Susmita Goswami

Horror Others

3.8  

Susmita Goswami

Horror Others

BLOODY CHILD

BLOODY CHILD

4 mins
592


বিশেষ দ্রষ্টব্য : গল্প শুরুর প্রথমেই বলে রাখি এটি আমার অর্থাৎ সুস্মিতা গোস্বামীর লেখা নয়। এটি আমার ভাই শুভেন্দু গোস্বামীর লেখা। 

    ●●●●●●●●●●●●●●●●●●


বৃষ্টির রাত। ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছে। অফিস থেকে ছাতা মাথায় দিয়ে বৃষ্টির মধ্যে বাড়ি ফিরছে বিভাস। 

বিভাস কাদার উপর পা টিপে টিপে চলছিল। হঠাৎ একটা রড মতো কীসে যেন ধাক্কা খায়। সঙ্গে সঙ্গে সে টর্চ লাইট বের করে ফোকাস করে সামনের দিকে। সামনে একটা পোস্টার। সেখানে আগে থেকে কি আবছা লেখা ছিল, এখন সেটার উপরেই রক্ত দিয়ে কে যেন লিখে রেখেছে BLOODY CHILD. DANGER. মোড় ঘোরান। ভুলেও এদিকে আসবেন না। 

তারপর নীচে কয়েকটা চিহ্ন। বিভাস দেখল চিহ্নের অর্থ শিশুদের কান্নার আর হাসির আওয়াজের মতো। বিভাস বুঝল নিশ্চ্য়ই এখানে সন্ত্রাসবাদীদের লুকোনো ঘাঁটি আছে। কাউকে ঢুকতে দেবে না বলে পোস্টার টাঙিয়ে ভয় দেখাতে চাইছে। এছাড়াও বিভাস ভূতকে অবিশ্বাস করত। এর ফলে সে সদর্পে পোস্টারের পাশ দিয়ে চলে গেল। 

     -----------------------------------

পোস্টারকে পাশ কাটিয়ে ঢুকতেই বিভাস লক্ষ্য করে যে জায়গায় সে দাঁড়িয়ে আছে অর্থাৎ পোস্টারের ভিতর দিকে, বৃষ্টির জল আসছে না। 

আশ্চর্য! নিম্নচাপের বৃষ্টির জল তো সাড়া জায়গাটা জুড়ে। 

আরো একটা ব্যাপার! 

এ জায়গায় তো একটা কীট পতঙ্গও নেই।

গাছপালাও নেই। ব্যাপার কি! 

বিভাসের এবার একটু ভয় করতে লাগল। কিন্তু না, ভয়কে সে জয় করবেই। 

       ----------------------------------

কিছুদূর যেতেই হঠাৎ কানে এলো এক বাচ্চার কান্না। 

এ কি! যে জায়গায় কোনো জনবসতি নেই, সেখানে একটা বাচ্চার কান্নার আওয়াজ! পরক্ষণেই মনে পড়ে Bloody Child এর কথা। তারপর ভাবে, দূর! ওসব বাজে ভাবনা। 

কান্না টা কোথা থেকে আসছে? এটা ভাবতে ভাবতে সে কিছুদূর এগোতেই হঠাৎ করে পায়ের মাটি টা কেঁপে উঠল। তার মনে হলো কে যেন তাকে অনুসরণ করছে। এক ঝটকায় সে পিছন ফিরে তাকাতেই দেখে সেই পোস্টারটা তার সামনেই।

 কিন্তু এ কি করে সম্ভব! সে তো পোস্টার পেছনে ফেলে অনেক দূরে চলে এসেছে, তাহলে এটা এখানে এলো কি করে?? বিভাস চারিদিকে তাকিয়ে দেখে সে তখন থেকে সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিল যেখানে পোস্টারটা ছিল । 

