মামীর হাতের ডাব চিংড়ি।
মামীর হাতের ডাব চিংড়ি।


ডাব চিংড়ি আমার খুব প্রিয় খাবার । মামার বাড়ি গেলে মামীমা আমার জন্য কিছু করুক বা নাকরুক ডাব চিংড়ি বানিয়ে দেবেই। আমার মামবাড়ী বাড়ি ইছামতী নদীর খুব কাছেই। সেখানে কয়েক বিঘা জমিতে চিংড়ি মাছের চাষ হয়।ওগুলোকে জলকর বলে। হাটু খানেক জল থাকে তাতে। বিঘার পর বিঘা ওই জলকর।
বিকেলের দিকে রোদ পড়লে ডিঙি নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়তাম। ডিঙ্গির একপাশে মামা আর একপাশে আমি। একবার শীতের শেষের দিকে মামার বাড়ি গেলাম। মামার কাছে বয়না করলাম জলকরে পিকনিক করার।
অনেক আবদার করার পর মামা একপ্রকার রাজী হল। প্রথম দিকে না বুঝলেও পরের দিকে বুঝেছিলাম মামার রাজী না হওয়ার কারণ। মাস তিনেক আগে একটা মার্ডার হয় ওখানে। দুষ্কৃতীরা মার্ডার করে ডেডবডি ফেলে রেখে যায় ওই জলকরে।
মামীমা ও আমার আবদারে মামা একটা বড় নৌকা জোগাড় করে। সেদিন চাঁদনী রাত। পরিষ্কার আকাশে তারা গুলো মিটি মিটি করে জ্বলছিল। মামা একটা ভাটিয়ালী গান ধরল। কেরোসিনের লণ্ঠনের আলোতে নৌকায় দুলে দুলে ঘুরতে বেশ মজা হচ্ছিল। এরপর মামীর হাতের গরম গরম রুটির সাথে ডাব চিংড়ি আর কষা মাংস খেতে খেতে এক স্বর্গীয় অনুভূতি অনুভব করছিলাম।
আজ অনেক বছর পর কলকাতার এক পাঁচতলা হোটেলে বসে ডাবচিংড়ি খেতে খেতে মামা-মামীর কথা খুব মনে পড়ছে।