রাখাল বালক
রাখাল বালক


গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে ভরদুপুরে এক দঙ্গল গরু নিয়ে
হেঁটে যাচ্ছিল একেবারেই একা এক রাখাল বালক
মাথায় ছিল না কোনও মুকুট
কিংবা ডানা থেকে খসে পড়া কোনও পাখির পালক
তবু তার মুখে আছড়ে এসে পড়ল
দমকা বাতাসের সঙ্গে এক ঝলক তীব্র আলো।
তিরতির করে কাঁপছিল পুকুরের জল
মুখে মুখে ডিম নিয়ে পিঁপড়েরা রুদ্ধশ্বাসে ছুটছিল
দেওয়াল বেয়ে উপরে
করুণ ভাবে আকাশের দিকে তাকিয়ে গাছ চাইছিল
শিকড়বাকড় নয়, অন্তত একটা পা
কিংবা কয়েক মুহূর্তের জন্য সরীসৃপ হতে
কাতর গলায় চাইছিল দুটো ডানা।
মাটিতে বুক পেতে।
র্যাডারে ধরা পড়েনি কোনও পূর্বাভাস
মিডিয়ারাও পায়নি কোনও খবর
তৈরি ছিল না ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ
তবু থরথর করে কেঁপে উঠল পায়ের তলার মাটি
রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, মন্দির, প্রাসাদ, সমুদ্র
দূর থেকে মুখ ভার করে সে সব দেখছিল
গাঢ় নীল আকাশ
ভয়ে শিউরে উঠল সে
টপটপ করে ঝরতে লাগল চোখের জল
চারিদিকে নেমে এল অন্ধকার
সোঁ সোঁ বাতাসের সঙ্গে ভেসে আসতে লাগল
তীব্র আলোর ঝলকানি
আর তাতেই— ধুপধাপ
পড়তে লাগল ঝলসানো এক-একটা গাছের গুঁড়ি
ছাল-চামড়া ওঠা কালো কুচকুচে একটা রাখাল বালক।