এই মনে করে সে যেই পিছু হটতে শুরু করেছে তখন সে লক্ষ্য করল পিছনের দিকে গেলেই সে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এমনভাবে চলতে চলতে হঠাৎ কি যেন একটা তাকে সজোরে ধাক্কা মেরে একটা বিশেষ জায়গায় পাঠিয়ে দেয়। বিভাসের মাথায় খুব চোট লেগেছে । সে কপালে হাত দিয়ে দেখল তার কপালের একস্থান থেকে গল গল করে রক্ত পড়ছে ।সে টর্চ লাইট জ্বালিয়ে দেখে রক্ত মাটিতে পড়তে না পড়তেই উধাও হয়ে যাচ্ছে। আর বাচ্চারা যেমন বোতলে দুধ খাবার সময় চুক্ চুক্ শব্দ করে তেমনি রক্তটুকু দাওয়া হয়ে যাবার সময় সেই রকম আওয়াজ ও এক হাসি শোনা যাচ্ছে ।

    ---------------------------------------

তাহলে বাচ্চাটা কি রক্তপিপাসু ! কথাটা ভাবতেই তার বুকের মধ্যে এক অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়ে গেল যন্ত্রণা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই থেমে গেল। কেন থেমে গেল কারণ সে অনুভব করল তার কপালে নরম ঠোঁট স্পর্শ করে কি যেন শোষণ করছে বিভাস কে টর্চ জ্বালাতে হলো না সে অন্ধকারে সে দেখতে পেল তার থেকে দশ গুণ বড় একটা ওঠা ওঠা চুল মানে কিছুটা ন্যাড়া একটা বাচ্চা ঝুঁকে পড়ে চুকচুক করে তার রক্ত খাচ্ছে বিভাস হঠাৎ নিজের অজান্তে কেঁদে ফেলল। জীবনের কোনোদিন সে ভয় পায় না আজ একটা অজানা আতঙ্ক আর একটা চাপা দুঃখ কুরে কুরে খাচ্ছে তাকে। ছোটবেলা থেকেই তার সাহায্যপ্রার্থীদের প্রতি একটা দয়া মায়া ছিল। কেউ চাইলে না করতে পারতো না। এবারও তাই হলো। তাকে আরও রক্ত খাওয়ার জন্য সে ব্যাগ থেকে একটা ছুরি বার করল। ছুরিটা বের করে সে যেই গলায় বসাতে যাবে অমনি তার সম্বিত ফিরল। 

না, এর শিশুরুপি শয়তান। এর থেকে পালাতেই হবে। সে এক ঝটকায় সেই ঠোঁট ছাড়িয়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটতে লাগলো পোস্টার যেখানে ছিল সেখানে। সেটা অবধি শয়তানের এলাকা। কিন্তু পোস্টার কোথায়? চারিদিকে ছিমছাম, শুধু একটা বাচ্চার খিদে পাওয়ার কান্নার শব্দ চারিদিক আরো ভৌতিক করে তুলছে। 

       ------------------------------------

সকাল হলে এসে দেখে একটা গর্তের মধ্যে পড়ে আছে। রক্তশূন্যতায় দুর্বলতা দরুন সে গর্ত থেকে উঠতে পারছিল না। অতিকষ্টে কোনরকমে দু পা ফেলতে যাবে ঠিক তখনই সেটা পোস্টরটা চোখে পড়ল তার। এবার আগের রাত্রের সে লেখাটার বদলে কাঁচা হাতে রক্ত দিয়ে লেখা- তোমাকে আবার এখানেই আসতে হবে 

সত্যিই সে সেই জায়গায় মায়া ত্যাগ করতে পারেনি কলকাতার এক নামী হাসপাতাল থেকে রক্ত নিল। বাড়িতে বেশ সুস্থভাবে থাকল। কিন্তু যখন রাত হল সে গাড়ি করে সেই জায়গার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিলো আর সেখানে গিয়ে গতরাতে সেই জায়গায় পৌঁছে বিবস্ত্র হয়ে একটা ব্লেড দিয়ে কোনো জায়গায় পোঁচ দিয়ে সেখান থেকে বেরোনো রক্ত নিবেদন করত সেই বাচ্চার জন্য। আবার সকাল হলেই সে রক্তশূন্য অবস্থায় বাড়ি ফিরত, রক্ত নিয়ে সুস্থ হতো আর রাত হলেই চলে যেত সেই জায়গায়, তার Bloody Child কে রক্ত খাওয়ানোর জন্য!!!!!! 


             সমাপ্ত 


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror