মধ্যবর্তিনী
মধ্যবর্তিনী


এক মনে হোয়াটস-অ্যাপে মেসেজ পাঠাচ্ছিল মনোজ ।দীঘি আজও খুব উচ্ছল । একের পর এক ভালোলাগা আর ভালবাসার মেসেজে ভরে উঠছিল মনোজের ইন -বক্স। এরই মাঝে কয়েকটা নিজের ছবিও পাঠালো দীঘি । রাত পোশাকে দীঘি।
সঙ্গে সঙ্গে মেসেজ পাঠালো মনোজ। লুকিং ভেরি সেক্সি... ডার্লিং ...
কলকাতার একটা বড় ইন্সিওরেন্স কোম্পানির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টার মনোজ। কর্পোরেট জগতের নিরন্তর চাপ আর দমবন্ধ করা পরিবেশে ইদানীং মনোজ খুব হাঁপিয়ে ওঠে । দীঘি যেন তার জীবনে এক ঝলক টাটকা বাতাস , যেখানে সে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারে , ইয়ার্কি মারতে পারে , নিজের মতো করে বাঁচতে পারে , কর্পোরেট জীবনের অনিশ্চয়তার ভয় যখন তাকে তাড়া করে বেড়ায় না । দীঘি মনোজের প্রাইভেট সেক্রেটারি, কিন্তু মেয়েটা হাসি খুশি, যদিও বেশ আদুরে প্যাম্পারিং। কিন্তু মনোজও এই ন্যাকামিটা পছন্দ করে বেশ, সবচেয়ে বড় কথা দীঘি মনোজের সম্বন্ধে খুব কেয়ারিং... যেটা মনোজের খুব ভালো লাগে ।যার কেয়ারিং হওয়ার কথা ছিল সে তো কেরিয়ারের পেছনে দৌড়চ্ছে সারাদিন ।রাকা... তার বউ ... ধর্মপত্নী ;অথচ একদিন তারা প্রেম করে বিয়ে করেছিল
পাঁচ বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর বিয়ে তখন তাকে একদিন না দেখলে চোখে হারাত রাকা ... আর এখন !মনোজ কখন ফিরল ,কি খেল,কিছুই খোঁজ নেয় না ... মানুষেরই বোধহয় এত পরিবর্তন হয়! কেরিয়ারের ক্ষতি হবে ভেবে একটা সন্তান অবধি নিল না ! মনোজ যে কি নিয়ে থাকে ! একটু যদি বুঝতো রাকা !
বিয়ের পর পরই ডব্লু বিসি এস এক্সিকিউটিভের চাকরিতে জয়েন করে রাকা , তখন মনোজ কাঠ বেকার । ট্রান্সফারেবেল চাকরি , ভালোই লাগত বউয়ের সঙ্গে এখানে ওখানে ঘুরতে ,তাছাড়া তখন তো রাকার টাকাতেই সংসার চলত ! কিন্তু এখন ! এখন তো রাকার আর চাকরি করার প্রয়োজন নেই ! এখন তো মনোজকে যত্ন করার একজন লোক দরকার ।সংসারের একজন মালকিন দরকার । কিন্তু রাকা বুঝলে তবে তো ! চাকরিই তার একমাত্র ধ্যান জ্ঞান । প্রোমোশান ... উঁচুতে আরও উচুঁতে ওঠা । ফলে মনোজের জীবনে শূন্যতা আর ফ্রাস্ট্রেশান বেড়েই চলেছে ।
আজ দীঘি একটা নীল শাড়ি পরে এসেছে । সঙ্গে নীল স্লিভলেস ব্লাউজ । শাড়ি পরলে চমতকার দেখায় দীঘিকে । আজ একটা বড় কর্পোরেট হাউসের সঙ্গে মিটিং আছে । দীঘিকে এইসব মিটিংগুলোয় সব সময় নিয়ে যায় মনোজ । দীঘি যে সব কাজে মনোজকে অ্যাসিস্ট করে ... সেটা যে শুধু দীঘি একজন কম্পিটেন্ট পার্সোনাল সেক্রেটারি বলেই নয় ...সেটা মনোজ ভালোই জানে ।সারাদিন মিটিং এ তুমুল ব্যস্ততার পর ফেরার পথে ট্যাক্সিতে ঘনিষ্ঠ হয় দুজনে , দীঘির কাঁধে হাত রাখতে রাখতে মনোজ জিজ্ঞেস করে, "ভালোবাসো আমায় ?"
দীঘল কালো চোখ তুলে মনোজের চোখে চোখ রাখে দিঘী। মনোজ চোখ ফেরাতে পারে না ।
"আর তুমি ?"
"বোঝ না ?"
"বুঝি সব ।কিন্তু তোমার তো সংসার আছে , রাকা আছে , পারবে সব ছেড়ে আমার হাত ধরতে ?"
"সব ছাড়ার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে ? তুমি তোমার মতো থাকবে , রাকা রাকার মতো !"
"এভাবে ? সারা জীবন ? কেন তোমার ইচ্ছে করে না আমরা এক হই ? "
"ইচ্ছে তো করে ... কিন্তু রাকা ? আমায় ছাড়া ও বাঁচবে না !তাছাড়া ডিভোর্স পাবোই বা গ্রাউন্ডে ? আমাদের মধ্যে তো তেমন কোনো সমস্যা ... "
"থাক ... আর বলতে হবে না !"
চোখ নামিয়ে ট্যাক্সির জানালা দিয়ে বাইরের দিকে মুখ ঘোরায় দীঘি ...
"এই রাগ করলে ?দীঘির হাতে মৃদু চাপ দেয় মনোজ ।
"নাহ !" ট্যাক্সি ড্রাইভারকে নির্দেশ দেয়, "দাদা একটু বাঁদিক করে রেখে দেবেন তো ...
"আরে এখানে কেন ?মনোজ বেশ বিরক্তভাবেই চেঁচিয়ে ওঠে ! তুমি তো সেই রাসবিহারী নামবে ! এখনও তো দেরী আছে অনেকটা ...
দিঘি তাড়া দেয়, নামো তো !দুজনে একসঙ্গে হাঁটব একটু... আইসক্রীম খেতে খেতে ... কতদিন আমরা পাশাপাশি হাঁটি না !
দিঘীর এইসব পাগলামি মনোজের কাছে নতুন নয় , বরং সে এসব উপভোগই করে বলা যায় ... মেয়েটা সত্যি ভালো মনের ... অন্ততঃ তাকে ঠাকাবে না ...
ট্যাক্সির ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে সেন্ট পলস ক্যাথিড্রালের রাস্তা দিয়ে দুজনে পাশাপাশি হাঁটতে থাকে ; শেষ বিকেলের লালচে সূর্্যের আভা দীঘির গালে খোলা চুলে খেলা করে , শীতের আমলকি বনে নাচন লাগানো হাওয়া ... হঠাত পৃথিবীটাকে খুব মায়াময় মনে হয় মনোজের ... এই বিকেল , দিঘীর সান্নিধ্য ... অনেক দিন বাঁচতে ইচ্ছে করে আরও ...
এই সব কর্পোরেট হাউসের মিটিং এ যেদিন যেদিন প্রেজেন্টেশান থাকে দীঘিকে নিয়ে যায় মনোজ; আর ফেরার সময় অফিসের গাড়ি না বলে দেয় ...একটা ট্যাক্সি নিয়ে ফেরে দুজনে ... আসলে এই সময়টুকু দীঘির সান্নিধ্য পুরোপুরি উপভোগ করতে চায় সে.. অফিসের সবাই হয়তো আন্দাজ করে তার সঙ্গে দীঘির সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা ...প্রাইভেট কোম্পানি... কানাকানিও হয় প্রচুর । কিন্তু মনোজ এসব পাত্তা দেয় না ... সে জানে সে কোম্পানিকে যতক্ষন কাজ দিতে পারবে কোম্পানি তাকে মাথায় করে রাখবে ; আর দিতে না পারলেই ছুঁড়ে ফেলে দেবে আস্তাকুঁড়ে ... কোম্পানিই যদি তাকে ব্যবহার করতে পারে তাহলে সেই বা করবে না কেন ? এ তো সিমপ্ল গিভ অ্যান্ড টেক পলিসি ! কোম্পানির দেওয়া সব অ্যামিনিটিসের মধ্যে দিঘীও যে একটি এ কথা অস্বীকার করে না মনোজ।
আর দীঘি ? মনোজ বিবাহিত , রাকাকে সে কোনোদিনই ছাড়তে পারবে না ... এ সব জানার পরও মনোজকে ভালোবেসে ফেলেছে সে ; ছোটোবেলায় বাবা মারা গেলেও মামাবাড়িতে বড় আদরে মানুষ হয়েছে সে । দীঘির দাদু ছিলেন গড়িয়াহাট অঞ্চলের সত্তরের দশকের নাম করা ধনী । বড়লোক দাদুর বাড়িতে মানুষ হওয়ার দরুন ছোটোবেলা থেকেই ক্রমশঃ আদুরে আর জেদী হয়ে উঠেছিল দীঘি। এই কারণে মনোজকে নিজের করে পাওয়াটা তার কাছে একটা জেদের মতো । আর জেদ পূরণ করতে গিয়ে সে সব কিছু করতে পারে । সে বোঝে তাত আর মনোজের সম্পর্ক নিয়ে আফিসে অনেক কানাকানি অনেক রসালো গল্প চলে ... কিন্তু সে কোনো কিছুকেই পাত্তা দেয় না ...
একমনে ফাইলের ওপর ঝুঁকে পড়ে কয়েকটা হিসেব মেলাচ্ছিল মনোজ । এমন সময় হোয়াটস অ্যাপে পিং... দীঘির মেসেজ ।"সামনের উইকএন্ডে রায়চক যাবে ?শুধু তুমি আর আমি ? লং ড্রাইভ ?"
কিচ্ছু না ভেবে এককথায় লিখল মনোজ ... "নিশ্চয়ই ম্যাডাম । তোমার সঙ্গে আমি নরকেও যেতে রাজী!"গত দুদিন ধরে অফিসে আসছে না দীঘি ... বলেছে জ্বর হয়েছে; মনোজ বাড়িতে দেখতে যেতে চেয়েছিল , দীঘিই বারণ করেছে । আমাদের বাড়ীর সব্বাই ভীষন কনসারভেটিভ মশাই , তুমি গেলেই কে কেন হাজারটা প্রশ্নবাণ ধেয়ে আসবে ! তার থেকে শরীরটা ঠিক হয়ে গেলে আমিই তো আসব অফিসে !গত এক বছরের সম্পর্কে তারা কেউই কোনদিন একে অপরের বাড়ি যেতে চায় নি , মনোজ চাইলেও দীঘিই বারণ করেছে ; বলেছে তোমার আমার সম্পর্কের গভীরতাটা শুধু আমরাই বুঝব ; বাইরের লোক এর অপব্যাখ্যা করবে, কি দরকার বলো শুধু শুধু জটিলতা বাড়িয়ে ?চুপ করে গেছে মনোজ ... কিভাবে দীঘিকে বোঝাবে যে তাকে একদিন সম্পূর্ন করে পেতে চায় মনোজ ... একদম নিজের করে ... আর সেই ইচ্ছেটা যে কতখানি তীব্র !
দিঘীর প্রস্তাবটা তাই লুফে নিয়েছিল সে । বাড়িতে রাকাকে বলেছিল এই উইক এণ্ডে অফিস ট্যুরে সে কটক যাচ্ছে ... রাকাও যাচাই করে নি তার কথা ... ইদানীং স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে ... খুব প্রয়োজন ছাড়া দুজনের কথা প্রায় হয়ই না ... রাকাকে মাঝে মাঝেই দিল্লী যেতে হয় ... উঁচুতে আরও উঁচুতে অঠার স্বপ্নে সে বিভোর ...
তবে নির্দিষ্ট দিনে ভোরবেলা মনোজ যখন গ্যারেজ থেকে গাড়িটা বের করছে অদ্ভুত চোখে তাকিয়েছিল রাকা ... জিজ্ঞেস করেছিল "কটক যাবে বললে না ? অফিস ট্যুরে ?তাহলে গাড়ি কেন ? কোনো উত্তর দেয় নি মনোজ ... যা ভাবার ভেবে নিক... কারো কাছে জবাবদিহি করার কোনো দায়িত্ব তার নেই... আর রাকার কাছে তো নয়ই...
গড়িয়াহাটের মোড় থেকে দিঘীকে গাড়িতে তুলে নিল মনোজ । আজ দিঘীকে খুব ফুরেফুরে আর রিল্যাক্সড লাগছিল। আজ পরেছে হালকা নীল একটা জিনস আর লাল টপ ।চোখে সানগ্লাস ।পার্ম করা কাঁধ ছাড়ানো চুল পুরো খোলা । চকোলেট কালারের মনোজের হুন্ডাই আই টেন গাড়ীটা শহর ছাড়িয়ে রায়চকের রাস্তা ধরতেই মনোজ হালকা করে গাড়ির ড্যাশ বোর্ডের মিউজিক সিস্টেমে মান্না দে চালিয়ে দেয় ... হয়তো তোমারই জন্য /হয়েছি প্রেমে যে বন্য ... জানি তুমি অনন্য / তবুও হাত বাড়াই... এই দুটো দিন শুধু তারা একে অপরের ... মাঝখানে আর কেউ নেই ... কেউ না ...কতদিন যে এই দুটো দিনের অপেক্ষায় ছিল মনোজ !
" কি ম্যাডাম ? বাড়িতে কি বলে কাট মারলেন ? "
"যাও তো!" কপট রাগ দেখায় দিঘী; "আমি কি দুধ পিতা বাচ্চা নাকি ?"
"বললাম , বন্ধুদের সঙ্গে রায়চক যাচ্ছি..."
"বাব্বা ! কেউ ভেরিফাই করল না ?"
"না স্যর, সবাই তো আর তমার মতো সন্দেহপ্রবণ নয় !"
একহাতে স্টিয়ারিং ধরে অন্যহাতে দিঘীকে কাছে টানে মনোজ । চোখে খেলা করে দুষ্টূমি । " আমি সন্দেহ প্রবণ না ?"
"অ্যাই এখন একদম না ... নো দুষ্টুমি ! গাড়ি চালাচ্ছ না ?"
"তাতে কি হয়েছে ? তোমার সঙ্গে খুনসুটি করছি বলে ভাবছ আমার কোনদিকে নজর নেই ? ঠিক খেয়াল আছে আমার !"
ঘন্টা দুয়েকের মধ্যেই রায়চকে গঙ্গা কুটিরে পৌঁছে যায় ওরা ।ঘর আগেই বুক করা ছিল মনোজের নামে ; তবুও আধার কার্ড দেখাতে হল ... সব জায়গায় এই এক নতুন ফ্যাচাং হয়েছে ...রেজিস্টারে মনোজ লেখে মিঃ অ্যাণ্ড মিসেস মনোজ ব্যানার্জী। কি শান্ত পরিবেশ ! গঙ্গার একেবারে গা থেকে উঠেছে রিসোর্টগুলো । দিঘী তো বাচ্চা মেয়ের মতো খুশি আর উচ্ছ্বল হয়ে উঠেছে ।নরম রোদ মেখে পুরো রিসোর্টটা একপাক ঘুরে এল।খালি মনোজই কেমন যেন রিল্যাক্সড হতে পারছে না কিছুতেই ... থেকে থেকেই রাকার চোখের অদ্ভুত দৃষ্টিটা মনে পড়ছে ...
ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করতেই দিঘী ঝাঁপিয়ে পড়ে মনোজের বুকে ... চুমোয় চুমোয় তাকে ভরিয়ে তোলে ... এতদিন পর ভালোবাসার মানুষের সান্নিধ্যে মনোজের শরীরও সাড়া দেয় ...দুজন ভালবাসার মানুষ মেতে ওঠে আদিম শরীরী খেলায় ...
রাতে অনেকক্ষণ গঙ্গার পাড়ে বসে থাকে দুজনে ... মনোজের প্রিয় ব্ল্যাকডগ নিয়ে ... মনোজের কোলে মাথা রেখে একের পর এক গান শোনায় দিঘী ... কি মিষ্টি গলা দিঘীর ...
আজ ফেরার পালা । দুটো দিন যেন চোখের পলকে শেষ হয়ে গেল... কিছুতেই ফিরে যেতে ইচ্ছে করছে না কারোরই... কাল রাতে দিঘীর নরম রেশমের মতো চুলের মধ্যে ডুবে যেতে যেতেও রাকার কথা মনে পড়েছে মনোজের ... নিজেকে কি রকম বিশ্বাসভঙ্গকারী বলে মনে হয়েছে ... বেরোনোর সময় রাকার চোখের মর্মভেদী দৃষ্টিটা মনের ভেতর গেঁথে আছে ...দিঘীর এত কাছে এসেও কিছুতেই সহজ হতে পারছে না সে ।
আজ রাতে মনোজের ফেরার কথা ... সকাল থেকেই ঘর দোর পরিষ্কার করে গুছিয়ে রেখেছে রাকা ... নিজের হাতে মনোজের প্রিয় সর্ষে বাটা দিয়ে পাবদা মাছ রান্না করেছে ... টাটকা একগুচ্ছ রজনীগন্ধা কিনে এনে রেখেছে ফুলদানিতে ... কাল রাত থেকেই অনেকবার ফোনে ট্রাই করেছে মনোজকে ... একবারও পায় নি... বরং ধাতব কন্ঠস্বর ভেসে এসেছে ও প্রান্ত থেকে "দা নাম্বার ইউ আর কলিং, ইস নট রিচেবেল ..."আজকের দি্নটা কি মনে আছে মনোজের ?আজ তাদের দশম বিবাহ বার্ষিকী ... মনে মনে ঠিক করে রেখেছে রাকা এবার থেকে আর কেরিয়ার নয় তাদের দুজনের সম্পর্ককে সময় দেবে সে ... সময় দেবে তার মনোজকে ...
রাত তখন প্রায় এগারোটা ... মনোজের জন্য অপেক্ষা করতে করতে চোখটা ঘুমে লেগে এসেছিল রাকার ... সোফার ওপরেই কাত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল সে । হঠাত ল্যান্ড লাইনের তীক্ষ্ণ শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায় তার ...ছুটে গিয়ে ফোনটা ধরতেই ওপাশ থেকে ভেসে আসে ... মিসেস রাকা ব্যানার্জী বলছেন ?
"হ্যাঁ কি ব্যাপার বলুন তো ?"
"আমি বজবজ থানার ও সি বলছি ... আপনার হ্যাসবেন্ড মনোজ ব্যানার্জী রায়চক থেকে ফেরার পথে ন্যাশনাল হাইওয়েতে অ্যাক্সিডেন্ট করেছেন । সঙ্গে একজন ভদ্রমহিলা ছিলেন, সম্ভবতঃ ওনার অফিস কলিগ। নাম দিঘী রায় । উনি স্পট ডেড। আপনার স্বামীও সিরিয়াসলি ইনজিওরড ।মাথাটা প্রায় থেঁতলে গেছে ... বাঁচবেন কিনা সন্দেহ ! আমরা দুজনকেই অ্যাম্বুলেন্স করে কলকাতার অ্যাপেলো হাসপাতালে নিয়ে আসছি... আপনি ম্যডাম প্লিজ এক্ষুনি একবার হাসপাতালে চলে আসুন ... মেয়েটির বাড়িতেও খবর দিয়েছি আমরা ...
ঘটনার আকস্মিকতায় চোখের সামনে সারা পৃথিবী দুলতে থেকে রাকার , পায়ের তলার মাটি সরে যায় ... রিসিভার পড়ে যায় হাত থেকে ...
"হ্যালো হ্যালো ম্যডাম আপনি আসছেন তো ?"
দিশেহারা অবস্থায় মোবাইলে বাবাকে ফোন করে রাকা...