প্রদীপ খানি
প্রদীপ খানি
এমনি এমনি তো জ্বালাইনি ঐ প্রদীপ খানি,
প্রদীপের শিখার আলোর আশীষ দুহাত ভরে নাও।
মাথায় বুকে মায়ের আশীর্বাদ ভক্তিভরে বুলিয়ে দাও, ঐ জ্যোতি থেকে নিজের হৃদয়ের মশাল জ্বালাও।
আলোর ঐ ঝর্নাধারায় নিজেকে বেশ স্নান করাও,
মনের সমস্ত অন্ধকার ও যাতনা দূর করে দাও।
লোভ, হিংসা, কাম, দম্ভ, ঘৃণা সমস্ত পোড়াও,
পুড়িয়ে পুড়িয়ে নিজেকে একদম খাঁটি সোনা বানাও।
হয়তো তোমাকে দিয়ে নয়ন মনোহর গয়না হবেনা,
কিন্তু তাইবলে তুমি কিন্তু একেবারে ফেলনাও রবেনা।
জহুরীর চোখ খালিচোখে তোমাকে হয়তো চিনবেনা,
কিন্তুকষ্টি পাথর তোমায় পরখ করতে ভুল করবেনা।
নিজেকে একা ভেবোনা, কারণ একথা সত্যি নয়,
অন্তত এই জন্যেই মাঝেমধ্যে আয়নায় তাকাতে হয়।
তোমার চোখ, নাক, কার মতো, হয়তো মনে পড়বে, কান দুটো বা টেঁপা ঠোঁটের ভাব! ঠিক বুঝতে পারবে।
তোমার, আমার সকলের পূর্বপুরুষ এভাবেই থাকেন,
দেহের প্রতিটি কোষে মা-বাবার অস্তিত্ব যে বর্তমান।
তুমি কষ্ট পেলে তাঁরাও যে তাই খুব কষ্ট পান।
আর তুমি খুশি হলে স্বাভাবিক ভাবেই তাঁরা খুশী হন।
এই সহজ কথাটা না বুঝে সবাই ভাবে,
তাঁদের মৃত্যুতেই বুঝি সব শেষ হয়ে গেছে,
মা-বাবা সন্তানকে ছেড়ে চিরদিনের মতো চলে গেছে।
কিন্তু এটা তো কোনোভাবেই, কখনোই সম্ভব নয়,
আমাদের শরীরের সাথেই তাঁদের ভালোবাসা রয়।
তাই তো নিজেকে ভালোবেসে নিজের যত্ন নিতে হয়।
একমাত্র তাহলেই তাঁদেরও যত্ন নেওয়া হয়।
তাই বলি, যখনই নিজেকে খুব একা মনে হবে,
মনে করে একবার আয়নার দিকে তাকাবে।
নিজের দুই চোখে দুই খানি প্রদীপ জ্বলছে দেখবে,
সেই আলোই তোমাকে পৃথিবী দেখতে শুধু নয়,
অন্যদের আর নিজেকেও চিনতে শেখাবে।