Md Nazmus Sakib

Comedy Drama Fantasy

3  

Md Nazmus Sakib

Comedy Drama Fantasy

অর্কিড সম্ভার

অর্কিড সম্ভার

3 mins
2.3K


ছিমছাম গড়নের চৌকশ ছেলে আরিফ। খুব বুদ্ধিমান ও মেধাবী ছেলে। ছোট বেলা থেকেই তার সাহিত্যের প্রতি একটা বিশেষ টান ছিল। বিভিন্ন গল্প কবিতা লেখার পাশাপাশি পত্রিকাতে কলাম লেখার কাজ করত। এসএসসি জীবন কেটেছে তার রংপুরে। সেখানে পড়া অবস্থায় একটা পত্রিকা সম্পাদনার কাজ করেছে। তাদের ম্যাগাজিনের পাঠক সংখ্যা দ্বিতীয় মাসেই দু’হাজার ছাড়িয়ে যায়। তারা দুই বন্ধু মিলে পত্রিকাটি চালাতে থাকে। পত্রিকা সম্পাদনাকালে সর্ব মহল থেকে প্রসংসা পেলেও তার বিশেষ কিছু বান্ধন হিংসা করত। তাদের নামে বেশ অপপ্রচার চালাত। কিন্তু আরিফ এসব বিষয়ের কোন কিছুই পাত্তা দিতো না। আরিফ তার লেখা কবিতার লাইন দুটি খুব ভালো করে যপ্ত করেছে। সারাদিন সে মনে মনে যপ করে

সুজনে সুবিননে বাঁধিব তোমার ঘর

ভালোবাসার পরশ মেখে দূর হবে অশান্তির ঢড়।

আস্তে আস্তে তার এসএসসি পরীক্ষা হয়ে যায়। পরীক্ষাতে সামান্য কারণে আরিফ এপ্লাস মিস করে। যার ফলে সেই হিংসুক ফ্রেন্ডরা তাকে নিয়ে ট্রল শুরু করে। তাদের সে ট্রলেও আরিফ ভেংগে পড়ে নাই। তাদের উদ্দেশ্যে সে কবিতা বলে দেয়,

আমি হলাম ছন্ন ছাড়া

ফুল ছাড়া ফুলদানি।

আমার কথা ভাবে না কেউ

সেটা আমি জানি।

সাজ প্রভাতে নিভৃত নির্জনে

বন্ধু তোদের কথা পড়বে আমার মনে,

তখন ভাবব আমি তো আছি তোদের পাশে।

এসএসসির জীবন পেরিয়ে আরিফ ঢাকাতে চলে যায় ইন্টারমিডিয়েট এর জন্য। তার ঢাকার দুই বছরের জীবন সাপে বর হয়। জাতীয় পত্রিকাতে লেখালেখী শুরু করে পাশাপাশি আরো কিছু বাংলা ও ইংরেজি ম্যাগাজিনের স্টাফ রাইটার হিসাবে কাজ করার সুযোগ হয় তার।

দেখতে দেখতে তার ইন্টারের জীবন শেষ হয়ে যায়। খুব কৃত্বিত্বের সাথে পাশ করে এবং অভিজাত পাবিলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়গা করে নিয়ে অন্য রকম এ আরিফের জানান দেয় সে। সম-সাময়িক বিভিন্ন বিষয় লেখালেখি করতে থাকে। তার লেখালেখী থেকে একজন মেয়ের সাথে পরিচয় হয় নাম তার জলি। জলি খুব ভালো মেয়ে। দেখতে অরূপ সুন্দরী। তার রূপের কাছে পৃথিবীর সকল সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যাবে।

জলি আরিফের লেখা অনেক পছন্দ করে। আরিফের লেখার আলোচ্য বিষয় জলি। জলি ও আরিফের খুব খুনসুটি। জলি তার বোন ইরার কাছে আরিফের বিষয়ে নানান গল্প করতে থাকে। ইরা জলিদের বাড়িতে যায়। যাওয়ার পরে তারা আরিফের বিষয়াদী নিয়ে নানান আলোচনা করতে থাকে। ইরা বলে একটা মানুষের এত গুন কিভাবে থাকতে পারে। তারা আরিফের লেখা একটা কবিতা পড়ছিল

মন যে আমার ব্যাকুল হায়

পাগল যেতে সোনার মাদিনা

নবীর কদমে দিব সালাম,

হৃদয়ের বাসনা।


নবী আমার আছেন শুয়ে

ঘুমান মদিনায়,

উম্মতের মাফের লাগি

কেঁদে বুক ভাসায়।


ওহুদে নাবী দিলেন দা"ম(রক্ত)

বাচাতে দ্বীন ইসলাম,

সেই নবীর মুহাব্বাতে

করি মোরা মিলাদ-কিয়াম।


নবী আমার গেলেন

আরশ আ'লাতে, বান্দার

সালাম দিলেন মাবুদ,

নবীজির হাতে।


যদি ভাই কর তুমি কোন ভুল,

যাও তুমি দরবারে

নবীর, ক্ষমাতে মশগুল।


পাও যদি সুপারিশ তব নবীর

দরবারে মা'বুদের।

পাহাড় সম ঘুনাহ হবে মাফ,

আসবে জোয়ার, পূন্যের।

কবিতাটি পড়ে বলে ছেলেটা নবী প্রেমিক বটে। সব ধরণের কবিতা লিখতে পারে সে। আবার সে একজন প্রোগ্রামার এত কিছু নিয়ে সে ঘুমায় কি ভাবে। এসব নিয়ে ভাবতে থাকে জলি ও ইরা। এসকল কিছু ভাবতে ভাবতে কখন যে রাত ১১ টা বেজে গেলো টের পায় নায়। জলির মাআ তাদের খেতে ডাকল। তারা খাবার খেয়ে এসে শুয়ে পড়ল। কাল আবার তাদের ময়মনসিংহ যেতে হবে। সে কিছু জামা কাপড় কিনবে পাশাপাশি আরিফের সম্পাদিত অর্কিড পান্ডুলিপি বইটি কিনবে। তাই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে হবে বলে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ল। পরের দিন ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে তারা খাওয়া দাওয়া করে দ্রুত বের হয়ে পড়ে।

ট্রেনে বসে তারা ময়মনসিংহ যাচ্ছিল। যাওয়ার সময় জানলা দিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখছিল। এটা দেখে তাদের শামসুর রহমানের কবিতা মনে পড়ে গেলো। জলি গাইতেছিল,

ঝক ঝক ঝক ট্রেন চলেছে

রাত দুপুরে অই।

ট্রেন চলেছে, ট্রেন চলেছে

ট্রেনের বাড়ি কই ?


একটু জিরোয়, ফের ছুটে যায়

মাঠ পেরুলেই বন।

পুলের ওপর বাজনা বাজে

ঝন ঝনাঝন ঝন।


দেশ-বিদেশে বেড়ায় ঘুরে

নেইকো ঘোরার শেষ।

ইচ্ছে হলেই বাজায় বাঁশি,

দিন কেটে যায় বেশ।


থামবে হঠাৎ মজার গাড়ি

একটু কেশে খক।

আমায় নিয়ে ছুটবে আবার

ঝক ঝকাঝক ঝক।.

এটা শুনে ইরা বলে আসলে কবি শামসুর রহমান সাহেব সত্য বলেছে। ট্রেন ভ্রমণ আসলে অনেক মজার, ঝুঁকি কম। গল্প করতে করতে তারা ময়মনসিংহ তে এসে পৌছিয়ে যায়। তারা নিউ মার্কেটে চলে যায়। ইরা ও জলি ১ টা সুন্দর দেখতে শাড়ি কিনে। এরপর থ্রি-পিস কিনে সোজা লাইব্রেরিতে চলে যায়। কারণ তার বই কিনতে। লাইব্রেরিতে গিয়ে দুজন দু’পিস বই নিয়ে নিলো। এরপর ফুচকার দোকানে গিয়ে ফুচকা খেলো। এরপর বিকালের ট্রেন ধরে তারা বাড়িতে ফিরল। বাড়িতে ফিরেই আরিফকে ফোন দিয়ে জানাল যে তোমার বই কিনে আনলাম। আরিফ তাদের বই এর জন্য ধন্যবাদ জানালো। এরপর জলি ফ্রেশ হয়ে বই নিয়ে পড়ার ভিতর ঢুবে গেলো। আর বের হলো না।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Comedy