পুজোর উপহার
পুজোর উপহার
বিশেষ তেমনকিছু নেই আমার, উপহার দেবার মতো তোমাকে...
সামনেই শারদীয়া, জানোতো, কিন্তু কী দিই বলোতো তোমাকে?
অগোছালো এলোমেলো আগাছা ঝোপঝাড়ের মতো স্বভাব আমার,
এতো সেই চিরকেলেই, তোমার থেকে ভালো কে জানে বলোতো আর?
আমার একচিলতে ঘরের উত্তর দেওয়ালে একটা ছোট্ট খুপরি জানলা আছে,
যার ওপারে তোমার প্রিয় উত্তরের সেই মেঘমুক্ত ধূসর আকাশ, ছাদের কাছে।
আজ সেই একফালি ধূসর আকাশ তোমায় দিলাম, সাজিও ইচ্ছেমতো,
জরিপাড় ওড়নায় তোমার যেমন করে তারা ফোটাও দিয়ে জরির সুতো!
আমার বিবর্ণ ঘরের পেছনদিকে তোমার প্রিয় সেই বাগানটা, মাতাল ছাতিমফুলের গন্ধে,
পুজোর সময় ভেবেছি সেটাও তোমাকে দেবো, উত্তুরে বাতাসের উত্তরীয়ে বেঁধে।
আমাদের ন্যাড়া ছাদের চিলেকোঠার চটাওঠা তাকে, দু'যুগের পুরোনো এক পুঁটুলিতে...
রাখা আছে যত্নে মুড়ে তোমার রাগ, অতর্কিতে চুম্বনের, ফিরিয়ে দেবো এই পুজোতে।
আমাদের বাড়ি থেকে দুশো গজ গেলেই বুড়োদীঘি, শরতে সাদা শাপলা-শালুকে,
বুকজলে নেমে তুলে এনেছিলাম, তোমার পছন্দ ছিলো, এবারে তাও দেবো তোমাকে।
সেবারে নিলে না যে, এইসব তুচ্ছ জিনিস দেখে পাছে যদি কিছু ভাবে লোকে!
তবুও তাইই দেবো তোমাকে, আমার সামর্থ্যে যেটুকু কুলায়, দিক লোকে গালি আমাকে।
খুব ভাবছি জানো, কীকরে পাঠাই বলোতো? দেবো পার্সেলে নাকি ডাকে?
সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে পৌঁছে... আমার উপহার দেবে তোমায় চমকে।
ভেবেই শিহরণ আমার, আরো কত কী খুঁজছি, যা যা ছিলো পছন্দের তোমার,
কোনোদিন ভুল করেওতো জানতে চাওনি কী দিতে চাই তোমায়? কী পছন্দ আমার?
আগডুম বাগডুম কতকিছু ভালো লাগার মন্দ লাগার জিনিস তোমার, তাদের ভিড়ে...
ছটফট করে খাবি খেয়েখেয়ে মরামাছ হৃদয় আমার,
কখনো দেখতে চাওনিতো ফিরে!
থাক ওসব কথা, উপহারে দেবার জিনিস তো ওটা নয়, তবে ভাবি কেন এসব মিছে?
তোমার পছন্দসই উপহারই রাংতা মুড়ে পাঠাবো, শুধু আমি যা দিতে চেয়েছিলাম, গচ্ছিত থাক পিছে, আমারই কাছে।