STORYMIRROR

Riya Bhattacharya

Horror Romance Classics

3  

Riya Bhattacharya

Horror Romance Classics

হৃদপাষাণ

হৃদপাষাণ

2 mins
457


আর্কিওলজি নিয়ে পড়াশোনা ও গবেষণার কাজে সোহিনীকে প্রায়ই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে হয়।এবারে এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের এক অখ্যাত গ্রামে,সঙ্গে পাঁচজন বন্ধু ও একজন অধ্যাপকের বড় দল।

গ্রামে সকলের থাকার ব্যবস্থা করেছেন আদিত্যনারায়ণ সিংহ,তিনিই গ্রামের সবচেয়ে ধনীব্যক্তি.....ওনার ঠাকুরদা মহেন্দ্রনাথ সিংহ ছিলেন দাপুটে জমিদার।ইংরেজদের সঙ্গে সন্ধি করে এলাকায় বাঘে-গরুতে একঘাটে জল খাওয়াতেন তিনি।

ভগ্নপ্রায় সিংহদরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশের পর গাটা কেমন যেন ভারী হয়ে এল সায়নীর,ওদের দলটা ব্যাগপত্র নিয়ে তখন এগিয়ে গিয়েছে অনেকটাই।কেমন যেন একটা ঘোরের মধ্যে সোজা এগোনোর বদলে বাঁদিকের জঙ্গলটার দিকে এগিয়ে গেল সোহিনী।

এদিকে অগুন্তি গাছের সমাহারে দিনের বেলায় ঘনিয়েছে আঁধার,নাম না জানা পাখির ডাকে মাঝে মাঝেই চমকে ভেঙে যায় আরণ্যক নিস্তব্ধতা।চোখের মনি স্থির রেখে সেই পাতাঝরা এবড়োখেবড়ো পথে হোঁচট খেতে খেতে এগিয়ে চলে সোহিনী,মাথার ওপর ঝরাপাতার সঙ্গে বৈশাখী দুপুরে খসে পড়ে কিছু রক্তলাল পলাশ।

কিছুটা এগোনোর পর বাঁধানো দীঘির কাছে এসে থমকে দাঁড়ায় সোহিনী,এক কিশোর ঘাটে বসে বাঁশি বাজায় আনমনে।সোহিনীকে দেখে এগিয়ে আসে,দুচোখের পাতায় এঁকে দেয় শীতল চুম্বন,তারপর আচমকাই ঝাঁপিয়ে পড়ে পুকুরে।

তিনদিন পর, আজ কোলকাতার উদ্দেশ্যে ফিরে চলেছে সোহিনীদের দলটা,পেছনের সিটে এক বান্ধবীর কাঁধে মাথা এলিয়ে শুয়ে আছে সোহিনী,চোখ ভাসছে অশ্রুজলে।সেইদিন সন্ধ্যাবেলা অনেক খোঁজাখুঁজির পর সোহিনীকে দীঘির পাড়ে অজ্ঞান অবস্থায় আবিষ্কার করে বন্ধুরা,দুদিন জ্বরের ঘোরে প্রলাপ বকে চলে সোহিনী।জানা যায়, মহেন্দ্রনাথের কনিষ্ঠা কন্যা সমাপ্তির সঙ্গে এক রাখাল বালক কাঞ্চীর প্রেম মেনে না নিয়ে কাঞ্চীকে ওই দীঘির জলেই সলিলসমাধি দেন জমিদার,আর কন্যাকে সুপাত্রস্থ করেন।

শেষ হয়েছে কাঞ্চীর অপেক্ষা,এবার হয়ত সে জন্ম নেবে অন্য কোনো ঘরে।জাতিস্মর সোহিনী তার জন্য অপেক্ষা করবে কিনা সময়ই দেবে তার উত্তর।।




Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror