ডাইরির সেই পাতা গুলো
ডাইরির সেই পাতা গুলো
মেন গেট থেকে আমি আর ম্যাম কথা বলতে বলতে বেরালাম। দিয়ে ম্যাম আমাকে পড়াশোনার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছিলেন। হঠাৎ মনে পড়ল ম্যামের নামটা তো জানি না। দিয়ে বললাম --
---- ম্যাম আপনার নামটা কী না মানে আমি তো জানি না তাই আর কি।
উনি বললেন --
---- তুমি জানো না! ওহ্, আমার নাম আরেশা খাতুন। By the way তোমার নাম কী??
---- আমার নাম রাইসানা আকতার ।
---- তবে সবাই যে বলল সানা!??
---- আরে ওইটা তো আব্বুর পপুলারিটির স্কুলে সবাই সানা বলে ডাকে। ইভেন টিচাররাও। মাঝে মাঝে প্রচন্ড embarrassed ফিল করি। বাট অভ্যস্থ হয়ে গেছি। ফ্রেন্ডরা ছাড়া তেমন কেউ একটা ভালো নামে ডাকে না ।
এই নিয়েই কথা চলছিল এমন সময় আইরি ( লালা / লালু) -কে দেখি পাড়ার ফ্লাটের নীচের দোকানে টিফিন কিনছে। ওকে দেখেয় ডাক দিলাম। ও তখন টিফিন কিনে সাইকেল নিয়ে এগিয়ে এল। দিয়ে চোখের ইশারায় জিজ্ঞেস করল আমার পাশের ওই দিদিটা কে?? তারপর আমি ওকে বললাম যে ওনি আমাদের স্কুলের ম্যাম হন। ওই কথাটা শুনে ও বলল --
---- ওনি আমাদের স্কুলের নিউ ফিজিক্স টিচার। আমি তো মনে করলাম তোর দিদি। কি সুন্দর দেখতে। আমাদের স্কুলে এরকম ম্যাম একটাও নেই।
ওর কথা শুনে হাসি পাচ্ছিল প্রচন্ড। তাই আমিও দাঁত কেলিয়ে দিলাম।
আমাদের বাড়ি মেন রোড হয়ে স্কুল যেতে সাত মিনিট লাগত। আমারা পৌঁছে গেলাম স্কুল।স্কুলে ঢোকার আগে ম্যাম বললেন --
---- এই সানা, এখানে কোনো স্টেশনারি দোকান আছে গো?? অ্যাকচুয়েলি আমাকে একটা ফাইল কিনতে হবে।
আমিও দেখিয়ে দিলাম স্কুলের সামনের একমাত্র স্টেশনারি দোকানটিকে।
উনি বললেন --
---- তুমি যাও আমি কিনে নিচ্ছি।
আমিও চলে এলাম। এসে ক্লাসের দিকে যাচ্ছি এমন সময় দেখি কেও পিছনে ডাক দিল। মনে মনে বললাম -- কোন হারামি কে জানে। হতচ্ছাড়ি ঢুকতেই পিছনে ডাক দেয়। পিছন ফিরে দেখি আমার সব কটা ফ্রেন্ড দাড়িয়ে আছে স্কুলের একমাত্র কৃষ্ণচূড়া গাছটির তলায় থাকা সাইকেল স্ট্যান্ডের ভিতর।
এরকম ভাবেই সব চলছিল। ম্যামের সাথে আমার বন্ডিং খুব ভালো হয়ে যায়। এমন সময় আম্মুর শরীরটা খারাপ হতে থাকে পিশ্চুলা রোগটা আরো চারা দিতে থাকে। ঘরে কোনো কাজের বুয়াও ছিল না তখন। একচুয়েলি পুরোনো যিনি ছিলেন ওনি কাজ করার থেকে চেঁচাতেন বেশি। আর এখানে মুসলমান কাজের লোক পাওয়াও কঠিন। ঘরের পরিস্থিতি তখন খুব একটা ভালো না। তাই আমাকেই হাত লাগাতে হল। খাবার বানানো বাদে ঘরের যাবতীয় কাজ আমাকে করতে হত। একদিন ঘর মুচ্ছি এমন তখন ম্যাম এলেন। দিয়ে আমাকে ওই আবস্থায় দেখে বললেন --
---- এখনকার অ্যাডভান্স মেয়েরাও কাজ করে তাহলে?? তোমাকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না!!
ওনার কথা শুনে মুচকি হাঁসি দিয়ে বললাম--
---- পরিস্থিতির শিকার হলে ভুতও রাম রাম বলে ম্যাম। তাছাড়া এসব শিখে রাখা ভালো। লাইফে কখন কী পরিস্থিতি আসে কে বলতে পারে। তাছাড়া আমার এখ চেনা পরিচিত দিদি বিদেশে থাকেন। তিনি পার্ট টাইম জব হিসাবে রেস্টুরেন্ট এ কাজ করেন। তাহলে তাকে কি বলবেন!!!
উনি বললেন --
---- ঠিকই বলেছো তুমি। তবে ক-জন করে এসব বলোতো?? খুব কম জনই করে। ঠিক আছে এখন তারাতারি মুছে পড়তে বসো।
তারপর উনি মায়ের সাথে কথা বলতে চলে গেলেন। কাজ সেরে যখন মা বলতে গেলাম আমি উপরে যাচ্ছি তখন দরজার কাছে গিয়ে একটা কথা শুনে.................