NAKED
NAKED
Naked
………………….
Krishna Banerjee
বেশ কিছুদিন যাবদ ফেসবুকে কিছু মেয়ে দেহের প্রলভন দেখিয়ে বহু ছেলেকেই ব্লাকমেল করছিল। ফেসবুকে আলাপহবার পর তাদের সাথে খুব অল্প সময়ের মধ্যে বন্ধুত্ব করে ভিডিও সেক্সের অফার করছিল তারা। কথাবার্তার মায়া জালে বেঁধে টোপ তৈরা করে বিধতে পারলেই কেল্লাফতে। র্যাকেট টা মোটেও ছোটখাটো নয় সম্পূর্ণটাই একটা ট্রাপ। একটা সংগঠন কিছু মেয়েকে ব্যবহার করে একটা ব্যাবসাইক পরিকাঠাম গঠন করেছে মাত্র। আর এই ট্রাপেই পা দিয়ে ফেলেছিলেন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সত্যজিৎ।
পূর্ণ সাংসারিক ভদ্রলোক একটি পাঁচবছরের কন্যা সন্তান রয়েছে তার। মা - বাবা আর স্ত্রী - সন্তানকে নিয়ে বিন্দাস এক পরিবার। কোন অভাব অভিযোগ কার নেই ফলে অশান্তিও নেই। সত্যজিৎ বাবু এমনিতে খুবই মার্জিত। তার আচার - ব্যবহারে কাস্টমার রা খবই আপ্লুত থাকেন। ফেসবুকে আলাপ হয়েছিল রিতিকা সরমা ওরফে জুলির সাথে। রিতিকা হলো একটা ফেক আইডি। বেশ কিছুদিন ধরে দু-এক কথা বলতে বলতে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। বন্ধু হয়েওঠায় সত্যজিৎ তার সাথে নিজের এবং পরিবারের ডিটেলস সেয়ার করেন। কয়েকদিন পর ঘটেযায় বিপত্তি।
কয়েক দিন ধরেই সত্যজিৎ বাবুর মাথায় খুব চাপ চলছিল, একটা প্রজেক্ট লোন নিয়ে ধোঁয়াসায় পড়েগিয়েছিলেন তিনি। লোনটা ডুয়ার্সের চা বাগানের একটা প্রজেক্টের। সেখানে সাতদিন থেকে সমস্যার সমাধান করে ফেললেন তিনি। সন্ধ্যায় হোটেলে ফিরে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলেন সত্যজিৎ বাবু কারণ এটা তার সন্মানের বিষয় ছিলো। ফেরার পথে একটা স্যাম্পেনের বোতল নিয়ে এসেছিল সে। বহুদিন পর পাহাড়ের কোলে হোটেলের ব্যালকুনিতে বসে একটু স্যাম্পেন খাবে সে। নর্থ বেঙ্গল থেকে একদিন পর AC কোচের টিকিট পেয়ছে সত্যজিৎ বাবু। স্যাম্পেনের নেশায় একটারাত নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পরেরদিন পাহাড়ের শোভা উপভোগ করবেন তিনি। তারপরের দিন দুপুরে খাওয়া দাওয়া সেরে ট্রেনে চেপে বসে কোলকাতায় ফিরবেন। শিয়ালদহ স্টেশনের গায়েই তার বাড়ি তাই ট্রেন ঢুকতে একটু রাত হলেও তেমন সমস্যা হবেনা। সব ঠিক ঠাকই ছলছিলো তারমধ্যেই ঘটে গেল আর এক সমস্যা।
স্যাম্পেনের নেশাটা সবে চড়েছে সত্যজিতের এমনসয় ফোনটা বেজেওঠে। ফোনটা হাতেনিয়ে দেখে একটা ভিডিও কল ডুকছে একটু খেয়াল করে দেখে রিতিকা তাকে ভিডিও কল করছে, ইতি পূর্বে রিতিকা কখনো ফোন করেনি যাইহোক ফোনটা রিসিভ করলো সে, ফোনটা রিসিভ করে তার নেশা চারগুন চড়ে গেল, ফোনের স্কিনে বাথরুমের ভিতর সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় রিতিকা। রিতিকা বলে ঐকারয়েছি ভিডিও সেক্স করবার ইচ্ছে হয়েছে তুমিতো আমার বন্ধু আমায় একটু খুশি করতে পারবেনা। যে পেগটা রেডি করা ছিলো ঢক করে মেরেদিলো সত্যজিৎ, তারপর কি হয়েছিল কিছুই মনেছিলনা তার। ঘড়িতে সকাল আট্টা ঘুমভাঙতেই সত্যজিৎ চমকে উঠলো সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় বিছানায় পড়ে র
য়েছে সে, মনে করবার চেষ্টা করে সে না কিছুতেই মনে পড়ছেনা। ফোনের হোয়াটসঅ্যাপ টোনটা। জামা প্যান্টটা গলিয়ে ফোনটা খোলে সে, রিতিকার চ্যাট প্রথমে লেখা good morning. তারপরেই একটা ভিডিও। ভডিওটা ওপেন করতেই চমকে ওঠে সে একি দেখছে সম্পূর্ণ ন্যাকট অবস্থায় নেশার ঘোরে এ কি করেছে সে? ভিডিও তে রিতিকা আছে বটে কিন্তু মুখটুক কিছুই নেই তার অথচ তার ছবি পরিষ্কার। ফোন ঢোকে রিতিকার ফোনটা রিসিভ করে সত্যজিৎ। অপর প্রান্ত থেকে রিতিকার কন্ঠ কেমন লাগলো ভিডিওটা। সত্যজিৎ বলে এটা তুমি কি করেছো তমি নিজেকে আমার বন্ধু বলোনা। রিতিকা বলে বন্ধু বলি বলেই তো এখনো সোসালমিডিয়ায় আপশোড করিনি এবার আমার কথা মনদিয়ে শোন- আমার একলোক্ষ টাকার খুব দরকার প্লিজ তুমি পাঠিয়ে দাও আমি ভিডিওটা ডিলিট করে দেবো কেমন। সত্যজিৎ তাক বোঝারার চেষ্টা করে যে সে এখন শহবের বাইরে কিন্তু কে কার কথা শোনে এচই কথা বলতে থাকে টাকা না দিলে ভিডিও আপলঢ করে দেবো। অবশেষে ফোনটা কেটে যায়। আর এক নতুন সমস্যা কি করবে এখন সত্যজিৎ হঠাৎ তার বন্ধু প্রিতমের কথা মনে পড়ে তার।
প্রিতম একজন প্রাইভেট ডিটেকটিভ বহুধরনের কেশ সে সলভ করেছে ইতিমধ্যে, সমগ্র বাংলাজুড়ে তার একটা সোখ্যাতি রয়েছে। সত্যজিৎ তাকে ফোনকরে বিষয়টা জানায়। প্রিতম বলে এরপর যদি ফোনকরে সরাসরি বলে দিবি তুই এক পয়সাও ওকে দিবিনা ওর যা করবার করুক কেমন। সত্যজিৎ কিন্তু ও যদি ভিডিওটা আপলোড করে দেয়। প্রিতম বলে এতো সহজ নয় ভাই প্রতেকটা সাইডের একটা গাইডলাইন থাকে তার বাইরে কিছু আপলোড করা যায়না তুই বলেই দেখনা। ফোনটা কাটতে গিয়েও কাটেনা প্রিতম বলে শোন মেয়েটির ফেসবুক লিঙ্কটা আমায় পাঠা কেমন, আর তুই না বলার পর যে ফোন গোলো আসবে সব কটা কলি সুরু থেকে রেকর্ড করবি আর আমাকে পাঠাতে থাকবি কেমন এখন আমি রাখছি যদি পাড়িস মেয়েটার whatsapp নাম্বার আমাকে পাঠিয়ে দে কেমন?
ফোনটা কাটতে পারেনা সত্যজিৎ সাথে সাথে আবার রিতিকার ফোন, রেকর্ডিং অন করে সে ফোনটা রিসিভ করে প্রাই পাঁচমিনিট কথা হয় তাদের মধ্যে। প্রিতমের কথা মতো সত্যছিৎ একটাই কথা বলতে থাকে আমি পারবোনা অবশেষে রিতিকা বিরক্ত হয়ে বলে ঠিক আছে এবার যা করবার আমি করছি দেখ তোমার কি অবস্থা করি, এই বলেই রিতিকা ফোনটা কেটে দেয় সত্যজিৎ কথপোকথনের রেকর্ডিং পাঠিয়ে দেয় প্রিতমের কাছে। তারপর প্রিতমকে ফোন করে সবকথা জানায় প্রিতম বলে এবার তুই যেটা করবি সেটা হলো একটা ফোন নাম্বার দিচ্ছি তোকে এটা কোলকাতা ক্রাইম ডিপার্টমেন্টের ইন্চার্যের নাম্বার। এখন তোর ফোনে দু - চারটে নাম্বার থেকে ফোন আসবে ফোনটা এলেই রিসিভ করে হোলডে ফেলে এই নাম্বারে কনফারেন্স কল করবি তুই বাড়িফেরার আগেই কেশের দফারফা হয়ে যাবে।
ঠিক যেমন কথা তেমন কাজ
সব ফোনকল ট্রাক করা হলো লোকেশন সেম প্রতিটা ফোনই হায়দ্রাবাদের একটি বস্তি থেকে করা হচ্ছে। কোলকাতা পুলিশ হায়দ্রাবাদ পুলিশকে বিস্তারিত জানিয়ে সন্ধায় সেখানে অপেক্ষা করতে বললেন। কথা মত কাজ ঠিক ঠাক এগুচ্ছে এখন অপেক্ষা রিতিকার ফোনের। তখন ঘড়িতে বিকাল চারটে- বাইশ সত্যজিতের ফোনটা বেজে উঠলো, ফোনটা হাতেনিয়ে দেখে রিতিকা প্রিতমের কথা মতো কাজ সব ঠিকঠাক চলছে সে সত্যজিৎকে বোঝাতে চেষ্টা করছে তুমি ভালোমানুষ আমিও চাইনা তোমার কোন খতি হোক টাকাটা দিয়ে দিলেইতো ঝামেলা মিটে যায়। হঠাৎ একটা দরজা ঠকঠকের শব্দ শুনতে পায় সত্যজিৎ, মেয়েটি বলে এখনআবার কে এলো? ফোনটা তখনও কাটেনি সে, দরজা খুলতেই কতগুলো কন্ঠস্বর শোনা গেল পকর পকর একভি ভাগনে না পায়ে অন্দর লে যাকে সমঝায়েঙ্গে ধোকাদারি সে কামানেকা মজা কেয়া হে। সত্যজিৎ এবার একটা পরিত্রিপ্তির শ্বাস নেয়, সে এখনো ভাবতেই পারছেনা মদের নেশায় সে কি মারাত্যক ভূল করে ফেলেছিলো। অপর দিকদিয়ে ফোনটা কেটে যায়। চারিদিক যেন নিঃস্তব্ধ অনেক দিনের পর এই নিঃস্তব্ধতা তাকে শান্তি দিচ্ছে, দেহটা যেন অনেক বেশি হালকা লাগছে হোটেলের বিছানায় কয়েক মুহুর্ত সেযেন প্রানহীনের মত বসে রইলো।
কিছুক্ষন পর প্রিতমকে ফোন করে সত্যজিৎ প্রিতম ফোনটা ধরতেই সে বলে ভাই তোকে ধন্যবাদ জানিয়ে ছোট করবনা তবে আজ যদি তুই না থাকতিস আগামীকালের সূর্যদয় হয়তো আমি দেখতে পেতাম না।
🙏 সমাপ্ত 🙏
22/05/2022
