The Stamp Paper Scam, Real Story by Jayant Tinaikar, on Telgi's takedown & unveiling the scam of ₹30,000 Cr. READ NOW
The Stamp Paper Scam, Real Story by Jayant Tinaikar, on Telgi's takedown & unveiling the scam of ₹30,000 Cr. READ NOW

Tandra Majumder Nath

Classics

2  

Tandra Majumder Nath

Classics

বেকার

বেকার

8 mins
1.1K


-বাবা, আমায় একশো টাকা দেবে?

মৃণাল বাবু কোন উত্তর করেননা।

রূপম এবার একটু সামনে এসে সামান্য জোড়ে বিনম্র সুড়ে বললো,

-বাবা আমার একশো টাকা লাগতো।

মৃণাল বাবু ডাইরিতে কিছু একটা হিসেব করছিলেন এবার তিনি মুখ তুলে চাইলেন। 

-তোমার লজ্জা করেনা রূপম, এত্ত বড় একটা জোয়ান ছেলে বাপের কাছে সামান্য একশো টাকার জন্য হাত পাততে হচ্ছে। ছিঃ।

এতো পড়িয়ে কি লাভ হোলো বলতে পারো।

এই তোমাকে বেকার দেখবো বলে পড়িয়েছিলাম।

রূপম মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে থাকে। কারণ তার কাছে কোন প্রত্যুত্তর ছিলো না।

সত্যি তো স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটিতে সবেতেই ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে কি লাভ হোলো। আজও সে বেকার।

-কি ব্যপার রূপম এখনও নির্লজ্জের মতো  দাঁড়িয়ে আছো যে। আমার মাথাটা খেতে এসোনা এমনি আমার মাথার ঠিক নেই।

দুবছর হোলো শিক্ষকতা থেকে অবসর নিয়েছি। এখন সামান্য পেনসনের টাকা দিয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে।

তুমি কি জানো তোমার দাদা আমাদের বংশের সুপুত্র অনুপম বাড়ি ছেড়ে ফ্ল্যাটে যাচ্ছে।

-কি বলছো বাবা।

চোখ থেকে চশমা টা খুলে মৃণাল বাবু চোখের জল টা মুছে আড়াল করার চেষ্টা করলেন।

ভেবেছিলাম ছেলেটা বড় চাকরি পেলো এবার আমাদের সুদিন ফিরে এলো।

কিন্তু আমি ভুল ছিলাম, যখন বেকার ছিলো বেশতো টিউশন করেই সংসারে কিছু হলেও সাহায্য করতো। আর হঠাৎ কি হোলো চাকরি পেয়েই ফ্ল্যাট নিয়ে নিলো। 

যাও না যাও তোমার দাদার কাছ থেকে যদি পারো নিয়ে নাও গে।

রূপম মাথা নীচু করে নিঃশব্দে মৃ ণাল বাবুর ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো।


দাদা অনুপমের ঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে রুপম ডাক দিলো,

-দাদা

অনুপম কিছু একটা করছিলো রূপমের আওয়াজ শুনে দরজার দিকে তাকালো।

-হ্যাঁ বল,কিছু বলবি।

-দাদা শুনলাম তোরা নাকি...

-হ্যাঁ ঠিকই শুনেছিস। আমরা ফ্ল্যাট নিয়েছি। আসলে তোর বৌদির বাপি মানে আমার শ্বশুরমশাই ব্যবস্থা করে দিলেন।

কারণ এদিকের পরিবেশ টা খুব একটা ভালো না গুড়িয়া এখানে মানুষ হবেনা আর তাছাড়া গুড়িয়ার স্কুলেও ঠিক মতো পড়াশোনা হয়না তাই স্কুল টাও পালটাতে হবে।

হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ রূপম একটা অট্টহাসি দিলো।

-কি ব্যপার অমন বোকার মতো হাসছিস যে, এমন কি বললাম যে তোর এতো হাসি পাচ্ছে।

-ওমা হাসবো না। তোর কথাগুলো শুনে তো সত্যি অদ্ভুত লাগছে রে দাদা।

এগুলো কি তোর কথা নাকি তোর বউএর কথা নাকি তোর তিন বছরের মেয়ে গুড়িয়ার কথা।

-কি বলতে চাইছিস তুই।

-আরে দাদা তুই আমি পাড়ার আরো নামি দামি চাকরি করে এমন সব ছেলেরা এই পাড়াতেই থেকেই মানুষ হয়েছে আর যেই স্কুলে গুড়িয়া পড়ছে ছোটতে আমরাও সেই স্কুলে পড়েছি তাই মিথ্যা অজুহাত দিসনা ব্রাদার।

এবার অনিতা মুখ খললো,

-দ্যাখো ঠাকুরপো অনেক কষ্টে তোমার দাদা কে রাজি করিয়েছি তুমি আবার ভুল বুঝিয়ে সেসব নষ্ট করে দিওনা।

আর তাছাড়া তোমার কিসের সমস্যা। শুনেছি তুমি নাকি তোমার দাদার থেকেও ভালো ছাত্র ছিলে তো কই একটা তো চাকরি জোটাতে পারলে না আর এখন এসেছো দাদার মাথা টা নষ্ট করতে। আসলে কি বলোতো তোমাদের সবার হিংসে বুঝলে তো হিংসে। 

-দ্যাখো বৌদি আমি তোমার সাথে কথা বলতে চাইনা।

-তুই কেনো এসছিস সেটা বলতো।

-আমার একশো টাকা লাগতো দিতে পারবি।

-আমি জানতাম, ঠিক এই কারণেই আমার ঘরে উঁকি মারবি। এই জন্যই বাড়ি ছাড়ছি বুঝলি তোর বাবা মায়ের ফাইফরমাশ মেটাতে গিয়ে তখন বউ আর মেয়ের ভবিষ্যত টা কি জলাঞ্জলি দেবো নাকি। তোর কিসের জন্য টাকা লাগে রে।

-দ্যাখো হয়তো নেশা টেশা করে মুখ বেকিয়ে অনিতা বললো।

এই নে বলে একটা ২০০০ টাকার নোট রূপমের দিকে ছুড়ে দিলো আর বললো -তোর মতো বোকা নই আমি বুঝলি যে এই সংসারের জাঁতাকলে বউ বাচ্চা নিয়ে পিষে মরবো।

-না না তুই তো খুব বুদ্ধিমান রে নইলে এমন বউ ঘরে আনিস যে কিনা সংসার টাই ভেস্তে দিলো।

তোর টাকার গরম তোর কাছেই রাখ দাদা। 

তুমি এখন এসো তো বাপু বলেই অনিতা রূপমের মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিলো।

পাশ ফিরিয়ে চলে আসতেই পেছন থেকে কে যেন রূপমের ঘাড়ে হাত রাখলো।

পেছন ফিড়েই রূপম দেখে, 

রূপমের মা মিষ্টি হাসছেন।

-কিরে কত টাকা চাই?

-না মানে

-আরে বলনা। 

-তুমি কোথায় পাবে টাকা?

-বড্ড বেশী কথা বলিস। 

-একশো টাকা। আসলে ওই চাকরির ফর্ম ফিলাপ করতে লাগতো, আমি কিন্তু কোন নেশা করিনা না মা বিশ্বাস করো।

-আরে আমি কি তোকে অবিশ্বাস করতে পারি? আর কৈফিয়তই বা চেয়েছি নাকি।

আঁচলের খুটে বাধা ১০০ টাকা নোট টা করুণা দেবী রূপমের হাতে দিয়ে বললেন যা কোথায় যাচ্ছিলি বাবা দাদার কথায় মন খারাপ করিস না। তোর জন্য দই চিংড়ি করেছি, তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরিস কেমন। 

মাকে জড়িয়ে ধরে রূপম বললো-

 -ওহ মা তুমি সত্যি করুণাময়ী। কত্ত ভালো তুমি।


একশো টাকা পকেটে পুরে বাবার স্কুটারখানা নিয়ে সোজা এক কম্পিউটার ক্যাফে তে গিয়ে অনলাইনে চাকরির ফর্ম ফিলাপ করে বেড়িয়ে এলো।

বাড়িতে সকাল সকাল ওইভাবে বাবা আর দাদার কথা গুলো শুনে মন টা কেমন যেন রূপমের ভাড়ি ভাড়ি লাগছিলো।

সত্যি তো সে জীবনে কি করলো আর কতদিন এই বেকার নামক অপবাদ টা বয়ে বেড়াতে হবে। দাদা যদিও বা চাকরি পেলো তার কাছে এখন বাবার জন্য ভাবার সময় নেই।

কি করে বদলে গেলো দাদা সত্যি অবিশ্বাস্য।

দাদা যেই চাকরিটা পেয়েছে সেটা শুধু মাত্র টাকার জোড়েই সেটা বুঝতে রূপমের কোন অসুবিধে হয় না। কারণ রেজাল্ট এমনও ভালো ছিল না দাদার, তার তুলনায় শতগুন ভালো রেজাল্ট রূপমের।

এসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে রূপম স্কুটার চালাতে চালাতে অন্যমনস্ক হয়ে গিয়েছিলো হঠাৎই জোড়ে ব্রেক কষে কারণ সামনেএক বেশ বড়সড় জটলা করে লোকজন দাড়িয়েছিলো ব্রেকটা সামলাতে না পারলে এক্ষুণি একটা বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো । 

স্কুটার থেকে নেমে ভিড় ঠেলে রূপম সামনে এগিয়ে যায়। গিয়ে দেখে এক বৃদ্ধ দম্পতি বসে কাঁদছে আর সবাই তাদের ঘিরে খামোখা জটলা করে রয়েছে। 

রূপম তাদের সকলের উদ্দেশ্যে বললো আমি এনাদের চিনি আমি ওনাদের বাড়ি পৌছে দেবো। আপনারা অযথা ভিড় করবেন না। আপনারা প্লিজ নিজের কাজে যান।

নিমেষেই জায়গাটা ফাঁকা হয়ে গেলো। 

সেই বৃদ্ধ দম্পতির কাছে গিয়ে রূপম জানতে চাইলো 

-আপনারা এখানে এভাবে বসে কাঁদছেন কেনো?

-তুমি কে বাবা? তোমারে তো ঠিক চিনতি পারলেম না।

-আপনারা আমাকে চিনবেন না। আমি এই কাছেই থাকি।

-কিন্তু তুমি যে বইললে তুমি আমাদের চেনো।

-মিথ্যে বলতে হোলো। দেখছেন না সকলে আপনাদের ঘিড়ে ভিড় করেছিলো তাই।

আচ্ছা আপনারা কোথায় থাকেন, এখানে এভাবে পথের ধারে বসে আছেন কেনো। পথ হারিয়েছেন বুঝি।

বৃদ্ধটি কাঁদতে কাঁদতে বললেন আমাদের সেলে বড় লোক হয়েসে তাই আমাদির মতো গরীব বাপ মা কে বাড়িতে রাখতি সায় না। 

তাই বাড়ি থিকা তাইরে দিলেক।

-আপনার বাড়ি কোথায়। ছেলের নাম কী বলুন আমাকে। 

- এবার বৃদ্ধাটি বললেন না বাবা থাক। ওরা সুখে থাক তাইলেই আমাগো শান্তি।

-কিন্তু ওদের তো শাস্তি পাওয়ার দরকার। বাবা মায়ের এমন অপমান করতে আছে নাকি।ছিঃ

-শাস্তি দেওয়ার তুমি আমি কে বাবা। ওরা যেমনটি কর্ম কইরবে তেমনটি ফল পাবেক।

-আচ্ছা চলুন আমার সাথে।

-কোথায় যাব বাবা

-এইতো সামনে একটা রামকৃষ্ণমিশন আছে,সেখানে বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের রাখা হয় ভগবানের নামগান হয় আপনারা সেখানেই থাকবেন চলুন।

রূপম তাদের স্কুটারে নিয়ে গিয়ে সেই আশ্রমে তাদের রেখে এলো আর আশ্রমের আধিকারিক কে বলে এলো তাদের সযত্নে রাখতে অসুবিধে হলে জানাতে। ফোন নম্বর দিয়ে এলো।

আশ্রম থেকে বেড় হতেই রূপম দেখলো এক মা কালীর মন্দির। সেখানে একটা প্রণাম করে পকেট হাতরে একটা দশ টাকার নোট প্রণামীর থালায় দিয়ে বললো মা আমার একটা চাকরির ব্যাবস্থা করে দাও মা। আর যে বেকার অপবাদ সইতে ভালো লাগেনা। তুমি দেখো মা।

মন্দির থেকে বেড় হয়ে ক্লাবের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো রূপম।

রোজ দিন সে এই সময় ক্লাবে এসে সময় কাটিয়ে যায়।

ক্লাবের সামনে যেতেই দেখলো সবাই ক্লাবের বাইরে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে।

-কিরে তোরা সব বাইরে যে আজ।

শান্তনু বললো -আরে এমনি ভেতরে বসতে ভালো লাগছিলো না তাই।

-ওহ

-এই রূপম সপ্তর্ষির কথা শুনেছিস? অরিন্দম বললো।

-সবাই একসাথে বললো না তো কি হয়েছে।

-আরে ওর তো চাকরি হয়ে গেলো।

প্রিয়াংশু বললো- কিসের চাকরি?

-আরে এয়ারপোর্টের। দুবাই তে পোস্টিং। 

ওখানেই থাকতে হবে।

-রূপম বাদে সবাই বলেউঠলো- আরে বাহ! দারুণ তো। সেই ব্যপার এখন ওর।

রূপম বললো -কিন্তু শুনেছি ওর দিদির ব্যাঙ্গালোরে বিয়ে হওয়ার পর সপ্তর্ষি আর ওর বাবা মা তিনজন থাকে। ও দুবাইতে গেলে বাবা মায়ের কি হবে।

অরিন্দম বললো -সে জানিনা, প্রয়োজন হলে মা বাবা কে সাথে নিয়ে যাবে।

-আর যদি সাথে না নেয় তাহলে তো.....

এই দাড়া দাড়া সপ্তর্ষি আসছে সব কথা ওর থেকেই শুনি প্রিয়াংশু বললো।

সপ্তর্ষি বাইক নিয়ে সবার সামনে হাজির হোলো।

বেশ খুশি খুশি লাগছে।

শান্তনু বললো-কি ভাই চাকরি পেলি, পার্টি কিন্তু দিতে হবে।

-তোদের আর কি। ফ্রিতে খালি খাওয়ার ধান্দা।

কত কষ্ট করে চাকরিটা বাগিয়েছি জানিস। নগদ ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে।

অরিন্দম বললো -কি বলছিস! ১০ লক্ষ? 

-তবে আর কি।

-কোথায় পেলি এতো টাকা,তোর বাবা তো কোর্টের মুহুরি ছিলেন না?

-হুম, ছিলেন কিন্তু সেটা অতীত বুঝলি। একবছর ধরে অনেক কষ্টে আমি সংসার টানছিলাম সাথে সিগারেটও। বড় চাকরি পেতেই হবে এটাই ভাবছিলাম, একটা প্রাইভেট কোম্পানী থেকে সুযোগও এসে গেলো তাই মায়ের গয়না বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করলাম।

-কিন্তু এত্ত দূরে পোস্টিং দিলো যে

-পোস্টিং দেয়নি আমি নিজেই চেয়েছি। ভাই চাকরি করবো যখন তো বিদেশে।

এই দেশে করে কোন লাভ নেই বুঝলি। 

রূপম বললো -তাহলে তো মা বাবা কে নিয়ে যাবি সাথে।

-মাথা খারাপ নাকি। মা বাবাকে নিয়ে যাব দুবাই? একবছর হোলো বাবা স্ট্রোকের পর এক হাত এক পা প্যারালাইসিস হয়ে আছে। মায়েরও তো বয়স কম হোলো না।

-তাহলে কি করবি

-কি আর করবো। রেখে যাব এখানেই। নাহলে দিদির বাড়ি পাঠিয়ে দেবো।

-এই কলকাতা শহরে বাবা মা কে একা রেখে যাবি? 

-দ্যাখ ব্রাদার ওতো ভাবলে আর এগোনো যাবেনা। ওই তোদের মতন বেকারই থাকতে হবে বুঝলি। মা বাবার জন্য ভবিষ্যতটা নষ্ট করবো নাকি। 

এই আমি আসছি রে অনেক কাজ আছে। সপ্তাহ খানেক হাতে সময় আছে আর। টাটা

সপ্তর্ষি বাইক নিয়ে সবার সামনে দিয়ে বেড়িয়ে গেলো।

সবাই ওর চলে যাওয়ার পথের দিকে চেয়ে রইলো।

সপ্তর্ষির কি মতিভ্রম হোলো নাকি রে।

কথা বার্তায় একটু অহংকারের ছোঁয়া পাচ্ছিলাম। শান্তনু বললো। 

এই সপ্তর্ষির রেজাল্ট কিন্তু ভালো ছিল না। ও অনেক বার এক ক্লাসে ফেল করেছে। শুনেছি মাধ্যমিক নাকি একবারে দিতেই পারেনি।

অরিন্দম বলে ওঠে।

-আরে শুধু কি মাধমিক..? গ্রাজুয়েশনেও তো ফেল করেছিল।

কিন্তু দ্যাখ..? পাশ ফেল ভালো খারাপের আজকাল কোন মূল্যই নেই। সবই টাকা।

আমরাই বোকা রে খালি গাধার মত মন দিয়ে পড়াশোনাটা করে গেছি। ধুস..!

শান্তনু বলে ওঠে।

রূপম মনে মনে ভাবতে থাকলো, 

দাদা অনুপমের কথা, তারপর সেই বৃদ্ধ দম্পতির কথা, আর এখন সপ্তর্ষির কথা সবাই যখন বেকার ছিলো বেশ তো বাবা মায়ের খেয়াল রাখতো বাবা মাই সব ছিলো আজ চাকরি পেয়েই মতের পরিবর্তন ঘটলো। আচ্ছা আমিও কি চাকরি পেলে মা বাবা কে ভুলে যাব। ভুলে যাব তাদের আমাদের জন্য করা কষ্টের কথা গুলো, ভুলে যাব তাদের স্বার্থ ত্যাগের কথা।

কি জানি হয়তোবা। আবার নাও হতে পারে।

আমি আসছি রে -বলেই রূপম স্কুটারে স্টার্ট দিয়ে ক্লাব ছেড়ে বেড়িয়ে এলো।

কিরে রূপম তোর কি হোলো অরিন্দম জিজ্ঞেস করলো কিন্তু রূপম কোন উত্তর করলো না নিঃশব্দে বেড়িয়ে গেলো।

স্কুটার থামালো সেই কালী মন্দিরের সামনে যেখানে সে চাকরির পাওয়ার মানত জানিয়েছিলো।

প্রণামীর থালায় তাকিয়ে দেখলো তার দেওয়া ১০ টাকার নোটটা এখনো রয়েছে সেখানে পকেট হাতড়ে ১ টাকার একটা কয়েন বেড় করে দিয়ে মায়ের উদ্দেশ্যে প্রণাম করে বললো- মা আমার চাকরি চাইনা। শুধু কর্ম ক্ষমতা টুকু দাও যাতে আমি আমার মা বাবার অসময়ে পাশে দাঁড়াতে পারি, তাদের ভরসা আর বিশ্বাসের পাত্র হতে পারি,তাদের মুখে যেন হাসি ফোঁটাতে পারি। আমি যেন এক আদর্শ ছেলে হতে পারি,তারজন্য বেকার নামের অপবাদটাও সইতে রাজি আছি।

-এই যে শুনছেন

রূপম পেছন ঘুড়ে তাকায়, দেখে সেই আশ্রমের মহারাজ দাঁড়িয়ে।

-আমাকে বলছেন 

-হ্যাঁ আপনাকেই,তখন এসছিলেন একটা কথা বলার ছিলো কিন্তু আপনি বেড়িয়ে গেলেন তারাহুড়ো করে তাই আর বলা হয়নি। এখন এই পথ দিয়ে যেতেই আপনাকে দেখলাম। নাহলে রাতে ফোন করতাম।

-হ্যাঁ বলুন না

-আমাদের আশ্রমে বয়স্ক মানুষের দেখা শোনা করার জন্য একজন কেয়ারটেকার চাই।

অনেকদিন ধরেই খুঁজছি কিন্তু তেমন কারও সন্ধান পাইনি। আপনার অসহায় মানুষদের প্রতি উদারতা দেখে মনে হোলো যে কথাটা আপনাকেই বলি।

আপনি যদি ইচ্ছুক থাকেন তাহলে...

-আমি? আমি....

-দেখুন এটাকে কিন্তু চাকরি মনে করবেন না।

বলতে পারেন সমাজসেবা মূলক কাজ। মাস শেষে আপনাকে কিছু পারিশ্রমিক দেওয়া হবে

আসলে এটা তো চাকরি নয় আর পারিশ্রমিকও খুব একটা বেশী নয় তাই কোন বিজ্ঞাপনও দেইনি। আপনি যদি ফাঁকা থাকেন তবে.. 


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics