STORYMIRROR

Sagnik Bandyopadhyay

Tragedy

2  

Sagnik Bandyopadhyay

Tragedy

বৃদ্ধাশ্রম

বৃদ্ধাশ্রম

2 mins
853


"ছেলে একদিন আসবে। তখন আমাকে বাড়িতে নিয়ে যাবে"- এই কথাটি ভাবতে ভাবতে দিন কাটতে থাকে সায়ন্তন কাকুর মায়ের। দিদার বয়স এখন ৬৯ বছর। আজ প্রায় নয় নয় করে পাঁচ বছর হতে চলল দিদা বৃদ্ধাশ্রমে রয়েছে। বৃদ্ধাশ্রমে সায়ন্তন কাকুর মায়ের মতো অনেকেই আছেন। বৃদ্ধাশ্রমটি বেশ ছোট। কিন্তু সেখানে এক আলাদা শান্তি রয়েছে। যতদিন উনি সায়ন্তন কাকুর কাছে ছিলেন সায়ন্তন কাকু ও তার স্ত্রী দুজনেই তাকে নানাভাবে কষ্ট দিত। যা ছিল তাঁর কাছে অসহনীয় ব্যাপার। দিদার সাথে আমার পরিচয় অনেক দিনের। দিদা আমাকে খুব ভালোবাসেন। দিদার সাথে দেখা করতে মাঝেমধ্যেই যাই তাঁর আনন্দধামে। একদিন তো দিদার সাথে কথা বলতে বলতে দেখি হঠাৎ তার চোখ দুটি জলে ছল ছল করছে। বললাম, "এ কি দিদা, তুমি কাঁদছো কেন?" শুনে দিদা বলে ওঠে,"পুরনো অনেক কথা মনে পড়ে যাচ্ছে দাদুভাই।" "কি কথা দিদা?"-

আমি বলে উঠি। সেতো অনেক কথা দাদুভাই। "আজকে আমার সায়ন্তনের জন্মদিন। ও তখন খুব ছোট ছিল। আজকের দিনে সকালে ঘুম থেকে উঠে দৌড়ে এসে আমার আঁচল ধরে বলতো,"আমাকে পায়েস দাও।" কি সুন্দর ছিল দিনগুলো। কিন্তু ভগবানের এই সুখ সহ্য হলো না।" একদিন সায়ন্তন কাকুর বিয়ে হল, তখন থেকেই দিদার প্রয়োজন ফোরাতে থাকলো তাদের সংসারে। এরকমই একবার সায়ন্তন কাকুর জন্মদিনের দিন দিদাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে বলে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে যায়। এইসব কথা আমার জানা ছিলনা, দিদার সাথে কথা বলতে বলতে জানতে পারি। কিন্তু দিদা এখনও আশা নিয়ে বসে থাকে, সায়ন্তন কাকু আসবে বলে। হয়তো এই রকম আশা নিয়ে সায়ন্তন কাকুর মায়ের মতো অনেকেই বসে থাকেন। কিন্তু সায়ন্তন কাকুর মতো সন্তানেরা তাদের মায়ের আত্মত্যাগকে অস্বীকার করে জীবনে সুখী হতে চায়। হায়! তারা বোঝে না মা ছাড়া যে জীবন অচল।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy