STORYMIRROR

Apurba Kr Chakrabarty

Classics

4  

Apurba Kr Chakrabarty

Classics

অজানা পথে পর্ব ৮

অজানা পথে পর্ব ৮

3 mins
398

বিনয় একটু স্নেহ আর দরদী মনে বলল,


"রাখো তোমার স্বর্গ, ময়না তুমি আমার ছেলে গোপালরের মা হবে।বিশ্বাস আর দ্বায়িত্ববোধ একশ শতাংশ তোমার কাছে ভরসা করেই এ বাড়িতে তোমাকে এনেছি।কাল সকালে কাজের মেয়েটা আসবে, তুমি তার আগেই,ঐ ভিজে কাপড় শুকনো হলে পড়বে আমার নতুন শাড়ি পোষাক আনতে একটু বেলা হবে আটটার আগে দোকান খোলে না।তবে দশকর্মার দোকান খোলে। সিঁদুর এনে দেবো ,ভালো শাঁখা নোয়া যদি পাই এনে দেবো।তুমি আমার স্ত্রীর অভিনয়ে থাকবে।সমাজ ভালো নয়।আনকো অপরিচিত আবার তোমার মত সুন্দরী কাঁচা বয়সের মেয়ে বাড়িতে রাখা মানে হাজার সমস্যার, বদনাম হবে।"


ময়না দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,

"বুঝেছি দাদা।আপনাকে অন্যদের সামনে কী ভাবে সম্ভাষন করব!


"আপনি বা তুমি বলার দরকার নেই, ভাববাচ্য কথা বলবে।অনেক রাত হল ছেলের পাশে শুয়ে পড়ো। "


"দাদা যদি গোপাল রাতে আমাকে দেখে আচমকা ভয় করে!"


"ভয় কেন করবে! তাছাড়া ওর ঘুম গাড় এক ঘুমে সকাল হয়,আমি তো পাশে শুই। আজ থেকেই তুমি ওকে আপন করতে শেখো।আর খুব যদি সমস্যা বোঝ, আমার ঘরে গিয়ে নির্দ্বিধায় আমি ঘুমুলেও তুমি আমাকে ঘুম থেকে তুলে দেবে।তুমিও ঘরের ভিতর খিল দিও না।আমি যদি রাতে জেগে যাই, গোপালকে একবার ওর বিছানায় দেখে যাব। ওর জন্য যত আমার মনের কষ্ট।"


রাতে ময়না গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল। বিনয়ের মনে বার বার সংশয় হচ্ছিল। গোপালকে এভাবে একা ময়নার কাছে এক ঘরে এক বিছানায় শুতে দেওয়া কী ঠিক হল!


নিজের মনের দ্বিধা দ্বন্দ্বের প্রশ্নের উত্তর যেন মনই দিল।শমেয়েটা ভীষণ অসহায়। তাকে বিশ্বাস করে একা এত রাতে তার গৃহে এল। তাছাড়া বাড়ির মেন দরজায় তালা দেওয়া আছে, সে চাবি তো আমার কাছে। ওর আমার সাথে বিশ্বাসঘাতক করার কী দরকার!কী লাভ! ও তো আমার কাছে নিরাপদ আশ্রয়ে আশ্বাসে আমার শরণাপন্ন। আমার ছেলের নিরাপত্তা ওর হাতে দিয়ে আমাকে আগামী পরশু থেকেই অফিস যেতে হবে।কোন কোন দিন আমার ডিউটির জন্য আবার রাতের বেলায় বাড়িই ফিরি না!সে সব দিনে ওকে মামার বাড়ি দিয়ে আসি।এত অবিশ্বাস ময়নাকে করলে কী হয়! এবার গোপাল তো ওর দ্বায়িত্বেই থাকবে! হাজার ভেবেও তবু যেন 

বাবার মন মানে না। রাত তখন দুটো বিনয় পাশে গোপালের ঘরের দরজা লাগালেও ময়না বিনয়ের পরামর্শ মত ভিতর থেকে খিল দেয়নি ।বিনয়ে এ ঘরের কপাট খুলে ঢুকল। বেশ একটু অস্বস্তি আর লজ্জা লাগছিল। ময়নার লুঙ্গি উঠে গেছে পেটের উপর অবধি।আবছা নাইট ল্যাম্পের আলোতে বেশ স্পষ্ট ময়নার নিন্মাঙ্গ বস্ত্র হীন। চিত হয়ে আপন গৃহের মত হতভাগী ময়না কত নিরাপদে যেন ঘুমোচ্ছিল। 


বিনয়ের রক্ত চাপ বেড়ে গিয়েছিল, উত্তেজনার খুব বুকের ভিতর টা ধড়পড় করছিল। দীর্ঘ প্রায় এক বছর স্ত্রী মারা গেছে তার আরো ছমাস আগেই তার মারা রোগ জরায়ু ক্যান্সার আক্রান্ত ধরা পড়েছিল আরও কমাস আগে থেকেই তাদের সহবাস বন্ধ হয়েছিল। বিনয়ের অসংঘত আবেগ আর তীব্র উৎকন্ঠায় দিশেহারা। কাছে এগিয়ে গিয়ে ধীরে ধীরে লুঙ্গিটা হাঁটুর নিচে অবধি টেনে নামিয়ে দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল। ময়নার কোন হুস ছিল না কাতর ঘুমে সে অচেতন। গোপাল পাশে ঘুমোচ্ছিল। বড়খাটের একপ্রান্তে খুব সমীহ করে ময়না ঘুমিয়ে।চোখ মুখে ঘুমন্ত অবস্থায় কী অপরূপ সৌন্দর্য তবে কেমন মলিন ক্লান্ত বিধ্বস্ত শুকনো চোখের তলায় হাল্কা কালী । যুবতীর উন্নত স্তন আংশিক আনাবৃত পাঞ্জাবীর খোলামেলা বসনে ঢাকা ছিল না।বিনয় অসংঘত অসংযমী মন বেশ কিছুক্ষণ দেখছিল ঢাকা দিতে গেলে হয়ত উঠে পড়বে কি ভাববে! ময়না তাকে কত শ্রদ্ধা করে। ধীরে ধীরে ঘর থেকে বের হল। কপাটটা লাগতে গিয়ে মনে হল খাটে যেন শাড়ি পরে তপতী শুয়ে! চমকে বিনয় আবার কপাট খুলল, তার হয়ত চোখের ভ্রম! বিনয় ঘরের দরজার কপাট বন্ধ করে নিজের ঘরে ফিরে এল।

ঘরে যেন একটা মিষ্টি গন্ধ যেমন টা তপতী তার জীবন দশায় ক্রিম ব্যবহার করত।বিনয়ের কেমন একটু গা ছম ছম করছিল। নাইট ল্যাম্পের আলোতে কেমন অস্বস্তি লাগছিল, টিউব লাইট জ্বেলে ঘর আলো করে বিছানায় শুলো।এমন তো কোনদিন হয় না! বিনয় যেন গভীর ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেছিল। 

খুব সকালেই বিনয়ের শোবার ঘরের কপাটে মৃদু ঠক ঠক শব্দে বিনয় একটু চমকে ওঠে,তার হঠাৎই খেয়াল হল তবে কী ময়না! জিজ্ঞেস করল কে ময়না!

হ্যাঁ দাদা ,ঘরে আসব !

কেন বলত! এত সকালে কিছু দরকার !

 দাদা আপনার চা এনেছি। 

বিনয় একটু অবাক আর খুশী মনে বলল, এসো ময়না! 



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics