যৌতুক
যৌতুক
কতদিন ডাকিসনা দিদি নিসনে তুই খোঁজ
বলনা এবার দিদি ঠিক কি হয়েছিল তোর ?
দিদি তোর ফটোর আগে বিলাপ করি রোজ
কত সহস্র নিঝুম রাত জেগে হয়েছে ভোর l
রাত্রি কালে নিশাচর ডাকে
বিদঘুটে সব শব্দ থাকে
ঘুম আসেনা দুচোখ জাগে
বয়স বেড়েছে কাঁটার আগে l
তুইযে তখন সবেতো বছর বারো
অদৃষ্টের পরিহাস বাকি ছিল আরো
মাথার ছাদটা অকালে গেছিলো সরে
তুই যাবার কিছু পড়ে মাও গেছিলো মড়ে l
জুঁই, চাঁপা তুই খোঁপায় বেঁধে
পুজো দিতিস কোমল হাতে
মাটির উঠোন খড়ের চাল
হাসিভরা মুখে ভাত ডাল
সবই তো ছিল দিদি
নেই টাকার তবু ছিলোনা ক্ষোভ
শুন্য হাতেও শুধু ছিলোনা লোভ l
হাতে ছিলনা কোন সোনা দানা
তবু যে ছিল ওরা সোনার দিন
পাড়া পড়শীর শুধু আনাগোনা
ছিল এ ঘরে মায়ের বন্দনা নিত্যিদিন l
কিছু ভুলিনি আজও জেগে আছে ওরা নীরব অশরীরী ছবি
স্মৃতির আগুনে জেগে ওঠে আজও অজানা গাঁয়ের কবি l
এখন যে কেউ খোঁজ নেয়না আর আমার
সেই যে মনে পড়ে তোর বিয়ের শেষবার
বন্ধ ঘড়ে আকুল চোখে কেঁদেছিলি হাজার
দরজার আড়ালে সেদিন বুঝিনি কি মর্ম ছিল তার l
শুনেছিলাম তোর শ্বশুর বাড়ি মস্ত বড়োলোক
আমি ছিলাম তখন এক নিতান্ত বালক
বাড়ির মাথাদের নজর ছিল অনেক বেশি উঁচু
এখন তাই একলা আছি মাথা করে নিচু l
একটা চিঠি এসেছিলো বছর কয়েক পরে
অশ্রু ভরা শব্দগুলো আগুনে গেছে পুড়ে
সবশেষের শেষ লেখায় রক্তে মাখা তুই
খাতায় ভেতর শুকিয়ে জাগে গন্ধহীনা জুঁই l
এমন আরো অনেক সত্য ফাইলে আছে চাপা
আমাদের এ সংসারের ধনী গরীবের রেখা
যৌতুকের অঙ্কে গিয়েছে বিকি এ সংসারের বৌ
সত্তর বছর পড়েও ওরা স্বাধীন হয়নি কেউ l
এমন আরো অনেক দিদি আছে শশুর ঘরে
টাকার অঙ্কে বিয়ের খেলা প্রাণ নিয়েছে কেড়ে
সত্তর বছর পড়েও ওদের গোলাম ভাবে যারা
স্বাধীনতার মর্ম কি আজ বুঝিয়ে দেবে কারা!?
"দ "