Anindya Biswas

Tragedy

2.6  

Anindya Biswas

Tragedy

দীপাবলীর আলো

দীপাবলীর আলো

2 mins
374



দীপাবলীর মেলায় একা বসে ছিল অনিক। আজ ডিউটি তার এখানে। একা একা বসে ভাবছিল অনেক কথা।


মেলায় প্রচুর পুণ্যার্থীর সমাবেশ। একেকজন এসেছেন বিভিন্ন মনোকামনা নিয়ে মায়ের কাছে বলতে। চেয়ারে বসে বসে তাদেরই দেখছিল অনিক, আর ভাবছিল অনেক কথা।


--আসে তো সবাই মায়ের কাছে কত আর্জি নিয়ে। কত আবেদন নিয়ে। কতজনের কথা শুনবেন মা। কতজনের প্রার্থনাই বা মঞ্জুর করবেন।আর যদি ঠিকই শুনে থাকেন, তাহলে আমারটা শোনেন না কেনো। নাকি আমার কোনো প্রার্থনাই নেই?-- বসে বসে এইসব চিন্তায় মশগুল অনিক।


অনিকেরও তো ছিল কত প্রার্থনা।কত আশা। কত আবেদন। না ভুল বললাম। অনিকের একটাই আশা ছিল। একটা সুস্থ স্বাভাবিক ঘর। একটা ছোট্ট সুন্দর পরিবার-- এই স্বল্প আশা। হলো কি পূর্ণ? নাহ্। উলটো আইনের নাগপাশে জড়িয়ে জীবনে অন্ধকার। হাসফাঁস করছে সে। মুক্তির আশায়। একটু অমৃতের আশায়। পারছে কি বাঁচতে?


" এই জগতে জীবনসাথী নেই তো কেউ নাই স্যার। ছেলেমেয়ে, ভাইবোন সব একটা সময় ছেড়ে চলে যায়। কর্মের খাতিরে। সাচ্ছন্দের খাতিরে। এতে দোষের নাই। কালের নিয়ম। কিন্তু যে অজানা অচেনা মেয়েকে সাতপাকে ঘুরিয়ে, অগ্নিসাক্ষী মেনে এনেছেন, সে থাকবে আপনার পাশে, হাসপাতালে শেষমুহূর্তে আপনার হাত ধরে - তা যেই আগে বিদায় হন না কেনো পৃথিবী থেকে।" -- পাশে বসে থাকা বয়স্ক ডেকোরেটর ফনিন্দ্রর মুখে হটাৎ উক্তি।


 হাসলো অনিক। 

 

--"জীবনসাথী! শেষ সময়! পাশে থাকা! হা হা হা, কি শোনালেন ফনিবাবু? হা হা হা" -- হাসি থামেনা অনিকের।


অবাক চোখে তাকিয়ে আছেন ফনিন্দ্র। অনিকের হাসি দেখে। হাসি থামার লক্ষণ যে নেই।


হাসছে অনিক। কিন্তু অন্তরে জ্বলতে জ্বলতে কাঁদছে অনিক। দীপাবলীর পবিত্র আলোতেও যে দুর হয়নি তার জীবনের অন্ধকার। শোনেনি যে মা তার কথা।


তাই হাসছে অনিক,বা, কাঁদছে অনিক।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy