গুলাল আবু বকর

Comedy Classics

3  

গুলাল আবু বকর

Comedy Classics

হাসি পেলে হাসুন, কিম্বা...৩

হাসি পেলে হাসুন, কিম্বা...৩

4 mins
295


•• প্রেসক্রিপশন ••

প্রেসক্রিপশনের কথা যখন উঠল, এই গল্পটা বলবো না, তা কি হয়?

এক রোগী বলছেন : ডাক্তারবাবু, আমাকে দুটো প্রেসক্রিপশন দিলেন কেন?

ডাক্তার বললেন : একটি প্রেসক্রিপশন দিয়েছি যাতে আপনি ভালো বোধ করেন।

রোগী : আর অন্যটা?

ডাক্তার : অন্যটা দিয়েছি যাতে ওষুধ কোম্পানিগুলো ভালো বোধ করে।

রোগী : কোনটা কখন কাজে লাগবে ডাক্তারবাবু?

ডাক্তার : আপনি যেটায় ভালো বোধ করবেন যদি তাতে কাজ না হয় তবে অন্যটায় অবশ্যই হবে। যা যা বলেছেন, সব রোগের ওষুধ ওতে আছে।

   বার বার ভুলে যাওয়া এক রোগী ডাক্তারের শরনাপন্ন হলেন। মনস্তত্ত্বের চিকিৎসক। বয়স হয়েছে তাই নিজেও আজকাল ভালো মনে রাখতে পারেন না। তবুও তার বড় নামডাক আছে।

রোগী বললেন, “ডাক্তারবাবু খুব চিন্তায় আছি। প্রায় সবই দ্রুত ভুলে যাই। একবার তো স্ত্রীকে চিনতে ভুল হয়েছিলো, অন্যের হাত ধরে ফেলেছিলাম। তবে কিছু সহৃদয় লোকের সাহায্যে সে যাত্রায় বেঁচে যাই। ব্যাপারটা ঘটেছিলো সমুদ্রতটে সমুদ্রস্নানে গিয়ে। বুঝতেই পারছেন কিরকম ঝুঁকি ছিলো!”

প্রেসক্রিপশন লিখতে গিয়ে ডাক্তারবাবু বার বার ভুলে যাচ্ছেন আর বারবার লেখা কাটছেন। শেষে এক জায়গায় এসে থামলেন।

বললেন, “তিনরকম ওষুধ দিলাম, তিনবার করে খাবেন।”

রোগী প্রেসক্রিপশনের সব ওষুধ কিনে বাড়ি চলে গেলেন। একদিন খাওয়ার পর থেকে ওষুধ গুলিয়ে যেতে থাকলো। মনে থাকেনা কোনটা কখন খেয়েছেন এবং কোনোটা আদৌ খেয়েছেন কিনা। যে ওষুধ একবার খান পরমুহূর্তে সেকথা ভুলে যান। ফলে একই ওষুধের রিপিট হয়ে যায়। এটা বিষম বিপদ! স্ত্রীর কথা শুনে রোগী পুনরায় ডাক্তারের কাছে ছুটলেন। সব শুনে ডাক্তার আরো একটি ওষুধ লিখে দিলেন। 

রোগী জানতে চাইলো, “এটা কিসের ওষুধ ডাক্তারবাবু?”

ডাক্তার বললেন, “আগেরগুলো ছিলো কোনোকিছু ভুলে যাওয়ার জন্য। আর এটা দিলাম ভুল করে ভুলভাল ওষুধ খাওয়া বন্ধ করার জন্য।”

       যতোরকম রসিকতা করা যায় তন্মধ্যে রোগী ও ডাক্তার রসিকতা অন্যতম। বিষয়টির সাথে আমাদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ বিধায় সকলের কাছে বেশ উপভোগ্য হয়।

          আমার নিজের লেখা একটি কথোপকথন কৌতুক আছে...এক কালা রোগী ও এক কালা ডাক্তারের সংলাপধর্মী। সেখানেও প্রেসক্রিপশনের একটা ব্যাপার আছে।

       পুরনো প্রেসক্রিপশনের মাহাত্ম্য নিয়ে একটা কিছু শোনাই। কোনো এক রোগী ডাক্তারবাবুর প্রেসক্রিপশনের একঘায়ে সেরে উঠলো। ওষুধ খেয়ে একবারেই খাড়া দাঁড়িয়ে গেলো। রোগী ডাক্তারবাবুর প্রশংসায় একেবারে গদগদ। এরপর অনেকদিন কেটে গেলো। যখনই অসুস্থ হয় তখনই প্রেসক্রিপশন থেকে ওষুধ খায়। কমবেশি সেরেও যায়। এইভাবে পাঁচটা বছর কেটে যাওয়ার পর একদিন রোগী ডাক্তারের কাছে উপস্থিত। রোগী বললো, “আমাকে মনে আছে ডাক্তারবাবু? আপনার ওষুধ খেয়ে আমি পাঁচবছর ভালো আছি।” 

ডাক্তারবাবু ভুরু কুঁচকে দেখেও তাকে চিনতে পারলেন না। বললেন, “তা বেশ। এখন তাহলে কিসের জন্য আসা?”

রোগী বললো, “আজ্ঞে পাঁচ বছর আগে আমি একবার এসেছিলাম। সেই থেকে আপনার প্রেসক্রিপশন চালিয়ে এখনো খাসা আছি তাই আসা। ব্যবহার করতে করতে প্রেসক্রিপশন একেবারে বেহাল হয়ে পড়েছে। জরাজীর্ণ অবস্থা, এখন দোকানদার পড়তে পারে না। ঐটা আর একবার নতুন করে কপি বানিয়ে দেবেন।”

কথাটা শুনে ডাক্তারের মনে হলো, পারলে এই লোককে তিনি গরম জলে চুবিয়ে কফি তৈরি করে ছাড়েন। তার সময় নষ্ট করার জন্য মেজাজ ঝাঁ ঝাঁ করে ওঠে। তিনি যথাসম্ভব ধৈর্য রেখে বলেন, “তাহলে কষ্ট করে আসার দরকার কি? দোকানদারের তো মুখস্থ হয়ে গেছে ওষুধের নামধাম! বাকি জীবনটা এ দিয়েই কাটিয়ে দিতে পারতেন...!”

“ডাক্তারবাবু একটা নতুন কপি করে দেন, পুরো ফিজ্ দিয়ে দেবো।” রোগী বললো।

“দূর মশাই, সব ওষুধ সারা জীবন ধরে খাওয়া যায় নাকি? পৃথিবীতে আপনার তো একটাই কপি আছে। অবশেষে সে কপিও টিঁকবে না। ওষুধের সাইড এফেক্ট বোঝেন না!”

       এর পরের কাহিনী প্রেসক্রিপশনের বিবর্তন নিয়ে। মানে, প্রেসক্রিপশন পরিবর্তন করে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে। এক বয়স্কা মহিলা ডাক্তারের সামনে বসে আছেন। ডাক্তার জানতে চাইলেন তার অসুবিধা কী হচ্ছে। ঠিক এই মুহূর্তে ঐ মহিলা বায়ু নিঃসরণের জোরালো বেগ চাপতে পারলেন না। দেখলেন যে, ডাক্তার নিজের নাকে রুমাল চাপা দিচ্ছেন। মহিলা ব্যাপারটা বুঝতে পারলেন না। অতঃপর আরাম হওয়ার পর মহিলা বললেন, “প্রচণ্ড বদহজম আর পেটে বায়ু জমে। তবে সে বায়ুতে কোনো গন্ধ নেই কিংবা কোনো শব্দ হয়না। অসুবিধা বলতে এইটুকু।”

ডাক্তার একটি প্রেসক্রিপশন লিখে বললেন, “এই ওষুধ একসপ্তাহ ব্যবহার করার পর চলে আসবেন।”

মহিলা একসপ্তাহ পর আবার ডাক্তারের চেম্বারে এলেন। ডাক্তারকে তিনি বললেন, “ডাক্তারবাবু এখন দেখছি বায়ুতে বেশ দুর্গন্ধ হচ্ছে। মানুষের সামনে যেতে লজ্জা পাচ্ছি।”

ডাক্তার বললেন, “প্রথমে আমি আপনার সাইনাস ঠিক করে দিয়েছি। এখন নাক ঠিক হয়ে গেছে। এরপর আমি আপনার কান ঠিক করবো যাতে ঠিকমতো শুনতে পান। তারপর ঠিক করবো আপনার পেট।”

       ফলো (follow) করার ফল সবসময় ফলদায়ক নয়।

চিকিৎসক রোগীকে বলছেন, “আমার প্রেসক্রিপশন ঠিকমতো পুরোপুরি ফলো করছেন তো?”

শুনে রোগী ক্ষেপে গেলো। বললো, “পাগল নাকি! করলে আমি এতক্ষণে মারা পড়তাম।”

চিকিৎসক অবাক। বললেন, “এটা আপনি কী বলছেন?”

রোগী বললো, “হ্যাঁ, ঠিকই বলছি। ঐ প্রেসক্রিপশনটা পাঁচতলার ছাদ থেকে হঠাৎ পড়ে গিয়েছিল, ফলো করলে .... উফ্!”

             © চেম্বার বন্ধ হচ্ছে এখন...  # এবার পড়ে নিন— পর্ব ৪ (‘গুলাল’ সার্চ করে প্রোফাইলে গিয়ে পড়ুন)



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Comedy