প্রিয় কাব্য,
প্রিয় কাব্য,
আজ তোমার কথা খুব মনে পড়ছে। কত বছর তোমাকে দেখি না, একসাথে সকাল দেখি না,সন্ধ্যার আকাশে তারা গুনি না,চাঁদনি রাতে তোমার বুকে মাথা রেখে ঘুমানো হয় না। জানো,আজ আমার বাড়ির পাশে ছোট্ট গাছটা অনেক বড় হয়েছে, শ্বেতশুভ্র শিউলি ফুল গাছ টাও বুড়িয়ে যাচ্ছে।আমরা যেখানটায় বসে রোজ গল্প করতাম, সেই জায়গাটা ও এখন বড় বড় দালান কোঠায় ভর্তি। দেখতে দেখতে তুমি বিহীন প্রায় কুড়িটি বসন্ত পেরিয়ে যাওয়ার জন্যে দরজায় কড়া নাড়ছে।
রোজ প্রতীক্ষা, অসীম শূন্য চাহনি, একটু মায়ার পরশের জন্য কি নিষ্ঠুর প্রতীক্ষা! তোমার ঐ মন কাড়া চাহনির ছবিটা বুকে জড়িয়ে ধরে গভীর রাতে বেলকুনিতে দাঁড়ানো, তারপর সারাদিনের শত অব্যক্ত কথা, বেদন –রোদন সব তোমায় বলি। কেবল পার্থক্য কি জানো?
আগে তুমি আমায় আলতো করে বুকে জড়িয়ে নিতে, এখন আমি তোমার নির্জীব ছবিটা বুকে জড়িয়ে বুকফাটা আর্তনাদ করি,তবু এতোটুকু সান্ত্বনার পরশ বুলিয়ে দাও না, কেন?
জানো,তোমার সুরের তানপুরাটা রোজ শাড়ির আঁচল দিয়ে মুছে তোমার স্পর্শের খোঁজ করি। তোমার পছন্দের ওই নীলফিতের ঘড়িটা আজও খুব যত্ন করে আমার বুকের কাছে রেখেছি, তোমার গায়ের মাতাল করা গন্ধ যে মিশে আছে ঐ ঘড়িতে।
জীবনের প্রথম যে বসন্তে তুমি আমার খোপায় এক রাশি গোলাপ গুজে দিয়েছিলে,সেই গোলাপ শুকিয়ে গেছে আজ অনেক বছর। আমার আলতা রাঙ্গা পা তোমার ভীষণ প্রিয় ছিল, তুমি আলতো করে ছুয়ে ঐ নীলাগড়ের নুপুর জোড়া পরিয়ে দিতে, কি ভীষণ সুন্দর সেই অনুভূতি!
সমগ্র পৃথিবীর রাশি রাশি প্রেম যেন আমার পদ্মাসনে রাঙালো পায়ে।সেদিনও ছিল বসন্ত,
আজও বসন্ত।আমি ঠিক তোমার মনের আয়নায় আঁকা সেই ছবিটার মতো সেজেছি, তোমার প্রতীক্ষায় আজও বসে আছি নকুল ঘাটের তীরে।বহুদূরে কোথাও বেজে চলেছে সেই গান "ভালোবাসি,ভালোবাসি"।
ইতি
তোমার প্রেম পিপাসু প্রেয়সী
মালঞ্চলতা