Call Girl
Call Girl
আজ প্রতিবেশিরা চাপা অন্ত জীবন, মিডিয়ায় হেড লাইন চাপা, রাজনৈতিক মহলেও চাপাকে নিয়ে চাপা উত্তেজনা। সপ্তাহ খানেক হয়েছে রাজনৈতিক মহলথেকে নারী সংরক্ষণের দ্বায়ীত্বটা চাপার হাতে সমর্পন করা হয়েছে। সিমসাম চেহারার একটি মেয়ে এই চাপা। গায়ের রংটা একটু চাপা হওয়ার কারণেই বাড়ির লোকজন এইরূপ নামকরণ করেছিলেন। রাজনীতিতে তেমন সক্রিয় চাপা ছিলোনা। হয়তো পরিস্থিতি আজ তাকে এখানে আসতে বাদ্ধ করেছে। গায়ের রং একটু চাপা হলেও চোখ - মুখ অস্বাভাবিক সুন্দর। ওকে দেখার পর ওর প্রেমে না পড়ে থাকায় যায় না। যে চাপাকে নিয়ে এত উত্তেজনা এর জীবনের একটা তিক্ত অতীত রয়েছে আজ একটা ক্ষমতায় আসার পর যেটাকে সমাজ মুহুর্তের মদ্ধে ধুয়ে মুছে দিয়েছে।
বাংলার একটা ছোট্ট গ্রামে বাসকরতো বাবা - মায়ের সাথে চাপা। কিছুটা চাষের জমি ছিলো তাদের। চাপার জন্ম ঐ গ্রামের একটি ছোট্ট হসপিটালে। একটু বেরে ওঠার পর থেকেই চাপা ছিলো হাওয়ার মতো কখনো এখানে তো কখনো অন্যত্র চোখের পলকে স্থান পরিবর্তন করেফেলতো সে। গ্রামের সুদখোর মহাজন দিনেন্দ্র লাহেরির চাপার উপর চোখ ছিলো আট বছর বয়স থেকে। যদিও চাপার বয়স যখন আট তার বয়স চল্লিশ। যখন চাপার বয়স আঠারো তখন চাপা আর চাপা নয় চাপাফুলে রূপান্তরিত হয়েছে। পড়াশুনাতেও বেশ মেধাবী সে উচ্চমাধ্যমিক দিয়ে কলেজে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে চাপা। মঝে মধ্যেই বিভিন্ন অছিলায় তার পরস পেতে চেয়েছে লাহেরি বাবু। কখনো কখনো চাপা প্রতিবাদও করেছে আর তাতেই তাকে পাবার ইচ্ছা আরো প্রবল হয়ে উঠেছে লাহেরি বাবুর।
হয়তো একেই বলে স্বপ্ন পূরন। চাপা কলেজে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন অবস্থায় বাবা - মা কে হরায় চাপা। সাত কুলে কেউ না থাকার ফলে সমাজের সাথে বেশিদিন লড়াই করতে পারেনি সে। অবশেষে লাহেরি বাবুর পাতা জালে ধরাপড়েযায় চাপা। সেই রাতে চাপার খুব কষ্ট হয়েছিল। দিন তিনেক পেটের বেদনায় কষ্ট পেয়েছিল সে কিন্তু নিস্তার পায়নি লাহেরি বাবুর হাত থেকে। তার বাসনার শিকার হয়েছে রাতের পর রাত।
এ ভাবেই মাস তিনেক কাটে কলেজে পড়ার স্বপ্ন মানুষের মতো মানুষ হবার স্বপ্ন সবটাই ভেঙে চুরমার হয়ে যায় চাপার। রাতের অন্ধকারে লাহেরি বাবু তাকে নিয়ে চলে আসে শহরে তারপর তাকে বানিয়ে ফ্যালে বহু হিংসাত্মক মানুষের ভোগ্যপণ্য । এভাবেই হাত বদল হতে হতে কেটে যায় তার জীবনের আর একটা বছর। শিক্ষিত মেয়ে খুব সহজেই মানুষের মধ্যে মিশেগেল চাপা একটা আলাদা জগত গড়ে ফেললো সে দেহতো হারিয়েই ফেলেছে সে তাই নতুন করে হারানোর কিছুই নেই তার, লাহেড়ীকে না চটিয়েই call girl এর ব্যবসায় লিপ্ত হয়ে পরে সে। শেষ দুই বছরের মধ্যেই নিজেকে গুছিয়ে ফেলে সে লাহিড়ী বাবু বিন্দুমাত্র ঠাহর করতেও পারলেননা। সব গুছিয়ে যখন লাহিড়ী বাবুর বিরোধীতা করলো চাপা তখন লাহিড়ী বাবুর হাতের অনেক বাইরে চরে গিয়েছে সে। লাহিড়ী বাবুর দেহ ব্যবসায় ইতি টানা পরে।
এইভাবেই একদিন চাপার আলাপ হয় শাসকদলের এক নিচু স্তরের কর্মীর সাথে, তার হাত ধরেই রাজনীতির ময়দানে নাবে চাপা। তিন বছরের রাজনৈতিক কেরিয়ারে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতাকেও বেশ কিছুটা বাড়িয়ে নেয় সে। যেহেতু তার পয়সাটা কোন মেটার করেনা তাই ধিরে ধিরে দলের ভিতরে প্রবেশ করে চাপা। আজ চাপা নারী সুরক্ষার দ্বায়ীত্ব এসে পরে তার ঘারে। দলিয় কর্মীথেকে অঞ্চলের স্বাধারণ মানুষের কাছে চাপা এখন সমাজ শেবক। কাল তার দেহে যে কালিমা লিপ্ত মুহুর্তগুলি ছিলো সেসব ধুয়ে মুছে গিয়েছে।
কিন্তু আমার প্রশ্নটা হলো আজকের সমাজে হাজার হাজার চাপা প্রতিদিন কালিমা লিপ্ত হচ্ছে সকলেইতো আর চাপার মতো নিজের কালিমা মুছে ফেলবার সুযোগ পাচ্ছেনা। আমাদের এই অন্ধকার সমাজ কি ভাবছে ঐ সকল চাপাদের বিষয়ে?
🙏 সমাপ্ত 🙏
