Unveiling the Enchanting Journey of a 14-Year-Old & Discover Life's Secrets Through 'My Slice of Life'. Grab it NOW!!
Unveiling the Enchanting Journey of a 14-Year-Old & Discover Life's Secrets Through 'My Slice of Life'. Grab it NOW!!

Sandip Das

Horror Classics Fantasy

4.7  

Sandip Das

Horror Classics Fantasy

ভূতের ঠিকানা

ভূতের ঠিকানা

51 mins
3.6K



ভূত শব্দের অর্থ অতীত । তবে আমাদের মত সাধারণ মানুষের কাছে ভূত শব্দটি শুনলে ভয় জাগিয়ে তোলে । আর তাই বিশ্ব সাহিত্যে ভূত প্রেত ডাকিনি যোগিনী পিশাচ ডাইনি বাকস ড্রাকুলা প্রভৃতির ওপর ভর করে নানা লেখা মানুষের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে সব সময়ই । কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে ভূত আছে কি নেই সে নিয়ে দুরকম মতামত শোনা যায় । একপক্ষ যেখানে ভূতের অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে থাকে , তেমনই অপর পক্ষ ভূত আছে এই যুক্তিতে কায়েম থাকতে চান । বর্তমানে ভূত গবেষকরাও এই শ্রেণীর বক্তব্যকে আরো জোরালো করে তুলছে । কিছু দিন আগেই মনে নেই দাদাগিরির অনুষ্ঠানে ভূত গবেষণা নিয়ে আলোচনা কত বিতর্ক সৃস্টি করেছিল । তবে তাই বলে এসব থেমে থাকে নি আর থাকবেও না । প্রাচীন যুগে সর্বপ্রাণবাদ ও পূর্বপুরুষ পূজার মধ্যে ভূতের প্রথম বিবরণ পাওয়া যায়। সেযুগে কিছু নির্দিষ্ট ধর্মীয় প্রথা, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া, ভূত-তাড়ানো অনুষ্ঠান ও জাদু অনুষ্ঠান আয়োজিত হত মৃতের আত্মাকে তুষ্ট করার জন্য। প্রচলিত বর্ণনা অনুযায়ী, ভূতেরা একা থাকে, তারা নির্দিষ্ট কিছু স্থানে ঘুরে বেড়ায়, জীবদ্দশায় যেসকল বস্তু বা ব্যক্তির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিল সেগুলিকে বা তাদের তাড়া করে ফেরে। আদী অনন্ত কাল ধরে মানুষের মনে এই ধারণা গেঁথে গেছে যে পুরোনো পরিত্যক্ত বাড়ি , স্টেশন , আদালত , হাসপাতাল প্রভৃতি জায়গায় ভূতেদের বাস । ফলে সেই সব পরিত্যক্ত স্থান আরও নির্জন হয়ে গেছে রাতের অন্ধকারে । কিছু কিছু জায়গা তো আবার সরকার কর্তৃক পরিত্যক্ত ঘোষণা করা , অবশ্যই রাতের অন্ধকারে । বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতিতে ভূতের অস্তিত্ব বিশ্বাস করা হয়। আবার কিছু ধর্মে করা হয় না, যেমন ইসলাম বা ইহুদী ধর্মে। এসব ধর্মাবলম্বীদের মতে মানুষের মৃত্যুর পর তার আত্মা চিরস্থায়ীভাবে পরলোকগমন করে আর ইহলোকে ফিরে আসে না।


ভূতের শ্রেণীবিভাগ 

সত্যজিৎ রায়ের গুপি গাইন বাঘা বাইন সিনেমাটি মনে পড়ে । সেখানে ভূতেদের শ্রেণীবিভাগের একটি ধারণা তুলে ধরা হয় । তবে ওই একটি নয় , এর আগে থেকেই ভূতেদের কর্মের ভিত্তিতে , এমনকি ধর্মের ভিত্তিতেও শ্রেণী বিভাগ মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত ছিল । এদের সম্বন্ধে কিছু নিচে দিলাম --


পেত্নী: পেত্নী হলো নারী ভূত যারা বেঁচে থাকতে কিছু অতৃপ্ত আশা ছিল এবং অবিবাহিতভাবে মৃত্যুবরণ করেছে। পেত্নী শব্দটি সংস্কৃত প্রেত্নী শব্দ থেকে এসেছে (পুরুষবাচক শব্দ প্রেত)। এসব ভূত সাধারনত যে কোন আকৃতি ধারন করতে পারে, এমনকি পুরুষের আকারও ধারণ করতে পারে। এসব ভূত সাধারনত বেঁচে থাকতে কোন অপরাধ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকে এবং মৃত্যুর পর অভিশিপ্ত হয়ে পৃথিবীতে বিচরণ করে। পেত্নীরা সাধারনত ভীষণ বদমেজাজী হয়ে থাকে এবং কাউকে আক্রোমনের পূর্ব পর্যন্ত স্পষ্টতই মানুষের আকৃতিতে থাকে। পেত্নীদের আকৃতিতে একটিই সমস্যা রয়েছে, তা হলো তাদের পাগুলো পিছনের দিকে ঘোরানো।


শাকচুন্নি: শাকচুন্নি শব্দটি সংস্কৃত শব্দ শাকচুরনী থেকে এসেছে। এটা হলো বিবাহিত মহিলাদের ভূত যারা বিশেষভাবে তৈরি বাঙ্গালি শুভ্র পোশাক পরিধান করে এবং হাতে শঙ্খ বা শাঁখা পরিধান করে। শাঁখা হলো বাঙ্গালি বিবাহিত হিন্দু মহিলাদের প্রতীক। শাকচুন্নিরা সাধারনত ধনী বিবাহিত মহিলাদের ভেতর ভর করে বা আক্রমণ করে যাতে করে তারা নিজেরা সেই মহিলার মত জীবন যাপন করতে পারে ও বিবাহিত জীবন উপভোগ করতে পারে। লোকগাঁথা অনুসারে তার আম গাছে বসবাস করে।


চোরাচুন্নি: চোরাচুন্নি অত্যন্ত দুষ্ট ভূত। এরা মানুষের অনিষ্ট করে থাকে। সাধারনত কোন চোর মৃত্যুবরণ করলে চোরাচুন্নিতে পরিনত হয়। পূর্ণিমা রাতে এরা বের হয় এবং মানুষের বাড়িতে ঢুকে পড়ে অনিষ্ট সাধন করে। এদের হাত থেকে বাঁচার জন্য বাড়িতে গঙ্গাজলের (হিন্দু সংস্কৃতিতে গঙ্গা জলকে পবিত্র জল হিসেবে বিবেচনা করা হয়) ব্যবস্থা করা হয়।


পেঁচাপেঁচি: এ ধরনের ভূত সচরাচর দেখা যায় না। পেঁচাপেঁচি ভূত ধারনাটি পেঁচা থেকে এসছে এর স্ত্রী বাচক হলো পেঁচি। এরা জোড়া ধরে শিকার করে থাকে। বাংলার বিভিন্ন জঙ্গলে এদের দেখা যায় বলে বিশ্বাস করা হয়। এরা সাধারনত জঙ্গলে দুর্ভাগা ভ্রমণকারীদের পিছু নেয় এবং সম্পূর্ণ একাকী অবস্থায় ভ্রমণকারীকে আক্রমণ করে মেরে ফেলে ও এরা শিকারের মাংস ছিড়ে ছিড়ে খায়।


মেছোভূত: এ ধরনের ভূতেরা মাছ খেতে পছন্দ করে। মেছো শব্দটি বাংলা মাছ থেকে এসেছে। মেছো ভূত সাধারনত গ্রামের কোন পুকুর পাড়ে বা লেকের ধারে যেখানে বেশি মাছ পাওয়া যায় সেখানে বসবাস করে। মাঝে মাঝে তারা রান্নাঘর বা জেলেদের নৌকা থেকেও মাছ চুরি করে খায়। বাজার থেকে কেউ মাছ কিনে গাঁয়ের রাস্তা দিয়ে ফিরলে এটি তার পিছু নেয় এবং নির্জন বাঁশঝাঁড়ে বা বিলের ধারে ভয় দেখিয়ে আক্রমণ করে মাছ ছিনিয়ে নেয়।


দেও: এধরনের ভূত নদীতে বা লেকে বসবাস করে। এরা লোকজনকে পানিতে ফেলে ডুবিয়ে মারে বলে বিশ্বাস করা হয়।


নিশি: ভূতদের মধ্যে অন্যতম ভয়ংকর হলো নিশি। অন্যান্য ভূত সাধারণত নির্জন এলাকায় মানুষকে একা পেলে আক্রমণ করে, কিন্তু নিশি গভীর রাতে শিকারকে তার প্রিয় মানুষের কন্ঠে নাম ধরে ডাকে এবং বাইরে বেরকরে নিয়ে যায়। নিশির ডাকে সারা দিয়ে মানুষ সম্মোহিত হয়ে ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে পড়ে, আর কখনো ফিরে আসে না। মনে করা হয় তারা নিজেরাও নিশিতে পরিনত হয়। কিছু কিছু তান্ত্রিক অন্যের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য নিশি পুষে থাকে। লোককাহিনী অনুসারে নিশিরা কোন মানুষকে দুবারের বেশি ডাকতে পারে না, তাই কারো উচিত কেউ তিনবার ডাকলে বের হওয়া তাতে নিশির আক্রমণের ভয় থাকে না।


মামদো ভূত: হিন্দু বিশ্বাস মতে, এটি মুসলমান আত্মা।


গেছোভূত: গেছো ভূত গাছে বসবাস করে। গেছো শব্দটি গাছ (বৃক্ষ) শব্দ থেকে এসেছে।


ব্রহ্মদৈত্য: এধরনের ভূত সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং এরা সাধারনত কারো ক্ষতি করে না। এ ধরনের ভূতরা হলো ব্রাহ্মণের ভূত। সাধারনত এরা ধূতি ও পৈতা পরিহিত অবস্থায় বিচরণ করে। এদেরকে পবিত্র ভূত হিসেবে গণ্য করা হয়। তারা অত্যন্ত দয়ালু ও মানুষকে অনেক উপকার করে থাকে। বিভিন্ন বাংলা চলচ্চিত্রে এদের চরিত্র চিত্রায়িত হয়।


আলেয়া: রাতের অন্ধকারে জলাভূমিতে বা খোলা প্রান্তরে আলেয়া দেখা যায়। মাটি হতে একটু উঁচুতে আগুনের শিখা জ্বলতে থাকে। লোককথায় একে ভৌতিক আখ্যা দেওয়া হলেও বিজ্ঞানীরা মনে করে গাছপালা পচনের ফলে যে মার্শ গ্যাসের সৃষ্টি হয় তা থেকে আলেয়া এর উৎপত্তি। এর ফলে জেলেরা ভুল বুঝে সহ্য ক্ষমতা হারিয়ে মৃত্যুবরণ করে।


বেঘোভূত: এরা হলো সেইসব মানুষের আত্মা যারা বাঘের আক্রমণে মৃত্যুবরণ করেছে বলে বিশ্বাস করা হয়। সাধারনত সুন্দরবন এলাকায় এধরনের ভূতের কথা বেশি প্রচলিত কারণ বাঘের অভাশ্রম হলো সুন্দরবন। এসব ভুতেরা জঙ্গলে মধু আহোরনে আগত গ্রামবাসীদের ভয় দেখায় এবং বাঘের সন্নিকটে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে। মাঝে মাঝে এরা গ্রামবাসীদের ভয় দেখানোর জন্য বাঘের স্বরে ডেকে উঠে।


স্কন্ধকাটা/কন্ধকাটা/ কবন্ধ: এই ভূতেরা মাথাবিহীন হয়ে থাকে। সচরাচর এরা হলো সেইসব লোকের আত্মা যাদের মৃত্যুর সময় মাথা কেটে গেছে যেমন, রেল দূর্ঘটনা বা অন্য কোন দূর্ঘটনা। এ শ্রেণীর ভূতেরা সবসময় তাদের হারানো মাথা খুঁজে বেড়ায় এবং অন্য মানুষকে আক্রমণ করে তাদের দাসে পরিণত করে ও তার মাথা খুঁজার কাজে নিয়োগ করে।


কানাভুলো: এ শ্রেণীর ভূতেরা পথিকের গন্তব্য ভুলিয়ে দিয়ে ঘোরের মধ্যে ফেলে দেয় এবং অচেনা স্থানে নিয়ে আসে। মাঝে মাঝে মানুষ একই রাস্তায় বারবার ঘোরপাক খেতে থাকে। ভূতরা কোন নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌচ্ছার পর তার শিকারকে মেরে ফেলে। এক্ষেত্রে শিকার তার জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এধরনের ভূতদের রাতে গ্রামের মাঠের ধারে পথের মধ্যে দেখা যায়। শিকার সবসময় একাকী থাকে বা দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।


ডাইনী: ডাইনী মূলত কোন আত্মা নয়, এরা জীবিত নারী। বাংলা লোকসাহিত্যে সাধারনত বৃদ্ধ মহিলা যারা কালো জাদু বা ডাকিনীবিদ্যাতে পারদর্শী তাদেরকেই ডাইনি বলা হয়ে থাকে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে, ডাইনীরা গ্রামের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের ধরে নিয়ে তাদের হত্যা করে এবং তাদের হাড়, মাংস ও রক্ত খেয়ে ১০০ বছর বেঁচে থাকে।


ঝেঁয়ো পেত্নী: সাধারণত ঝাউগাছে এরা নিজেদের লুকিয়ে রাখে। ভরসন্ধ্যাবেলায় পথিক যদি একা একা সেই ঝাউবন বা জঙ্গল পেরুতে যায়, তখন তাকে ধরে ঝাউয়ের মগডালে চড়িয়ে দেয় এ জাতীয় পেত্নীরা।


ডাকিনী: ডাইনি বুড়িদের অনুগতশ্রেণির ভূত। পাতিহাঁস খেতে খুব ভালোবাসে এরা। থাকে পুকুর বা দিঘীর ধারে কোনো তাল বা নারিকেল গাছে। রাতদুপুরে মেয়েলোকের বেশে ঘুরে বেড়ানো এদের অন্যতম অভ্যাস।


টাওর : নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক ভূত। হাসপাতালে জন্ম নেয়া বাচ্চা মরে গ্যালে অথবা মৃত বাচ্চা জন্ম হলে অথবা ছোট বাচ্চারা হাসপাতালে এসে অসুখে ভুগে মরে গ্যালে টাওর হয়ে যায়। টাওরদের ভিজ্যুয়ালাইজ করা হয় এভাবে- মরে যাওয়ার আগে এদের মাথায় চুল থাকুক বা না থাকুক, এরা ন্যাড়া মাথার নেংটুপুটু ভূত। এদের আনাগোনা সাধারণত হাসপাতালের পেছনের অংশে এবং সময়সূচি সূর্যাস্তের পর থেকে সূর্যোদয়ের আগপর্যন্ত। এরা বিকট হেসে অথবা ভয়ঙ্কর চেহারা দেখিয়ে মানুষদের ভয় দ্যাখায় না, আসলে এদের উদ্দেশ্য ভয় দ্যাখানো কিনা তাতে আমার সন্দেহ আছে। যারা স্বচক্ষে টাওর দেখেছেন বলে দাবী করেন, তাদের ভাষ্যমতে টাওরেরা সুন্দর সুন্দর ছোট ছোট দাঁত (জন্মের পরপর মৃত অথবা মৃতজন্মা শিশু টাওরেরাও!) বের করে খিলখিল করে হাসে। এই হাসি দেখেই নাকি মানুষের কলজে শুকিয়ে যায়। তবে টাওর কিউট ভূত। 


দৈত্য : দৈত্য প্রধানত্ব হিন্দু ভূত। দৈত্য’র ধারনা এসেছে হিন্দু দেবতা রাবণ থেকে। রাবণের মাথা এগারোটা হলেও দৈত্যের মাথা সাধারনত একটাই হয়। দৈত্যের খাবার আস্ত মানুষ আর গরু। অন্য কোন খাবারের কথা শোনা যায়না।


বামন ভূত : বামন খুব রেয়ার ভূত। এদের কথা পশ্চিম ছাড়া প্রায় শোনাই যায় না। নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে এরা বামন সাইজের। বামন ভূত সম্ভবত ‘দুই’ সংখ্যা পছন্দ করে, কেননা তারা লম্বায় দুই ফুট হয়, একসাথে দুইজন করে ভয় দ্যাখাতে আসে, পরপর দুইদিন এদের দ্যাখা যায়। বামন ভূতের চোখ টকটকে লাল, কান চোখা চোখা, দাঁত সোনার হয়। এরা সাজুগুজু করতে পছন্দ করে। বামন ভূত পুরানো আমলের আলখাল্লা পরে আসে, এক কানে দুল থাকে। দুল ছাড়া তাদের সাজানোর যায়গা হচ্ছে দাঁত। দাঁত সোনা দিয়ে বাঁধানো হয়। এরা সোনার বেল্টও পরে। বামন ভূত খনি শ্রমিকদের অতৃপ্ত আত্মা। খনি থেকে পাওয়া ধন সম্পদ ভোগ করতে না পেরে তারা ভূত হয়ে যায়।


কাঞ্চিচাটা : এরা দরজার আড়ালে থাকা ভূত। ধুপ করে অপরিচিত কেউ ঘরে ঢুকলে কাঞ্চিচাটা তাদের মেরে ফেলে। বাসার দারোয়ানদের ভূত হচ্ছে কাঞ্চিচাটা। এরা সবসময় দরজার পিছনে বসে ঝিমায়। যেই বাসায় তারা জীবিত অবস্থায় চাকরী করতো, সেই বাসার কারো অনিষ্ট এরা করে না। দীর্ঘদিন চাকরী না করলে এদের ভূত বাসায় আসে না, বাড়ির মোড়ে ঘোরাফেরা করে। অন্য কারও রুমে ঢুকার আগে প্রয়োজনীয় দোয়া-দরুদ পড়ে আস্তে আস্তে ঢুকাই শ্রেয়। এদের আরেকনাম চিপা ভূত।


বুড়িমা ভূত : এরা মোস্ট কমন ভূত। রাতের বেলা বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এদের দ্যাখা পাওয়া যায়। এরা নাঁকি সুরে বিলাপ করতে থাকে। উৎসাহী কেউ তার সামনে গিয়ে কারন জিজ্ঞেস করলে তার ঘার মটকে পরপারে পাঠানোর ব্যাবস্থা করে দেন বুড়িমা।


বাঁশঝাড়ের ভূত : এরাও গ্রামের ভূত। গ্রামে প্রায় সব রাস্তারই একটা অংশ থাকে বাঁশঝাড়ের মধ্য দিয়ে। রাত বারোটার পর কেউ রাস্তায় বের হলে ঐ অংশের বাঁশ মাটিতে শুয়ে পড়ে, তখন সে পার হওয়ার জন্য বাঁশে পা দিলেই সব খতম! ধনুকের মতোন তাকে আকাশে উড়িয়ে পাশের কর্দমাক্ত ধান ক্ষেতে নিয়ে ফেলা হবে।



ভূতের ঠিকানা 

এতক্ষন ধরে ভূতের নানা রূপের সাথে পরিচিত হলেও সন্দেহ নিশ্চই আপনার মাথায় এখনও দানা বেঁধে আছে যে আদেও কি ভূতের ঠিকানা হয় আর যদি হয় তবে তার পেছনের রহস্যগুলিই বা কি ? তাদের সকলের উদ্দেশ্যে জানাই ভৌতিক ব্যাপারটা আমাদের মনের সৃষ্টি , তবে মন এই ধারণাগুলো সৃষ্টিই করে যখন সে নিজে যুক্তিহীন হয়ে পড়ে । পৃথিবী জুড়ে এমন অনেক স্থান আছে যেখানে বিজ্ঞানের লজিক দ্বারা মানুষ তার চারপাশে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনাকে সম্পর্কিত করতে পারে নি । ফলে , বিজ্ঞানের বাইরে সে ভাবতে বাধ্য হয়েছে আর এই ভাবনার ফলশ্রুতিই হল ভূত ও ভগবানের সৃষ্টির উৎস ( ভালো কিছু হলে ভগবান ও খারাপ কিছু হলে ভূত )। 


বিশ্বের কিছু প্রসিদ্ধ ভৌতিক বা প্যারানরম্যাল সাইট 


এখন আমি এই রচনার একদম আসল জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি যেটি আলোচনা করবো বলে বা আপনাদের জানাবো বলেই আমার এই সৃষ্টি । ভালো করে দেখুন , আমার রচনাটির নামটিও রেখেছি ভূতের ঠিকানা । আসলে , আমার এই রচনার মূল উদ্দেশ্য হলো এমন জায়গা সম্বন্ধে আপনাদের জানানো যেগুলো ভৌতিক বা প্যারানরম্যাল হিসেবে বেশ খ্যাত হয়েছে বিশ্ব জুড়ে । 


ভারতের কিছু ভৌতিক স্থান :


ভারতে কিছু স্থান যেগুলিতে অতিপ্রাকৃত উপস্থিতির কারণে পর্যটকদের কাছে বহুল ভাবে আলোচিত । চলুন তাহলে জেনে নেই কিছু স্থানের অবাক করা তথ্য :- 


১. ডুমাস বীচ – গুজরাটের সবচেয়ে সুন্দর বীচ: এখানে একজন মানুষ রাত কাটানোর জন্য গেছিলেন, কিন্তু আর ফেরেননি।

গুজরাটের ডুমাস সৈকত হলো অন্যতম সুদৃশ সৈকত কিন্তু জায়গাটি মোটেই উপভোগ্য নয় কারণ ভারতীয় সরকার স্থানটিকে ভূতুরে স্থান হিসেবে ঘোষণা করেছেন। সুরাটের স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে কোনো ব্যক্তি যদি এই সমুদ্র সৈকত পরিদর্শনে এসে এক রাত কাটান, তাহলে তারা আর কখনই ফিরে আসেন না। এই জায়গায় আগে একটি হিন্দু শ্মশান ছিল।


২. বৃজরাজ ভবন প্রাসাদ, কোটা, রাজস্থান:


যেখানে শ্রী বার্টন ও তার পুত্রকে খুন করা হয়েছিল। রাজস্থানের কোটার বৃজরাজ ভবন হলো একটি বিশাল রাজকীয় স্থান। এখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ, এখানকার রক্ষীরাও ভূতুরে ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে অভিযোগ জানিয়েছেন। ব্রিটিশ আমলে জনৈক বার্টন এবং তার ছেলেকে এখানে খুন করা হয়। এখানকার অধিবাসী ও রক্ষিবাহিনীদের থেকে এই স্থানের বিভিন্ন ভৌতিক অভিজ্ঞতার কথা গণমাধ্যমের সুত্রে জানা গিয়েছে।


৩. ভানগর দুর্গ – পৃথিবীর অন্যতম একটি ভুতুরে স্থান: 

ভানগর দুর্গ শুধুমাত্র ভারতের সবচেয়ে ভৌতিক জায়গাই নয় সারা বিশ্বের মধ্যেও এটি ভৌতিক স্থানগুলোর শীর্ষে রয়েছে। এই দুর্গ রাজস্থানে অবস্থিত, ভারত সরকারের পক্ষ্ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দুর্গকে ভৌতিক বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই দুর্গে প্রবেশের জন্য কতৃপক্ষের আদেশ ও নিয়ম খুব কঠোর এবং যারা এখানে সময় কাটিয়ে গেছেন, তারা তাদের গল্পে অস্বাবিক ক্রিয়াকলাপের কথা বর্ণনা করেছেন। কথিত আছে এক রাজকুমারী একজন জাদুকরকে অপমান করেছিল বলে জাদুকর এই এলাকাটা ধ্বংস করে দেন। ১৭০০ শতাব্দীতে এটি আবার ধ্বংস হয় আর্মিদের মাধ্যমে। জাদুকর মারা যাওয়ার পর এই এলাকায় জাদুকরের আত্মা এখনো থাকে বলে রাতে কোন পাখি বা কোন পশু ডাকেনা, সবাই চুপচাপ থাকে বলে কথিত আছে। আজ পর্যন্ত কোন ব্যক্তি ওখানে রাত কাটানোর সাহস দেখায়নি।


৪. কুদহারা – রাজস্থানের ভৌতিক গ্রাম:


রাজস্থানের দ্বিতীয় ভয়ংকর জায়গাটি হলো কুদহারা, ১৯৯০ সাল থেকে এই গ্রাম ভৌতিক গ্রাম হিসাবে পরিচিত। একটি উপকথা অনুসারে, আট শতাব্দীর অধিক ধরে সেখানে থাকা গ্রামবাসীরা হঠাত এক রাত্রিতে বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং আর ফিরে আসেনি। কোনো ব্যক্তি এই গ্রামে জমি ও সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করলে গ্রামে উপস্থিত আত্মা তাকে মেরে ফেলে।


৫. ডি’সুজা বস্তি – মহারাষ্ট্রের সর্বাধিক ভৌতিক স্থান:


মুম্বাইবাসীরা মহিমের ডি’সুজা বস্তির সঙ্গে খুব ভালোভাবে পরিচিত কারণ এটি মহারাষ্ট্রের পোড়ো জাগাগুলির মধ্যে সবথেকে ভয়ানক জায়গা। স্থানীয় লোকদের মতে এই জায়গায় একটি মহিলার আত্মা আছে, যিনি কুয়ো থেকে জল তুলতে গিয়ে মারা যান। তিনি কারো ক্ষতি করেন না কিন্তু মানুষদের এই গ্রামের কাছে ঘেসতে দেন না।


৬. আলেয়া প্রেতাত্মা দীপ্তি:


পশ্চিমবঙ্গের একটি স্থান, যেইসব মত্সজীবিরা এই দীপ্তিকে অনুসরণ করেছেন তারা আর ফিরে আসেন নি পশ্চিমবঙ্গের প্রেতাত্মা আলেয়া, মার্শাল প্রেতাত্মা নামেও পরিচিত।


মার্শাল লাইট দ্বারা অনেক জেলে বিভ্রান্ত হয়েছেন এবং এটা বিশ্বাস করা হয় যে, কেউ যদি সেই আলো কে অনুসরণ করে, তারই বিপদ ঘনিয়ে আসে। যেসব জেলেরা অন্ধভাবে মার্শাল লাইটের পথ অনুসরণ করেছেন তারা কখনো ফিরে আসেন নি।


৭. তাজমহল প্রাসাদ হোটেল:


সম্পূর্ণ বারান্দা জুড়ে ভুতুরে আনাগোনার কথা শোনা যায়।

হ্যাঁ এটা সত্য! বলা হয়ে থাকে যে, তাজমহল প্রাসাদের স্থপতি কাঠামো অনুসারে হোটেল তৈরি না করার জন্য হোটেলের ভিতরে খুন হন। অনেকে হোটেলের বারান্দার প্রবেশ দ্বারে তাঁর ভূত দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। সেখানে না যাওয়া অবধি আপনার পক্ষে এর সত্য উত্ঘাতন করা সম্ভব নয়।


৮. আসামের জাতিঙ্গা:


অসমাধিত পাখিদের আত্মহত্যার জন্য এই স্থান বিখ্যাত।

আসামের জাতিঙ্গা পাখিদের জন্য একটি সুন্দর জায়গা। অসমাধিত পাখি আত্মহত্যার কারণে জায়গাটি বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত। ঘটনা খারাপের দিকে যায় যখন লক্ষ্য করা হয় পাখিরা সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ৬.৩০ থেকে ৯ টার মধ্যে মারা যায়। এই ঘটনাটি বুঝতে বিভিন্ন গবেষণা হয়েছে, কিন্তু কিছুই সুরাহা পাওয়া যায়নি।


৯. রাজ কিরণ হোটেল:


মুম্বাইয়ের অতিপ্রাকৃত ঘটনার জন্য প্রখ্যাত এক স্থান।

হোটেলটিতে অতিপ্রাকৃত ক্রিয়াকর্মের কারণে আপনাকে আপনার নিজের ঝুঁকিতে রাজকিরণ হোটেল দেখার অনুমতি নিতে হবে। হোটেলের অধিবাসীগণ প্রচন্ড কম্পনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন এবং বিছানার চাদর নিজে থেকেই দূরে সরে যায় বলেও জানিয়েছেন। পোড়ো রুমটি অভ্যর্থনার পিছন দিকে একটি নিরিবিলি কোণে অবস্থিত।


১০. জি. পি. ব্লক:


মিরাটে অবস্থিত একটি স্থান যেখানে চার জন পুরুষকে সুরাপান করে আমোদ করতে দেখা যায়।

মীরাটের জি. পি. ব্লকে যারা থেকেছেন তারা বলেন যে তারা নাকি চারটে ছেলেকে সুরা সেবন করতে ও আড্ডা মারতে দেখেছেন! যাইহোক, কিছু সময় পর পরিস্থিতিটি আরও ভুতুড়ে হয়ে যায় এবং তাদের কাউকেই দেখা যায় না। তাই জায়গাটি অতিপ্রাকৃত কার্যক্রম পর্যবেক্ষকদের কাছে দর্শনীয় হয়ে উঠেছে।


১১. বৃন্দাবন সোসাইটি – থানের সর্বাধিক ভৌতিক স্থান:


যেখানে এক অদৃশ্য আত্মা রক্ষীদের থাপ্পর মারেন।

বৃন্দাবন সোসাইটিকে থানের সবচেয়ে ভোতিক স্থান বলে গন্য হয়, যেখানে একজন মানুষ অনেক বছর আগে তার জীবন হারিয়েছেন। রক্ষীরা তাদের বয়ানে জানিয়েছেন যে রাতে তারা প্রহরারত অবস্থায় কেউ চোখের পাতা বুঝলে সেই সময় কেউ একজন এসে নাকি তাদের সজোড়ে থাপ্পর মারে!


১২. দার্জিলিং এর ডাউন হিল:


বিচিত্র অপ্রাকৃতিক ক্রিয়াকলাপ এবং মস্তকহীন বালকের ভ্রমনের জন্য পরিচিত। দার্জিলিঙ্গের কুর্সেং-এ অবস্থিত ডাউন হিল, বেড়াবার জন্য এটি একটি সুন্দর জায়গা, কিন্তু এটিকে দেশের সবচেয়ে ভৌতিক স্থান গুলোর মধ্যে একটি বলে গণ্য হয়। ডাউন হিল-এর কাছে মেয়েদের একটি বিদ্যালয় অতিপ্রাকৃত ও অস্বাভাবিক কাজকর্মের প্রত্যক্ষ্ সাক্ষী এবং অনকেই পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে মুন্ডহীন একটি ছেলেকে চলাফেরা করতে দেখেছে। এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলা যায় যে ডাউন হিল-এর বনে অসংখ্য খুন সংঘটিত হয়েছে।


১৩. সঞ্জয় ভ্যান:


নিউ দিল্লির এক ভৌতিক স্থান। সঞ্জয় ভ্যান নিউ দিল্লির একটি বিশাল বনভূমি। মানুষ এখানে একটি লাল শাড়ি পরিহত মহিলা কে দেখেছন যিনি হঠাতই দৃশ্যমান হন এবং সেখানকার মানুষজন আতঙ্কিত হওয়া মাত্রই আবার অদৃশ্য হয়ে যান।


১৪. রামোজি ফিল্ম সিটি:


যেখানকার আলো নিজে থেকেই জ্বলে আবার নিজে থেকেই নিভে যায়।

জানেন কি এটাও একটা ভুতুরে জায়গা? রামোজি ফিল্ম সিটি অনেক অস্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপের সাক্ষী। বলা হয়ে থাকে যে, এখানকার আলো নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যায় এবং একবার অন্ধকার হলে নিজে থেকেই ফিরে আসে। বাতি হাতে পাহারাদারেরা আহত হয় এবং অবশিষ্ট খাওয়ার নিজের মতো বিক্ষিপ্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।


১৫. আগ্রাসেন কি বাওলি:


দিল্লির জন্তর-মন্তরের নিকট একটি ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ।

এটা দিল্লির একটা ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং যন্তর মন্তর থেকে হাটা পথের দুরত্বে। কিন্তু জনশ্রুতি অনুয


ায়ী কোনো ব্যক্তি পাঁচ মিনিটের বেশি এটাকে দেখলে আত্মহত্যা করেন এবং এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখা পাওয়া যায়নি।


১৬. সানিওয়ারওয়াদা দুর্গ:


পুনের প্রখ্যাত একটি ভৌতিক স্থান।এটি পুনের একটি বিখ্যাত দুর্গ এবং মহারাষ্ট্রের প্রাচীনতম দুর্গগুলির মধ্যে একটি। অন্ধকার হয়ে যাওয়ার পর এই দুর্গে যাওয়া ঠিক নয়, কারণ বলা হয় যে, দুর্গটিতে কোন যুবরাজের আত্মা তাড়িয়ে বেড়ায় যাঁকে তাঁর নিজের খুড়তোত ভাইবোন ও পরিবারের সদস্যরাই খুন করেছিলেন। ভৌতিক কার্যকলাপ প্রত্যেক পূর্ণিমার রাতে আরো বেশি করে দেখা যায়।


১৭. কূলধারা , রাজস্থান : 



জয়সলমির থেকে ১৫-১৭ কিলোমিটার এগোলেই হদিস মিলবে এই শহরের। এখন সেখানে কেউ থাকে না। থাকবার কথাও নয়। বিশ্বাস করা হয়, অভিশপ্ত এ শহরে গেলে কেউই প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারবে না।

প্রায় ৩০০ বছর আগে এই শহরের গোড়াপত্তন করেছিল পালিওয়াল ব্রাহ্মণরা। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা ও দক্ষতার কারণে তারা বেশ সুনাম অর্জন করেছিল, পার্শ্ববর্তী আরো ৮৪টি গ্রামেও দারুণভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল কুলধারার এই খ্যাতি। সুখেই কাটছিল কুলধারার মানুষদের জীবন। কিন্তু এরই মধ্যে একদিন ঘনিয়ে আসে ঘোর দুর্যোগ।

স্থানীয় পরিষদের এক সদস্যের কারণে গ্রামবাসী একদিন বিপদে পড়ে। গ্রামের প্রধানের মেয়েটির দিকে তার নজর পড়ে। সে গ্রামবাসীকে বলে মেয়েটিকে তার হাতে তুলে দিতে, না হলে তাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হবে বলে হুমকি দেয়। গ্রামবাসী এমন পরিস্থিতিতে একদিন রাতে নিজেরা দেখা করে। এ অবস্থায় তারা নিজেদের আত্মসম্মানকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং ওই রাতেই গ্রাম ছেড়ে চলে যায় চিরকালের জন্য। তবে যাওয়ার আগে কুলধারা গ্রামের মাটিকে গ্রামবাসীর প্রত্যেকে অভিশাপ দিয়ে যায়।

সেদিনের পর থেকে, কুলধারাতে কেউই নতুন করে আবাসস্থল গড়ে তুলতে পারেনি। কেউ দখলও করতে পারেনি কোনো জায়গা। যারাই চেষ্টা করেছে, তাদেরই ভাগ্যে নেমে এসেছে নির্মম মৃত্যু। সে কারণে মনে করা হয় যে গ্রামবাসীর অভিশাপ এখনো কার্যকর এই পরিত্যক্ত রহস্যময় নগরীতে। ভারতীয় সরকার এটিকে ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।



কলকাতার কিছু ভুতুড়ে স্থান 


ভারতের শুধু নয় খোদ কলকাতায় অনেক স্থান আছে যা ভুতুড়ে বলে কুখ্যাত হয়ে উঠেছে । এদের সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু জেনে নেওয়া যাক :- 


মল্লিক ঘাট ফুল বাজারের নিকটবর্তী ঘাট:- মল্লিক ঘাট ফুল বাজারের নিকটবর্তী ঘাটটিতে যাঁরা নিয়মিত যাতায়াত করেন তাঁদের অনেকেই বলেন, এই ঘাটে নাকি প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু ভৌতিক ঘটনা ঘটে। রোজই প্রায় অনেক মৃত্যু দেখে এই ঘাট। কোনও মহিলাকে সাদা শাড়ি পরে ঘুরতে দেখেছেন কিংবা মহিলার গলায় নাকি সুরে কান্না শুনেছেন— এমন দাবি স্থানীয়দের মধ্যে অনেকেই করে থাকেন। অনেকেই নাকি দেখেছেন, ভোররাতে নাকি এই ঘাটের ধারে জলের নিচ থেকে দুই হাত বাড়িয়ে কাউকে ডাকতে দেখা গিয়েছে। তাদের ধারনা যারা এখানে মারা গেছেন তাদের আত্মাই ঘুরে বেড়ায়।


২) নিমতলা শ্মশানঃ মধ্য কলকাতার সবথেকে পুরনো এই ঘাটে বহু শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। এত মানুষের শবদাহ হয়েছে যেখানে সেখানে অশরীরি আত্মার বিচরণ অতি স্বাভাবিক। অমাবস্যা রাত্রে নানাবিধ অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী থেকেছেন অনেকেই, এমনটাই জনশ্রুতি। শোনা যায়, অঘোরী তান্ত্রিকেরা নাকি বিশেষ বিশেষ রাতে এই শ্মশানে আসেন। মৃতদেহের উপর বসে রক্তপান করেন।





৩) ন্যাশনাল লাইব্রেরিঃ কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরিকে ঘিরে নানা ধরনের গল্প শোনা যায়। এই প্রাচীন লাইব্রেরিটির দুর্নাম রয়েছে ভুতুড়ে কার্যকলাপের জন্য। যাঁরা এখানে পড়াশোনা করতে যান তাঁদের অনেকেই বলেছেন, পড়াশোনা করতে করতে আচমকা ঘাড়ে অদৃশ্য কারোর নিঃশ্বাস অনুভব করেছেন। ন্যাশনাল লাইব্রেরির বল ডান্সের ফ্লোর থেকে ভেসে আসে কনসার্টের সুর। স্তব্ধ দুপুরে শুনেছেন অশরীরি কারোর পদচারণার শব্দ। লাইব্রেরী কর্মচারীদের মতে, লর্ড মেটকাফের স্ত্রীর আত্মাই নাকি এখনও ঘুরঘুর করে লাইব্রেরির অন্দরে বাহিরে।


৪) পুতুলবাড়িঃ কলকাতা শহরের আহিরিটোলার বাড়ি নিয়ে রহস্য আজও সবার মুখে মুখে। বাংলা সাহিত্যে পুতুলের বাড়িটি নিয়ে সত্যজিৎ রায় ও লিলা মজুমদারের কিছু ভয়ঙ্কর গল্প রয়েছে। এটা কলকাতা শহরের সবচেয়ে রহস্যজনক স্থান। অনেকে এখনও এই বাড়িতে থাকলেও সন্ধ্যার পর নাকি দোতলা বা তিনতলায় ওঠার সাহস পান না। পুতুলরূপী মহিলা অতৃপ্ত আত্মা নাকি ঘুরে বেড়ায় এ বাড়ির আনাচে-কানাচে। গভীর রাতে তো বটেই এমনকি ভরদুপুরেও কিছু অশরীরীর উপদ্রব রয়েছে এখানে। 


৫) রবীন্দ্র সরোবর মেট্রোস্টেশনঃ দৈনন্দিন দিনে মেট্রোর লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। আর সেইসব আত্মহত্যার ৮০ শতাংশই নাকি কলকাতার রবীন্দ্র সরোবর স্টেশনে ঘটেছে। রাত্রে এই স্টেশন থেকে শেষতম মেট্রোতে চড়েছেন যাঁরা তাঁরা অনেকেই দাবি করেন, ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করার সময়ে প্রায়-নির্জন স্টেশনে তাঁরা বিভিন্ন ছায়ামূর্তিকে ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন। তাই গা ছমছমে স্থানগুলির মধ্যে এটিও অন্যতম।


৬) সাউথ পার্কস্ট্রিট সিমেট্রিঃ নিমতলা, ক্যাওড়াতলা শ্মশান ঘাট খানিকটা আলোময় দেখালেও শহরের প্রাচীন সিমেট্রি ও কবরখানাগুলো কিন্তু এখনো অন্ধকারাচ্ছন্ন। সাউথ পার্কস্ট্রিট সিমেট্রি তেমনি একটি গোরস্থান। প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৭৬৭ সালে। আবছা অন্ধকার, স্যাঁতস্যাঁতে দেয়াল আর ঘন গাছপালায় ঘেরা গোরস্থানে গেলেই গা ছম ছম করে ওঠে। এখানে ব্রিটিশ সৈনিকের কবর সবচেয়ে বেশি। বলা চলে সাহেবি গোরস্থান। শোনা যায়, রাত হলেই নাকি কফিন থেকে জেগে ওঠে শত বছরের পুরনো আত্মা। একবার তো ঘটেই গেল বিপত্তি। সন্দীপ রায়ের ফেলুদা সিরিজের ‘গোরস্থানে সাবধান’-ছবির শুটিংয়ের উদ্দেশ্যে একবার সিমেট্রির দরজা খোলা হয়েছিল। ব্যাস উলটপালট করে দিল শুটিং সেটে থাকা সবার মন। অদ্ভুত সব শব্দ আর ছায়ায় ভয়ে শিহরিত হয়ে উঠল সবাই। এরপর থেকে আজ অবধি কেউ সেখানে ভুলেও পা বাড়ায়নি। এরকম আরও একটি সেমিট্রি রয়েছে লোয়ার সারকুলার রোডে। ঠিক আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু রোডের ওপরে। পর্যটকরা ঘুরতে আসেন ঠিকই কিন্তু রাত হলে ঢোকার সাহস হয় না কারও। এক পর্যটক ছবি তুলতে গিয়ে সাদা পোশাকের আবছা মহিলাকে দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পার্ক সার্কাসের বিশাল কবরখানার মতো স্থান, এ শহরে খুব কম রয়েছে। পার্কস্ট্রিটের আশপাশেরর স্থানীরা খুব সকালে এবং সন্ধার পর তাদের জানালা বন্ধ করে রাখেন।


৭) রাইটার্স বিল্ডিংঃ বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য প্রশাসনিক দপ্তর হিসেবে নবান্ন ব্যবহৃত হলেও দীর্ঘদিন ধরে রাইটার্স বিল্ডিং ছিল রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক কার্যালয়। কলকাতার অন্যতম এই রাইটার্স বিল্ডিংয়ে রাত নামলে জনশূন্য অলিন্দ যেন হয়ে ওঠে অশরীরীদের আখড়া। একথা স্বীকার করে নেন এখানে রাত কাটানো প্রতিটি নৈশপ্রহরী। জানা যায়, এই রাইটার্স বিল্ডিংয়ের পাঁচ নম্বর ব্লকটি মোটেই সুবিধার স্থান নয়। রাত নামতেই এখানকার বারান্দা দিয়ে কারা যেন হেঁটে বেড়ায়। দৌড়ে গিয়েও দেখা যায় না কাউকেই। এখানকার ঘরগুলো থেকে শোনা যায় একটানা টাইপের আওয়াজ। দোতলায় কারা যেন ভেসে উঠে মুহূর্তেই মিলিয়ে যায়।


ইতিহাস বলছে, এখানেই একসময় ছিল কলাগাছের জঙ্গল। একবার বেশ কয়েকজন ইংরেজকে এখানেই কবর দেওয়া হয়েছিল বলেও জানা যায়। লর্ড ভ্যালেনটিনের তথ্য মতে, ঘোড়ায় টানা গাড়ির খেলা বা ডুয়েল (বন্দুকযুদ্ধ) চলত এই এলাকায়। লেগে থাকত খুন-জখম। এমন বহু ঘটনার কথা আজও এই এলাকায় মুখে মুখে ফেরে। এখানে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী বিনয়-বাদল-দীনেশের হাতে কর্নেল সিমসনের খুন হওয়ার ঘটনাও ফেলে দেওয়া যায় না। সব মিলিয়ে খোদ এই সরকারি দপ্তরটিতে অশরীরীদের অস্তিত্ব আজও অস্বীকার করতে পারেন না কেউই।





৮) আকাশবাণীঃ কলকাতার পুরনো ভুতুড়ে বাড়ির মধ্যে এক নম্বর গারস্টিন প্লেস এবং দ্বিতীয় এর প্রথম অফিস। আকাশবাণীর পুরনো দফতর গারস্টিন প্লেসে বারবার দেখা গিয়েছে অশরীরী আত্মা। ফাঁকা লম্বা করিডর, অজস্র স্টুডিও আর ব্রিটিশ অবকাঠামো মিলিয়ে আকাশবাণীর ভুতুড়ে অস্তিত্ব অস্বীকার করা যায় না। রাত গভীর হলে অনেকেই দেখেছেন সাহেবের ছায়া উবু হয়ে কাজ করছে। আবার কেউ কেউ দেখেন মধ্যরাতে রেকর্ডিং রুমের বারান্দায় কে যেন গান শুনছেন। হয়তো বেতারের আশ্চর্য বিজ্ঞানী সে যুগের মনে জন্ম দিয়েছিল এসব ভুতুড়ে বিশ্বাসের। এখনো নানা স্টুডিও থেকেই রাতে ভেসে আসে যান্ত্রিক সুর। বলাই বাহুল্য, সেই যন্ত্রগুলো কোনো মানুষ বাজায় না।


৯) হেস্টিংস হাউসঃ আলিপুরের হেস্টিংস হাউস শহরের এক অন্যতম পুরনো স্থাপত্য। ওয়ারেন হেস্টিংসের বানানো এই বাড়ি একদা ছিল গভর্নরের বাসস্থান। এখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহিলা কলেজ রয়েছে এই বিল্ডিংয়ে। ছাত্রীরা বলেন, নানা ভুতুড়ে কাণ্ডকারখানা দেখা যায় বিল্ডিংয়ে। অনেকেই বলেন, এক ব্রিটিশ ব্যক্তি ও এক কমবয়সী ছেলেকে এখানে দেখা গিয়েছে। কিন্তু তাদের ধাওয়া করলেই নাকি একদম গায়েব হয়ে গিয়েছে। আবার এ জায়গা সম্পর্কে শোনা যায়, অশরীরী আত্মারা সবচেয়ে বেশি এখানেই ঘোরাঘুরি করে।





১০) রয়্যাল ক্যালকাটা গলফ ক্লাবঃ ঘোড় প্রতিযোগিতায় মুখরিত থাকে ক্যালকাটা টার্ফ ক্লাব খ্যাত রেসকোর্স ময়দানটি। রাতে এখানে ঘটে যায় অলৌকিক সব ঘটনা। কে বা কারা যেন ঘোড়া নিয়ে ছুটে বেড়ান এখানে। স্পষ্ট দেখতে পাওয়া ঘোড়া নিমিষেই বাতাসে মিলিয়ে যায়। এর সঠিক মতাদর্শ না পেলেও ইতিহাসে রয়েছে একটি কাহিনী। রয়্যাল পরিবারের ব্রিটিশরা এখানে ঘোড় সওয়ার করতেন। একবার এক ব্রিটিশ জর্জ উইলিয়ামস তার বিখ্যাত সাদা ঘোড়া নিয়ে ময়দান চষিয়ে বেড়াতেন। অপরূপ সাদা ঘোড়াটির নাম ছিল পার্ল হোয়াইট। প্রচুর রেস আর ট্রফি জেতায়, পার্ল হোয়াইটকে তখনকার সময় এক নামেই চিনত। উইলিয়ামস ঘোড়াটিকে নিজের প্রাণের চাইতেও বেশি ভালোবাসতেন। কিন্তু একবার অ্যানুয়াল টার্ফি টুর্নামেন্টের আগে আকস্মিকভাবেই পার্ল হোয়াইট অসুস্থ হয়ে পড়ে। উইলিয়ামস প্রাইডের প্রচুর যত্নআত্তি করেও লাভ হয়নি। যার ফলাফল অ্যানুয়াল ট্রফি হেরে যান। এরপরই একদিন সকালে জর্জ দেখে, খোলা ট্রাকের ওপরে মরে পড়ে আছে তার প্রিয় সাদা ঘোড়াটি। পার্ল হোয়াইটের শোক আর মায়ায় জর্জও বেশিদিন পৃথিবীতে ছিলেন না। শোনা যায়, প্রতি শনিবার রাতে পূর্ণিমার আলোয় নাকি ঘোড়া ও তার মালিকের আবছা মূর্তি এখানে দেখা যায়।

( তথ্যসূত্র : www.debipakshalive.com )


১১) এছাড়া কলকাতার উইপ্রো অফিসটিও ভুতুড়ে বাড়ি হিসাবে কলঙ্কিত । অফিসের চতুর্থ তলায় নাকি ভুতেদের আড্ডাখানা। সল্টলেকে অবস্থিত এই অফিসের অতিত ইতিহাসও ভয়াবহ। এখানে আগে ছিল জলাশয় আর জঙ্গল। খুনখারাপি, নেশা সব কিছুই চলত এখানে, এক সময় এটি পরিত্যক্ত কবরখানাও ছিল। অনেকে এখানে আত্মহত্যা করত যা সবই চলত লোকচক্ষুর আড়ালে। মূল অফিসটি কবরখানার উপরেই তৈরি। এখানে রাতের বেলা নাইট গার্ডরা ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছে অনেকবারই। এই অফিসের চার তলায় নাকি আজও প্রতিরাতে নাড়ি কণ্ঠে চিৎকার ও কান্না শোনা যায়, যা এই অফিসকে ভৌতিক করে তোলে । 

১২) অনেকে আবার কলকাতা বন্দর এলাকায় নবাবের ভূতের কার্যকলাপ অনুভব করেছেন বলে দাবি করে থাকে । প্রসঙ্গত বলে রাখি কলকাতা বন্দরটি নবাব ওয়াজিদ আলি শাহের ব্যক্তিগত সম্পত্তি । 



বিশ্বের কিছু বিখ্যাত ভৌতিক হোটেল 


আগেই বলেছি বিভিন্ন প্রাচীন আবাসন ভূতেদের থাকার এক আদর্শ স্থান । আর তাই ভূতের ঠিকানা সন্ধানে বেড়িয়ে আমি বিশ্বের কিছু ভৌতিক হোটেল সম্বন্ধে জানার চেষ্টা করবো ও এই রচনায় লিপিবদ্ধ করবো । চলুন তাহলে ঘুরে আসা যাক -- 


স্ট্যানলি [যুক্তরাষ্ট্র]

পৃথিবীর সবচেয়ে কুখ্যাত ভুতুড়ে হোটেল বললেই স্ট্যানলির নাম মনে আসে । হোটেলটি যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো রাজ্যের এস্টেস পার্ক শহরে অবস্থিত। ১৯০৯ সালে এই হোটেলটি নির্মাণ করেন ফ্রিলান অস্কার স্ট্যানলি। যার উদ্দেশ্য ছিল কলোরাডো ঘুরতে আসা তৎকালীন আমেরিকান সোসাইটির উঁচু স্থানীয় লোকদের থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা করা। কিন্তু হোটেলটির নাম ছড়িয়েছে মূলত এখানে ঘটে যাওয়া অস্বাভাবিক সব ঘটনার জন্য। কথিত আছে, স্ট্যানলি হোটেলের মালিকের স্ত্রী ফ্লোরা স্ট্যানলির ভূত হেঁটে বেড়ায় বিভিন্ন কামরায়। এই হোটেলের অদ্ভুত সব কাণ্ডকারখানা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বিখ্যাত থ্রিলার রাইটার স্টিফেন কিং ১৯৭৭ সালে লিখেছিলেন তার বেস্ট সেলার হরর উপন্যাস ‘দ্য সাইনিং’। 


অবরেয় গ্র্যান্ড [কলকাতা]

কলকাতায় ভূতের হোটেল নামে বেশ আলোচিত গ্র্যান্ড হোটেল। গোটা কলকাতার উচ্চাভিলাষী হোটেলগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। ভ্রমণের অন্যতম হোটেলটি বর্তমানে অবরেয় গ্র্যান্ড নামেই পরিচিত। গুজব হোক আর সত্যিই হোক জনপ্রিয় গ্র্যান্ড হোটেল ভুতুড়ে হোটেল। গুজব বলা হলেও বছরের পর বছর এই হোটেলে ভূতের আনাগোনা নিয়ে মানুষের আতঙ্ক আর কৌতূহলের কমতি নেই। রাত হলেই হোটেলের লবিতে ভুতুড়ে কাণ্ডকারখানা দেখার ঘটনা নেহাতই কম নয়। এ ছাড়া ১৯৪০ সালের টেডি বেদাফোর নামের কিংবদন্তি যিনি পিয়ানো বাদক ছিলেন। ১৯৪৫ সালে তিনি বেড়াতে এসে কোনো এক অদ্ভুত কারণে কলেরায় মারা যান। আরেকবার হোটেলবয় রাতের আঁধারে হোটেলের লবিতে ক্লিনার ভূতের দেখা পান। এ ছাড়া বিভিন্ন হোটেল সুইটের পাশের ঘর থেকে অচেনা নারীর কান্না ও মানুষের পদচারণার শব্দ শুনতে পাওয়ার কথাও শোনা যায়। কে বা কারা কক্ষের বাইরে ছোটাছুটি করে তা এখনো মানুষের কাছে রহস্যময়।


স্কিরিড মাউন্টেইন [ওয়েলস]

ওয়েলসের মনমাউথশায়ার অঞ্চলের ল্যানফিহাঙ্গেল ক্রুকর্নি গ্রামে অবস্থিত স্কিরিড মাউন্টেইন হোটেল হচ্ছে ওয়েলসের সবচেয়ে পুরনো স্থাপনাগুলোর মধ্যে একটি। এ হোটেলটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রায় ৯০০ বছরের পুরনো ইতিহাস। ১১০০ সালের অ্যাংলো-স্যাক্সন ক্রনিকলেও যার উল্লেখ আছে। হোটেলটি কে বা কারা বানিয়েছিল সে সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য নেই। তবে এটা জানা যায় যে, শুরুতে এটি ছিল শুধু একটি মদের দোকান। পরে খদ্দেরের আনাগোনা অনেক বেশি দেখে একে হোটেলে পরিণত করা হয়। তবে হোটেলের নিচের ফ্লোরটি কোটরুম হিসেবে ব্যবহৃত হতো, যেখানে সামান্য ভেড়া চুরির অপরাধেও মৃত্যুদণ্ডের মতো কঠিন শাস্তি দেওয়া হতো বলে জনশ্রুতি আছে। এই স্কিরিড মাউন্টেইন হোটেলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক বিপ্লবের ইতিহাস। ১৪০০ সালের দিকে ওয়েলসের অধিবাসীরা ইংল্যান্ডের রাজা চতুর্থ হেনরির (ঐবহৎু ওঠ) এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নামে। বিদ্রোহ দমনের লক্ষ্যে প্রায় ১৮০ জন বিদ্রোহীকে বন্দী করে স্কিরিড মাউন্টেইন হোটেলে এনে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়। এ হোটেলের যেসব কড়িকাঠে ফাঁসির দড়ি ঝুলানো হয়েছিল, সেসব জায়গায় এখনো দড়ির দাগ লক্ষ্য করা যায়। এরপর থেকে হোটেলটিকে ঘিরে নানা অতিপ্রাকৃত ঘটনার কথা শোনা যায়। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, স্কিরিড মাউন্টেইন হচ্ছে কয়েকটি ভূতের আবাসস্থল। এখানে রাতযাপনকারী অনেকেই নানা সময়ে ভয়ঙ্কর সব অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন। তারা আচমকা হোটেলের বিভিন্ন কড়িকাঠে ফাঁসিতে ঝুলতে থাকা মানুষের লাশ দেখেছেন! অনেকে বলেন, রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ অনুভূতি হয়— কেউ যেন অদৃশ্য দড়ি দিয়ে গলা পেঁচিয়ে ধরেছে। আইটিভির ‘এক্সট্রিম ঘোস্ট স্টোরিস’ নামের ডকুমেন্টারি টিভি সিরিজেও স্কিরিড মাউন্টেইনের অতিপ্রাকৃত ঘটনাবলি তুলে আনা হয়েছে।


উত্তর কাপুনডা [অস্ট্রেলিয়া]

দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে ভীতিকর জায়গাগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে উত্তর কাপুনডা হোটেল। হোটেলটি নির্মিত হয় ১৮৪৯ সালে নর্থ কাপুনডা আর্মস নামে। পরে ১৮৫৬ সালে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় নর্থ কাপুনডা হোটেল। তখন তামাখনিতে কাজ করার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে খনি শ্রমিকরা এসে কাপুনডা শহরে বসবাস করত। তাদের থাকা-খাওয়া ও বিনোদনের ব্যবস্থা করার উদ্দেশ্যেই কাপুনডা হোটেলটি নির্মাণ করা হয়। হোটেলটি গত এক শতাব্দীজুড়ে শহরের মানুষের প্রধান মিটিং পয়েন্ট হিসেবে খ্যাত। কাপুনডা শহরের রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গেও জড়িয়ে আছে এর নাম। ১৮৫৯ সালে কাপুনডা শহরে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল। তৎকালীন পুলিশ সুপার মিস্টার কুয়েলি কাপুনডা হোটেলের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা হাজারো মানুষের উদ্দেশ্যে বিশেষ দাঙ্গা আইন পড়ে শোনান। কথিত আছে, সে সময় খনি শ্রমিকরা হোটেলের নিচ দিয়ে বেশ কিছু টানেল নির্মাণ করেন যা স্থানীয় বিভিন্ন খনির সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। টানেলে আটকা পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু ও পতিতাদের ধরে এনে নির্যাতন করে মেরে ফেলাসহ এখানে আরও অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে বলে শোনা যায়। কোলাহলমুখর এই হোটেলটিতে একসময় শুরু হয় নানা ভুতুড়ে কর্মকাণ্ড, যার চাক্ষুষ সাক্ষী আছে অনেকেই। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, এই হোটেলে মৃত্যুবরণকারী সব অধিবাসীর ভূত এখনো বাস করছে এখানে।




ক্যারোসটা [লাটভিয়া]

লাটভিয়ার লাইপেজা শহরে অবস্থিত ক্যারোসটা হোটেলকে অনেকেই ক্যারোসটা জেলখানা নামে চেনে। এর কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই হোটেলটিকে জার্মানির নািস বাহিনী কারাগার হিসেবে ব্যবহার করত। ১৯০০ সালে এটি নির্মাণ করা হয় সাধারণ হাসপাতাল হিসেবে। পরবর্তীতে সোভিয়েত মিলিটারি ক্যারোসটাকে বন্দীশালা হিসেবে ব্যবহার শুরু করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জেলখানাটির দখল নিয়ে নেয় হিটলারের অনুসারীরা। ওই সময় এখানে শতাধিক বন্দী মারা যায়, যাদের বেশির ভাগ গুলি করে মারা হয়েছিল। জীবিত বন্দীদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হতো। তাই জেলখানা থেকে বের হওয়ার ফটকের ওপর অনেক মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েদি লাটভিয়ান ভাষায় লিখে গেছেন—‘নরক হতে মুক্তি’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই জেলখানা বেশ কিছুকাল অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকে। পরবর্তী সময়ে এটিকে একটি হোটেলে রূপ দেওয়া হয়। লোকেদের বর্ণনা অনুযায়ী এই হোটেলে সেই সব মৃত বন্দীদের আত্মা আজও বিরাজমান । 


ব্যানফ স্প্রিং [কানাডা]

কানাডার আলবার্টা রাজ্যের ব্যানফ ন্যাশনাল পার্কে অবস্থিত ব্যানফ স্প্রিং হচ্ছে কানাডার সবচেয়ে বিলাসবহুল হোটেলগুলোর মধ্যে একটি। ব্যানফ স্প্রিং হোটেলের নির্মাণ পরিকল্পনা করেছিলেন আমেরিকান আর্কিটেক্ট ব্রুস প্রিন্স। ১৮৮৭ থেকে ১৮৮৮ সালের মধ্যে কানাডিয়ান প্যাসিফিক রেলওয়ের তত্ত্বাবধানে এটি নির্মিত হয়। তবে ব্যানফ স্প্রিং হোটেলের আর একটি পরিচয় হচ্ছে কানাডার সবচেয়ে ভুতুড়ে স্থানগুলোর মধ্যে একটি। হোটেলটিকে ঘিরে নানা অতিপ্রাকৃত ঘটনার সাক্ষী আছেন অনেকেই। কথিত আছে, হোটেলটির সিঁড়িঘরে দুর্ঘটনায় একজন বিয়ের কনের মৃত্যুর কারণে এটি অভিশপ্ত স্থানে পরিণত হয়েছে। মেয়েটি বিয়ের সাদা গাউন পরা অবস্থায় তার স্বামীর আগমন পথের সিঁড়িতে মোমবাতি জ্বালাচ্ছিল। হঠাৎ একটা মোমের আগুন লেগে যায় মেয়েটির গাউনে। সে আতঙ্কিত অবস্থায় সিঁড়িতে হোঁচট খেয়ে পড়ে যায় এবং মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে তার মৃত্যু হয়। তারপর থেকে বিয়ের গাউন পরা অবস্থায় তার আত্মাকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় হোটেলের বিভিন স্থানে। হোটেলটিকে ঘিরে আরও একটি ঘটনা রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে হোটেলটির ৮৭৩ নম্বর রুমে বাস করত একটি পরিবার। কে বা কারা যেন একদিন এসে তাদের সবাইকে ওই রুমে খুন করে ফেলে রেখে যায়। পুলিশি তদন্তে কোনো ফলাফল হয়নি। তারপর থেকেই ওই রুমে অদ্ভুত সব কাণ্ড ঘটত। রাতে আসবাবপত্র টানাটানির আওয়াজ, ছোট বাচ্চার কান্না, স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া! মানুষজন কেউ সেই রুমে বাস করার সাহস পেত না। তাই বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষ দেয়াল তুলে এই কক্ষে ঢোকার পথ আটকে দিয়েছে, জানালাগুলোর কপাটও ঢেকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেও খুব একটা কাজ হয়নি। হোটেলটিতে ভুতুড়ে কাজ কারবার চলছেই, যার ব্যাখ্যা আজও কেউ দিতে পারেনি।

 


বেলিগালি ক্যাসেল [আয়ারল্যান্ড]

উত্তর আয়ারল্যান্ডের আনট্রিম কাউন্টির অধীন বেলিগালি গ্রামে ১৬২৫ সালে নির্মিত হয় বেলিগালি ক্যাসেল, যা বর্তমানে হোটেল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি আয়ারল্যান্ডে ১৭০০ শতাব্দীতে তৈরি হওয়া একমাত্র ভবন, যা এখনো মানুষের বসবাসের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। ১৬২৫ সালে জেমস শ নামে একজন স্কটিশ ব্যক্তি এই অঞ্চলে বসবাস করতে এসে তৎকালীন আর্ল অফ আনট্রিমের কাছ থেকে ২৪ পাউন্ডের বিনিময়ে একটি জমি ভাড়া নিয়ে বেলিগালি ক্যাসেল নির্মাণ করেন। ক্যাসেলটি সম্পূর্ণ স্কটিশ স্টাইলে নির্মিত। ১৯৫০ সালের পর হেস্টিংস হোটেলস গ্রুপ বেলিগালি ক্যাসেলের মালিকানায় একে হোটেলে রূপান্তর করে। হোটেলটি পরিচিতি পেয়েছে স্থানীয় মানুষের মাঝে প্রচলিত ভুতুড়ে কাহিনীগুলোর কারণে। মানুষের ধারণা, এই হোটেলে থাকতে এসে যারা মারা গেছেন, তাদের প্রায় সবারই আত্মা এই হোটেলে রাতের বেলায় ঘুরে বেড়ায়। লেডি ইসোবেল শ-এর কথা সবচেয়ে বেশি শোনা যায়। লেডি ইসোবেলের একটা অদ্ভুত স্বভাব ছিল। সে প্রায়ই অন্য বাসিন্দাদের দরজায় টোকা দিয়ে পালাত। এ কারণে বিরক্ত হয়ে সবাই ইসোবেলের স্বামীর কাছে অভিযোগ জানায়। ইসোবেলের স্বামী রাগান্বিত হয়ে তাকে একটা কামরায় বন্দী করে রাখে। কিন্তু অভিমানী ইসোবেল তা মেনে নিতে পারেনি। সে জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে। এরপর থেকে তার আত্মা এই হোটেলেই স্থায়ী বসত গেড়ে আছে। এখনো হোটেলে রাতের বেলা দরজার গায়ে টোকার শব্দ পাওয়া যায়। কিন্তু দরজা খুলে দেখা যায় কেউ নেই! ম্যাডাম নিক্সন নামে আরও একজন মহিলা এই হোটেলে মারা যান। হোটেলের অন্ধকার করিডরে এখনো তার সিল্কের ড্রেস পরে হেঁটে যাওয়ার খসখস আওয়াজ পাওয়া যায়। এ ছাড়াও নানা অতিপ্রাকৃত ঘটনার কারণে হোটেলের দক্ষিণ দিকের গম্বুজের নিজের ছোট রুমটিকে বলা হয় ‘দ্য ঘোস্ট রুম’।

 


তাজমহল প্যালেস [ভারত]

ভারতের সবচেয়ে বড় ও বিলাসবহুল হোটেলগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে তাজমহল প্যালেস হোটেল। মুম্বাইয়ের কোলাবা অঞ্চলে ১৯০৩ সালে হোটেলটি নির্মাণ করেন জামশেদজি টাটা। সে সময় মুম্বাইয়ের ওয়াটসন হোটেল ছিল ভারতের সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন হোটেল। একবার জামশেদজি টাটা ওয়াটসন হোটেলে উঠতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়া হয়েছিল। এ ঘটনায় ক্রুুদ্ধ হয়ে জামশেদ টাটা হোটেল তাজমহল প্যালেস নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেন। হোটেলের নির্মাণ পরিকল্পনার দায়িত্ব অর্পণ করা হয় ব্রিটিশ নির্মাণ প্রকৌশলী ডব্লিউ এ চ্যাম্বারসের ওপর। তবে অদ্ভুত ব্যাপার হলো তাজমহল প্যালেস হোটেল জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার পর চেম্বারসের আর কোনো খোঁজ মেলেনি। কথিত আছে, চেম্বারস যেভাবে তাজমহল প্যালেস হোটেলের নকশা এঁকেছিলেন, নির্মাণ কর্মীরা তা পুরোপুরি অনুসরণ করেননি। ফলে হোটেলের নির্মাণ চেম্বারসের মনের মতো হয়নি। এ ঘটনায় তিনি এতই কষ্ট পান যে হোটেলের পঞ্চম ফ্লোরের বেলকনি থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন। তারপর থেকেই তাজমহল প্যালেস হোটেলের নানা ভুতুড়ে কাজ-কারবারের কথা লোকমুখে শোনা যায়। দীর্ঘদিন ধরে অনেক মানুষের মুখে শোনা গেছে, তারা হোটেলের পঞ্চম ফ্লোরে ওই ব্রিটিশ প্রকৌশলীর মতো সাদা চুল-দাড়ির অধিকারী একটি অবয়ব ঘুরতে দেখেছেন। তবে তাজমহল প্যালেস হোটেলের ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কময় অধ্যায়টি লেখা হয় ২০০৮ সালে। মুম্বাইতে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলায় হোটেলটি পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। তিন দিনের খণ্ডযুদ্ধে মারা যায় প্রায় ১৬৭ জন। তারপর থেকে এখানে রাতযাপনকারী অনেকেই বলেছেন তারা রাতে ঘুমানোর পর দুঃস্বপ্ন দেখেন চারদিকে প্রচণ্ড গোলাগুলি হচ্ছে আর শোনা যাচ্ছে অসংখ্য মানুষের আর্তচিৎকার। 


বিশ্বের আরও কিছু ভৌতিক ঠিকানা 


লালবাগ কেল্লা

ঢাকা শহরের অন্যতম বিখ্যাত স্থান লালবাগ কেল্লা। শুধু ঐতিহাসিক গুরুত্বের দিক থেকেই নয়, ভুতুড়ে জায়গা হিসেবেও বেশ খ্যাতি আছে কেল্লাটির। দুর্গের তিনটি প্রধান অংশের একটি হলো শায়েস্তা খাঁর কন্যা পরী বিবির মাজার। কিংবদন্তী অনুযায়ী, পূর্ণিমার রাতে লালবাগ কেল্লায় পরী বিবিকে দেখা যায়। নাচতে থাকা, গাইতে থাকা পরী বিবি কখনো কারো ক্ষতি করেছেন বলে শোনা যায়নি।

লালবাগের আরেক বিখ্যাত ভূত হলো ঘোড়ার পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়ানো এক সৈনিক। নাম না জানা সেই সৈনিক প্রায় রাতেই কেল্লার দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকে নামাজের কক্ষের আশেপাশে ঘোরাফেরা করে কিছুক্ষণ পর আবার বেরিয়ে যান। কথিত আছে, শায়েস্তা খাঁর আমলে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য সৈনিকরা সবাই কেল্লায় একত্রিত হতেন। সেই হিসেব মোতাবেক ভোর ৫টার দিকে এই লোকটিকে দেখতে পাওয়ার পেছনেও হয়তোবা কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো সম্ভব। কিন্তু স্থানীয়দের মতে, লোকটিকে দেখা যায় রাত ৩টার দিকে। নামাজের কক্ষ আঁতিপাঁতি করে খুঁজেও চোর বা অন্য কোনো মানুষের উপস্থিতির কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। কাজেই কে এই লোক, কেনই বা সে আসে, পুরো ব্যাপারটা এখনো ধোঁয়াশাই রয়ে গেছে।

আর লালবাগ কেল্লার সুড়ঙ্গ নিয়ে তো গুজবের কোনো কমতি নেই। জনশ্রুতি অনুযায়ী, এই সুড়ঙ্গটি মিলিত হয়েছে আগ্রার কোনো এক দুর্গের সাথে। আজ অবধি এই সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে কেউ ফিরে আসেনি। আগ্রার সেই দুর্গের সুড়ঙ্গমুখ ব্রিটিশ আমলেই বন্ধ হয়ে গেছে। তাদের এক অনুসন্ধানী দল রহস্যময়ভাবে নিখোঁজ হয়ে গেলে নিজ উদ্যোগে লালবাগের সাথে যোগাযোগের পথ সিলগালা করে বন্ধ করে দেয় তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার। তাদের কয়েকটি হাতিও নাকি হারিয়ে গিয়েছিল টানেলের অন্ধকারে। ঐ অনুসন্ধানকারী দলের খোঁজে কুকুর পাঠায় নিরাপত্তা কর্মীরা। কুকুরের চেইন ফিরে আসলেও ফিরে আসেনি সেই দলের কোনো সদস্য কিংবা খোদ কুকুরটি!


ঢাকা গলফ হাইটস, বনানী


বনানী কবস্থানে পাশে নির্মাণ করা হয়েছে ঢাকা গলফ হাইটস। প্রায় প্রতিরাতেই ১২টার পর থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজ পান স্থানীয়রা। শব্দটি কবরের দিক থেকে আসে বলেই তাদের ধারণা। তাছাড়া অস্বাভাবিক কটু গন্ধও পান অনেকে, কেউ কেউ পান কর্পূরের গন্ধ। রাতের বেলা বনানী কবরস্থানের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় অনেকেই অদৃশ্য কেউ তাকে অনুসরণ করছে এমন বোধ করেন। কবর নিয়ে আমাদের মাঝে যে ভয় কাজ করে, তা থেকেই হয়তোবা এমন অনুভূতির সৃষ্টি হয়।



 

পুরনো ডিওএইচএসের নির্মাণাধীন অ্যাপার্টমেন্ট, বনানী


 ঢাকা প্যারানরমাল সোসাইটি নামক একদল অতিপ্রাকৃত বিষয়ক অনুসন্ধানী অদ্ভুত কিছু জিনিসের অস্তিত্ব খুঁজে পান রাজধানীর বনানীর পুরনো ডিওএইচএসের নির্মাণাধীন এক অ্যাপার্টমেন্টে। শয়তানের পূজা করার জন্য যে সমস্ত উপকরণ প্রয়োজন হয় বলে কথিত আছে, তার সবকিছুর নমুনা পাওয়া যায় সেখানে। অপরিচিত ভাষায় কিছু লেখা, দেয়ালে আঁকা হেক্সাগন- শয়তান পূজারীদের উপস্থিতি জানান দেয়। অনুসন্ধান চালানোর সময় দলের এক সদস্য অদৃশ্য কিছুর আক্রমণের শিকার হন, তার হাতে আঁচড়ের দাগ দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুরনো ডিওএইচএসের ৪ এবং ৫ নম্বর লেন দুটি নির্মাণ করা হয়েছে কবরস্থানের উপরে।


মায়ের দোয়া ভিলা, উত্তরা


১৯৮০ সাল থেকে ঢাকা শহরের অন্যতম কুখ্যাত ভুতুড়ে বাড়ি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে উত্তরার মায়ের দোয়া ভিলাটি। এই বাড়িতে কেউ বেশিদিন থাকতে পারেনি। বাড়ির বাসিন্দা থেকে কর্মচারীরা সবাই অস্বাভাবিক আর অদ্ভুতুড়ে বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেছেন। ওখানে থাকাকালীন সময়ে দুর্ভাগ্য, রহস্যজনক মৃত্যু যেন তাদের পিছু ছাড়েনি। কথিত আছে, খারাপ আত্মা দূর করার জন্য এক্সোরসিজমের ব্যবস্থা করা হলে এক এক্সোরসিস্ট মৃত্যুবরণ করেন। বাড়িটি বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।


বোরলে রেকটরি


বোরলে রেকটরি ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ভৌতিক জায়গা হিসেবে পরিচিত। এটি যুক্তরাজ্যের বোরলে গ্রামে অবস্থিত। ১৮৬৩ সালে Reverend Henry Dawson Ellis Bull এর জন্য এটি নির্মান করা হয়।

এখানে নুন কে হাটতে দেখা যায় যাকে প্রেট্রল মেরে মেরে ফেলা হয়েছিল। পুরোনো একটি গল্প প্রচলিত আছে যে নুন বোরলে সম্প্রদায়ের এক সন্ন্যাসীনীর প্রেমে পড়েন। দুজনে চেয়েছিলেন পালিয়ে যেতে কিন্তু ধরা পড়ে যায়। সন্ন্যাসীনীকে বধ করা হয় আর নুনকে পুড়িয়ে মারা হয় এই ভবনে।


টাওয়ার অব লন্ডন

ছবিটি অনেক বিখ্যাত ভৌতিক স্থান টাওয়ার অব লন্ডন এর। ১৫৩৬ সালে হেনরি VIII এর একজন স্ত্রীকে এই টাওয়ারে শিরচ্ছেদ করা হয়। ঐ স্ত্রীলোকের আত্মাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যেত, মাঝে মাঝে তিনি তার খণ্ডিত মাথা হাতে নিয়ে টাওয়ার গ্রীন এবং টাওয়ার চাপেল রয়েলে হাটতেন।


উডচেস্টার ম্যানশন

ইংল্যান্ডের গ্লস্টারশায়ারে অবস্থিত উডচেস্টার ম্যানশনটির ভৌতিক বাড়ি হিসেবে খ্যাতি আছে।

দালানটির নির্মান কাজ শেষ হয়নি। গত ২০০ বছর আগে এটির কাজ করা হয়েছিল শেষ বারেব মত। গুজব আছে এখানে যারা কাজ করতে আসে তারা অনাক্ষাঙ্কিতভাবে মারা যায়। অদ্ভুত নাকের শব্দ পাওয়া যায়, নির্মান কাজের শব্দের মত শব্দ পাওয়া যায়, রোমান সৈন্য এবং যুবতী মেয়েদের দেখতে পাওয়া যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।


প্যারিসের কাটাকম্ব

প্যারিসের কাটাকম্ব ফ্রান্সের প্যারিসের একটি আণ্ডারগ্রাউন্ড অসারি (যেখানে মরা মানুষের মাথার খুলি, কঙ্কাল রাখা হয় )।

১৭০০ সালের মাঝা মাঝি এটি নির্মান করা হয় । যারা ৩০ কমপক্ষে ৩০ বছর আগে মারা গেছে তাদের খুলি এখানে সংরক্ষন করা হয়, এখানকার খুলি, হাড়গুলো রাতের বেলা নিজে নিজে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গার যাতায়ার করে বলে কথিত আছে।



দি স্কিরিড ইন!

কুখ্যাত ভৌতিক স্থান গুলোর একটি হল ইংল্যান্ডের ওয়ালেস স্টেটের Llanfihangel Crucorney তে অবস্থিত Skirrid Mountain Inn। লোক গল্প মতে- ৯০০ বছর আগে এখানে ১৮০ জনেরও বেশি লোক সিঁড়ির বীমের সাথে ফাঁসি দেওয়া হয়। তখন ভবনের প্রথম তলা কোর্ট রুম হিসেবে ব্যবহার হত। এই ঘটনার পরে হঠাত একদিন দেখতে পায় একটা গ্লাস উড়ছে! লোকজন দেখতে পেত জানালায় তারা তাদের ঘাড়ে ফাঁস বানাচ্ছে! ঠান্ডা কক্ষগুলো হঠাত করে গরম হয়ে উঠতো! এভাবে তাপমাত্রা বাড়তে থাকতো। এসব এর পর ফেনি প্রাইস(দালানটির মালিক) চিন্তা করলেন এখানে অনেক সক্রিয় আত্মা রয়েছে, অন্য সকল লোকজন এটাকে বিপদজনক স্থান হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন এখানে থাকা অনেক ঝুঁকিপূর্ন।


 রোজ হল

জ্যামাইকার মন্টেগো বে এর রোজ হল একটি ভৌতিক স্থান । এখানে Annie Palmer নামে এক মেয়ের আত্মা বাস করে। তার শাসনামলের ১১ বছরে তাঁকে তার বেডে অত্যাচার করে খুন করা হয়। তিনি তার ৩ স্বামীকে এবং এক ভৃত্যকে বিষ প্রয়োগ করে, যাদু দিয়ে মেরে ফেলেন এবং অন্যান্য ভৃত্যদেরকে চাপ প্রয়োগ করেন লাশ সমুদ্রের পাড়ে সমাহিত করতে।এর সূত্র ধরে পরবর্তীতে তাঁকে মেরে ফেলা হয়। লিজেন্ডের মতে- এই হলে শুধু নির্যাতিত অ্যানি নয় দাসদের শিশুদের আত্মাও ঘুরাঘুরি করে। এখানে রাত কাটানো সুখকর নয়।


বেল ফার্ম

বেল ফার্ম হন্টিং হিসেবে স্বীকৃত। ১৮১৭ থেকে ১৮২১ সালে একজন মহিলা বেল পরিবারে প্রবেশ করে যার নাম কেট এবং সে জন বেল এবং তার পরিবারকে অত্যাচার করে । এক পর্যায়ে বেল একটি স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাধিতে আক্রান্ত হন, কেটের এন্টিক তার অবস্থা আরো খারাপ করে তুলে। এবং মারা যায়। তার মৃত্যু শয্যার পাশে একটি কালো তরলের শিশি পাওয়া যায়। প্যারানরমাল বিশেষজ্ঞরা যখন কেটকে প্রশ্ন করেন শিশিটা কিসের, তখন তিনি বলেন এটা বেলকে দেওয়া হয়েছিল। শিশিটির তরলগুলো যখন তার ঘরের বিড়ালকে দেওয়া হয় তৎক্ষণাৎ বিড়ালটি মারা যায়, অর্থাৎ কেট বেলকে হত্যা করেছেন, এখনো সেই ভবনের আশে পাশে বেলের আত্মা আছে বলে মনে করেন অনেকে এবং সেটাই বিভিন্ন বিপদ ঘটায়।


এডিনবার্গ ক্যাসল

স্কটল্যান্ডের অধিক হন্টেড জায়গা হিসেবে এডিনবার্গ ক্যাসল অনেক পরিচিত। এটি একটি ঐতিহাসিক দূর্গ। এটি ৯০০ বছর পুরনো দূর্গ। এটার প্রাচীন অন্ধকূপ, যেখানে অগণিত মৃত্যুহার। অগনিত প্রেত্মাতার জন্য একটি শাশ্বত স্থান । এডিনবার্গ নিজে বলেন এটি ইউরোপের সবচেয়ে ভৌতিক জায়গা। বিভিন্ন উপলক্ষে দর্শনাথীরা যখন যেত তখন তারা দেখতে পেয়েছিলেন ভৌতিক বাশিওয়ালা, মুণ্ডহীন ঢোলবাদক, ফ্রান্সের এই জেল আসামীর আত্মা, কুকুরের আত্মা এবং আরো অনেক কিছু।


ভানগার

ভারতের মধ্যেও ভূত অনেক পরিচিত। ভারতের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ভৌতিক স্থান ভানগার দূর্গ। স্থানীয় লোকজনই এই জায়গার নামকরণ করেন। এই এলাকার চারপাশে একটি প্রসস্থ বার্থ রয়েছে। এলাকাটি এবং শহরকে নিয়ে কিছু জনপ্রিয় ভূতুড়ে গল্প রয়েছে। কর্তৃপক্ষ দর্শনার্থীদেরকে সন্ধার পর ধ্বংস হয়ে যাওয়া অবশেষ দেখতে অনুমতি প্রদান করেন না । কথিত আছে এক রাজকুমারী একজন জাদুকর থেকে ঘৃণাভরে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন বলে তিনি এই এলাকাটা ধ্বংস করে দেন জাদুকরটি। ১৭০০ শতাব্দীতে এটি আবার ধ্বংস হয় আর্মিদের মাধ্যমে। এই এলাকায় যাদুকরের আত্মা এখনো থাকে বলে রাতে কোন পাখি বা কোন পশু ডাকেনা, সবাই চুপচাপ থাকে বলে কথিত আছে। আজ পর্যন্ত কোন ব্যক্তি ওখানে রাত কাটানোর সাহস দেখায়নি।


ব্যারো হ্যাক [যুক্তরাষ্ট্র]


১৮৯০ সালে ব্যারো হ্যাক গ্রামটি সম্পূর্ণ নিঃস্ব হয়ে যায়। অভিশপ্ত এই গ্রাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। বর্তমানে সেখানে কিছু ভাঙা দেয়াল, বিম এবং কয়েকটি কবর ছাড়া কিছুই নেই। গ্রামটি আশপাশের সবার কাছেই ভৌতিক। এ কারণে নামটাও ‘ভুতুড়ে কণ্ঠের গ্রাম’। মাঝে মাঝে এখানে বিকট চিৎকার শোনা যায়। অথচ এমন নির্জন জঙ্গলে কেউ থাকে না। দর্শনার্থীরা এখানে অদ্ভুত সব আর্তনাদ শুনতে পান। অনেকের অভিযোগ, ঘোড়ার খুরের শব্দ, কুকুরের কান্না এমনকি শূকরের ডাক শুনতে পান। অনেকের দাবি, তারা কবরস্থানের কাছে মুণ্ডুও দেখতে পেয়েছেন। অনেকে আবার ছোট বাচ্চার প্রেতাত্মা দেখেন। ১৯৭১ সালে এক প্যারানরমাল বিশেষজ্ঞ পল ইনো ব্যারো হ্যাক কবরস্থানে গোঙানোর শব্দ পান। পরে তিনি আবিষ্কার করেন একটি কাটা মাথা কান্না করছে, যার চোখ দিয়ে অজস্র ধারায় পানি ঝরছে।


বোডি [ক্যালিফোর্নিয়া]

ভাবুন তো, কোনো পাহাড়ঘেরা শহরের ভিতরকার নির্জন খাদ থেকে মাঝে মাঝে উচ্চশব্দের হাসির আওয়াজ আসে, দূর থেকে ভেসে আসে গল্প করার আওয়াজ বা শোনা যায় ফিসফিসানির শব্দ। তাকে কী বলবেন, নিশ্চয় ভুতুড়ে? হ্যাঁ, ক্যালিফোর্নিয়ার বোডি শহরে এমন সব কাণ্ড ঘটার জন্য তাকে ভুতুুড়েই বলা হয়। আমেরিকার মানুষ শহর ঘুরে এসে বলে— শহরটি থেকে গুরুগম্ভীর পিয়ানো বাজানোর শব্দ দূর থেকে ভেসে আসে। মাঝে মাঝে শোনা যায় গানের আওয়াজ। লোকে বলে ওখানে সত্যি সত্যিই ভূতের বাস আছে। একসময় আমেরিকার সবচেয়ে দুর্ধর্ষ বাসিন্দার শহর ছিল এটি। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে এসে এখানে প্রতিদিন প্রকাশ্যে খুন হতো। ১৮৮০ সালে বোডির বাইরে দুই ডাকাত একটি স্টেজ কোচ লুট করে। হাজার হাজার ডলারের সোনাও তারা লুকিয়ে ফেলে। পরে অবশ্য তারা জনগণের হাতে মারা যায়। কিন্তু লুট করা সোনার সন্ধান আর মেলেনি। কেউ বলে সেসব সোনা শহরের ধারেকাছে কোথাও মাটি খুঁড়ে নিচে ডাকাতরা পুঁতে রেখেছিল। বর্তমানে বোডি শহরকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন কল্পকথা। এই শহরে বর্তমানে মানুষজন বাস করে না। ১৮৭০ সালের দিকে শহরে তৈরি করা কাঠের দালানগুলো আজও শুধু ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। ভয় আর কল্পকাহিনী নিয়ে বোডি আজ আমেরিকার এক ভুতুড়ে শহর।

 


রিওলাইট [নেভাদা]

আমেরিকার পূর্ব ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত পৃথিবীর অন্যতম আশ্চর্যজনক স্থান ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে যাবেন আর অদূরেই নেভাদার রিওলাইট শহর থেকে একবার ঘুরে আসবেন না তা কি হয়? ভুতুড়ে এই শহরটিকে নিয়ে বিশ্ববাসীর যে পরিমাণ মাতামাতি তা হয়তো আর কোনো শহরকে ঘিরে হয়নি। এ পর্যন্ত তার ছবিও তোলা হয়েছে অন্য যে কোনো শহর থেকে অনেক বেশি। এর অর্থ দাঁড়ায়, এই শহরের অবশ্যই কিছু না কিছু বিশেষত্ব আছে। বিংশ শতাব্দীতে নেভাদার এই শহরে ১০ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। একসময় মাইনাররা শহর ছেড়ে বিদায় নিতে শুরু করে। ফলে ১৯০৭ সালে ভয়ানক আর্থিক সংকট দেখা দেয়। এখানের শ্রমিকরাও সবাই শহর ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। তারপরই সোনার খনি থেকে সোনা উত্তোলনের কাজ শেষ হয়। যাও-বা ছিল তারা মরে যায়। এমনকি জনশূন্যও হয়েছিল। তারপর থেকে এটি সত্যি একটি ভুতুড়ে শহরে পরিণত হয়। স্বাভাবিকভাবেই গা ছমছমে একটি পরিবেশ তৈরি হয়। অনেকেই বলে ফাঁকা গ্রামে নাকি ভূত আস্তানাও গেড়েছে। শহরটি ক্রমে ধ্বংস হতে থাকে। সারা শহর মিলে বর্তমানে দর্শনীয় জিনিস বলতে আছে একটি ট্রেন ডিপো এবং একটি বটল হাউস। শহরের বটল হাউসটি একটি অনন্য নিদর্শন। ১৯০৬ সালে মাইনার টম কোলি পঞ্চাশ হাজার বোতল দিয়ে বোতল বাড়িটি তৈরি করেন। বাড়িটির নির্মাণশৈলী সবাইকে অবাক করে দেয়।

 


ডারগাভস [রাশিয়া]

নানা রহস্যেঘেরা ডারগাভস শহরের অবস্থান দক্ষিণ রাশিয়ার উত্তর ওসেশিয়ায়। গ্রামটিতে রয়েছে বহু পুরনো ১০০টি পাথরের সমাধির এক গোরস্তান। গ্রামবাসী মৃত স্বজনদের কবর দিত, সঙ্গে তাদের ব্যবহারের জামাকাপড় আর পছন্দের জিনিসপত্রও দিত। সেসব জিনিসপত্র দেখে ৪০০ বছর আগে এ গ্রামে থাকা মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা পাওয়া যায়। আর তাই পর্যটক থেকে শুরু করে প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে গবেষণার জন্য ভীষণ আকর্ষণীয় এক জায়গা ডারগাভস। স্থানীয়দের ধারণা, কেউ এখানে একবার প্রবেশ করলে আর কখনো জীবিত অবস্থায় বেরিয়ে আসতে পারে না। ভুতুড়ে এক শক্তি গ্রামটি বধ করে রেখেছে। তবে কারও মুখে শোনা যায়, আঠারো শতকে ওসেশিয়াজুড়ে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে প্লেগ। সংক্রামণের ভয়ে আক্রান্তদের পাথরের তৈরি বিশেষ এই ঘরে দরকারি জিনিসপত্রসহ রেখে দেওয়া হতো। ভীষণ কষ্ট আর একাকিত্ব নিয়ে একসময় এখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ত তারা। এখন কেউ গ্রামে ঢুকলে প্রথমেই দেখতে পাবেন সাদা রঙের বাড়ির মতো সারিবাধা সমাধিগুলো। প্রতিটি সমাধির সামনেই রয়েছে একটি করে কুয়ো। ধারণা করা হয়, ওসেশিয়ার লোকেরা নিজেদের মৃত স্বজনদের কবর দেওয়ার পর কুয়োতে মুদ্রা ছুড়ে মারত। যদি সেটা কুয়োর নিচে কোনো পাথরকে আঘাত করত, তবে মনে করা হতো, মৃত ব্যক্তির আত্মা স্বর্গে পৌঁছে গেছে।

 


বাহলা [ওমান]

বহু সত্য-মিথ্যার মিশেলে রচিত আরব্য গল্প-উপন্যাস। অশরীরী কিংবা জিনের ছড়াছড়ি রয়েছে এসব গল্পে। কিন্তু বাস্তবেই তেমনি অভিশপ্ত ঘটনার সাক্ষী হয়ে এখনো টিকে আছে ওমানের বাহলা শহর। কালো জাদু, ভবিষ্যদ্বাণীসহ ইসলামে নিষিদ্ধ সব ধরনের কাজ চলে এখানে। আর তাই বাহলার বাসিন্দাদের তালিকায়ও আছে ডাইনি, জিন ও জাদুকরদের নাম। যারা ইচ্ছা করলে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সময় না নিয়েই চলে যেতে পারে। সব মিলিয়ে বাহলা বর্তমানে কেবল কোনো অভিশপ্ত গ্রামই নয়, বরং পৃথিবীর কালো জাদুর কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। রাজধানী থেকে মাত্র ২০০ কিমি দূরত্বের এই শহরে নিকৃষ্টতম এসব কাজ হরহামেশাই চলে। শহরটিকে অশরীরী, দুষ্টু আত্মা বা জিনের বাসস্থান বলা হয়। এর পেছনের ইতিহাস আরও ভয়ঙ্কর। আগে শহরটিতে মুসলিম চেহারার আদলে খারিজি সম্প্রদায়রা বাস করত। প্রকৃত অর্থে এরা কালো জাদুর বিদ্যাচর্চা করত। ইসলামের নিষেধ অমান্য করে খারিজিরা কালো জাদু চর্চার জন্য বাহলা দুর্গটি নির্মাণ করে। তারা এতটাই পারদর্শী ছিল যে, কোনো বাহন ছাড়াই পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে যেতে পারত। মুসলমানদের ওপর তারা বিভিন্ন অত্যাচার করত। তাদের মূল দাবি ছিল সব মুসলিম তাদের অনুসরণ করবে। এতে করে যদি তাদের মৃত্যুও হয় হোক। ইতিহাসে খারিজিরাই প্রথম সন্ত্রাসী, যারা জিহাদের নামে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করত।


প্রিপিয়াত [ইউক্রেন]

একটি ভৌতিক শহর হিসেবে পরিচিত উত্তর ইউক্রেনের প্রিপিয়াত। ১৯৮৬ সালে চেরনোবিল দুর্যোগের পর থেকে এলাকাটি একদম ফাঁকা। ১৩ হাজারেরও বেশি অ্যাপার্টমেন্ট, ৩৫টি খেলার মাঠ, ১৫টি প্রাইমারি স্কুল, ১০টি জিম, ১টি হাসপাতাল, ১টি রেলস্টেশন এবং ১৬৭টি বাস থাকলেও নেই কোনো মানুষ! আজও গৃহস্থালির জিনিসপত্র, শিশুদের খেলনা পড়ে রয়েছে সেখানে। সেখানকার অধিবাসীরা নিজেদের জিনিস নেওয়ারও অনুমতি পায়নি তখন। এমন একটি শহরকে ভূতের শহর বলে মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। শহরটি এখন পরিত্যক্ত। প্রিপিয়াতকে শহর হিসেবে ঘোষণা করা হয় ১৯৭৯ সালে। শহরটি তৈরি হয়েছিল মূলত চেরনোবিল আণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কর্মীদের থাকার জন্য। কিন্তু ২৬ এপ্রিল, ১৯৮৬ সালে চেরনোবিল আণবিক চুল্লিতে দুর্ঘটনার পর শহরটি মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। দুর্ঘটনার মাত্র ২ দিনের মধ্যে সবাই শহর ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যায়।

 


আল জাজিরা আল হামরা [আরব আমিরাত]

‘আল জাজিরা আল হামরা’ উত্তর আরব আমিরাতের পরিত্যক্ত গ্রাম। আরবরা এর নাম দেয় লাল দ্বীপ। ১৪০০ শতাব্দীতে গ্রামটি তৈরি হয়। ১৮৩১ সালে এর পুনর্নির্মাণও হয়। জানা গেছে, গ্রামটিতে ৩০০-এর বেশি ঘর ও ১৩টি মসজিদ নিয়ে ৪১০০ লোক বসবাস করত। এখানকার স্থানীয়রা মাছ এবং মুক্তার ব্যবসায় সমৃদ্ধশালী ছিল।

 

ধনাঢ্য গ্রাম

১৯৬০ সালে গ্রামটি বেশ সমৃদ্ধশালী ও ধনাঢ্য ছিল। তখনো বিলাসী বাড়িঘর ছিল এখানে। উপকূলীয় গ্রামটিতে তখন ফারসি অভিবাসী, পর্তুগিজ ব্যবসায়ী এবং ব্রিটিশ কর্মকর্তারা দাপিয়ে বেড়াতেন। কিন্তু হঠাৎ করেই দৃশ্যপট পাল্টাতে থাকে।

 

অশরীরী আত্মা

১৯৬৮ সালের পর হঠাৎ করেই মানুষশূন্য হতে থাকে গ্রামটি। যারা থেকে যায় তারাও খুব ভয়ে দিন কাটায়। কারণ, এখানে অশরীরী আত্মার আনাগোনা বেড়ে যায়। নানা রকম ভৌতিক কর্মকাণ্ডে প্রতিদিন জমতে থাকে নানা গল্প।

 

বিচিত্র হাতের ছাপ

‘আল জাজিরা আল হামরা’ প্যারানরমাল অ্যাকটিভিটিসের জন্য জনপ্রিয়। একবার কিছু পর্যটক ঘুরতে আসেন। প্রাচীন দুর্গের ছবি তুলতে গেলে তাদের সঙ্গেও ঘটতে থাকে অস্বাভাবিক ঘটনা। স্থানীয়দের ধারণা, এখানে অভিশপ্ত আত্মা রয়েছে। তারা প্রায়ই বিচিত্র হাতের ছাপ দেখতে পান। তাদের ধারণা, এটি আগত দর্শনার্থীদের জন্য সতর্ক সংকেত।

( তথ্যসূত্র : https://www.google.com/amp/s/www.bd-pratidin.com/amp/various/2018/09/23/362558 )


লা ইউনিয়ন পার্ক - এন্টিগুয়া গুয়াতেমালা


এটি সেন্ট্রাল পার্ক থেকে কয়েকটি ব্লক দূরে অবস্থিত একটি ক্ষুদ্র পার্ক অবস্থিত। আপনি এটি চিনতে পারবেন কারণ এটি বিশাল খর্জুর বৃক্ষের সাথে খোদিত আছে এবং এক প্রান্তে একটি বড় জল ট্যাংক রয়েছে। এটি প্রায় চারপাশে বসবাসকারী মানুষ নির্মিত হয়েছিল যেহেতু এটি প্রায়ই প্রায়ই একটি সফর যান যে একটি ভূত সম্পর্কে গল্প বলছে হয়েছে।

এটা বলা হয় যে, যেখানে রাত্রি পূর্ণ চন্দ্র আছে সেখানে সূর্যের মাত্র কয়েক ঘণ্টার আগেই আপনি ট্যাঙ্ক থেকে আগত আওয়াজ শুনতে পাবেন। যদি আপনি বিধবা দেখতে যথেষ্ট সাহসী হয় আপনি এমনকি একটি আশ্চর্যজনক শরীরের একটি স্নান গ্রহণ সঙ্গে একটি মহিলার একটি সিলুয়েট দেখতে সক্ষম হতে পারে।

এই লা Siguanaba একটি আত্মা যে অবিশ্বস্ত পুরুষদের আত্মা পরে হয়। যখনই একজন মানুষ তার সাথে পীড়াপীড়ি করার চেষ্টা করে, তখন সে ধীরে ধীরে হাঁটতে শুরু করে, তার যাত্রা শুরু করে মানুষ তার সম্মুখে যখন সে শহরের বাইরের দিকে পৌঁছায় তখন সে সম্মোহন করে। সে যখন ঘুরে দাঁড়ায় তখন তার ভয়ঙ্কর ঘোড়া মুখ দেখায় এবং লোকটির আত্মা লাগে।


বেলিজের Xunantunich ধ্বংসাবশেষ


এই বেলিজ এর বন মধ্যে লুকানো হয় যে অনেক প্রাচীন মায়ান প্রত্নতাত্ত্বিক সাইট এক। এটি একটি মজার এবং শিক্ষাগত দিনের ট্রিপের জন্য একটি ভাল বিকল্প। আপনি এটি বেলিজ শহরের 1২8 কিমি (80 মাইল) পশ্চিমে পাবেন। প্রত্নতাত্ত্বিক পার্কটি অত্যন্ত সহজ এবং দেশে তার ধরনের prettiest সাইট এক। আপনি একটি অস্বাভাবিক উত্সাহী না হয়, এমনকি যদি এটি দেখার মূল্য।

পাশাপাশি তার সুদৃশ্য beauties থেকে, এটা এছাড়াও জায়গা একটি মহিলার আত্মা দ্বারা ভয়ানক হয় যে বলেন হয়। অনেক লোক দুর্গের সামনে কালো ঘোড়ায় পরিহিত একটি মহিলার আবির্ভাব সাক্ষী বলেছে। তিনি পরে সিঁড়ি ascends এবং দেয়ালের মধ্যে শীর্ষে অদৃশ্য হয়ে যায়।

কিছু আছে যারা তার চোখ একটি উজ্জ্বল লাল রঙ আছে উল্লিখিত আছে। তবে তিনি কখনোই কাউকে আঘাত করেননি, এটি কেবল একটি প্রাচীন আত্মা যা কখনও বামে না। কিন্তু আমি মনে করি এটা এখনও হতে পারে এই ধরনের একটি চিত্রে চালানোর জন্য খুব ভীতিকর হতে পারে।


কেউ জানে না সে কোথায় আছে বা কেন সে এমন জায়গায় আটকে আছে। Xunantunich একটি অনুষ্ঠানস্থল ছিল তাই কিছু মনে করে যে দেব দেবতাদের জন্য কিছু মানবিক বলিদান হতে পারে।


ক্যানিয়ন সাইউলাপা - এল সালভাদর

স্থানীয়রা বলে যে এই ক্যাননটি হল লোরোরো কিংবদন্তির উৎপত্তি যেখানে সেন্ট্রাল আমেরিকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

তিনি ছিলেন একজন সুন্দরী নারী যিনি দুই সন্তানের জনক ছিলেন। কিন্তু তিনি একটি সমৃদ্ধ, স্থানীয় র্যাঙ্কারের সাথে প্রেমের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন। তিনি তার সাথে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন কিন্তু তিনি দুই সন্তানের মায়েদের সাথে যাবার জন্য যাচ্ছিলেন না, তার বাচ্চারা স্পষ্টতই তার এবং রেনশারের মধ্যে একটি বাধা ছিল, তাই তিনি তাদের নদীতে ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং তাদের ডুবিয়ে দিয়েছিলেন। র্যাঁশার কখনো তার সাথে বিয়ে করেনি এবং তিনি তার ছেলেদের হত্যা করার জন্য সর্বদা regretted।

তবুও, তার পর থেকে অনন্তকাল ধরে তার মৃত ছেলেদের খোঁজার জন্য বিশ্বকে হাঁটতে নিন্দা করা হয়েছিল। যেহেতু এই অঞ্চলের সব অঞ্চলের টন লোকেরা তার বাচ্চাদের জন্য আহ্বান করে এমন একটি মহিলার ভয়ানক চিৎকার শুনতে শুনতে বলেছে।

তাই সতর্ক থাকুন যদি আপনি রাত্রি বাইরে থাকেন এবং তার "অ কি হিজো" বিদ্রুপ শুনতে চান। আপনি নিশ্চয় ভয় থেকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত বোধ করবে।


তিনি সাধারণত রাস্তায় যে প্রধান প্রবেশদ্বার থেকে শহরে বা শহরে স্থানীয় কবরস্থান যাও যায় যায়। যদি আপনি সরাসরি তার চোখ দেখতে থাকেন তবে সে আপনার আত্মা নিয়ে যাবে তাই যদি আপনি তার কথা শুনতে এবং মনে করেন যে তিনি কাছাকাছি হতে পারে তার উপর আপনার ফিরে চালু না নিশ্চিত, আপনি যদি তা তাত্ক্ষণিকভাবে আপনার সামনে লাফানো হবে।

ক্যানিয়নের চারপাশে বাস করে এমন ব্যক্তিরা বলে যে আপনি যদি ক্যানিয়নের ভিতর নিচে নামেন এবং তার জন্য কল করেন তবে তিনি দেখতে পাবেন।


সান ফার্নান্দো ডি ওমোয়া ফোর্ট - হন্ডুরাস

সেন্ট্রাল আমেরিকা ঔপনিবেশিক আমলের 1777 সালে ব্যাপক সান ফার্নান্দো দোওমো দুর্গ নির্মিত হয়েছিল। ফিরে তারপর সমগ্র অঞ্চল ছিল একটি বড় দেশ।

কেল্লাটি ক্যারিবিয়ান সাগরের সামনে অবস্থিত ছিল, এর উদ্দেশ্য ছিল সৈন্যবাহিনীকে রক্ষা করা এবং তিব্বুসিগাপ্পা থেকে স্পেনের খনি থেকে ব্রিটিশ জলদস্যুদের ক্রমাগত আক্রমণ থেকে সিলভার বন্টন করা। এটি পুরোপুরি সশস্ত্র ছিল এবং সেনাবাহিনীতে বসবাসকারীরা সবসময় আক্রমণের প্রতিকারের জন্য প্রস্তুত ছিল।

বহু বছর ধরে এটি চুরির জন্য পোর্ট নিরাপদ রাখা এবং পোর্ট নিরাপদ রাখতে চেয়েছিলেন যে জলদস্যুদের সঙ্গে নিষ্ঠুর যুদ্ধের চরিত্র ছিল।


তার আশেপাশে বসবাসকারী মানুষ কাহিনী থেকে কীভাবে ক্রমাগত আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে সে সম্পর্কে গল্প বলছে। এটি প্রায় এক হিসাবে যেমন যুদ্ধ এক স্থান গ্রহণ করা হয়। কিছু কিছু তার ক্যানন, কিছু অন্যদের আদেশ ক্রন্দন এবং চারপাশে চলমান এবং সাহায্যের জন্য কিছু অন্য চিত্কার শুনতে।

কয়েক বছর ধরে, কয়েকজন সাহসী লোক দুর্গকে বেরিয়ে আসেন, কারণ এই শব্দগুলি শোনা যাচ্ছে, কিন্তু তারা এটি প্রবেশ করে, সমুদ্র ও অন্ধকার রাত্রির আকাশের দৃশ্য ছাড়া কিছুই নেই।


ফিনকা স্যানটোরিও দুরান - কোস্টা রিকা

Finca Sanatorio Duran, Irazu Volcano National Park এর 18 কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। এটি 1 9 18 সালে টিবি রোগ রোগীদের পাশাপাশি মানসিকভাবে অসুস্থ রোগীদের জন্য গৃহীত হয়। এটি খোলে আগে কোস্টা রিকা রোগের চিকিৎসা করার কোন স্থান ছিল না।

কয়েক দশক পরে ঔষধের সমস্ত অগ্রগতির কারণে এটি অপ্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। সময় কম এবং কম মানুষ দেশের মধ্যে রোগটি পেয়েছিল।

কিছু সাহসী লোকরা সেখানে ঘুরে বেড়ায় এবং যেখানে বাচ্চাদের জন্য ঘুমাতো এবং বিশেষ এলাকায় বাচ্চাদের জন্য জায়গা দেখতে পাওয়া যায়। তাদের কেউ কেউ ভূত দেখেছেন এবং অদ্ভুত শোনা শোনার রিপোর্ট করেছেন। কিছু এমনকি নথিভুক্ত করা হয়েছে।



গণ graves লেডি, গ্রানাডা - নিকারাগুয়া

গ্রানাডা গৃহযুদ্ধের সময় একটি ভয়ঙ্কর সময় ছিল। অদ্ভুত জিনিষ এটি মধ্যে ঘটেছে। তাদের মধ্যে 1 979 সালে ঘটেছে, যখন স্যান্ডিনিজার বিপ্লব প্রগতিশীল ছিল, পোর্টো অ্যাসেসের নিকটবর্তী দেশটিতে হাজার হাজার ন্যাশনাল গার্ডম্যানকে হত্যা করা হয় এবং হত্যা করা হয়।

তাদের সমস্ত শরীর সঠিক পথে যত্ন নিল না, তারা কেবল মাটিতে পুরোটা একসঙ্গে ছুঁড়ে ফেলল। ফিরে তারপর এটি কেবল ময়লা সঙ্গে আবৃত ছিল এবং সেখানে বাকি। সম্প্রতি একটি পান্ডা নামে এটি একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছিল।

সোমোজা সমর্থকদের জন্য এই হত্যার ভূমিকায়ও ছিল। তারা বাচ্চারা বা মহিলাদের ছিল না যদি তারা সত্যিই যত্ন না। তাই আপনি সেখানে সেখানে থাকতে পারে যে আত্মার পরিমাণ কল্পনা করতে পারেন।

স্থানীয় লোকজন স্থানীয় স্মৃতিসৌধে বসা একটি পুরোনো মহিলাকে দেখে স্থানীয় লোকজনকে কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছে যে কেউ তাকে কবরস্থানে নিয়ে যায়। যারা তার সম্পর্কে জানেন না এবং আসলে তার একটি যাত্রা দিতে বলে যে সে গাড়ী থেকে নেমে আসে এবং ধীরে ধীরে সে কবরস্থান প্রবেশ হিসাবে বিবর্ণ।


আইলা কোইবা - পানামা

এটি প্রশান্ত মহাসাগরের একটি বড় দ্বীপ এবং মূল ভূখন্ড থেকে খুব দূরে অবস্থিত এবং কিছু সময় এটি আলকাট্রেজের পানামা সংস্করণ হিসেবে বিবেচিত হয়। স্থান হাঙ্গর এবং শক্তিশালী স্রোত দ্বারা বেষ্টিত হয়। এটি একটি বিট আরো খারাপ করতে এটি পাহাড়ী এবং একটি পুরু জঙ্গলের দ্বারা আচ্ছাদিত। আপনি এমন একটি জায়গায় পাঠানো কল্পনা করতে পারেন?

এটি 1919 সালে খোলা এবং সামরিক regimens বিরোধিতা যে খারাপ অপরাধীদের এবং রাজনৈতিক বন্দীদের সব পেয়েছি। এর পরিমাণ ছিল 3 হাজার লোককে ধারণ করার ক্ষমতা যাদেরকে ছোট খামারগুলিতে কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল যাতে তারা খাওয়ানো 100% খাদ্য সরবরাহ করতে পারে।

নির্যাতন একটি সাধারণ জিনিস ছিল। যারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল তারা কারাগারের রক্ষীদের, জঙ্গলের প্রাণীরা, হাঙ্গর দ্বারা বা স্রোত দ্বারা সরিয়ে দিয়ে হত্যা করেছিল। রক্ষীরা কিছুই করেনি হিসাবে অন্য কিছু তাদের দিন একে অপরকে হত্যা করে কাটিয়েছি।

এটি অবশেষে 2004 সালে বন্ধ। বিল্ডিং ইতিমধ্যে জঙ্গল দ্বারা reclaimed হয়েছে।


( তথ্যসূত্র : https://www.google.com/amp/s/bn.traasgpu.com )


ভূতুড়ে যাত্রাপথ 


ভৌতিক যানবাহন নিয়ে কোন বৈজ্ঞানিক গবেষণা বা কোন ব্যখ্যা দেওয়া হয়নি কিন্তু মানুষ এই গল্পকে শহুরে কিংবদন্তী হিসেবে গ্রহণ করেছে। আইনি দিক বিবেচনায় আনলে, ভৌতিক যানবাহর হল সেইসব যানবাহন যা কোন বীমাকৃত যানবাহনের সাথে সংর্ঘষ করে বীমাকৃত যানকে মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ করে কিন্তু কোন প্রকার উপস্থিতির প্রমাণ থাকে না।


ভুতুড়ে রেলগাড়ি ও রেলপথ 


১।। সিলভারপাইলেন (সিলভার এরো) হলো স্টকহোম মেট্রো রেলগাড়ি যা নিয়ে অনেক শহুরে কিংবদন্তী প্রচলিত এবং বিশ্বাস করা হয় রেলগাড়িটিতে রেল ভূত রয়েছে।

২।। সেন্ট লুইস ভৌতিক রেলগাড়িকে (সেন্ট লুইস লাইট নামেই অধিক পরিচিত) রাতে প্রিন্স আলবার্ট ও সেন্ট লুইস, সাসকাচেওয়ানের মাঝামাঝি কোন এক পরিত্যক্ত রেল লাইনে দেখতে পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস করা হয়। এটি নিয়ে দুজন ছাত্র তদন্ত করে পুরস্কার জিতেছে; তাদের মতে এরকম ঘটনা দূরের কোন রেলের লাইটের আলোর বিচ্ছুরনের ফলে ঘটে থাকে আর লোকে এটাকেই ভূতুরে ট্রেন মনে করে ভুল করে।

৩।। লোককাহিনী অনুসারে একটি ভৌতিক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ট্রেনকে নিয়মিত আব্রাহাম লিংকনের মৃত্যুবার্ষীকির সময়ে ওয়াশিংটন, ডি.সি. থেকে স্প্রিংফিল্ড, ইলিনয়ের দিকে যেতে দেখা যায় এবং যাওয়ার পথে এটি বিভিন্ন স্থানে থামে ও যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করে থাকে।


ভুতুড়ে বিমান 


১।। দ্য ফ্লাইং ডাচম্যান - একটি কিংবদন্তী ভূতুরে জাহাজ যা কোনদিন কোথাও নোঙ্গর করেনি এবং সমুদ্রযাত্রায় চিরতরে হারিয়ে গিয়েছে। ভুতূড়ে জাহাজ নিয়ে যত লোককাহিনী প্রচলিত আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ফ্লাইং ডাচম্যান।

২।। মেরি চেলেস্টা - ব্রিটিশ-আমেরিকার বিশ্ব বিখ্যাত জাহাজ। ১৮৭২ সালের ৪ ডিসেম্বর মেরি চেলেস্টকে অ্যাটলান্টিক মহাসাগরে মনূষ্যহীন ও যাত্রার জন্য তৈরী অবস্থায় পাওয়া যায়। জাহজের ৭ জন নাবিকের একজনকেও খোঁজে পাওয়া যায় নি।


ভূতুরে রেলগারি নামে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের নাটক, টেলিভিশন অনুষ্ঠান, চলচ্চিত্র, অ্যালবাম, সঙ্গীত ও অন্যান্য সৃষ্টিকর্ম তৈরি করা হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো,


দ্য ঘোস্ট ট্রেন (নাটক), ১৯২৩ সালে নাট্যকার ও অভিনেতা আরনোল্ড রিডলে লিখিত একটি নাটক। নাটকটির কাহিনী লেখকের একটি ট্রেন ভ্রমনকে কেন্দ্র করে ও নাটকটি জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

১৯৪৮ সালে এনিড ব্লেটন তার ফেমাস ফাইভ সিরিজে, ফাইভ গো অফ টু ক্যাম্প বইয়ের প্রচ্ছদ হিসেবে একটি ট্রেনের নাম দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে এটি টেলিভিশন ও রেডিওতে জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

১৯৯৭ সালের ডিরেক্ট-টু-ভিডিও কমেডি-ফ্যান্টাসি চলচ্চিত্র কাসপার: অ্য স্পিরিটেড বিগেনিং-এর চিত্রনাট্য তৈরি হয়েছিল একটি ভূতুরে ট্রেনকে ও ভূতুরে স্টেশনকে কেন্দ্র করে।

১৯৯৬ সালে হেই, আর্নোল্ড এপিসোডে, ভূতুরে ট্রেন নামে একটি পর্ব ছিল।


ভুতুড়ে রেল স্টেশন 


ভূতের ঠিকানা খুঁজতে এসে রেল স্টেশনে খোঁজ না করলে কি হয় ? চলুন দেখে নেওয়া যাক পৃথিবীর কিছু রেল স্টেশন যা ভুতুড়ে বলেই আমাদের কাছে কুখ্যাত হয়ে উঠেছে -- 


বেগুনকুদুর রেল স্টেশন, পুরুলিয়া


পুরুলিয়া শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বেগুনকুদুর রেল স্টেশন৷ ১৯৬৭ সালে এক রেল কর্মী ওই স্টশনে এক সাদা পড়া এক মহিলার ভূত দেখেছিলেন৷ তার পরেই ওই ক্মীর মৃত্যু হয়৷ তারপর থেকেই ওই রেল স্টশনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল৷ গত ২০০৯ সালে মমতা বন্দ্যেপাধ্যয়ের কথায় ওই রেল স্টশন নতুন করে চালু করা হয়৷


কাওবাও রোড সাবওয়ে স্টেশন, চিন


চিনের কাওবাও মেট্রো স্টেশন নাকি বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ার্ত মেট্রো স্টেশন৷ এই মেট্রো স্টেশনে এলেই ট্রেনের ব্রেকে সমস্যা দেখা যায়৷ রাতের দিতে যাত্রীরা অদৃশ্য কোনও ব্যক্তির উপস্থিতি অনুভব করতে পারেন৷ এছাড়াও শোনা যায়, ভুতে নাকি যাত্রীদের ধাক্কা রেলওয়ে ট্র্যাকে ফেলে দেয়৷ এমন ভাবেই এই স্টেশনে মৃত্যু হয়েছে অনেকের৷


অ্যাডিসকম্বি রেলওয়ে স্টেশন, ইংল্যান্ড


ইংল্যান্ডে অ্যাডিসকম্বি রেল স্টেশনের যদিও এখন আর কোনও অস্বিত্ব নেই৷ ২০০১ সালে এই স্টেশনটি ভেঙে দেওয়া হয়৷ কিন্তু তার আগে পর্যন্তও এই স্টেশনে অদ্ভূতুরে ঘটনা ঘটত৷ জানা গিয়েছে, লোকো ট্রেনের এক চালক বহু বছর আগে ওই স্টেশনে আত্মহত্যা করেছিলেন৷ তার পর থেকেই নাকি তার আত্মা স্টেশনের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়ায়৷


ওয়াটারফ্রন্ট স্টেশন, কানাডা

কানাডার ওয়াটারফ্রন্ট স্টেশনটিও ভূতুড়ে৷ স্টেশনের বহু নিরাপত্তা রক্ষী অভিযোগ করেছিলেন, রাতের দিকে স্টেশনে অদ্ভূতের কাণ্ড কারাখানা হয়৷ এমনকি স্টেশনে রাতের যে নিরাপত্তা রক্ষীরা থাকতেন তারা মাঝে মধ্যেই স্টেশনে ভূত দেখতে পেতেন৷ জানা গিয়েছে, কোনও এক রেলকর্মীর ভূতই নাকি স্টেশনে ঘুরে বেড়ায়৷


প্যান্টিওনেস মেট্রো স্টেশন, মেক্সিকো

মেক্সিকোর সবচেয়ে কুখ্যাত মেট্রো স্টেশন হল প্যান্টিওনেস মেট্রো স্টেশন৷ জানা গিয়েছে, মেট্রো স্টেশন হওয়ার আগে ওই এলাকায় দুটি সমাধি ছিল৷ রাতের দিকে স্টেশন চত্বরে চিৎকার শোনা যায়৷ এমনকি মেট্রো চ্যানেলের মাঝেও ছায়ামূর্তি দেখতে পাওয়া যায়৷ এছাড়াও স্টেশনেও কোনও অন্ধকার কোনায় ভূত দাঁড়িয়ে থাকতেই পারে৷


বিশান এমটিআর স্টেশন, সিঙ্গাপুর

সিঙ্গাপুরের বিশান এমটিআর স্টেশন তৈরি করা হয় বি শান তেঙ্গ কবরস্থানের উপর৷ ১৯৮৭ সালে এই স্টেশনটি চালু করা হয়৷ তার পর থেকেই সেখানে ভূতের উপদ্রব শুরু হয়৷ মুণ্ডহীন আবছায়া মূর্তি প্রায়ই দেখা যায় এই স্টেশনে৷ এছাড়াও ট্রেনের যাত্রীরা শুনতে পান ট্রেনের উপর দিয়ে কেউ হেঁটে যাচ্ছে৷


ম্যাককোয়ারি ফিল্ডস ট্রেন স্টেশন, অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার এই স্টেশনে নাকি নাবালিকাকে হেঁটে বেড়াতে দেখা যায়৷ ওই নাবালিকার শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে৷ সে নাকি ক্রমাগত কাঁদে এবং সেই কান্নার চিৎকার ধীরে ধীরে প্রবল হয়৷ মাঝে মাঝে তাকে রেল লাইনের দিকে ক্রুদ্ধ দৃষ্টি তাকিয়ে থাকতেও দেখা যায়৷


ইউনিয়ন স্টেশন, ফোনেক্স, আমেরিকা

আমেরিকার এই স্টেশনটি ১৯৯৫ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ এই রেলওয়ে স্টেশনে এক রেল কর্মীর অতৃপ্ত আত্মা ঘুরে বেড়ায়৷ ওই ব্যক্তিকে সকলে ভলবেসে ফ্রেড নামে ডাকত৷ রেলওয়ে স্টেশনের অফিসে তাকে মাঝে মধ্যে দেখা যায়৷ এমনকি কথিত আছে স্টেশনের নির্দিষ্ট একটি ঘরে সে নাকি এখনও থাকে এবং ওই ঘরে অন্য কতোনও কর্মীরা ঢোকেন না৷ তাকে মাঝেমধ্যে স্টেশনও দৌঁড়ে বেড়াতে দেখা যায়৷


কনোলি স্টেশন, আয়ারল্যান্ড

ডাবলিন রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হল এটি৷ এটিও বিশ্বের ভূতুরে স্টেশনগুলির মধ্যে একটি৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই এলাকায় বোমা বিস্ফোরণে প্রচুর মানুষ মারা গিয়েছিলেন৷ তাদেরই আত্মা নাকি ঘুরে বেড়ায় এই স্টেশন চত্বরে৷


গ্লেন ইডেন রেলওয়ে স্টেশন, নিউজিল্যান্ড

মৃতদেহ আনা নেওয়া করার জন্য প্রাথমিক ভাবে এই স্টেশনটি তৈরি করা হয়েছিল৷ পরবর্তীতে স্টেশনটিকে উন্নত করা হয় ২০০১ এবং সেখানে একটি ক্যাফে তৈরি করা হয়৷ ওই ক্যাফেতেই নাকি এক ভুত ঘুরে বেড়ায়৷ জানা গিয়েছে, ১৯২৪ সালে এক রেল কর্মী একটি দুর্ঘটনায় মারা যান৷ এছাড়াও ওই স্টেশনে অনেকে যাত্রীরাই ভূত দেখেছেন বলে দাবি করেন৷


বিশ্ব সাহিত্যে ভূতের অবস্থান 


ভূত তার অবস্থান শুধুমাত্র এই প্রকৃতিতে নন , বইয়ের পাতাতেও তৈরি করে নিয়েছেন । বাংলা সাহিত্যে ভূতের আনাগোনা তো আছেই , বিশ্ব সাহিত্যে ভূতেদের কিছু ঠিকানা চট করে জেনে নেওয়া যাক --- 


দ্য সাইনিং (The Shining)

হরর উপন্যাস দ্য সাইনিং রচনা করেছেন বিখ্যাত মার্কিন লেখক স্টিফেন কিং। উপন্যাসটি ১৯৭৭ সালে প্রকাশিত হয়। এটি স্টিফেন কিং এর তৃতীয় বেস্ট সেলার। লেখক এই উপন্যাসের চরিত্রগুলোকে নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে তৈরি করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোর এক ভৌতিক রিসোর্টের প্রেক্ষাপটেই উপন্যাসটি রচিত। এই হোটেলের কয়েকজন অতিথি ও কেয়ারটেকারের আত্মহত্যার কাহিনীর বর্ণনা করে উপন্যাসটি শুরু হয়েছে। জ্যাক টোরেন্স, তাঁর স্ত্রী উয়েন্ডি ও তাদের পাঁচ বছরের ছেলে হোটেলটিতে উঠলে মূল ঘটনার শুরু হয়।


ইট (It)

স্টিফেন কিং এর আরও একটি বিখ্যাত উপন্যাস ইট। উপন্যাসটি ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। এতে ৭ জন শিশুর গল্প বলা হয়েছে। তাদের সবাইকে নাশকতায় ব্যবহার করছে এক ক্লাউন। সে ভয় ও ফোবিয়া সৃষ্টি করছে। ক্লাউনের বেশে সে বারবার ফিরে আসে। আর তাঁর শিকার হয় শিশুরা। গত বছর উপন্যাসটির ওপর চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছে।


ড্রাকুলা (Dracula)

ড্রাকুলা ১৮৯৭ সালে রচিত আইরিশ লেখক ব্রাম স্ট্রোকারের একটি উপন্যাস। উপন্যাসটিতে ভাম্পায়ার চরিত্রটি নতুন মাত্রা পায়। গল্পে ড্রাকুলা নতুন রক্তের খোঁজে ট্রানসেল্ভেনিয়া থেকে ইংল্যান্ডে যাত্রা করে। সে চায় এই অভিশাপ সকল মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক। প্রফেসর আব্রাহাম ভ্যান হেলসিং তাঁর ছোট্ট দল নিয়ে ড্রাকুলাকে প্রতিহত করার উদ্যোগে নেন।


সেলেম’স লট (Salem`s Lot)

মার্কিন লেখক স্টিফেন কিং এর আরও একটি বিখ্যাত ভৌতিক উপন্যাস সেলেম’স লট। এটি ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত হয়। এটি লেখকের প্রকাশিত দ্বিতীয় উপন্যাস। গল্পে বেন মিয়ার নামের একজন লেখক তাঁর শৈশবের গ্রামে ফিরে যান। সেখানে তাঁর পরিচিতসহ সবাই ভাম্পায়ার হয়ে যাচ্ছে কেন উদ্ঘাটনের চেষ্টা করেন।


ফ্র্যাংকেস্টাইন (Frankenstein)

ইংরেজ লেখিকা মেরি শ্যালির ভৌতিক উপন্যাস ফ্র্যাংকেস্টাইন। উপন্যাসটির গল্পের মূলে রয়েছে বিজ্ঞানের ছাত্র ভিক্টর ফ্র্যাংকেস্টাইন। সে ল্যাবে গবেষণা করার সময় একটা ভয়ংকর জন্তু তৈরি করেন। এই প্রেক্ষাপটেই গল্প এগিয়ে চলে। ম্যারি ১৮ বছর বয়সে উপন্যাসটি লিখতে শুরু করেছিলেন। পরে এর প্রথম সংস্করণ ১৯১৮ সালে লন্ডনে প্রকাশিত হয়।


পেট সেমাটারি (Pet Sematary)

পেট সেমাটারির আদ্যোপান্ত কবর-ফেরত ভূতদের নিয়ে উপন্যাস। আমেরিকান ইণ্ডিয়ানদের একটা সমাধিক্ষেত্রে কবর দিলে সে আবার বেঁচে ফেরত আসে। এক ভদ্রলোকের ছোট ছেলে ট্রাক চাপা পড়ে মারা গেল। তার পরই শুরু হয় সব ভুতুড়ে ঘটনা। উপন্যাসটি লিখেছেন স্টিফেন কিং। আর প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮৩ সালে।


দ্য স্ট্যান্ড (The Stand)

দ্য স্ট্যান্ড একটি ভৌতিক রহস্য উপন্যাস। লিখেছেন মার্কিন ঔপন্যাসিক স্টিফেন কিং। এটি নাইত সার্ফ নামক এক ছোট গল্পের বর্ধিত সংস্করণ। প্রথমে ১৯৭৮ সালে উপন্যাসটি প্রকাশিত হলেও পড়ে আধুনিক আঙ্গিকে ১৯৯০ সালে প্রকাশিত হলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।


রোসমেরি’স বেবি (Rosemary`s Baby)

ইরা লেভিনের বেস্টসেলার ভূতের উপন্যাস রোসমেরি’স বেবি। উপন্যাসটি ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত হয়। এই বইটির চার মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছিল। ৬০ এর দশকে এটিই সর্বোচ্চ বিক্রিত উপন্যাস। 


দ্য এক্সোরসিস্ট (The Exorcist)


মার্কিন লেখক উইলিয়াম পিটার ব্ল্যাটির উপন্যাস দ্য এক্সোরসিস্ট ১৯৭১ সালে প্রকাশিত হয়। উপন্যাসের কাহিনী ১২ বছরের রিগান ম্যাক নিলের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপকে ঘিরে এগিয়েছে। উপন্যাসে সে বিখ্যাত অভিনেত্রী ও এক মানসিক চিকিৎসক পাদ্রির সন্তান। পাদ্রি তার সন্তানকে ভূত মুক্ত করার চেষ্টা করেন।


 ঘোস্ট স্টোরি (Ghost Story)


ঘোস্ট স্টোরি উপন্যাসটির রচয়িতা পিটার স্ট্রাব। ১৯৭৯ সালে উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়। ১৯৮১ সালে এই উপন্যাসটি থেকে চলচ্চিত্র নির্মান করা হয়। পাঁচ বৃদ্ধ বন্ধুর কাহিনী নিয়ে উপন্যাসটি রচিত হয়েছে। তারা নিজেদের দৃষ্টি কোন থেকে নানা ভৌতিক গল্প নিয়ে আলোচনা করতেন। হঠাৎ এক জন মারা ফেলে বাকি চার জনের জীবনে নানা ভৌতিক ঘটনার শুরু হয়।

এসব ছাড়াও শেক্সপিয়ারের হ্যামলেট ও ম্যাকবেথ নাটকে ভূতের উপস্থিতি কেবল লক্ষই করা যায় না , ভূতেরা এই দুটি সাহিত্যেই এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল । এরকম কত গল্পের পাতায় পাতায় ভূতেদের কৃতিকলাপ ছড়িয়ে আছে বিশ্ব সাহিত্যে এক নজির হয়ে , যা লিখতে শুরু করলে পাতা শেষ হয়ে যাবে তবু নাম ফুরাবে না ।


বাংলা সাহিত্যে ভূতের অবস্থান


বাংলা সাহিত্যে ভূতের ঠিকানা সাহিত্যের পাতা ভরে অবস্থান করছে । সেই তালিকায় কে নেই । উপেন্দ্রকিশোরের গুপি বাঘা থেকে সুকুমারের আবোল তাবোলের ভূতের উপস্থিতি মনে কার নেই ? সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় হোক অথবা সমরেশ মজুমদার হোক অথবা শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় অথবা হুমায়ুন আহমেদ অথবা লীলা মজুমদার -- ভূতের উপস্থিতি সর্বত্রই দেখা গেছে । 


বিশ্ব সিনেমায় ভূত 


ভূত শুধু সাহিত্যে নয় বিশ্ব সিনেমার পর্দায় এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে । তার প্রধান কারণ হলো ভয় পেয়ে আনন্দ পেতে ভালোবাসে অনেকে। আর তাইতো তার প্রিয় ভূতের সিনেমা। অনেকে গল্প শুনে নয়, ভূতের গল্পের ছবি দেখে বেশি মজা পান। ভয়ংকর কোনো দৃশ্যে অনুভব করেন একধরনের রোমাঞ্চ। আর যদি সেই ছবির গল্পগুলো কোন সত্যি ঘটনার ওপর ভিত্তি করে লেখা হয় তাহলে । কি বিস্বাস হলো না তো ! পৃথিবী জুড়ে এমন অনেক সিনেমা তৈরি হয়েছে যার মধ্যে দেখানো ভৌতিক ঘটনা সত্যি ঘটনার চিত্রকল্প । 


দ্য এক্সরসিস্ট (১৯৭৩)


প্রথম অস্কার পাওয়া ভৌতিক সিনেমা। ১৯৭৪ সালে অস্কার জিতেছিল ছবিটি। উইলিয়াম পিটার ব্ল্যাটির লেখা উপন্যাস থেকে এই ছবির গল্প নেওয়া হয়েছে। ছবিতে যদিও একটি মেয়ের ওপর দুষ্ট আত্মা ভর করে। কিন্তু ব্ল্যাটির উপন্যাসটি ছিল একটি ছোট ছেলেকে নিয়ে। আসলেই নাকি এমন ঘটেছিল। ১৯৪৯ সালে রোল্যান্ড ডো নামের ওই ছেলেটির ওপর ‘পিশাচ’ ভর করলে তা তাড়ানোর জন্য ‘এক্সরসিজম’ বা খারাপ আত্মা তাড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই ঘটনার সাক্ষীদের নিয়েও অনেক বই লেখা হয়েছে। 


দ্য এনটিটি (১৯৮২)


১৯৭৪ সালে কেরি গেনর ও বেরি টাফ নামের দুই ব্যক্তি যেখানে কাজ করতেন, সেখানে তাঁরা কিছু অদ্ভুত ব্যাপার লক্ষ করতেন। যেমন কোনো জিনিসের হঠাৎ সরে যাওয়া। ওই ঘটনার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে ছবিটি।


দ্য পসেশন (২০১২)


‘ডিবুক’ বাক্স চেনেন? যে বাক্সে মদের বোতল নিরাপদে রাখা হয়। কিন্তু এক অভিশপ্ত ডিবুক বাক্সে লুকানো এক প্রেতাত্মার কাহিনি লিখেছিলেন কেভিন ম্যানিস। সেই গল্পটি থেকে তৈরি হয়েছে ‘দ্য পসেশন’ ছবিটি। কেভিন ম্যানিস নিজেই ওই বাক্সের প্রথম ব্যবহারকারী। এরপর তিনি সেটা নিলামে বিক্রি করে দেন।


সাইলেন্ট হাউস (২০১১)


১৯৪০ সালে উরুগুয়ের এক গ্রামে এমন ঘটনা ঘটিছিল। তার উপর ভিত্তি করেই ছবিটি। এটি উরুগুয়ের ছবি ‘লা কাসা মুদা’র রিমেক। এক তরুণীর নিজের বাড়িতে আটকে যাওয়া এবং বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারার গল্প নিয়েই এই ছবি। অতিপ্রাকৃত শক্তি তাকে আটকে রাখে সেই বাড়িতে। এই ছবিতে নাকি সত্যিকারের ফুটেজও ব্যবহার করা হয়েছে।


চাইল্ড’স প্লে (১৯৮৮)


পুতুলের মধ্যে মৃত মানুষের আত্মা ঢুকে যাওয়ার গল্প নতুন নয়। কিন্তু এই গল্পকে পর্দায় প্রথম রুপ দিয়েছে ‘চাইল্ডস প্লে’ ছবিটি। সত্য ঘটনার অবলম্বনেই এই ছবিটি তৈরি হয়। রবার্ট ইউজিন অটো নামের এক চিত্রশিল্পী ও লেখকের একটি পুতুলকে এই ছবিতে অভিশপ্ত বলা হয়। সেই পুতুল এখনও আছে যুক্তরাষ্ট্রের ইস্ট মার্টেলো জাদুঘরে। এই পুতুলকে কেন্দ্র করে ছবিটি নির্মাণ করা হলেও কাহিনীতে বেশকিছু পরিবর্তণ আনা হয়েছিল।


দ্য কনজুরিং (২০১৩), দ্য কনজুরিং-২ (২০১৬)


এড ও লরেন ওয়ারেন দম্পতি বাস্তবে অনেক ভৌতিক সমস্যার সমাধান করেছেন। তাঁদের সেই কেসগুলো নিয়ে তৈরি হওয়া ছবির মধ্যে ‘দ্য কনজুরিং’ সিরিজ অন্যতম। ‘দ্য কনজুরিং’ ছবিতে ওয়ারেন দম্পতি ভৌতিক সমস্যায় আক্রান্ত একটি পরিবারকে সাহায্য করেন। বাস্তবেই এ দম্পতি এমন একটি কেসের সমাধান করেছিলেন ১৯৭১ সালে। ‘কনজুরিং-২’ ছবিটিও তৈরি হয়েছে ইংল্যান্ডের একটি ভৌতিক সমস্যাকে কেন্দ্র করে। এই সমস্যার সমাধান ইংল্যান্ডে হয় ১৯৭৭ সালে। 


অ্যানাবেল (২০১৪)


এই কেসও ওয়ারেন দম্পতির সমাধান করা। এটির গল্পও সেই অভিশপ্ত পুতুল নিয়ে। সন্তানসম্ভবা স্ত্রী তাঁর স্বামীর কাছ থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন পুতুলটি। কিন্তু পাশের বাড়ির মৃত একটি মেয়ের আত্মা ঢুকে পড়ে পুতুলে। এরপর থেকেই অভিশপ্ত হয়ে যায় পুতুল। ঘটনাটা ১৯৬৯ সালের। পুতুলটি এখন আছে ওয়ারেন দম্পতির জাদুঘরে, একটা কাচের বাক্সে বন্দী। বলা হয়, জাদুঘরে গিয়ে যারা এই অ্যানাবেল নামের পুতুলটিকে নিয়ে উপহাস করেছে, তারা হয় দুর্ঘটনায় পড়েছে, নয়তো তাদের মৃত্যু হয়েছে মর্মান্তিকভাবে।


দ্য রাইট (২০১১)


ছবিটি এতটাই ভয়ের যে এটি একা একা দেখা বোধহয় উচিত হবে না কারোরই। ফাদার গ্যারি থমাস যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত এক্সরসিস্টদের একজন। দুষ্ট আত্মা তাড়ানোর ব্যাপারে তাঁর অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে ছবিটি নির্মাণ হয়।


দ্য হন্টিং ইন কানেকটিকাট (২০০৯), ঘোস্ট অব জর্জিয়া (২০১৩)


নতুন বাড়িতে উঠে আসা এক পরিবার যেসব ভৌতিক সমস্যার মুখোমুখি হয়, তাই নিয়েই এই ছবি। এই ভৌতিক ব্যাপার-স্যাপার টের পায় বাড়ির ক্যানসার আক্রান্ত এক ছেলে। বাড়ির দেয়াল ভেঙে পাওয়া যায় বেশ কিছু মৃতদেহ। ১৯৮৬ সালের এই ঘটনার ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয় ‘দ্য হন্টিং ইন কানেকটিকাট’। এর সিক্যুয়েল ‘দ্য হন্টিং ইন কানেকটিকাট: ঘোস্ট অব জর্জিয়া’ তৈরি হয় ১৯৯৩ সালের একটি ঘটনার ওপর ভিত্তি করে। এই ঘটনাটিও সত্য বলে প্রচলিত।


দ্য এক্সরসিজম অব এমিলি রোজ-(২০০৫)


অ্যানালিসা মিশেল নামের এক জার্মান তরুণীর ওপর ভূত ভর করলে তিনি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই ভূত তাড়াতে লেগে যায় প্রায় বছর খানেক। মাত্র ২৩ বছর বয়সে ১৯৭৬ সালে সেই তরুনী মারা যান। এই সত্য ঘটনার উপর নির্ভর করেই ছবিটি নির্মাণ হয়।


ভূতের ঠিকানা : অন্তিম পর্ব 

এত ঠিকানায় ভূতের অস্থিত্ব লক্ষ করা গেলেও , আমাদের সংস্কারি মনে ভূত ধরা দিয়েছে এক প্রশ্ন হিসেবে চিরকাল । বিজ্ঞানের দরবারে বারবার কড়া নাড়া দিয়ে উঠেছে একটি প্রশ্ন -- সত্যিই কি ভূত বলে কিছু আছে ? এমনকি ভূত ধারণাটি আমাদের মনে এতটাই গভীর ভাবে বিরাজমান যে শুধুমাত্র ভূতেদের জন্য প্রতিবছর অক্টোবরের শেষ দিনটি অর্থাৎ ৩১ তারিখ মৃত আত্মাদের স্মরণে পালিত হয় হ্যালোইন ডে। বিগত কয়েক বছরে প‍াশ্চাত্য ও প্রাচ্যের অলিগলির প্রায় সর্বত্রই হ্যালোইন ডে পরিচিতি পেয়েছে। এমনকি বাংলার ঘরে ঘরে কালিপুজোর আগের দিন ভূত চতুর্দশী পালনের রেওয়াজ বহু প্রাচীন । বিজ্ঞান অবশ্য চিরকাল নিজের উত্তরে জানিয়ে এসেছে যে ভূত বলে কিছু নেই । ভূত আসলে আমাদের মনের ভ্রান্ত ধারণা মাত্র । একথা যদি সত্যি বলে মেনে নিই তবে স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে যে মানুষ তাহলে ভূতে ভয় পায় কেন ? 

এর উত্তরও খুবই সরল । মানুষ যে বিষয়ে ভয় পায় সেটি তার নিজের উপর নির্ভর করে না। যদি ধরুন আপনি উপর থেকে একটা বৈদ্যুতিক তার ঝুলে থাকতে দেখলেন। পাশের একটা পোস্টে লেখা "বিপদ! ১০,০০০ ভোল্ট!" এটা দেখে আপনার ভয় পাওয়া স্বাভাবিক আর ভয়ে আপনি ঐ তারে হাত দেবেন না। কিন্তু আপনি যদি জানতে পারেন যে ঐ তার দীর্ঘদিন বিকল পড়ে আছে আর নিকট ভবিষ্যতে সরকারের ঐ তার সক্রিয় করার কোনো পরিকল্পনা নেই, তাহলে কি আর আপনার ভয় থাকবে?

 ভূত বিস্বাসের ব্যাপারটাও একটা প্রচন্ড মানসিক বিস্বাস । আপনার চরম বিশ্বাস আছে যাদের উপর তারা কোনোকিছুতে বিশ্বাস করলে, উপরন্তু তারা যদি আপনাকে অনুরোধ করেন যে এইসব যুক্তিবিজ্ঞানের আলোয় না দেখতে, তাহলে আপনি তাদের প্রতি আপনার ভালবাসা আর শ্রদ্ধার মিশেলে ঐ অনুরোধ মানবেন, সেটাই প্রত্যাশিত, তাই নয় কি?


Rate this content
Log in

More bengali story from Sandip Das

Similar bengali story from Horror