই কষ্টসাধ্য ছিল।

কৈশোরের সমাপ্তি রেখা টানিয়া নীলাঞ্জনা সবে যৌবনে পা রাখিয়াছিল।তাহার কাজল কালো চোখেও সে রঙ লাগিয়াছিল।নিশীর অসীম বেদনার সুর তাহাকে কেবলই ডাকিত।পাড়ার লোকেরা ততদিনে নিন্দে আরম্ভ করিয়াছে।অমন সুন্দরী কন্যে ঘরে খুঁটি ধরবে এমন কথা শোনা যাচ্ছিল।

তার মধ্যে নীলাঞ্জনার বাপ তাহাকে পাত্রস্থ করিবার তোড়জোড় আরম্ভ করিল।অবশেষে মস্ত এক রায়বাহাদুর বাড়ির ছেলের সহিত বিবাহ ঠিক করিলেন।

কিন্তু বালিকা যে তাহার সমস্ত আশা আকাঙ্খার সুর বুনিয়া ছিল ঘোষ বাড়ির স্বপ্ন নীড়ে সে কথা কেহ ভুল করিয়াও তুলিল না।

ইতিমধ্যে একদিন সুনীলের ছোট ভাই নীলাঞ্জনার নিকট একখানা পত্র মারফত আসিয়াছিল। তবে সে পত্র তাহার বাপ কেহ দেখিবার পূর্বেই পুড়িয়া ফেলিয়া ছিলেন। ললাটে চন্দনচর্চিত করিয়া হলুদ বাটা দিয়া যেমনি করিয়া নীলাঞ্জনা কে সাজানো হইয়াছিল,সুনীলকেও সেদিন একই সাজে সজ্জিত করিয়া বহুমূল্য বস্ত্রে দেহ আচ্ছাদিত করিয়া হরিবোল ধ্বনিতে আকাশ বাতাস মুখরিত করিয়া তাহাকে লইয়া গেল।অন্যদিকে, অন্ধ স্বামীর বধূবেশে পালকি করিয়া নববধূ তাহার মনে কি নতুন স্বপ্নবীজ বপন করিতেছিল বলিয়া তাহার সুখ অশ্রু গড়াইতেছিল নাকি সুনীলের পঞ্চত্বপ্রাপ্তির দ্রোহে তাহার অশ্রুপাত হইতেছিল তাহা কেবলই অজানা।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract