Manab Mondal

Abstract Romance Tragedy

4.8  

Manab Mondal

Abstract Romance Tragedy

মেঘের শহরে

মেঘের শহরে

4 mins
1.1K


মনটা ভীষন অসহিষ্ণুতা বোধ করছিলো পাশের বাড়ির চাপা উত্তেজনা কারণ তো আমিই ছিলাম। আমার হঠাৎ করে নতুন করে বাঁচার আকাংক্ষা এই নিয়ে , ওকে বিপদে ফেলে দিলো দ্বিতীয় বার। সবচেয়ে বয়সে এসে প্রেমে পড়া বারণ। লোকে কি বলবে। বুড়ো বয়সে ভীম রোতি। কিন্তু বদনাম ভয় আর করি না। যা হবে দেখা যাবে। যখন ও এসে পরেছে তখন দূর কোথাও চলে যাবো আমরা। যেখানে আমাদের কেউ চিনবে না। নতুন পরিচয় নিয়ে বাঁচবো আমরা।

আমরা কে জানত চাইবেন না। আমি মানব , বিপত্নীক। তবে বিপত্নীক হয়েছিলাম বহু যুগ আগে। আমার ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো ছিলো না। কোনো কারণে স্ত্রী আত্মহত্যা করলো শশুর বাড়িতে। তবে তার আগেই ও নিজে একটা ডিভোর্স ফাইল করে রেখেছিলো। আর একটা নোট রেখে গিয়েছিল ," আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।" শশুর বাড়ির লোকজন ভালো ছিলো। নয়তো আমাকে হয়তো জেলের ঘানি টানতে হতো।

বড় আঘাত পেয়েছিলাম। সৎ পথে অর্থ উপার্জন জন্য সব কিছু করতে রাজি হয়ে যাই। শহর ছাড়ালাম, পরে দেশ। বেশে কিছুদিন মধ্যেই অর্থের মুখ দেখলাম। কিন্তু হাসি খুশি আমিটা হঠাৎ করেই কেমন জেনো বদলে গিয়েছিলাম। তখন পাশের বাড়ির ছুটকি হঠাৎ করে বন্ধু হলো আমার। সোস্যাল মিডিয়াতে রোজ কথাবার্তা। ওর জীবনটা একা আসলে ওর ভালো লাগা গুলোর সাথে আমার ভালোলাগা গুলোর মিল আছে। কিন্তু ওর কোন বন্ধু বান্ধবীর রুচির সাথে ওর পছন্দ মেলে না। মজার বিষয় হলো , ঐ what app ছাড়া ওর ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, কোন সোস্যাল মিডিয়া তে একাউন্ট ছিলো না। ওর এই ভাইরাল, স্লেফি কালচার পচ্ছন্দ ছিলো না। ওর বন্ধুর সংখ্যা আসতে আসতে কমলো। সবার বিয়ে হয়ে গেলো। ও চাকরি করতো বড় কর্পোরেট অফিসে। সেখানে কেউ ওর বন্ধু ছিলো না। আমি ওর বন্ধুত্ব এর জায়গাটা একচেটিয়া অধিকার করে নিলাম। আমরা ঘনিষ্ঠ হলাম অনেকটা। সপ্তাহের শেষ দিকে ঘুরতে চলে যেতাম এখানে ওখানে। তবে এ বিষয়ে কারো বাড়ির লোকজন জানতো না।

আমার স্ত্রী মারা গেছেন অনেক গুলো বছর কেটে গেছে তখন , তাই আমার বাড়ির লোক জন আমার বিয়ের নিয়ে চাপ দিতে শুরু করেছে। ওদিকে ওদিকে পাত্রী খুঁজছেন। ওর বাড়িতে তাই। তবে দুই বাড়িতেই একটা জিনিষ অনুমান করেছিলো যে আমাদের কোর সাথে প্রেমে আছে। সেই দিন ওর পিসিতুতো বোন আবিষ্কার করলো আমাদের নন্দন চত্বরে সিনামা দেখে বেড়িয়ে সবে আমরা।

সেইদিন গতকালের রাতটার মতো বেশ চ্যাচামেচি হচ্ছিলো ওদের বাড়ি। পাশের বাড়ির হওয়ায় সব কানে আসছিলো। তবু ওকে what app করেছিলাম "সব কিছু ঠিক আছে তো। অসুবিধা হলে চলে আয় আমরা বিয়ে করে দূরে কোথাও চলে যাবো।"

ওর বাড়ি ওর উপরে নির্ভরশীল ছিলো অর্থনৈতিক ভাবে। ওর অনেক দায়িত্ব ছিলো। Good girl ইমেজ টা খারাপ হয়ে গেলো আমার জন্য। সবাই কথা শোনাছিলো ওকে। বিশেষ করে যারা কোন দিন সংসারে দায়িত্ব নেয়নি কোনোদিন ঠিকমতো। যাদের এতোদিন ওর জন্য কথা শুনতে হতো। যাদের কাছে ও সব সময় উদাহরণ ছিলো।

ওর উত্তরে একটি voice message পাঠিয়েছিলো ও যেখানে সবাই ওকে কথা শোনাছে। " তোর এতো লোভ। টাকার পয়সার লোভে একটা বাবার বয়সী পুরুষের সাথে প্রেম করছিস?"

মনটা তছনছ হয়ে গেলো। ইমেইল বক্সে গিয়ে, পুরনো office কে মেইল পাঠালাম।" আই আম রেডি send Visa and টিকিট।" তারপর অনেক গুলো বছর কেটে গেলো। একটা সুপারি গাছের মতো জীবন , লম্বা কিন্তু একা , কেউ তার ছায়া নেয় না , বাসাও বাঁধে না।

বাড়িতে ভাই ভাই এর বৌ আমার ভালোই দেখভাল করে , তবু শেষ বয়সে কারো বোঝা হতে চাই না বলেই আলাদা একটা বাড়ি কিনালাম। মর্নিং ওয়াক আবিষ্কার করালাম। ছুটকি এখানেও আমার প্রতিবেশী। বর মারা যাওয়ার পর , ও বরে চাকুরীটা পেয়ে ছেলে মেয়েদের মানুষ করেছে। কিন্তু আজ ওর কেউ বন্ধু নেই। ওর ছেলে মেয়ে বৌ গুলো কেমন জেনো। রোজ পার্টি টার্টি করে। চাকুরী করে এসে ও ছুটির দিন গুলো বাড়িতে কাঁটায় পাহারাদার মতো।

আমি ওর জীবনে আবার নতুন করে রঙ এনে দিলাম। স্কুলের শেষ আবার, সিনামা দেখা, এখানে ওখানে ঘুরতে যাওয়া বেশ চলছিলো। আবার সেই পুরনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি। ওর ছোট বৌমা তার বসের সাথে যে রেস্টুরেন্ট লাঞ্চ করতে ঢুকেছিলো। সেই রেস্টুরেন্ট আমি ওকে নিয়ে গিয়েছিলাম লাঞ্চ করাতে। তারপর সন্ধ্যা থেকে শুরু হলো ওদের বাড়িতে চাপা উত্তেজনা। যাই হোক সাহস করে ও চেলে এলো আমার কাছে। যাই ওকে চা দিয়ে জাগিয়ে তুলি। কাল আমরা কোথাও চলে যাবো।

একি ও উঠছে না কেন? ওর হাতে কাগজটা কি । খুলে দেখি কি লেখা আছে।

" জীবন টা তোমার সাথে কাটানো হলো না। মৃত্যুর কোলে নিজেকে তুলে দেবার আগে তোমার কোলে একটু ঘুমিয়ে নিলাম, বড় ক্লান্ত আমি। মেঘের দেশে পারি দিলাম। কষ্ট হলে, কথা বলো আকাশের সাথে।"

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract