💔 প্রশ্নোত্তর 💔

-" হ্যাপি দুর্গাপুজো স্যার।"
অনীক শুনতে পেলনা। 
-"বলছি হ্যাপি দুর্গাপুজো স্যার।" রাইমা আবার বলল।
রাইমা। রাইমা রায়। অনীক দের কোম্পানী তে সবে জয়েন করেছে। অনীকের কাছেই শিক্ষানবিশ।
--" ও হ্যাঁ হ্যাঁ, হ্যাপি দুর্গা পুজো। সব জামাকাপড় কেনা হয়ে গেলো?"
-" কি বলছেন স্যার। এখনও অর্ধেক বাকি। সবে তো সপ্তমীর দুপুর অব্দি আউটফিট ঠিক করলাম। "
অনীক ঢোক গেললো। এ মেয়ে কি কাপড়ের দোকান খুলে বসবে নাকি?
- " তো স্যার আপনার প্ল্যান কি? কোথায় খাবেন, কি পড়বেন - সব ঠিক করে রেখেছেন তো"
-- " আমার; নাহ; আমার ওসব নেই।"
রাইমার চোখ কপালে উঠলো।
- " বলেন কি স্যার। বছরে একবার আসেন মা দুর্গা। সারাটা বছর বাঙালিরা এই দিনটার জন্য বসে থাকে। জমিয়ে আড্ডা, খাওয়া দাওয়া, প্রেম, ভালবাসা, হাসাহাসি - ওফ আর কি চাই । সারাটা বছর অধির আগ্রহে অপেক্ষা করা। আর আপনি কি না বলছেন ওরকম কোনো প্ল্যান নেই। ধুর, আপনি যেনো কী? এই যাহ " বলে জিভ কেটে অনীকের দিকে তাকালো ।
--" তা ঠিকই বলেছো। আমি একটু এমনি।"
- " কেনো স্যার। কি সমস্যা। প্রেমঘটিত? বা অন্য কিছু? যদি বলেন, আরামসে বলেন। আমি সমাধান দিয়ে দেবো।"
-- " বাদ দাও। কি হবে জেনে। আর কিসের সমাধান? সব জিনিসের বা সব প্রশ্নের বা সব ধাঁধার সমাধান চাইতে নেই। বা থাকলেও নিতে নেই। কারণ সমাধান পেলে সেই প্রশ্নের আমেজটুকু শেষ হয়ে যায়। "
- " আমার আপনার কথার মাথা মুণ্ডু কিছুই ঢুকেনি। আচ্ছা স্যার; আমার আজকে একটু আগে যাওয়ার ইচ্ছা। আজকে আসি তাহলে?"
--" এসো।"
অনীক বেল বাজিয়ে বেয়ারাকে এক কাপ কফি আনতে বলল।
কফি খেতে খেতে কাঁচের জানালা দিয়ে নিচে শহরটাকে দেখতে লাগলো। বৎসরের এক সময়টা শহরটা যেন সদ্য যৌবনপ্রাপ্তা কিশোরীর মত সুন্দর হয়ে উঠে । প্যান্ডেলগুলোতে আস্তে আস্তে প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য, লোকের হৈ হৈ হুল্লোর, পুজো পুজো গন্ধে ম ম করে।
অনীক এর মনে রাইমার প্রশ্ন গুলো ঘুরপাক খাচ্ছিল। সত্যিই তো, মানে হয় আমেজ ধরে রাখার? অতীত আঁকড়ে বাঁচার?
(কয়েকবছর আগে , এমন দিনে)
- "এই চল চল দেরি হয়ে যাবে অঞ্জলীর জন্য। কি করছিস।" ( ফোনের ওপাশ থেকে অনীকের ধমক)
অনীকের এই বারের দুর্গাপুজো সবচেয়ে স্পেশাল। অনেকদিন ধরে চলছে তার আর মেঘনার প্রেম। এইবার তাকে পূর্ণতা দেবার ইচ্ছে ।সেই অভিসার নিয়েই আজকের অঞ্জলী দেবার ইচ্ছা তার একসাথে ।
--- " দাঁড়া না লক্ষীটি। একটু সময় দে।তোকে চমকে দেবো আজ।" মেঘনার সাজতে সাজতে উত্তর।
- " কি আর সাজবি? সেই তো একই"
---" তাহলে যেভাবে আছি সেভাবেই চলে আসবো নাকি "
- " আচ্ছা আচ্ছা আমি দাঁড়াচ্ছি মোড়ে। তুই আয় "
অনীক সবুজ রঙের পায়জামা টা বের করে বেরিয়ে গেলো ।
প্যান্ডেল এর কাছে গিয়ে অপেক্ষা করছিল। সত্যিই মেঘনার এত দেরি হচ্ছে কেনো।
- " অনীক।" পেছন থেকে মেঘনার ডাক ।
পিছনে ঘুরে অনীক হাঁ করে তাকিয়ে রইলো।
হলুদ জর্জেট শাড়ির সাথে একটা কালো স্লিভ লেস ব্লাউজ পরে মেঘনা দাড়িয়ে হাসছে । অনীক অনেকদিন ধরেই মনে মনে ইচ্ছে হতো মেঘনাকে বলে যে ওকে হলুদ শাড়িতে অসাধারণ মানায়। কিভাবে মেঘনা বুঝতে পারল তার মনের কথা ?
---" কিরে ধরে নিয়ে যা হাঁদারাম। একটুকু ও সভ্যতা বভ্যতা নেই। "
বলে আলতো করে অনীকের হাতে একটা চাপড় মারল। অনীক " মানে হ্যাঁ - এ এ এ। দাঁড়া একটু। "
মেঘনা " কি করবি?"
অনীক হাঁটু মুড়ে বসে মেঘনার আলতো মাখা পায়ে তার অনীকের নিজের হাতে বানানো নূপুর জোড়া পড়িয়ে আলতো করে চুমু খেল। মেঘনা লজ্জায় চোখ বুজে নিলো। আসে পাশে মানুষ সব তাকিয়ে।
--- " ধুর দুষ্টু। খালি সুযোগ খুঁজিস । আশে পাশে সবাই দেখছে।"
-" দেখুক, তাতে আমার কিছু যায় আসেনা। নিজের বউকে যেখানে খুশি, যখন খুশি চুমু খাবো, তাতে কারোর বাপের কি আসে যায়?"
মেঘনা অবাক হয়ে গেলো ।
--- " কি বললি তুই অনীক? আমিঃ? আমি তোর বউ?"
 অনীক মেঘনার দু হাত ধরে বললো। 
" হ্যাঁ মেঘনা। তুই আমার মনের কথা বুঝবি, আর আমি বুঝবোনা, সে তো হয়না। মেঘনা; তুই নয় আজকের থেকে আর। তুমি। তুমি , আমার স্ত্রী , আমার ভার্যা, আমার সহধর্মিনী, আমার সব কাজের সব সময়ের সহকর্মিনী। তাই শুধু 'আমি তোমাকে ভালোবাসি ' এর মধ্যে আর আবদ্ধ থাকতে চাইনা। তোকে ভালবাসার ও ভালো রাখার - দুটোর সুযোগ একসাথে দিবি আমায়?"
অনীকের কাতর প্রার্থনা ।
মেঘনাও হাঁটু মুড়ে অনীককে গভীর ভাবে আলিঙ্গন করলো। অনীক এর কপালে চুমু খেয়ে বললো।
" তোকে সুযোগ দেবো কি। তুই অধিকার নে আমার। তুই শুধু আমার। থাকবি তো আমারই হয়ে?"
দুজনে আস্তে আস্তে এক পা এক পা বাড়িয়ে মণ্ডপের দিকে চলল। দুজনের মুখেই পূর্ণতার আভা।
অনীক দুর্গা মার দিকে তাকিয়ে অঞ্জলী দিতে দিতে মেঘনার হাত নিজের হাত এর মধ্যে ঢুকিয়ে ফিস ফিসিয়ে বললো। " এইবার থেকে দুটো হাত একজোড়া হয়ে ঠাকুরের অঞ্জলী দেবে বুঝলি"
মেঘনা নীরব সম্মতি দিলো।
দুজন বেরিয়ে আসছে মণ্ডপ থেকে । অনীকের বাহুলগ্না হয়ে বেরোতে বেরোতে মেঘনা কপট রাগ দেখিয়ে বলল।
" আমার একটা প্রশ্নের উত্তর কিন্তু দিলিনা। "
অনীক ( ভ্রু কুঁচকে) ," কোনটা?"
মেঘনা ( ঠোঁট বেকিয়ে) " ওই যে বললাম। থাকবি শুধু আমার হয়ে?"
অনীক " ধুর পাগলি। এ আবার জিজ্ঞেস করতে হয়? বউ ডেকে ফেললাম রে।"
মেঘনা " ওসব জানিনা। আমার আবার শুনতে হবে।"
অনীক মেঘনার কোমর জড়িয়ে কাছে টেনে ঠোঁটে ঠোঁট মেলাতে যাবে, হঠাৎ যেন পুরো পৃথিবী তে দুলে উঠলো । আশেপাশে এম্বুলেন্স, সাইরেন এর আওয়াজ, লোকজন হুড়োহুড়ি।
জ্ঞান ফিরলে অনীক দেখলো হাসপাতালের বেডে শুয়ে। পাশে তার মা বাবা। বন্ধু বান্ধব। ডাক্তার দাঁড়িয়ে।
- " এখন কেমন আছেন? শরীরে ব্যাথা বেশি নেই তো? আর কোথাও লাগেনি তো?" ডাক্তারের প্রশ্ন।
-- " নাহ তেমন না।এমনিতে একটু ব্যথা আছে বুকের বা দিকে । আর মাথার পেছনে ।কিন্তু আমি এখানে? মেঘনা কোথায়? মা, বাবা মেঘনা কই? কেমন আছে? কোন বেডে। "
অনীক এর মা বাবা হাপুস নয়নে কাঁদতে লাগলেন। 
- " মেঘনা স্পট ডেড রে। নরপিশাচ গাড়ি তাকে চাপা দিয়ে চলে গেছে। সে আর নেই।"
-- " আপনি জোর বেঁচেছেন। মোক্ষম সময়ে আপনাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে না দিলে আপনিও একসঙ্গে মারা পড়তেন। আপনার প্রেমিকা আপনাকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়েছেন । এরকম ভালবাসা সত্যিই দেখা যায়না । " ডাক্তারের উত্তর ।
অনীক স্পষ্ট টের পাচ্ছিল তার চোখ অন্ধকার হয়ে আসছে। গলা পাকিয়ে কষ্টের দলা চোখ দিয়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে । কিন্তু চোখ যেন বাধা দিচ্ছে । 
- " একবার মেঘনাকে দেখতে পাবো?"
--" কিন্তু আপনি তো এখনো ঠিক হননি ।"
অনীক (শান্ত ভাবে ) --" আমায় নিয়ে চলুন। কিচ্ছু হবেনা।"
মেঘনার রক্তে মাখা কপালটা তে অনীক একটা চুমু খেল । তারপর মেঘনার পায়ের থেকে নূপুর টা খুলে নিজের হাতে রাখলো। তবুও তার চোখ দিয়ে জল বেরোলনা।
অনীক( অস্ফুটে )" উত্তরটা বলার সুযোগ দিলিনা । তোকে ভালবাসার ও ভালোরাখার সুযোগটা ও নিয়ে নিলি । কেনো রে মেঘনা, কেনো? তবে কি চাস আমি এই প্রশ্নে আবদ্ধ হয়েই সারাজীবন কাটাব? ঠিক আছে, তুই আমার জন্য নিজের প্রাণ দিবি, আর আমি এগিয়ে যাব? কি ভাবলি, তুইই ভালবাসতে জানিস? আমি জানিনা? দেখবি এবার। তোকে আমার উত্তরের মায়াতেই জড়িয়ে রাখবো, আর তুই আমার প্রশ্নের মায়ায়। এইভাবেই চলবে।" বলে সাদা কাপড়টা ঢেকে দিল ।
সেদিন থেকেই অনীক কেমন বদলে গেলো। গম্ভীর, নিস্পৃহ, নিঃসংগ, পাথরের মূর্তি । সব করত সে, কিন্তু কর্তব্যের মতো। অনীক এর মা বাবা, আপনজনেরা অনেকবার চেষ্টা করেছিলেন । কিন্তু অনীকের রোখের কাছে শেষ অব্দি হার মানতে বাধ্য হলেন।
(আজকের দিনে)
আজ আবার অষ্টমী। গাড়ি চালিয়ে অনীক আবার সে জায়গায় গিয়ে নূপুর হাতে নিয়ে একা একা ফুটপাথে বসে থাকে । কারণ সে জানে, প্রতি বছর উত্তরের মায়ায় মেঘনা আসবেই। আর প্রতিবার হতাশ হয়ে চলে যাবে।
মেঘনা ( ছায়ামূর্তি) " আর কেনো অনীক। বাস্তবতা মেনে নাওনা। আমি তো আর আসবোনা শরীর নিয়ে । কেনো মিছে মিছে এক প্রশ্ন নিয়ে বসে থাকিস। হয়েছে তো। মানলাম তো । মানলাম কি, জানতামই তো। একটু রাগ কি দেখিয়েছিলাম, তুই জীবনটা সেখানেই আটকে রাখবি? এবার আমায় মুক্তি দে। বুকটা জ্বলে পুড়ে যায় তোকে দেখলে।আমার ভাল লাগে বল? আমারও তো শান্তি হয়না। তোর মায়ায় আবদ্ধ থাকি, এবার তো ছুটি দে।"
অনীক ( গুমরোতে গুমরোতে ) " আমায় ছেড়ে গেলি কেনো মেঘনা? কেন? কেনো ? কেনো? "
মেঘনা " সেই ঘুরেফিরে এত বছর ধরে একই প্রশ্ন । আরে তুই করলিনা হলে? ভালোবাসা কি দেয়া নেয়া নাকি? তোকে বললাম না তুই আমার। আমার একান্ত প্রিয় মানুষটাকে আমি মরতে দেবো? ভাবলি কি করে তুই?"
অনীক ( কাঁদতে কাঁদতে) " মেঘনা ফিরে আয়, দোহাই তোর, ফিরে আয় মেঘনা। প্লিজ ফিরে আয় ।আর পারছিনা মেঘনা , দয়া করে ফিরে আয় । আবার দুজন মিলে একসাথে পুজো দেখব। অঞ্জলী দেবো। তুই ফিরে আয় লক্ষীটি। সব প্রশ্নের উত্তর পাবি। কথা দিলাম। কিন্তু ফিরে আয় । "বলে মাটিতে গড়াগড়ি খেতে লাগলো।
" স্যার স্যার স্যার, কি করছেন? এম্মা ইসস, এই জলটা নিয়ে আয় তো । আপনার কি শরীর খারাপ? ডাক্তার দেখাবো? " রাইমা দুর থেকে দেখে ছুটে এলো।
অনীক তখন কথা বলার অবস্থায় নেই ।
" স্যার বসুন বসুন। জল টা খান। ইসস কি অবস্থা ।" বলে অনীকের শার্ট থেকে বালুগুলো ঝেড়ে ফেলতে লাগলো ।
অনীক ( একটু সম্বিৎ ফিরলে) " হ্যাঁ ঠিক আছি আমি । ধন্যবাদ। তুমি এখানে?"
-" আমি তো এখানেই থাকি । এখানের পুজোটা আমাদেরই। আপনি এখানে? এই অবস্থায় ? আর মেঘনা? মেঘনা তো আমার দিদির বান্ধবী হতো। খুব ভালো ছিল দিদি।খুব ভালবাসত আমায়।কিন্তু একটা এক্সিডেন্টএ নিজের বয়ফ্রেন্ড কে বাঁচাতে গিয়ে নিজে মারা যায়।আপনি কি করে চিনতেন?" 
- " আমি।আমি সেই হতভাগ্য। যার জন্য মেঘনা এত বড়ো ত্যাগ করেছে।"
রাইমার দু চোখ কপালে উঠলো।
---"আচ্ছা, আপনিই তাহলে সেই অনীক। আরে কত গল্প করতো দিদি আর মেঘনাদি আপনাকে নিয়ে । কত গর্ব ছিল আপনাকে নিয়ে মেঘনাদির। আপনার কথা মেঘনা দিদির মুখে শুনতে শুনতে মনে হতো আমারও যদি এমন পাগল একটা বয়ফ্রেন্ড থাকতো ।দিদি আপনাকে খুব লাকী মানত।" 
অনীক ( দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে) " লাকী । আমার মত অভিশাপ মেঘনার জীবনে না আসলেই ভালো হতো।"
রাইমা " এরকম বলে নিজের ভালবাসাকে অপমাণ দেবেননা। ভাবুন আপনি কতটা প্রিয় হলে একটা মেয়ে নিজের জীবন দিয়েও আপনাকে বাঁচাতে চায়। বরঞ্চ বলুন যে আপনি সেই ভালোবাসার উৎস, যাতে মেঘনা দি নিজের পরিপূর্ণতা পেয়েছিল। সেই খুশিতে বাঁচুন, সেই পূর্ণতা তে বাঁচুন, যে এই ছেড়ে যাওয়ার যুগে , দুদিনের ভালোবাসার যুগে, সে আপনার মধ্যে সারাজীবনের ভালোবাসা পেয়েছিল, যার জন্য নিজের জীবন দিতেও পিছপা হয়নি ।"
কথাটা অনীকের বেশ মনে ধরলো । সত্যিই তো । এভাবে ভেবে দেখেনি সে।
রাইমা " আর মন খারাপ করবেননা স্যার । অন্য ভাবে দেখুন নিজেকে। আর এই প্রশ্নের বোঝা নিজের মাথায় রেখে নিজেকে আর মেঘনা দিদিকে কষ্ট দেবেননা । নতুন ভাবে দেখুন।"
অনীক " হু। কথাটা ঠিকই বলেছো। ভেবে দেখিনি এইভাবে। তাই এত বছর ধরে এই প্রশ্নটার বোঝা বয়ে যাচ্ছি। নাহ তোমার মাথায় বুদ্ধি আছে দেখছি ।" বলে হেসে রাইমার মাথায় একটা চাঁটি দিলো।
রাইমা " আমি তো বললাম আমার কাছে সব কিছুর সমাধান আছে। আর আজকের থেকে অফিসের বাইরে আমরা ফ্রেন্ডস। তো ফ্রেন্ডস দের মধ্যে কোনকিছু লুকোতে নেই । তাহলে ফ্রেন্ডস?" বলে অনীকের দিকে হাত বাড়ালো ।
অনীক " হ্যাঁ ফ্রেন্ডস।" বলে করমর্দন করলো ।
বাইরে বেরিয়ে অনীক সেই নূপুর টাকে মেঘনা যেখানে পরে গেছিল সে জায়গায় পুঁতে দিলো । দিয়ে গঙ্গাজল দিয়ে মেঘনার জন্য মনে মনে মুক্তি কামনা করলো ।
তারপর দু লাইন লিখে দিলো।
" এই জন্মের পর্ব তো হলো পার; এবার তুমি পরম নিশ্চিন্তে থাকো;
যদি পরজন্মে দেখা হয় তোমার আমার; চাইবো এমনি ভাবে আগলে রাখো,
 প্রশ্নের উত্তর দিলাম নাহয় এবার; নতুন কোনো প্রশ্ন তৈরি রাখো;
আমার উত্তরে যা পাও তুমি ভুল; চাইবো সে ভুল যেন নিজের ভালোবাসার আঁচলে ঢাকো;
এই জনমে দিলাম ভালোবাসার ইতি; এবার তুমি পরম নিশ্চিন্তে থাকো;
প্রতি জন্মে যেনো হই আমি তোমার; আমার এইটুকু আবেদন নিজের কাছে রাখো।"
অনীক টের পেলো একটা কোমল বাতাস তার মাথায় হাত বুলিয়ে যেনো যাচ্ছে। একটা প্রশান্তি অনুভব করলো ভেতরে ভেতরে।
সত্যিই প্রশ্নের উত্তরে মুক্তি দিল সে। আর এই জন্মে প্রশ্ন নেই, আর নতুন উত্তরও নেই ।