Humayra Jannat Mim

Abstract Romance

4  

Humayra Jannat Mim

Abstract Romance

চারুমুক্তা

চারুমুক্তা

3 mins
345



পর্ব-১

লেখনীতেঃ হুমায়রা জান্নাত মীম


★★ বাসর রাতের উপহার হিসেবে স্বামীর হাতে চড় খাওয়ার চেয়ে কষ্টদায়ক অভিজ্ঞতা কখনো আমার জীবনে হয় নি। আমি চারুমুক্তা। সবাই মুক্তা বলে ডাকে। আমার দাদির নাম ছিল চারুলতা। তাই আব্বু বড্ড শখ করে আমার নাম ওনার মায়ের নামের সাথে মিলিয়ে রেখেছিলেন চারুমুক্তা। ওনি বলতেন আমি ওনার দ্বিতীয় মা।

আব্বু আমার ছোটবেলায় হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান।তারপর থেকে আমার মা আমাকে মানুষ করেন। আমার মা একটা সরকারি প্রাইমারি স্কুলের টিচার। আব্বু চলে যাওয়ার পর আম্মু আমাকে একা হাতে মানুষ করে এই পর্যন্ত এনেছেন। আজ আমার বিয়ে ছিল সূর্য ভাইয়ার সাথে। সূর্য ভাইয়া আমার এক মাত্র ফুপির ছোট ছেলে। বিয়েটা হঠাৎই হয়েছে। সূর্য ভাইয়া দেখতে সুন্দর, স্মার্ট, কথা-বার্তা ভালো৷ তাই আমি বিয়েতে রাজি হয়ে যাই। কিন্তু আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে যখন সূর্য ভাইয়া বলেন, ওনি আমাকে কখনো স্ত্রী হিসেবে মেনে নেবেন না।


কিছুক্ষণ আগের ঘটনা-


বধূবেশে সূর্য ভাইয়ার রুমে বসে ওনার অপেক্ষা করছি। মনের মধ্যে এক অন্যরকম অনুভূতি, ভয়, লজ্জা কাজ করছে। হঠাৎ তড়িৎগতিতে এসে সূর্য ভাইয়া দরজা বন্ধ করলেন। তারপর একে একে রুমের সব কিছু ছুড়ে ফেলতে লাগলেন। রুমটা সাউন্ডপ্রুফ হওয়ায় বাইরে থেকে কেউ আওয়াজ শুনতে পায় নি। ওনি একের পর এক জিনিস পত্র ভাঙছেন। ফুল দিয়ে সাজানো বেড থেকে ফুলগুলো ছিড়ছেন। ওনার এই রূপ আমি জীবনে দেখিনি। ওনাকে দেখতে ভীষণ ভয়ানক লাগছে। তবুও ওনাকে থামাতে আমি বললাম, সূর্য ভাইয়া, আপনার কি হয়েছে? আপনি এভাবে জিনিসপত্র ভাঙছেন কেন?

আমার কথা শুনে সূর্য ভাইয়া জিনিসপত্র ভাঙা ছেড়ে আমার দিকে তেড়ে এসে আমার দুইবাহুতে শক্ত করে ধরে ঝাকিয়ে বললেন, সেই কৈফিয়ত কি আমি তোকে দেবো? কেন এসেছিস আমার জীবনে মুক্তা? কেন আমার গুছালো জীবনটা এভাবে তুই অগুছালো করে দিয়েছিস? কেন?

ওনার এত শক্ত করে ধরায় আমি হাতে প্রচুর ব্যথা পাচ্ছি। তবুও সহ্য করে বললাম, মানে? এসব আপনি কি বলছেন? আমি কিভাবে আপনার গুছালো জীবন অগুছালো করলাম?


আমার কথা শুনে সূর্য ভাইয়া একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললেন, জানিস না নাকি না জানার ভান করেছিস? যেই দেখেছিস বড়লোক ছেলে অমনি ডানে-বামে না তাকিয়ে গলায় ঝুলে পড়েছিস। তোদের মতো মেয়েদের আমার জানা আছে। ভালো করে মাথায় ঢুকিয়ে নে মুক্তা, তুই আমার জীবনে এক অপ্রত্যাশিত ব্যক্তি সাথে অপ্রয়োজনীয়ও। তোকে আমি কখনো নিজের স্ত্রী হিসেবে মেনে নেবো না। আর ভালোবাসা তো অনেক দূরের ব্যাপার। সেজন্য আমার থেকে দূরে থাকবি।

ওনার এ কথা শুনে আমি খুব অপমানিত বোধ করলাম। আমি জীবনে এতটা অপমানিত হইনি।যতটা আজ ওনি করলেন। আমাদের মতো মেয়ে বলে ওনি কি বোঝাতে চাইছেন? ওনার কথা শুনে আমার ওনাকে নিয়ে সাজানো একেকটা স্বপ্ন কাচের টুকরোর মতো ভেঙে গেল। বড় যত্ন করে সাজিয়েছিলাম স্বপ্নগুলো। স্বামী হিসেবে ওনাকে মেনে নিয়ে ভালোবাসতে শুরু করেছিলাম। আর ওনি এক নিমেষে আমার সব স্বপ্ন,সব ভালোবাসাকে মেরে ফেললেন। আমাকে ওনার জীবনে অপ্রত্যাশিত ব্যক্তি বললেন। কান্না আটকে ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম, কেন আপনি আমায় স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে পারবেন না? কি ক্ষতি করেছি আমি আপনার?

ওনি বললেন, আমি তোকে আমার স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে পারবো না কারণ...........


চলবে......



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract